1 of 2

২৫. দাবি

অধ্যায় : ২৫ দাবি

ধারা-৬৫৪

সংজ্ঞা। (ক) আদালতের সামনে কোন ব্যক্তি কর্তৃক অপর ব্যক্তির নিকট তাহার অধিকার তলব করাকে “দাবি” বলে।

(খ) যে বক্তি দাবি উত্থাপন করে তাহাকে দাবিদার বা বাদী। – La) বলে। (গ) যাহার বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করা হয় তাহাকে বিবাদী। (415 ) বলে।

(ঘ) দাবিদার যে জিনিসের দাবি উত্থাপন করে তাহাকে দাবিকৃত জিনিস ( 4 c1__ বলে।

(ঙ) দাবিদারের যে বক্তব্য তাহার দাবিকে নাকচ করিয়া দেয় সেই বক্তব্যকে তানাকুদ। __ বা বৈপরিত্য বলে।

ধারা-৬৫৫

দাবি যথার্থ হওয়ার শর্তাবলী (ক) বাদী ও বিবাদী উভয়কে বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন হইতে হইবে। সগীর মুমায়্যিয ও পাগলের দাবি যথার্থ নহে, তবে তাহাদের অভিভাবক অথবা ওসী তাহাদের স্থলে বাদী বা বিবাদী হইতে পারিবে।

(খ) বিবাদীকে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি হইতে হইবে।

(গ) মোকদ্দমা চলাকালে বাদী ও বিবাদী উভয়কে আদালতে উপস্থিত থাকিতে হইবে। বিবাদী কোন আইন সংগত কারণ ব্যতীত আদালতে উপস্থিত হইতে অস্বীকার করিলে বা ওয়াকীল প্রেরণ করিলে, তাহাকে

৩৬৪

জোরপূর্বক আদালতে উপস্থিত করা যাইবে।

(ঘ) দাবির বিষয়বস্তু সুনির্দিষ্ট হইতে হইবে, উহা অনির্দিষ্ট হইলে বাদীর দাবি যথার্থ বিবেচিত হইবে না।

(ঙ) দাবির বিষয়বস্তু সনাক্ত করার মাধ্যমে, ইশারা করিয়া দেখাইয়া দেওয়ার মাধ্যমে অথবা উহার বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা প্রদানের মাধ্যমে জ্ঞাত করানো যাইতে পারে।

(চ) বিষয়বস্তু দেহাবয়র সম্পন্ন অস্থাবর মাল হইলে এবং মোকদ্দমা চলাকালে তাহা আদালতে উপস্থিত থাকিলে বাদী তাহার হাতের ইশারায় বলিবে, “উহা আমার মাল, অমুক ব্যক্তি তাহা অন্যায়ভাবে হস্তগত করিয়াছে। আমি উহা আমার নিকট ফেরত দেওয়ার দাবি করিতেছি”। যদি উক্ত মাল আদালতে উপস্থিত না থাকে এবং তাহা বিনা খরচে আদালতে উপস্থিত করা সম্ভব হইলে উপস্থিত করিতে হইবে। উহা বিনা খরচে উপস্থিত করা সম্ভব না হইলে বাদী উহার পরিচয়মূলক বিবরণ প্রদান করিবে এবং মূল্যও উল্লেখ করিবে। কিন্তু গসব ও বন্ধকের ক্ষেত্রে মূল্যের উল্লেখ জরুরী নহে।

(ছ) বিষয়বস্তু যদি দেহাবয়ব সম্পন্ন অস্থাবর মাল এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও প্রজাতির হয় তবে উহার সামষ্টিক মূল্যের বিবৃতি প্রদানই যথেষ্ট হইবে, প্রত্যেক প্রজাতির স্বতন্ত্র মূল্য নির্ধারণ জরুরী নহে।

(জ) বিষয়বস্তু স্থাবর মাল হইলে উহার অবস্থান, চতুঃসীমা, মালিকানা ইত্যাদির বিস্তারিত বিবরণ আদালতে দাবি উত্থাপনকালে প্রদান করিতে হইবে, তবে মূল্যের পরিমাণ উল্লেখ করা জরুরী নহে।

(ঝ) বিষয়বস্তু ঋণ হইলে উহার পরিমাণ, সংখ্যা, শ্রেণী বা প্রজাতি ইত্যাদির বিবরণ প্রদান করিতে হইবে। ঋণ কিভাবে প্রাপ্য হইয়াছে উহার বিবরণ প্রদানও জরুরী।

