উত্থানপতনে উচ্চাবচ
এই শতাব্দীর মধ্যপাদে জ্যোৎস্না-চমকিত রাতে
খাদের কিনারে আমি একাকী দাঁড়ানো
অসহায়, সম্বলবিহীন। চেয়ে থাকি দিগন্তের
দিকে, তালগাছের মাথায়
চাঁদ, যেন বরের টোপর। ‘আনো কিছু
পাহাড়ের অন্তরাল থেকে’
ব’লে প্রার্থী হই নতজানু। কার কাছে? পলাশের
ডাল কিংবা পার্শ্ববর্তী নদী
বলে না কিছুই; হাওয়া নাচে,
ক্ষ্যাপাটে বাউল; অকস্মাৎ
ফুল নেমে আসে, নেই যার কোনো মূল।
মাটিতে কেবলি ঝরে ফুল,
সৌরভ ব্যাধির বীজ বোনে শরীরে আমার,
রৌরবের আঁচ লাগে, আরোগ্যের আশা কম জেনেও দাঁড়িয়ে
থাকি ঠায়, দম বন্ধ হয়ে আসে, তবু অস্তিত্বের
রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাজে
আকাঙ্ক্ষার সুর। দূর থেকে চ’লে আসে
হাতে মেহগনি
কাঠের বেহালা, সকলের অবহেলা
স’রে যায়, যেতে থাকে। এসো এসো ব’লে
ডাকে নানাজন।
কে দেয় আগুন ঘরে ঘরে
ঘুমন্ত প্রহরে? ঘুণ-ধরা খুঁটি পোড়ে, পুড়ে যায়
আসবাব, গ্রন্থাবলী, বিছানাপত্তর। গেরস্তের
কুকুর পালায় আর ইঁদুরের দল
মরীয়া লাফিয়ে প’ড়ে নর্দমায় এবং পুকুরে;
ডোবে, ক্ষোভে কেউ
কেউ ছেঁড়ে চুল উন্মাদের মতো। দমকাল কই?
অতঃপর আপাদমস্তক
শরীর পুড়িয়ে আমি বেহালা এবং
ছড়টিকে অক্ষত জড়িয়ে বুকে দাউদাউ আগুনের তীর
লোলুপতা থেকে চকিতে বেরিয়ে আসি। বেহালার ছড়
পারবে কি নেভাতে
আগুনের ঝড় কোনোকালে??