৩ জুন, বৃহস্পতিবার ১৯৭১
আজ বিছানায় সটান। বেশ জ্বর। গত তিনদিন ধরে আদার রস দিয়ে বারবার চা খাওয়ার ফলে সর্দি বসে গিয়ে কষ্ট আরো বেড়েছে। বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাস নিতে হাঁপ ধরে।
লুলু বিকেলে এসে বলল, মামী, পাঁচশো আর একশো টাকার নোট নাকি অচল করে দেবে?
কে বলল? কোথায় শুনলি?
সবাই তো বলাবলি করছে।
গুজব। কোন রিলায়েবল, সোর্স আছে কি না, খোঁজ নে।
নোট অচল হলে তোমুশকিল। ঘরে দুতিন হাজার টাকা রাখা আছে। বেশির ভাগই পাঁচশো আর একশো টাকার নোট।
রাতে শরীফ ঢাকা ক্লাব থেকে ফিরলে ওকে নোট অচলের গুজবটা বললাম। ও বলল, ঢাকা ক্লাবেও অনেকে এ কথা নিয়েই আলোচনা করছে। আমি বললাম, কালই আমাদের ঘরের টাকাগুলো ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে দিও।
আরে অত ব্যস্ত হবার কি আছে? কথাটা গুজবও তো হতে পারে।
তা হোক। আমাদের টাকা পয়সা বেশি নেই। কালকে জমা দিয়ে দাও তো তারপর না হয় আবার তুলে রাখা যাবে।
শরীফ একটু কাঁধ ঝাঁকিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে চলে গেল কাপড় বদলাতে। অর্থাৎ কথাটা তার মনঃপুত হয় নি।