ধারা—৬৫৬

বিবাদী কর্তৃক দাবি প্রত্যাখ্যান (ক) বাদী কর্তৃক উত্থাপিত দাবি খণ্ডন করার জন্য বিবাদী যে বক্তব্য পেশ করে তাহাকে শাফে” (3) বা দাবি অস্বীকৃতি বলে।

(খ) বিবাদীর বাদীর দাবি অস্বীকৃতিমূলক বক্তব্য প্রমাণিত হইলে বাদীর দাবি নাকচ হইয়া যাইবে।

৩৬৫

বিশ্লেষণ

“বাদী যে দাবি পেশ করে” অর্থাৎ বাদী দাবি করিল যে, সে বিবাদীর নিকট দশ হাজার টাকা পাইবে যাহা সে তাহাকে ঋণ হিসাবে প্রদান করিয়াছিল। ইহার জবাবে বিবাদী দাবি করিল যে, “ সে তাহা ফেরত প্রদান করিয়াছে, অথবা বলিল, আমরা ইতিপূর্বে বিষয়টি মীমাংসা করিয়াছি, অথবা বলিল, দাবিকৃত অর্থ ঋণ হিসাবে প্রদান করা হয় নাই, বরং আমার অমুক মাল তাহার নিকট বিক্রয় করিয়াছি উহার মূল্য বাবদ উক্ত টাকা প্রদান করা হইয়াছে”, এইরূপ কথার দ্বারা বুঝা যাইবে যে, বিবাদী বাদীর দাবি অস্বীকার করিয়াছে।

অথবা বাদী বলিল, অমুকের দখলে যে মাল রহিয়াছে আমি তাহার স্বত্বাধিকারী। ইহার জবাবে বিবাদী বলিল, তুমি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনিয়াছ তাহার সমর্থনে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ কর। ইহার দ্বারা বুঝা যাইবে যে, বিবাদী বাদীর দাবি অস্বীকার করিতেছে।

ধারা-৬৫৭

দাবি প্রমাণের দায়িত্ব (ক) বাদী কর্তৃক আদালতে কোন জিনিসের দাবি উত্থাপনের পর বিবাদী তাহার দাবি অস্বীকার করিলে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করার দায়িত্ব বাদীর উপর বর্তাইবে। বিবাদী তাহার দাবির স্বীকারোক্তি করিলে উক্ত স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাদীর দাবি মোতাবেক আদালত আদেশ দিতে পারিবে।

(খ) মালের ক্ষেত্রে উহা বাদীর স্বত্বদখল হইতে কিভাবে অপসারিত হইয়াছে তাহা জানা না থাকিলে উহা যাহার দখলে আছে তাহার বিরুদ্ধে মোকদ্দমা করিতে হইবে।

(গ) কোন মাল বিক্রয় করার পর কোন ব্যক্তি উহা দাবি করিলে এই অবস্থায়— (১) ক্রেতা উক্ত মালের দখল গ্রহণ করিয়া থাকিলে মোকদ্দমা চলাকালে এবং সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করাকালে কেবল ক্রেতাকেই বাধ্যতামূলকভাবে আদালতে উপস্থিত থাকিতে হইবে, বিক্রেতার উপস্থিত থাকা শর্ত নহে;

(২) ক্রেতা উক্ত মালের দখল গ্রহণ করিয়া না থাকিলে এবং তাহা বিক্রেতার দখলে থাকিলে মোকদ্দমা চলাকালে এবং সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ

৩৬৬

করাকালে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে বাধ্যতামূলকভাবে আদালতে উপস্থিত থাকিতে হইবে।

(ঘ) গচ্ছিত মাল (ওয়াদিআহ), ঋণ (আরিয়াহ) বন্ধকী মাল (রাহন), ভাড়ায় প্রদত্ত মাল (ইজারা) পর্যায়ক্রমে আমানতদার, ঋণগ্রহীতা, বন্ধকগ্রহীতা ও ইজারাদারের নিকট হইতে উদ্ধারের জন্য মোকদ্দমা করা হইলে একই সংগে বাদী ও বিবাদীকে আদালতে উপস্থিত হইতে হইবে। কিন্তু উক্ত মালসমূহ কেহ গসব করিলে সেই ক্ষেত্রে মালের মালিকের আদালতে উপস্থিত হওয়া জরুরী নহে, আমানতদার, ঋণগ্রহীতা, ইজারাদার ও বন্ধক গ্রহীতা গসবকারীর বিরুদ্ধে মোকদ্দমা করিবে। ইহাদের অনুপস্থিতিতে মালের মালিক এককভাবে গসবকারীর বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করিতে পারিবে না।

