আঠারোশো বিরাশি সালে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অতি তরুণ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভগ্নহৃদয়’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তখন এই কবি খুবই স্বল্প পরিচিত। জ্যেষ্ঠভ্রাতারা স্নেহভরে তাঁর কবিতার বই ছাপিয়ে দিতেন। তবু ওই কাব্যগ্রন্থ সুদূর ত্রিপুরা রাজ্যে (বাংলার প্রতিবেশী হলেও তখন সুদুরই ছিল) পৌঁছে গিয়েছিল এবং সেখানকার রাজা বীরচন্দ্র মাণিক্য সেটি পাঠ করেছিলেন। রাজার পাটরানি তখন সদ্য-মৃত, তিনি ওই কবিতাগুলি পাঠ করে সান্ত্বনা পেয়েছিলেন এবং দূত মারফত শিরোপা পাঠিয়েছিলেন কবিকে। একজন নবীন কবির পক্ষে এই রাজস্বীকৃতি খুবই বিরল ঘটনা এবং এই ঘটনাটি ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। আমার উপন্যাস এখান থেকেই শুরু।
ত্রিপুরার এই রাজ পরিবারটি সম্পর্কে আমার কৌতূহল ও আগ্রহ অনেক দিনের। ইংরেজ অধিকৃত ভারতবর্ষে অন্যান্য দেশীয় রাজ্যগুলির তুলনায় ত্রিপুরার তফাত ছিল। ত্রিপুরা একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে গণ্য হত। রাজা বীরচন্দ্র মাণিক্য ও তার উত্তরাধিকারী রাধাকিশোর মাণিক্য বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত ও সংস্কৃতির বিশেষ অনুরাগী ছিলেন। বীরচন্দ্র মাণিক্য স্বয়ং বাংলা কবিতা ও সঙ্গীত রচনা করতেন, তিনি ও তার পুত্র দুজনেই বাংলা সংস্কৃতির প্রসারে বহু রকম পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, তাদের রাজকোষ তেমন স্বাস্থ্যবান না হলেও এই ব্যাপারে বহুবার দান করেছেন উদার হস্তে। বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু ত্রিপুরার রাজার কাছ থেকে সময়মত আর্থিক সাহায্য না পেলে বিদেশে আত্মসম্মান রক্ষা করে নিজের কৃতিত্ব প্রমাণ করতে পারতেন কি না বলা যায় না। এই সব কাহিনী এখন তেমন সুপরিচিত নয়। এই রাজপরিবার নিয়ে একটি উপন্যাস রচনার চিন্তা আমার মনের মধ্যে আস্তে আস্তে দানা বেঁধেছিল। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভের জন্য কয়েকবার ত্রিপুরাতে ঘুরেও এসেছি। ‘প্রথম আলো’ লেখা আরম্ভ করার কিছু দিন পর আমি বুঝতে পারলাম, শুধুই একটি রাজকাহিনী গড়ে তোলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। উপাদানের বড় অভাব, তা ছাড়া রাজা হোক বা প্রজা হোক, চরিত্রগুলির ব্যক্তিজীবনের ঘটনাবলি এবং জীবন সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি ফোঁটাতে না পারলে তা নিছক ইতিহাস হতে পারে, উপন্যাস হয় না। আবার উপন্যাসে ইতিহাসের পটভূমি রক্ষা করতে গেলে কল্পনার মিশ্রণ, আগেকার দিনের গোয়ালাদের দুধে জল মেশানোর মতন, মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে চলে না।
এই জাতীয় উপন্যাস রচনার সময় আমার কোনও পূর্বকল্পিত ছক থাকে না। মূল একটি বিষয় মনের মধ্যে স্থির থাকে, তা ঘিরে গড়ে ওঠে কাহিনী। পরিণতি সম্পর্কেও আমার কোনও ধারণা থাকে না। কাহিনীর যেন নিজস্ব একটি গতি আছে, চরিত্রগুলিও যেন নিজেরাই পথ বেছে নেয়, সেই ভাবে কাহিনী এগিয়ে যায়। যেমন, ভরত নামে একটি কিশোরের চরিত্র যখন আমি প্রথম সন্নিবেশিত করি, সে যে পরে সমগ্র কাহিনীতে একটি অন্যতম প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করবে, তখন তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি বলতে গেলে। ত্রিপুরার রাজার সূত্রে যখন রবীন্দ্রনাথের কথা এসে পড়ে, তখন মনে হয়েছিল যে তিনিই হবেন এ-উপন্যাসের নায়ক, তাও সর্বাংশে হয়নি অবশ্য। আমার মূল বিষয় আমাদের ইতিহাসের বিশেষ একটি সময় এবং সেই বিষয়ের টানেই আরও অন্যান্য বহু চরিত্র ও ঘটনাবলি এসেছে। সেই সময়’ উপন্যাসে আমি ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ সাল পর্যন্ত সময়কে বিস্তৃত করেছি। প্রথম আলো’ উপন্যাসের ব্যাপ্তিকাল দুই দশকের কিছু বেশি, এক শতাব্দীর শেষ ও অন্য শতাব্দীর শুরু। সেই সময় উপন্যাসের মূল উপজীব্য ছিল সমাজ সংস্কার, তাকে কেন্দ্র করে নানাবিধ দ্বন্দ্ব, বাংলা গদ্য সাহিত্যের আদিকাল, শিক্ষা বিস্তার ও একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব, যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী ইংরেজের অধীনতা থেকে মুক্ত হবার কথা ঘুণাক্ষরেও মনে স্থান দেয়নি। বরং সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভয় পেয়েছে, তা যে এক ধরনের বিপ্লব তা বোঝেওনি, সমর্থনও করেনি। পূর্ববর্তী দীর্ঘকালের অরাজকতার বদলে ইংরেজরা যে শক্তিশালী স্থায়ী সরকার গড়েছিল, বরং তাতেই স্বস্তি পেয়েছে। কিছুটা মুক্ত চিন্তার অধিকারী সেই মধ্যবিত্ত শ্রেণী মন দিয়েছে সংস্কৃতিচর্চায়। পরবর্তী কয়েক দশকের মধ্যেই সেই মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। পাশ্চাত্য শিক্ষার সুত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বিপ্লব ও স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস এ দেশের অনেকের কাছে পৌঁছে যায়। আফ্রিকায় বুয়র যুদ্ধে ইংরেজদের মার খাওয়া, এবং জাপানের কাছে রাশিয়ার পরাজয়ের সংবাদে এদেশেও কিছু কিছু মানুষের মনে এই চেতনা জাগে যে, ইওরোপীয় শক্তিগুলি অপরাজেয় সর্বশক্তিমান নয়। ‘প্রথম আলো’ উপন্যাসের সময়সীমায় জাতীয়তাবোধ ও রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষই প্রধান ঘটনা। তৎকালীন দেশের অবস্থা বোঝাবার জন্যই শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ধর্ম আন্দোলন, অন্যদিকে বিজ্ঞানচর্চা, থিয়েটারের ভূমিকা, কবি রবীন্দ্রনাথের রূপান্তর, জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে তরুণদের মতবিভেদ, দুর্ভিক্ষ ও প্লেগ রোগ, হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক ভেদ-রেখা সৃষ্টি ইত্যাদি প্রসঙ্গ বিস্তৃত ভাবে আনতে হয়েছে। প্রথমে ভাবিনি, এই রচনাটি এত বৃহদায়তন হবে, কিন্তু এক প্রসঙ্গের টানে অন্য প্রসঙ্গ অবধারিত ভাবে এসে গেছে, যেমন পেশাদারি থিয়েটার মঞ্চে গিরিশ ঘোষ-বিনোদিনী-অর্ধেন্দুশেখরের অবদানের কথা লিখতে গেলে অমরেন্দ্রনাথ দত্তের মতন এক বর্ণময় উল্কা-প্রতিম চরিত্রের কথা বাদ দেওয়া যায় না।
‘প্রথম আলো’ আমার পূর্ববর্তী উপন্যাস ‘সেই সময়’-এর পরবর্তী খণ্ড নয়, কিন্তু সময়ের ধারাবাহিকতার মিল আছে।
তথ্য সংগ্রহ করতে করতে নেশা লেগে যায়, আবার অনেক তথ্য সংগৃহীত হয়ে গেলে উপন্যাসটি তথ্য-ভারাক্রান্ত হবার ভয়ও জাগে। তথ্যের সন্ধানে আমি লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে পর্যন্ত হানা দিয়েছি কার্জন পেপারস দেখার জন্য। শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে গিয়ে ইন্দিরা দেবীর নিজের হাতে লেখা খাতাটি দেখতে গেছি। রবীন্দ্রনাথের লেখা মূল চিঠিগুলি গোপন করে যে-খাতায় তিনি চিঠিগুলির অংশ বিশেষ লিখে রেখেছিলেন, সে-খাতাতেও বহু লাইন বারংবার ঘষে ঘষে কাটা, যাতে কিছুতেই পাঠোদ্ধার করা না যায়, এমনকী কোনও কোনও পৃষ্ঠার কিছু অংশ কাঁচি দিয়ে কাটা। কেন এত গোপনীয়তা? সেই খাতার ভিত্তিতেই পরবর্তী কালে প্রকাশিত ‘ছিন্ন পত্রাবলী’। সত্যিই ‘যার সর্বাঙ্গ দিয়া রক্ত ঝরিতেছে’। যাই হোক, সংগৃহীত অনেক তথ্য আমাকে বাদ দিতেও হয়েছে অন্য কারণে। এক সময় আমি ভেবেছিলাম, ভারতীয়দের পাশাপাশি সেই সময়কার ইংরেজ শাসক সম্প্রদায়েরও ঘরোয়া ছবি দেখিয়ে দেব, পরে মনে হল তাতে উপন্যাসটি লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যাবে। সেই জন্যই শুধু লর্ড কার্জনের প্রসঙ্গই এনেছি। সব সময় মনে রাখতে হয়েছে, বিশুদ্ধ ইতিহাস রচনা আমার কাজ নয়, সে দায়িত্ব আমি নিইনি, সে যোগ্যতাও আমার নেই, আমি উপন্যাস রচয়িতা মাত্র।
