বুঝতে পারছি না, কোথায় এই গা-এ কাঁটা –দেয়া আন্ধারে
ওরা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। না, আমি তো এখনও
নিষ্প্রাণ নই, এখনও আমার হৃৎপিণ্ড
ধুকধুক করছে। নিজের শরীরে চিমটি কাটলে
টের পাবো না, এমন তো নয়।আমাকে
ওরা কি কাঁটাময় জঙ্গলের ভেতর দিয়ে নিয়ে চলেছে কোথাও?
হাত ছুঁয়ে টের পাচ্ছি, পুরো হাত, গলা, বুক, মুখও
খুব ভেজা, রক্তের গন্ধ বেজায়
উত্যক্ত করছে আমাকে। ওরা যে চাবুক কষে
মেরেছিলো সারা গায়ে, সেই উৎপীড়নেই
আমার শরীরের, বলা যেতে পারে,
অসহায় অস্তিত্বের বটে, তবে তিল তিল ক’রে ক্ষইয়ে
আমার জীবনকে ছেঁড়া, ছিনভিন্ন ন্যাকড়া বানিয়ে ছাড়বে।
ক’দিন পর প্রায় জাদুবলে যেন বন্দিদশা থেকে
মুক্তির উন্মুক্ত উপত্যকায় পৌঁছে যাই। নিমেষে
আমার শরীর থেকে রক্তধারার নাছোড় দাগ
গায়েব। কেমন ফুরফুরে আমেজ
আমার দেহমনে। অথচ প্রকৃত আশ্রয় নেয়ার মতো
গাছপালা আর জলাশয় আর ভব্য জনগণময়
জায়গা তো দৃষ্টিগোচর নয় এখনও। হাঁটছি, হাঁটছি, হাঁটছি;
তবে কি ক্লান্তির কুয়াশায় ডুবে ঘুমিয়ে পড়বো আখেরে?
কে এক পাখি আমার খুব কাছে এসে মানবিক
কণ্ঠস্বরে বলে, ‘হে পথিক, এখনই যাত্রা থামিও না।
যাও, এগিয়ে যাও। ভয়কে জয় ক’রে, সকল
বাধা, বিপদ ডিঙিয়ে , হতাশা মুছে ফেলে যাও, এগিয়ে যাও।
২১-৩-২০০৩