আবেদ খান প্রিয়বরেষু
তুমি যে বড়ই একা, চাদ্দিকে প্রেতের আনাগোনা-
বুঝতে পারো কি? যতদূর জানি, ওরা
অভিন্ন ধাতুতে নয় গড়া; তবু একই ঘাটে এসে
জুটেছে চকিতে কিছু অঘটন ঘটাবার সাধে।
তোমাকে সতর্কবাণী শুনিয়েছি বারবার, অথচ কদাপি
কথায় পেতেছ কান। দেখলে না এখানে সেখানে
কত ফাঁদ পাতা আছে আর চোরাগোপ্তা হামলায়
নন্দি-ভৃঙ্গিগণ বিলক্ষণ নিত্য হাত
পাকায় সোৎসাহে। হায়, যতই ওদের
মিত্র বলে আলিঙ্গন করো দুই বেলা, তোমাকে পাঠাবে ঠিক
মজা পুকুরের তলে। তুমি নিম বামে হাঁটো, ওরা
অতি ডানে সর্বক্ষণ। সামনেই চোরাবালি প্রতারক শান্তি
নিয়ে আছে বেখেয়াল পথিককে গিলে খেতে নীরব ক্ষুধায়
দিনরাত। কে অজ্ঞাত জল্লাদ তোমার কাছে পাঠায় মিত্রের
কাটামুন্ডু পুরোনো সংবাদপত্রে মুড়ে ঘোর অমাবস্যা রাতে
এবং তোমার শোক বোবা আর্তনাদ।
তুমি যে বড়ই একা, নানা দিক থেকে ধেয়ে আসে
অগ্নিবাণ, কোথায় বাড়াবে হাত উদ্ধারের দড়ি
দৃঢ় হাতে ধরবার আকাঙ্ক্ষায় আজ
পড়ন্ত বেলায়? জানি তোমারই আসরে
উদার নিয়েছ ডেকে বহুরূপী ইয়ারবক্সিকে; দেখছ না
তোমার গলায় মালা দুলছে কেউটে হয়ে উচ্ছুসিত গোধূলি বেলায়?
ঢের প্রতীক্ষার পর, বহু শ্রমক্লান্তি সয়ে এই
আসন পেয়েছ তুমি ঢের ডামাডোল, অন্ধকার
উজিয়ে, অথচ দেখ তোমাকে আসন ছাড়া করবার সাধ
মানের পানির মতো খলখল করে
তাদের বিচিত্র মনে, ঊর্ণাজাল বোনা হয় টেবিলে বৈঠকে।
তুমি যে বড়ই একা, হে বান্ধব, ব্যূহের ভেতর। এই ব্যূহ
ভেদ করবার মন্ত্র ভুলেছ কি ব্যাপক সন্ত্রাসে? অতীতের
প্রেতগুলি তোমার স্বপ্নের বুকে বেজায় দিয়েছে জুড়ে নাচ।
২২.৩.৯৯