তথ্য সংগ্রহের জন্য নানান গ্রন্থ পাঠের একটা আলাদা সুখও আছে। শ্রীরামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ প্রমুখের ব্যক্তিজীবনের খুঁটিনাটির সন্ধান করতে করতে মনে হয়েছে, ওঁরা আমার খুব কাছের মানুষ। রবীন্দ্রনাথের অনেক রচনার অন্তরালের উপলক্ষ্য জানতে পারলে রোমাঞ্চ হয়। সত্যি কথা বলতে কী, রবীন্দ্রনাথের প্রথম জীবনের কবিতা ও গদ্য সব এমন তন্ন তন্ন করে আমি আগে পড়িনি, এই পাঠে যেমন আমি রবীন্দ্র সান্নিধ্যে ধন্য হয়েছি, তেমনই এই সব রচনার মধ্য থেকে যে বহুমুখী প্রতিভাবান কবি এবং প্রেমিক, কর্মদ্যোগী এবং অ-সাংসারিক মানুষটি প্রকাশিত হয়েছে, এ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান পুরুষ হিসেবে তাকেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি যথাসাধ্য।
উপন্যাসে কতখানি ইতিহাস আর কতখানি কল্পনা, তা নিয়ে পাঠকদের মনে ধন্দ থাকে। যাঁরা ইতিহাসবিদ, তাদের এ-সমস্যা নেই। কিন্তু পাঠক-পাঠিকাঁদের অনেকেই এ রকম প্রশ্ন করেন। ঐতিহাসিক চরিত্রদের পাশাপাশি কিছু কিছু কাল্পনিক চরিত্র মিশিয়ে না দিলে কাহিনী নির্মাণ করা যায় না, কাহিনীর অগ্রগতিও হয় না। কিন্তু ঐতিহাসিক চরিত্রগুলি চিহ্নিত করার পর বাকি কোন কোনটি। কাল্পনিক চরিত্র, তার একটি তালিকা দেওয়াও অসঙ্গত, অবান্তর। শুধু এইটুকু বলা যায়, ভরত ও ভূমিসূতা সম্পূর্ণই লেখকের কল্পনাপ্রসূত। সেই সময়কার একটি পত্রিকায় ওড়িশার একটি কিশোরীকে ক্রীতদাসী হিসেবে বিক্রি করার সংবাদ পাঠ করে আমি ভূমিসূতা চরিত্রটি গ্রহণ করি। সেই অনাথিনী কিশোরীকে দেবদাসী হিসেবে নিয়োগ করার উদ্যোগ দেখেই মনে হয়েছিল, সে সম্ভবত নাচ-গান জানে। কিছু কিছু ঐতিহাসিক চরিত্রকেও আমি বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত করিয়েছি, তাদের মুখে সংলাপ বসিয়েছি, তাতে কিছুটা স্বাধীনতা নেওয়া হলেও তা একেবারে তথ্য বহির্ভূত নয়। তাঁদের রচনা, চিঠিপত্র, অন্যদের স্মৃতিকথা থেকে সেইসব পরিবেশ নির্মাণ করা হয়েছে এবং সংলাপ ব্যবহারের স্বাধীনতা তো ঔপন্যাসিককে দিতেই হবে। রবীন্দ্রনাথের কবিতায় যেকথা আছে, চিঠিতে অন্যদের যা লিখেছেন, কিংবা প্রবন্ধে, তারও কিছু কিছু আমি ব্যবহার করেছি সংলাপ হিসেবে।
ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে লিখতে গেলে লেখকের নিজস্ব একটা দৃষ্টিভঙ্গি থাকবেই। তা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে মতভেদও ঘটতেই পারে। পুরো উপন্যাসটিতে আমি যা লিখেছি, তার বাইরে আমি আত্মপক্ষের সমর্থনে আর কিছু জানাতে আগ্রহী নই। তবে প্রাসঙ্গিক ভাবে দু’একটি বিষয়ে কিছু বলা যেতে পারে। ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের সময়ই হিন্দু দেবী কালী সম্পর্কে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের একটি মন্তব্যের জন্য প্রবল আপত্তি ওঠে। ডাক্তার সরকার কালীকে বলেছিলেন ‘সাঁওতালি মাগি’, তাতে হিন্দুদের ধর্মবোধে আঘাত লেগেছে এই অভিযোগ নিয়ে কয়েকজন ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হন; কলকাতার ময়দানে সাঁওতালরা সভা ডেকে আমাকে তীরবিদ্ধ করে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। হিন্দু ধার্মিকরা খেয়ালই করেননি যে এটা ঔপন্যাসিকের নিজস্ব বক্তব্য নয়, বাস্তব চরিত্র ডাক্তার সরকারের উক্তি, তিনি একাধিকবার এই উক্তি করেছিলেন, একবার শ্রীরামকৃষ্ণের সামনে। শ্রীরামকৃষ্ণ অবশ্য তাতে আহত বা ক্রুদ্ধ হননি, বরং হাস্য করেছিলেন। এই উক্তি আক্ষরিকভাবে