আসলে কেনার ছলে মাঝে-মধ্যে সেসব বালক বালিকাকে
ভিক্ষা দিই, যারা থাকে
রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক পাশে, ছোটে ডানে কিংবা বামে, ভান করে
বকুলের মালা বিক্রয়ের, হয়তো ঘরে
অসুস্থ মা ভুখা-ফাঁকা আছে। বাধ্যতামূলকভাবে
মালা কিনে ফ্ল্যাট বাড়িটায় ফিরি, ঘ্রাণের প্রভাবে
অতীত নিকটে আসে হরিণের মতো,
মুখ রাখে ঝিলে, শিঙ তার ক্রমাগত
কেমন জড়িয়ে যায় সূর্যাস্তের রঙ-লাগা লতাগুল্মে। যদি
তোমাকে এ মালা দিই, তবে কি তোমার পাশে বয়ে যাবে নদী,
রঙধনু জাগবে সত্তায় নিরিবিলি? তুচ্ছ মালা
আমার টেবিলে পড়ে থাকে, হো হো হাসে পর্দাঢাকা কাচের জানালা।
চকিতে নীলিমা চিরে উড়ে যায় অতিকায় প্লেন।
ক্ষীণায়ু কীটস বলেছেন
একটি চিঠিতে তাঁর-‘প্রকৃত কল্পনা
আদমের স্বপ্নতুল্য, জেগে উঠে সত্য খুঁজে পাওয়া। জানবো না
কখনো পেয়েছি কিনা সত্যের সন্ধান। কল্পনাকে
পাখা মেলবার দিই মহলত। দূরে পাখি ডাকে,
নাকি ভুল শুনলাম? তোমার ড্রইংরুমে, মনে
হয়, কত স্বর্গসন্ধ্যা কাটে যেন স্বপ্নে জাগরণে।
কিছু কথা, কিছু নীরবতা যেন ফুলের স্তবক।
প্রাত্যহিকতার রূঢ় ছক
থেকে আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়ে কতটা আলাদা
হয়ে ভিন্ন সুর তুলে সামাজিক থেকে যেতে পারি? বাঁধা ছাঁদা
এখনো রয়েছে বাকি; ‘চলি
ঢের রাত হলো বলে হৃদয়ে লুকানো ঝর্ণা আর বনস্থলী
নিয়ে সোফা ছেড়ে উঠি কল্পনায়; ভাবি
তোমার নিকট নেই দাবি
আমার কিছুই আজ, এখনই কি বিদায়ের পালা?
মনে পড়ে, আমার টেবিলে আছে পড়ে বিশুষ্ক ফুলের মালা,
আনিনি যা’ বিহ্বল সংকোচে, মেয়ে, পাছে
তোমার স্বাস্থ্যল খোঁপা বেঁকে বসে; শুকনো মালাটিতে লেগে আছে,
মনে হয়, দুঃস্থ বালিকার ছলছলে দু’টি চোখ,
আমার ভেতরে জমে শ্রাবণ মেঘের মতো শোক।