এ তুমি আমাকে কোন্ হাটে
হঠাৎ বসিয়ে দিলে? ছিলাম নিজস্ব শূন্য ঘাটে,
ফিকে অন্ধকার ছিল চক্ষুময়, থাকতেই পারে;
সেই অন্ধকারে
রাত্তিরে উঠুক জেগে জ্যোতির্কণা-তোমার নিকট
নিভৃতে চেয়েছিলাম। পট
আচমকা পাল্টে গেলে খটোমটো লাগে
সোফা সেট, দবিজ কার্পেট, অনুরাগে
ভরপুর মন বিরাগের কাঁটায় জখম হয়
ক্ষণে ক্ষণে, হতে থাকে শুধু হৃদয়ের তন্তুক্ষয়।
আসলে নিজেকে নিয়ে খুব জড়োসড়ো
থাকি একা, সামাজিকতায় নই দড়
সে রকম; কীভাবে করবো খুশি কাকে
সহজে বুঝি না। মেকি হাসি কিংবা স্তুতির তবকে
কাউকে নিভাঁজ মুড়ে ভণ্ডদের ঝাঁকে
মিশে যেতে অপারগ; চটপটে আর ঝকঝকে
কায়দায় খেল দেখাবার সাধ্য নেই
এতটুকু; ছন্নছাড়া এই
আমি আজ বরং লুকিয়ে থাকি স্বরচিত খোলে,
অন্যেরা থাকুক মেতে হৈ-হল্লা এবং ঢাকঢোলা।
তোমাকে দিই না দোষ, তোমার ভেতর
স্বাভাবিক প্রসন্নতা আছে,
ফলত তোমার এই ঘর
গোছানোর মতো কী সহজে রোজ সকলের কাছে
রমণীয়, প্রিয় হতে পারো। আমি মাটি
করে দিই সাজানো আসর,
সযত্নে লাগায় সুর তোমার মধুর কণ্ঠস্বর
ধূসর কর্কশতায়, সংলাপকে করো পরিপাটি।
অনেক আগেই জানি বড় বেমানান
আমি হাটে আর সাতবাজারে উদ্ভ্রান্ত ঘুরে ঘুরে
আখেরে ফেরার পথে উদাস কুড়াই
মুঠি মুঠি ছাই;
আমি কি তোমাকে ছোঁবো দিনশেষে? নীল
অন্তঃপুরে
থাকো তুমি ছায়াবৃতা। আমার হৃদয়-ছেঁড়া গান
তোমার উদ্দেশে বেদনার টানে ধায়;
চেয়ে দেখি, তোমার যৌবন ছুঁয়ে শীতের সুরুজ
অস্ত যায়।
২৮.০১.৯৬