লিপিবদ্ধ আছে শ্ৰীম রচিত “শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত” গ্রন্থে এবং বিবেকানন্দের অনুজ মহেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতিকথায়। সাঁওতালদের আপত্তি অন্য কারণে, আমি সাঁওতালবন্ধুদের বোঝাতে চাই যে ‘মাগি’ শব্দটি তৎকালে কোনও হীন অর্থে ব্যবহৃত হত না, এমনকী অনেক মহিলাও নিজেদের সম্পর্কেও এই কথাটি বলতেন (যেমন, ‘আমি বুড়ি মাগি’, ‘আমি বিধবা মাগি’)। কোনও এক স্বাস্থ্যবতী সাঁওতাল রমণীর সাদৃশ্যে এক হিন্দু তান্ত্রিক দেবী কালীর মূর্তি গড়েছিলেন মাত্র কয়েকশো বছর আগে, এমন তথ্যও আছে। হিন্দুদের মূর্তিপূজা মোটেই বেশি দিনের ব্যাপার নয়, রামায়ণ-মহাভারতে দেব-দেবীর কোনও মূর্তির উল্লেখ নেই।
ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের প্রসঙ্গে আরও একটি কথা আছে। প্রবহমান ঘটনাবলি থেকে কিছু কিছু যে বেছে নিয়ে উপন্যাসে ব্যবহার করা হয়, তাতে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটে। তেমনই একটি উদাহরণ, অ্যালবার্ট হলে সিস্টার নিবেদিতার কালী বিষয়ক বক্তৃতা। এই বক্তৃতার সঙ্গে নিবেদিতার কর্মজীবনের কোনও মিলই নেই। শ্রীরামকৃষ্ণের ‘যত মত তত পথ’-এর মতন এক বিস্ময়কর উদার ধর্মনীতি স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোর বিরাট ধর্ম সম্মেলনে তেজের সঙ্গে প্রকাশ করেছিলেন, সেই স্বামী বিবেকানন্দই কেন কলকাতার প্রকাশ্য সভায় তার বিদেশিনী শিষ্যাকে দিয়ে কালীপূজার মাহাত্ম্য ও পশুবলির সমর্থনের বক্তৃতা দেওয়ালেন, তার মর্ম বোঝা যায় না। এটা স্বামীজির চরিত্রের নানা বৈপরীত্যের একটি দৃষ্টান্ত বলেই মনে হয়। সিস্টার নিবেদিতাকে তিনি আনিয়েছিলেন স্ত্রীশিক্ষা বিস্তার ও মানবসেবার জন্য, তার সঙ্গে কালীপূজা ও পশুবলির সম্পর্ক কী? বিবেকানন্দর জনপ্রিয়তা ও নিবেদিতা সম্পর্কে মুগ্ধতা সত্ত্বেও যে ওই রকম ঘটনার প্রতিবাদ জানাবার মতন মানুষ সেকালে ছিল, সেটা দেখাবার জন্যই আমি ওই জনসভার বিস্তৃত বিবরণ দিয়েছি। ধর্মীয় উন্মাদনার বিপরীতে ছিল বিজ্ঞানচেতনা ও যুক্তিবাদ। এ দেশে বিজ্ঞানচর্চার প্রবর্তক ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার তার প্রতিনিধি।
ভক্তিবাদ আমার বিষয় নয়। যারা আমাদের দেশে মহাপুরুষ হিসেবে গণ্য, তাদের রক্তমাংসের মানুষ হিসেবেই আমি দেখাতে চেয়েছি। জন্ম থেকেই কেউ মহাপুরুষ হয় না। সাধারণ মানুষের মতনই তাদের কিছু কিছু ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে, কখনও দু-একটি দুর্বলতা প্রকাশ পায়। স্বামী বিবেকানন্দের তামাক ও ইলিশ মাছের প্রতি আসক্তি, কৌতুক প্রবণতা, কৌতুকের ঝোঁকে প্রাকৃতজনের মতন ভাষা ব্যবহার, তাকে আমাদের অনেক কাছের মানুষ করে তোলে। রবীন্দ্রনাথও কখনও কখনও দুর্বল হয়ে পড়েছেন, মাঝে মাঝে অবিবেচকের মতন এমন ভুল করেছেন (যেমন, একগাদা পণের টাকা কবুল করে নিজের মেয়ের বিয়ে দেবার জন্য ব্যস্ততা), যে জন্য নিজেকে গর্দভ পর্যন্ত বলেছেন। কিন্তু এতে সেই মহান কবি ও মহান মানুষটির অসাধারণত্ব কিছুমাত্র ক্ষুণ্ণ হয়নি। সাধারণ অবস্থা থেকে, ভুল-ভ্রান্তির পথ ভেঙে ভেঙে অসাধারণতে উন্নীত হওয়ার কাহিনীই অন্যদের প্রেরণা দিতে পারে।
