দরজায় দাঁড়ানো কেউ

দরজায় কে দাঁড়ালো একরম ঘোষণাবিহীন,
এমন নিঃশব্দ? দেখেছি কি তাকে আগে
কখনো গলির মোড়ে একা
দাঁড়ানো? অথবা ফুটপাতে? দেখেছি কি
চকিতে উঠতে বাসে ভিড়
ঠেলে কোনো গ্রীষ্মের দুপুরে কিংবা শীতার্ত সন্ধ্যায়
কুয়াশায় নিমেষে মিলিয়ে
যেতে নিকটকে দূরত্বের শীতবর্ণে গূঢ় লেপে?

না দেখে নি। দেখছি এখন তার এই চলে-আসা
চৌকাঠে দিয়েছে মেলে অচিন আঙ্গিক
খুব নিরিবিলি। আমি কোনো
সরলীকরণে
কখনো উদ্যমশীল নই
ফলে লহমার দৃশ্যটিকে তুড়ি মেরে নির্বাসনে
পাঠাতে পারি নি,
বরং অত্যন্ত ঝাঁঝাঁ দুপুরে রাখাল
যেমন তাকিয়ে থাকে রৌদ্রের ওপারে কিছু দেখে,
তেম্নি তাকে দৃষ্টির সীমায় রাখি গহন মুদ্রায়।

যখন ভেবেছি আগন্তক বলবে না
কোনো কথা, তখনই সে কণ্ঠে দিলো খুলে
মোহন ফোয়ারা এক-‘তোমার এ-ঘরে
নামবে অরণ্যছায়া, বাজবে মৃদঙ্গ অদৃশ্যের, এতকাল
যা দ্যাখো নি দেখবে, শুনবে যা শোনো নি
তোমার দেয়ালগুলি দেবো আমি সরিয়ে এবং স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্ন,
স্মৃতির ভেতরে স্মৃতি ভরে দেবো’ বলে
সে মিলিয়ে গেল বায়ুস্তরে। শুনি কার পক্ষধ্বনি?

একটি অনুপস্থিতি এমম শূন্যতা রেখে যায়,
ভাবি নি কখনো আগে।
ক্ষণিকের জন্যে হলেও সে দরজায় এসে ঋজু
রহস্যে দাঁড়িয়ে ছিল। আপাতত প্রতিফলনের
আভা শ্বেত গোলাপের মতো
ফুটে থাকে কিছুক্ষণ, যা ফোটাতে পারে তারই মতো আগন্তুক।