রোজই ভাবি, এবার যাবো অনেক দূরে।
একটি সদূর পথের ছবি কবে থেকে
মগ্ন কবির আধফোটা এক ভাবনা হয়ে
আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে।
সেই অচেনা পথের ধারে হয়তো এখন
যুগল গাছের ছায়া কাঁপে, তিনটি ঘোড়া
যাচ্ছে ছুটে উড়িয়ে স্বপ্ন তীক্ষ্ণ খুরে,
কেশর-ঝালর মত্ত নাচে।
সেই অদেখা পথের ধারে সন্ধ্যা নামলে
নির্জনতা বাড়ে আরো, জ্বলজ্বলে ঐ জোনাকিরা
রহস্যময় খুশি ছড়ায় ঝোপেঝাড়ে
ওষ্ঠ রাখে রাতের ঠোঁটে।
রোজই ভাবি সেই পথেরই প্রান্তে যাবো।
কেউ কি গেছে আমার আগে? অঙ্গ-জোড়া
ধূসর ধুলো ঝেড়েঝুড়ে বলেনি কেউ-
‘এইতো এলাম জরিপর করে।
বস্তুত কেউ আজ অবধি বেলনি তো-
সেই পথেরই স্মৃতিগুলি সত্তা থেকে
ঝরছে শুধু লাল গোলাপের পাপড়ি যেন।
সে-পথ কোথায়, জানে না কেউ।
হয়তো সে-পথ হয়তো শুধু আমার জন্যে
পথ চেয়ে রয় অধীর হয়ে সকল সময়।
হায় কখনও ফুরোবে তার প্রতীক্ষা কি?
ব্যস্ত হয়ে প্রস্তুতি নিই।
সাত-সকালে খানিক মাতি বাঁধছাঁদায়,
অনেক দূরে যাবো বলেই এটা-সেটা
ব্যাগের ভেতর ব্যাকুল পুরি, খানিক ঘুরি
মনের ভেতর সারস হয়ে।
উল্টোপাল্টা চিত্রকল্প জেগে ওঠে,-
তারপর কী মনে করে উপুড় করি
হল্দে রঙের ব্যাগটি এবং সরিয়ে রাখি
শূন্য একটা খাদির ঝোলা।
জান্লে দিয়ে তাকাই দূরে- হয় না যাওয়া।
ইচ্ছে হলেই যেতে পারি, যাই না তবু;
কোথাও ছুটে যাবার চেয়ে যাবার ভাবনা
মধুর বড়ো, দীর্ঘ ভালো।