আমার কৈশোরে স্বাধীনতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দেশভাগের মতন চরম বেদনাদায়ক ঘটনাও ঘটে গেছে। বাংলা ও বাঙালি জাতি হয়েছে দ্বিখণ্ড। আমি সেই ট্র্যাজেডি প্রত্যক্ষ করেছি এবং পারিবারিক ভাবে দেশবিভাগজনিত অনেক বিপদ, অসহায়তা ও কষ্টও সহ্য করতে হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে দুই বাংলা আবার যুক্ত হবার সম্ভাবনা নেই, হয়তো যৌক্তিকতাও নেই। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় ইংরেজ সরকার জোর করে বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ করেছিল, সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়ে সৃষ্টি করেছিল কৃত্রিম দুই বাংলা, তখন জনগণের প্রবল প্রতিবাদে ইংরেজ সরকার সে-সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল, আবার মিলিত হয়েছিল দুই বাংলা, বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বাঙালিরা পুনর্গঠিত হয়েছিল এক জাতি হিসেবে। সেই বঙ্গভঙ্গ ও বাঙালি জাতির পুনর্মিলনের অধ্যায়টি বিস্তৃত ভাবে রচনা করে আমি ব্যক্তিগত সুখ অনুভব করেছি। এটাকে ‘ভাইকেরিয়াস প্লেজার’ও বলা যেতে পারে।
সেই বঙ্গভঙ্গ উপলক্ষে আমাদের রাজনৈতিক চেতনা একটা পরিণতির দিকে অগ্রসর হয়। সেই প্রথম বিদেশি শাসকদের কোনও নীতির প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ পথে নেমে আসে। ছাত্র সমাজ উদ্বুদ্ধ হয়। সারা ভারতেই এর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। সাধারণ মানুষ আর শাসকশ্রেণীকে ভয় পায়নি। জনসাধারণের সেই ভয়-ভাঙাই স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে প্রথম ও বিশেষ অর্জন। বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন সারা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।
দুই বাংলা আবার জোড়া লাগে ১৯১১ সালে। আমার কাহিনী থেমে গেছে তার কিছুটা আগে। পরবর্তী ঘটনার বর্ণনায় ইতিহাসের কচকচি বেশি এসে যেত। আগেই বলেছি, আমি ইতিহাস রচনার দায়িত্ব গ্রহণ করিনি। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য কিছু কিছু ছিন্নসূত্রের পরবর্তী তথ্য এখানে জানানো যেতে পারে। হেমচন্দ্র দাস কানুনগো নিজের বাড়ি ঘর বিক্রি করে বিদেশে চলে গিয়েছিলেন, ফ্রান্সে ছিলেন বেশ কিছুদিন, সেখানে বিপ্লবী গুপ্তসমিতির কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করেন এবং অস্ত্র ব্যবহার বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে ফিরে আসেন দেশে। মজফফরপুরে ক্ষুদিরাম-প্রফুল্ল চাকীর বোমা আক্রমণের পর শ্রীঅরবিন্দ, বারীন, উল্লাসকর, উপেন্দ্রনাথ, সত্যেন, কানাই, নরেন প্রমুখ বিপ্লবীরা যখন ধরা পড়েন, তাদের মধ্যে হেমচন্দ্র ছিলেন অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত। ত্রিপুরার মহারাজ রাধাকিশোর মাণিক্য মোটর গাড়ির দুর্ঘটনায় কাশীতেই দেহরক্ষা করেন। নিবেদিতা বেঁচেছিলেন ১৯১১ সাল পর্যন্ত, বঙ্গভঙ্গ উপলক্ষে ইংরেজদের পিছুহটা এবং ভারতে সশস্ত্র বিপ্লবের সূত্রপাত দেখে গেছেন।
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের সময় বিভিন্ন ব্যক্তি আমাকে উপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে, ভুল ধরিয়ে, বই পত্র-পত্রিকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। এঁদের মধ্যে আছেন শঙ্করীপ্রসাদ বসু, চিত্রা দেব, মুনতাসীর মামুন, ঝরা বসু, এষা দে, কানাইলাল চট্টোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু পত্রী, ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, রঞ্জনা মুখোপাধ্যায়, ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ন্তানুজ বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ চৌধুরী, পার্থ বসু, পার্থসারথি চৌধুরী, ইন্দ্রনাথ মজুমদার, বাদল বসু, সুনীলকুমার মণ্ডল, হর্ষ দত্ত, সুব্রত রুদ্র, ইমদাদুল হক মিলন, অশোক মুখোপাধ্যায়, বীরেন্দ্র কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। এঁদের কাছে আমি সবিশেষ কৃতজ্ঞ।
ভারত প্রশান্তকুমার পাল রবীন্দ্রজীবনের বহু অজ্ঞাত তথ্য উদঘাটন করেছেন, তার গ্রন্থ থেকে আমি প্রভূত সাহায্য পেয়েছি, তা আলাদা ভাবে উল্লেখ করতে চাই।