(ঙ) মালের ক্রেতা মালের স্বত্বাধিকারী বা তাহার হেফাজতকারীর নিকট হইতে ক্রীত মাল গ্রহণ করিবে, তাহারা তাহা না দিলে ক্রেতা তাহাদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা করিতে পারিবে।

(চ) ঋণদাতা ঋণগ্রহীতার মাল নিরাপত্তামূলক হেফাজতে গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করিতে পারে না। অতএব ঋণদাতা নিরাপত্তামূলক হেফাজতে গ্রহণকারীর সামনে মালিকের নিকট ঋণ বকেয়া থাকার কথা প্রমাণ করিয়া তৎপরিবর্তে নিরাপত্তামূলক হেফাজতে প্রদত্ত মাল হেফাজতকারীর নিকট তাহাকে প্রদানের দাবি করিতে পারিবে না। কিন্তু কোন ব্যক্তির নগদ অর্থ অপর ব্যক্তির নিকট আমানত থাকিলে উক্ত ব্যক্তির পোষ্যগণ তাহার অনুপস্থিতিতে তাহাদের ভরণপোষণের জন্য আমানতদারের নিকট অর্থ দাবি করিতে পারিবে।

(ছ) পাওনাদার তাহার দেনাদারের খাতকের নিকট তাহার পাওনার দাবি করিতে পারে না। অতএব কোন ব্যক্তি যদি কোন মৃত ব্যক্তির খাতকের সামনে প্রমাণ করে যে, ঐ মৃত ব্যক্তি তাহার নিকট হইতে ঋণ গ্রহণ করিয়াছে এবং সে তাহা ফেরত দেয় নাই, তবে সে মৃত ব্যক্তির খাতকের নিকট তাহার উক্ত ঋণের দাবি করিতে পারিবে না।

(জ) বিক্রেতা তাহার ক্রেতার ক্রেতার নিকট তাহার পাওনার দাবি করিতে পারিবে না। অতএব কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির নিকট নিজের মাল বিক্রয়ের পর ক্রেতা তাহা হস্তগত করিয়া অপর ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করিলে

‘ধিবদ্ধ ইসলামী আইন

৩৬৭

প্রথম বিক্রেতার মূল্য পরিশোধ না করার ক্ষেত্রে শেষোক্ত ক্রেতার নিকট মূল্য দাবি করিতে পারিবে না।

(ঝ) কোন ব্যক্তির নিকট মৃত ব্যক্তির প্রাপ্য থাকিলে তাহা আদায় করার জন্য তাহার যে কোন ওয়ারিস উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করিতে পারিবে এবং আদালতের রায় লাভের পর সে কেবল নিজের অংশ আদায় করিতে পারিবে। অনুরূপভাবে মৃত ব্যক্তির নিকট কোন ব্যক্তির পাওনা থাকিলে তাহা আদায়ের জন্য সে মৃতের যে কোন ওয়ারিসের বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করিতে পারিবে এবং আদালতের রায় লাভের পর তাহাকে প্রত্যেক ওয়ারিসের নিকট হইতে নিজ নিজ অংশমত তাহার প্রাপ্য আদায় করিতে পারিবে। তবে মৃতের পরিত্যক্ত দৈহিক অবয়বধারী মাল তাহার নির্দিষ্ট কোন ওয়ারিসের দখলে থাকিলে সেই ক্ষেত্রে কেবল উক্ত ওয়ারিসের বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করিতে হইবে, অপরাপর ওয়ারিসকে বিবাদী করা যাইবে না। মৃতের একজন ওয়ারিসের উপস্থিতিতে পাওনাদার তাহার দাবি উত্থাপন করিলে এবং উক্ত ওয়ারিস তাহার প্রাপ্যের স্বীকারোক্তি করিলে আদালত কেবল তাহার বিরুদ্ধেই তাহার অংশের জন্য ডিক্রি প্রদান করিতে পারিবে, তাহার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অন্য ওয়ারিসদের বিরুদ্ধে ডিক্রি প্রদান করিতে পারিবে

। কিন্তু সে যদি স্বীকারোক্তি না করে এবং দাবিদার আদালতের সামনে তাহার দাবি প্রমাণ করিতে পারে তাহা হইলে আদালত সকল ওয়ারিসের বিরুদ্ধে ডিক্রি প্রদান করিবে।

(ঞ) ওয়ারিসী সূত্র ব্যতীত ক্রয় বা অন্য কোন সূত্রে অর্জিত যৌথ মালিকানাধীন স্থাবর মালের মালিকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তি দাবি উত্থাপন করিলে এবং তাহা প্রমাণিত হইলে মালিকগণ নিজ নিজ অংশ অনুপাতে দায় বহন করিবে।

