এখন কোথায় আমি এই ভরা ভাদ্রে? দোতলার
জানলার কাছে
দাঁড়িয়ে রাত্তিরে বিস্ফারিত চোখে দেখি
শহুরে বানের পানি। শিরায় শিরায়
জ্বর কীর্তনের সুর, ক্রমাগত কাশির দমকে
বস্তুত জীবন ক্ষয়ে যায়। রোমান্টিক কাব্যে স্নাত
মধ্যবিত্ত মন খোঁজে চাঁদ,
খোঁজে তোমাকেই বারবার। কিয়দ্দুর থেকে চিম্রে কুকুরের
কান্না ভেসে আসে, লোকে বলে অলক্ষুনে, আর মেঘের নেকাব
ছিঁড়ে হাঁসফাঁস করে জলবন্দী চাঁদ।
গ্রাম গ্রামান্তরে সারি সারি ঘরবাড়ি, গাছপালা
এখন পানির নিচে, পানির কবরে
শস্যের ঘুমায়
ভাবলেশহীন; দিকে দিকে রাত্রিদিন
ভাসে কত গ্রাম্য বধু, তরুণী পোয়াতি, ক্ষেত মজুর, কুমোর
আর চালচুলোহীন বিষণ্ন বয়াতী।
আদম সন্তান, হাঁস মুর্গী, গরু ছাগল মহিষ
কারো কোনো নিরাপত্তা নেই, বিধাতার কেমন খেয়াল,
এখন যায় না শোনা এমন কি শেয়ালের ডাক।
আজরাইলের কালো ডানা
ছায়া ফেলে যত্রতত্র, ইতস্তত মড়কের লীল।
কী ভীষণ আক্রোশে ফুঁসছে নদী নালা, গলাডোবা
জল থেকে দ্যাখে দুর্গতরা
ঘুর্ণ্যমান হেলিকপ্টার শান, যেন অতিকায়
স্বর্গীয় পাখির আবির্ভাব। এক হাতা
খিচুড়ি অথবা
একটি রুটির জন্যে পষুর্দস্ত নারী পুরুষেরা
কোলাহল করে, প্রায় উন্মাদিনী জননী কোথাও
সিক্ত বেশে মৃত সন্তানকে বুকে চেপে
শোনায় করুণ সুরে ঘুমপাড়ানিয়া
গান; নক্ষত্রেরা আড্ডা মারে শূন্যতায় সুখে দূরের আকাশে।
৮,৯,৮৮