সম্প্রতি হঠাৎ ক্ষণে কী-যে হয়, ভোরবেলা
দশটি বছর ব্যবহৃত আমার আপনকার
ঘরের চেহারা যেন কোনও ম্যাজেশিয়ানের অঙ্গুলি হেলনে
বড় বেশি পাল্টে যায়। বিছানা গায়েব, কিছু দূরে
রাখা ছোট বইপত্র-বোঝাই টেবিল
পোকামাকড়ের রাজধানী, চার দেয়ালের গায়ে
ঝুলে আছে অসংখ্য করোটি ফাঁকা মুখে বাঁকা হাসি
নিয়ে আর মেঝে জুড়ে তীক্ষ্ণ মাথা-উঁচানো কাঁটার ভিড়ভাট্রা!
দুপুর হতেই ঘরে কে জানে কোত্থেকে এসে ধু-ধু তেপান্তর
ঢুকে পড়ে, রুক্ষ এই এলাকায় ক’জন পথিক
পিপাসায় হা-পিত্যেশ করে আর এদিকে ওদিকে
তাকায় কাতর চোখে। ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরে বিশুষ্ক ধুলোয়।
অপরাহ্নে এই ঘর আচানক রূপান্তরে বড়ই নিঝুম
গোরস্তান হয়ে যায়, তিনজন দরবেশ কবরের পাশে
হাঁটু গেড়ে ব’সে মারফতি সুরে দুলে দুলে সেই
জনহীন এলাকাকে সচকিত ক’রে
মৌনব্রতে ডুবে যান। সূর্য অস্তমিত হ’লে গোরস্তান এক
লহমায় জমকালো সার্কাস দলের
আস্তানায় পাল্টে যায়। আসমান থেকে এক দল উল্লসিত
তারা নেমে যুবতী নর্তকীদের সঙ্গে তোফা নৃত্য জুড়ে দেয়।
মধ্যরাতে স্বপ্ন দ্যাখে অমাবস্যা গাঢ় থেকে গাঢ়তর আর
গাঢ়তম হয় শেষে। পূর্ণিমার আকাঙ্ক্ষায় হাঁসফাঁস করে
উৎপীড়নে বড় নাজেহাল, দুঃখী গ্রাম ও নগর-
যে-স্বপ্ন সবার চোখে স্বর্গীয় পুষ্পের মতো ফোটে তার নম্র
পাপড়ি সকল আজ ঘোড়া আর গরু-ছাগলের
পদতলে বেজায় দলিত হচ্ছে, মিশে যাচ্ছে গাধার বিষ্ঠায়!
০৯-১১-২০০২