অনেক পাঠক পাঠিকার অনুরোধে আমি এখানে একটি নির্বাচিত গ্রন্থপঞ্জী দিয়ে দিলাম।
রবিজীবনী (প্রথম থেকে পঞ্চম খণ্ড–প্রশান্তকুমার পাল
বিবেকানন্দ ও সমকালীন ভারতবর্ষ (৭ খণ্ড) — শঙ্করীপ্রসাদ বসু
নিবেদিতা লোকমাতা (চার খণ্ড) — শঙ্করীপ্রসাদ বসু
বিবেকানন্দ স্মরণে বিদেশিনী–শঙ্করীপ্রসাদ বসু
যুগনায়ক বিবেকানন্দ (তিন খণ্ড)–স্বামী গম্ভীরানন্দ
ত ভগিনী নিবেদিতা–প্ৰব্ৰাজিকা মুক্তিপ্রাণা
ভগিনী নিবেদিতা ও বাংলায় বিপ্লববাদ — গিরিজাশঙ্কর রায়চৌধুরী
ইওরোপে বিবেকানন্দ–স্বামী বিদ্যাত্মানন্দ
সহাস্য বিবেকানন্দ–শঙ্করীপ্রসাদ বসু
শ্রীমৎ বিবেকানন্দ স্বামীজীর জীবনের ঘটনাবলী — মহেন্দ্রনাথ দত্ত
লন্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ–মহেন্দ্রনাথ দত্ত
পত্রাবলী–স্বামী বিবেকানন্দ
স্বামীজীকে যে রূপ দেখিয়াছি — নিবেদিতা
স্বামীজী ও তার বাণী—নিবেদিতা
স্বামীজীর সহিত হিমালয়ে–নিবেদিতা
স্বামী বিবেকানন্দ–ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত
স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের এক বিস্মৃত অধ্যায়–ডঃ বেণীশঙ্কর শর্মা
শাশ্বত বিবেকানন্দ–নিমাইসাধন বসু (সম্পাদনা)
স্বামী বিবেকানন্দর বাণী ও রচনা (নয় খণ্ড)
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দ–গিরিশচন্দ্র ঘোষ
বিবেকানন্দ চরিত–সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার
বিবেকানন্দ অন্য চোখে–উৎস মানুষ সংকলন
চিন্তানায়ক বিবেকানন্দ–স্বামী লোকেশ্বরানন্দ, নচিকেতা ভরদ্বাজ, স্বামী সোমেশ্বরানন্দ (সম্পাদনা)
বিবেকানন্দ ও বাংলা সাহিত্য–প্রবরঞ্জন ঘোষ
বিবেকানন্দের জীবন–রোমাঁ রোলাঁ
আমার জীবন কথা–স্বামী অভেদানন্দ
ধর্মপ্রসঙ্গে–স্বামী ব্রহ্মানন্দ
শ্ৰীশ্ৰীলাটু মহারাজের জীবনকথা–চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়
স্মৃতির আলোয় স্বামীজী–স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ (সম্পাদনা)
স্বামী বিবেকানন্দ ও বাংলায় ঊনবিংশ শতাব্দী–গিরিজাশঙ্কর রায়চৌধুরী
স্বামী-শিষ্য-সংবাদ–শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত—(পাঁচ খণ্ড) শ্রীম
শ্রীরামকৃষ্ণ ও তার কথামৃত–মৃগেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (সম্পাদনা)
শ্রীশ্রীমায়ের কথা–উদ্বোধন কার্যালয়
শ্রীমার জীবন দর্শন–অভয়চরণ ভট্টাচার্য
শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বাণী–রোঁমা রোঁলা
শ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ (দুই খণ্ড)–স্বামী সারদানন্দ
শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁর শিষ্যগণ–ক্রিস্টোফার ইশারউড
শ্রীরামকৃষ্ণ চরিত–ক্ষিতীশচন্দ্র চৌধুরী
শ্রীরামকৃষ্ণের অন্ত্যলীলা (দুই খণ্ড)–স্বামী প্রভানন্দ
অলৌকিক রহস্যে শ্রীরামকৃষ্ণ–দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়
পুলিশ রিপোর্টে রামকৃষ্ণ মিশন–লাডলীমোহন রায়চৌধুরী
সমসাময়িক দৃষ্টিতে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস–ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সজনীকান্ত দাস (সম্পাদনা)
শ্রীরামকৃষ্ণ ও বঙ্গ রঙ্গমঞ্চ–নলিনীরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
সঙ্গীতে রামকৃষ্ণ–দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়
ঈশ্বরকোটির রঙ্গকৌতুক–কমলকুমার মজুমদার
মহিমা তব উদ্ভাসিত (ধর্ম মহাসভা : শতবর্ষ স্মারক গ্রন্থ)–প্রব্রাজিকা মুক্তিপ্রাণা (সম্পাদনা)
রবীন্দ্র রচনাবলী (পশ্চিমবঙ্গ সরকার সংকলন)
অনন্য রবীন্দ্রনাথ–নিতাই বসু
রবীন্দ্রজীবনী–প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ–মম্মথনাথ ঘোষ
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ–-সুশীল রায়
জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতি–বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়
রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্রাবলী–গোপালচন্দ্র রায়
জ্যোতির্ময় রবি ও কালো মেঘের দল–সুজিতকুমার সেনগুপ্ত
খ্যাতি-অখ্যাতির নেপথ্যে–সৌরীন্দ্র মিত্র
কাদম্বরী দেবী–সুব্রত রুদ্র।
কারাগার কণ্ঠরোধে রবীন্দ্রনাথ–ডঃ দিলীপ মজুমদার
অন্য চোখে রবীন্দ্রনাথ ও বিবিধ প্রসঙ্গ–পীযুষ দাশগুপ্ত
রবীন্দ্রনাথ ও বিপ্লবী সমাজ–চিন্মোহন সেহানবীশ
রবীন্দ্রনাথকে কৌতুক–সুব্রত রুদ্র
রবি সনাথ–অমিয়কুমার সেন
নায়কের সন্ধানে রবীন্দ্রনাথ–জ্যোতির্ময় ঘোষ
মৃণালিনী দেবী, রবীন্দ্রকাব্য ও জীবনে–প্রজ্ঞা পারমিতা বড়ুয়া
মাধুরীলতার গল্প–পূণানন্দ চট্টোপাধ্যায় (সংকলক)
মাধুরীলতার চিঠি–পূৰ্ণানন্দ চট্টোপাধ্যায়
ইন্দিরা দেবী–প্রমথ চৌধুরী
পত্রাবলী-সুভাষ চৌধুরী (সংকলক)
অবনীন্দ্র রচনাবলী
রঙ্গপ্রিয় রবীন্দ্রনাথ–নিতাই বসু
আত্মচরিত–রাজনারায়ণ বসু
শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ–শচীন্দ্রনাথ অধিকারী
রবীন্দ্ৰমানসের উৎস সন্ধানে–শচীন্দ্রনাথ অধিকারী
জমিদার রবীন্দ্রনাথ–অমিতাভ চৌধুরী
আমার জীবনস্মৃতি–লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া
জীবনের ঝরাপাতা–সরলা দেবী চৌধুরানী
স্মৃতিকথা–সোমেন্দ্রনাথ বসু (সম্পাদনা)
আত্মচরিত–ফকিরমোহন সেনাপতি
কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা–মহেন্দ্রনাথ দত্ত
করুণাসাগর বিদ্যাসাগর–ইন্দ্রমিত্রা
বঙ্কিমচন্দ্র জীবনী–অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য
বঙ্কিমচন্দ্র–সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত
বঙ্কিমচন্দ্র–গোপালচন্দ্র রায়
রঙ্গমঞ্চে বঙ্কিম–অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য
রবীন্দ্রনাথ ও ত্রিপুরা–গোবিন্দনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও হিমাংশুনাথ গঙ্গোপাধ্যায় (সম্পাদনা)
ব্রাহ্মসমাজে চল্লিশ বৎসর–শ্রীনাথ চন্দ্র
আত্মচরিত–কৃষ্ণকুমার মিত্র
ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেন–ঝরা বসু
রাজমালা ও আধুনিক ত্রিপুরা–পুরঞ্জনপ্রসাদ চক্রবর্তী
ত্রিপুরা দর্শন–সমীরণ রায় (সম্পাদনা)
জয়নাথ মুন্সীর রাজোপাখ্যান–বিশ্বনাথ দাস (সম্পাদনা)
ত্রিপুরেশ্বরী ও ধন্যমাণিক্য–প্রদীপ আচার্য
ছবি ভোলা, বাঙালির ফটোগ্রাফি চর্চা–সিদ্ধার্থ ঘোষ
দেশীয় রাজ্য–মহিম ঠাকুর
ত্রিপুরার স্মৃতি—কুমার সমরেন্দ্রনাথ
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল–চিত্রা দেব
মহিলা ডাক্তার : ভিন গ্রহের বাসিন্দা–চিত্রা দেব
অন্তঃপুরের আত্মকথা–চিত্রা দেব
বিজ্ঞান পথিকৃৎ জগদীশচন্দ্র-ডঃ বিমলেন্দু মিত্র
জগদীশচন্দ্র–সালাম আজাদ
নানা চোখে ঋষি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র দেবব্রত ভট্টাচার্য ও অজয় চক্রবর্তী (সম্পাদনা)
বিজ্ঞান ভাবনায় কলকাতা–অরূপরতন ভট্টাচার্য (সম্পাদনা)
ভারতীয় বিজ্ঞান চর্চার জনক জগদীশচন্দ্র–দিবাকর সেন
স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস–অমলেশ ত্রিপাঠী
ভারতের মুক্তিসংগ্রামে চরমপন্থী পর্ব–অমলেশ ত্রিপাঠী
বঙ্গীয় নব জাগরণের অগ্রপথিক পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ
সত্তর বৎসর (আত্মজীবনী)–বিপিনচন্দ্র পাল
কলকাতার গুপ্ত সমিতি : উনিশ শতক–প্রতাপ মুখোপাধ্যায়
জাতি যেদিন গঠন পথে-সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
পিতৃস্মৃতি–রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শ্রীঅরবিন্দ ও বাংলার স্বদেশী যুগ–গিরিজাশঙ্কর রায়চৌধুরী
আমার আত্মকথা–বারীন্দ্রকুমার ঘোষ
