স্তব্ধ মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে দেখি কেমন অদ্ভুত
ভঙ্গিতে একাকী দেবদূত
চেয়ারে আছেন বসে আলমারি ঘেষে। মুখে হাসি ঝুলে আছে,
অস্তিতে বিভার ঢেউ, চোখে তার নাচে
সুদূরতা। বিছানায় উঠে বসে ভাবি,-
এই যে রূপালি চাবি
ঘন ঘন ঘোরাচ্ছেন বিপুণ আঙুলে, কোথাকার,
কবেকার এই চাবি? দেবদূতী চিত্রিত পাখার
অন্তরালে আছে কি জগত
কোনো রহস্যের খাপে ঢাকা? আছে কোনো দীর্ঘ পথ?
তার চোখে চোখ রেখে মনে হলো, হয়তো মৃত্যু হবে
আমার এখন এই স্তব্ধ রাতে। অত্যন্ত নীরবে
শুধু চেয়ে থাকি,
বুক চিরে বৈদ্যুতিক ট্রেন যায়, হঠাৎ কোথাও দূরে পাখি
ডেকে ওঠে অতীতের মতো
কণ্ঠসুরে, আর মনে পড়ে অবিরত
তোমার মুখশ্রী, মনে পড়ে গোধূলিতে ঝর্ণাধারা,
বয়ে গেছে মায়া কাননের ফুল, আনন্দাশ্রু-তারা
ফুটেছে নিভৃত ঘরে আমাদের। মাতিসের ছবি,
ওডেলিস্ক, সত্তায় ছড়িয়ে দিয়েছিল এক গহন পূরবী।
রাত্রি-মাখা জানালার ফ্রেমে
সাঁটা রমণীয় মুখ, দু’টি চোখ প্রেমে না অপ্রেমে
অমন কাতর আমি বুঝতে পারি না। মনে ফণা
তোলে প্রশ্ন, জুডাস কি ছিল কোনো নারী? জানবো না
কোনোদিন। দেবদূত এগোলেন, পাখার দোলায় কামরায়
জ্যোতিকণা ঝরে, বললেন তিনি, এই চামড়ায়
লেখো তুমি যা খুশি তোমার, অমরতা, স্বর্গসিঁড়ি, অপরূপ
কবিতা; খানিক চুপ
থেকে আমি দ্বিধাহীন তোমার নিরালা ডাকনাম
সেই হিরন্ময় চর্মপত্রে লিখলাম।