তার কথা পড়ে নি কখনো কেউ ছাপার হরফে
গল্পে কি গাথায়।
আমি তাকে, বলা যায়, চিনতাম; কখনো সখনো
দেখতাম দূরে থেকে। অনূঢ়া যুবতী
অনেক ফুরফুরে প্রজাপতি দিয়ে গড়া উচ্ছ্বসিত
চঞ্চল শরীর তার দূরাগত বিহঙ্গের আনন্দিত গান।
অনেকের চোখের পাতায়
নাচতো সে সুখের প্রহরে আর বৃদ্ধের বরফে
স্তব্ধ হৃদয়ের তটে, শোনো,
জাগাতো ঝর্নার কলতান, যতদূর জানি তার মতিগতি
নিয়ে বলাবলি, কানাকানি চলতো অনেক আর হতো গীত
ছড়া, গান, যাতে থাকতো প্রচুর খিস্তি খেউড়ের টান।
মাঝে-মধ্যে আমাদের গ্রামে গেলে তাকে দেখি;
হয় না কখনো কথা তার সঙ্গে, ছেঁড়া ডুরে শাড়ি ভেসে ওঠে
দৃষ্টিপথে; টুক্কুনি, এটাই
তার নাম, বুঝি-বা রহস্যময়ী। লোকে বলে, দোষ তার চাই তো
সে খেতে
মাছের সালুন দিয়ে পেট পুরে ভাত। তার খোলা
কালো চুল উড়তো হাওয়ায়, কখনো সে খোঁপায় গুঁজতো রাঙা ফুল।
এ-শহরে বেঁচে থাকি আমার একান্ত লেখালে খি,
বইপত্র, ডিজেলের ধোঁয়া, পরাবাস্তবের ছবি নিয়ে, ঠোঁটে
নিয়ে স্বপ্নবীজ; মেলে ঠাঁই
বুদ্ধিজীবীদের আস্তানায়। কানে আসে টুক্কুনি মরেছে মেতে
মধ্যরাতে কাজল দিঘির রূপে দোলা
দিয়ে গাঁয়ে; তার কবরের মাটিতে পাখিরা খায় ফলমূল।।