হরিণের গায়ের রঙের মতো বিকেলবেলা
রাস্তার ধারে এক রেস্তোরাঁয়
হাল আমলের তিনটি যুবক দিচ্ছে
প্রাত্যহিক আড্ডা। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
কেউ বলে, তিন মাস ধরে দিনরাত
বিস্তর কাগজ নষ্ট করেও সে লিখতে পারে নি কিছুতেই
তিন ছত্র পদ্য। কেউ
সুন্দরবনের গল্প শোনায় জিম করবেটের ধরনে।
অ্যাসট্রেতে সিগারেটের
ছাই ঝেড়ে ঝেড়ে,
কেউ-বা দাঁড়িতে বুলিয়ে হাত সমাজ বদলে দ্বান্দ্বিক
কথা বলে সুদূর গুহাযুগের সূত্র ধরে।
মাঝে-মধ্যে ওদের ভঙ্গিতে
সেই বিকেল বেলা ফুটে ওঠে প্রতীক্ষার মুদ্রা।
সে কি তবে আসবে না আজ?
এই প্রশ্ন ওদের ওপর
চাঞ্চল্যের ঝর্ণা বইয়ে দেয় কখনো কখনো।
কারো মনে পড়ে যায়-
একদা সারা দুপুর
সে কাটিয়েছিল একঝাঁক
প্রজাপতির পেছনে ছুটতে ছুটতে।
একজন ভাবে, অধুনা রোমিও যদি নিশ্বাস নিতো
এই গ্রহে, তবে কি শুভ নাস্তিক্যের টানে তার হাত থেকে
স্খলিত হতো না বিষপাত্র? অন্যজন
মনে করতে উদ্যোগী হয় কাফ্কার স্বপ্নের মতো
কোনো স্বপ্ন, যা সে দ্যাখে বার বার।
ট্রাফিকের গর্জন, এ ওর দিকে তাকায়, মাঝে মাঝে
দৃষ্টি চালিয়ে দেয় বাইরে,
আর অপেক্ষা করে, তার জন্যে, যার আসার কথা
এখানে যে-কোনো মুহূর্তে যার জুতোয়
থাকবে ধুলো, যার চুল উস্কো খুস্কো, চোখ
স্বপ্নপরায়ণ, যে বলতে পারতো
নানা ঘাটের নানা কথা, করতল মেলে
দেখাতে পারতো নিজস্ব জগতের প্রতিভাস।
রাত্রি বাড়ে, রেস্তোরাঁ ক্রমে ফাঁকা হয়ে আসে,
সে আসে নি।