সঞ্জীবনী (সাময়িক পত্রে সমাজচিত্র) –কানাইলাল চট্টোপাধ্যায় (সম্পাদনা)
কীতির্যস্য–ভবতোষ দত্ত
বছরের বাংলা থিয়েটার–শিশির বসু
গিরিশচন্দ্র–অবিনাশচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়
অমৃতলাল বসুর জীবন ও সাহিত্য–ডঃ অরুণকুমার মিত্র
গিরিশ প্রতিভা–হেমেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত
স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলা নাটক ও নাট্যশালা–মন্মথ রায়
আমার কথা ও অন্যান্য রচনা–বিনোদিনী দাসী
অমৃত মদিরা–অমৃতলাল বসু
তিনকড়ি, বিনোদিনী ও তারাসুন্দরী–উপেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ
অর্ধেন্দুশেখর ও বাংলা থিয়েটার–শঙ্কর ভট্টাচার্য
থিয়েটারের গালগল্প–বিষ্ণু বসু
সাজঘর–ইন্দ্ৰমিত্র
রঙ্গালয়ে অমরেন্দ্রনাথ–রমাপতি দত্ত
বাংলাদেশের ইতিহাস (১৭০৪-১৯৭১, তিন খণ্ড) সিরাজুল ইসলাম (সম্পাদনা)
শোকগাথা–অনঙ্গমোহিনী দেবী
কলকাতা কলহ কথা–সুভাষ সমাজদার
তৃতীয় মীর–শান্তনু কায়সার
ইমান ও নিশান–গৌতম ভদ্র
হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক : নতুন ভাবনা–ডঃ পঞ্চানন সাহা
ইতিহাস ও সাম্প্রদায়িকতা–গৌতম নিয়োগী
দাঙ্গার ইতিহাস–শৈলেশকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
ধর্মের উৎস সন্ধানে-ভবানীপ্রসাদ সাহু
বাংলায় হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক–নজরুল ইসলাম
বাঙলার কীর্তন ও লোকসঙ্গীত–ডঃ রীনা দত্ত
বাংলা দেহতত্ত্বের গান–সুধীর চক্রবর্তী
সঙ্গীত চয়ন–চারণ কবি মুকুন্দদাস
ছড়ায় মোড়া কলকাতা–পূর্ণেন্দু পত্রী
বঙ্গভঙ্গ–সমুদ্র গুপ্ত
বঙ্গভঙ্গ–মুনতাসীর মামুন (সম্পাদনা)
বাংলার বিপ্লব প্রচেষ্টা–হেমচন্দ্র কাননুগো
উনিশ শতকের বাংলাদেশের সংবাদ সাময়িক পত্র-–মুনতাসীর মামুন
উনিশ শতকে ঢাকার সাহিত্য ও সংস্কৃতি–মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম
তিতাস পুরনো ঢাকা : উৎসব ও ঘরবাড়ি-মুনতাসীর মামুন
প্রভাতকুমার : জীবন ও সাহিত্য–ডঃ শিবেশকুমার চট্টোপাধ্যায়
The Swadeshi Movement in Bengal (1903-1908)–Sumit Sarkar
Modern India 1885-1947–-Sumit Sarkar
Tripura District Gazetteers–K.D. Menon (Editor)
History and Culture of Bengal–A.K. Sur
Bengal Under the Lieutanant Governors–C.F. Buckland
History of the British Empire in India–E. Th
Terrorism in India–C. Tegart
Urban Roots of Indian Nationalism–Rajat Ray
British Statesmen in India–V. B. Kulkarni
The Life of Lord Curzon–Earl of Ronaldshay
India Under Curzon and After-Lovat Frazer
Lord Curzon the last of the British Moghuls–Nayana Goradias
Viceroys of India-M. Bence-Jones
Political Protest in Bengal–Boycott and Terrorisme
Curzon in India–David Dicks
British Policy in India–S. Gopal
Muslims in British India–Peter Hardy
Kitchener, Portrait of an Imperialist–Sir Philip Magnus
History of the Freedom Movement in India–R.C. Mazumder
India’s Fight for Freedom–Haridas & Uma Mukherji
The Emergence of Indian Nationalism-Anil Seal
The Life and Philosophy of Lokmanya Tilak–Dr. V.P. Varma
Tilak and Gokhale–Stanley Wolpart
Annie Besant–Anne Taylor
Modern Religious Movements in India–J. Farquhar
The Life of Josephine Macleod–Prowrajika Prabudhaprana
An Autobiography–M.K. Gandhi
The Illegitimacy of Nationalism–Ashis Nandy
(ইংরেজি বইয়ের দীর্ঘ তালিকা দেওয়া অপ্রয়োজনীয়)
সুন্দর লেখনীর জন্য ধন্যবাদ। যারা অনলাইনে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।