(ট) জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থান সম্পর্কে যে কোন এক ব্যক্তি কর্তৃক উত্থাপিত দাবির প্রেক্ষিতে শুনানীর পর আদালত বিবাদীর বিরুদ্ধে রায় প্রদান করিতে পারিবে।

ধারা-৬৫৮

পরস্পর বিরোধী কার্যক্রম (ক) বাদী যে দাবি করিবে তাহার মধ্যে যদি স্ববিরোধিতা থাকে তবে সেই

৩৬৮

দাবি অগ্রাহ্য হইবে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি একটি বাড়ি ক্রয় করিবার ইচ্ছা করিল, অতঃপর উক্ত বাড়ির মালিকানা স্বত্ব তাহার • লয়া দাবি করিল। এই অবস্থায় তাহার দাবি কার্যকর হইবে না। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি বলিল, “অমুক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার কোন দাবি নাই”, অতঃপর সে কোন জিনিসের দাবি তুলিয়া তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করিলে তাহা শুনানীর জন্য গৃহীত হইবে

। অনুরূপভাবে বাদী বিবাদীর বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করিয়া বলিল, “আমি অমুক ব্যক্তিকে প্রদানের জন্য তোমার নিকট পাঁচ হাজার টাকা দিয়াছিলাম। কিন্তু তাহা তাহাকে প্রদান না করিয়া নিজে রাখিয়া দিয়াছ। উহা আনিয়া পাওনাদারকে দিয়া দাও”। বিবাদীর অস্বীকৃতির প্রেক্ষিতে বাদী তাহার এই দাবি সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করিল। অতঃপর বিবাদী তাহার মত পরিবর্তন করিয়া বলিল, “সত্যিই তুমি আমাকে অমুক ব্যক্তিকে দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিয়াছ, কিন্তু আমি তাহা সেই ব্যক্তিকে পৌছাইয়া দিয়াছি”। এই কথা বলিয়া বিবাদী বাদীর দাবি হইতে অব্যাহতি লাভ করিতে চাহিলেও তাহা গ্রাহ্য করা হইবে না।

(খ) কোন ব্যক্তি আদালতে কোন মাল সম্পর্কে তাহা অপর ব্যক্তির বলিয়া স্বীকারোক্তি” করার পর পুনরায় ত্যাহা তাহার মাল” বলিয়া দাবি করিলে তাহার দাবি গ্রাহ্য হইবে না, এমনকি সে কোন ব্যক্তির ওয়াকীল বা আদালত কর্তৃক নিয়োজিত অভিভাবক হিসাবে উক্ত মাল নিয়োগকর্তার বা পোষ্যের বলিয়া দাবি করিলেও তাহার দাবি গ্রাহ্য হইবে না।

(গ) বিবাদীকে সমস্ত দাবি হইতে অব্যাহতি প্রদানের পর বাদী যদি তাহার কোন মাল সম্পর্কে দাবি উত্থাপন করে যে, উহা তাহার মাল, তবে তাহার এই দাবি গ্রাহ্য হইবে না। কিন্তু সে অপর ব্যক্তির ওয়াকীল বা আইনগত অভিভাবক হিসাবে এই দাবি উত্থাপন করিলে তাহা শুনানীর জন্য গ্রহণযোগ্য হইবে।

(ঘ) কোন মাল অন্য ব্যক্তির বলিয়া স্বীকার করিবার পর কোন ব্যক্তি তাহা তাহার নিজের মাল বলিয়া দাবি করিলে তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে না।

(ঙ) ওয়াকীলের কথা মক্কেলের দাবির বিপরীত হইলে ওয়াকীলের কথা গ্রহণযোগ্য হইবে না।

৩৬৯

(চ) বাদী বা বিবাদী যে কোন একজনের স্বীকারোক্তি অপর জনের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করিবে।

উদাহরণঃ বাদী আদালতে দাবি করিল যে, সে বিবাদীকে ঋণস্বরূপ দশ হাজার টাকা প্রদান করিয়াছে। অতঃপর সে বলিল যে, সে তাহাকে জামানতস্বরূপ (কাফালা) উক্ত টাকা প্রদান করিয়াছে। এই অবস্থায় বিবাদী তাহার শেষোক্ত কথার সত্যতা স্বীকার করিলে বৈপরিত্য দূরীভূত হইয়া যাইবে।

(ছ) বাদীর অজ্ঞতার কারণে বৈপরিত্য ঘটিলে তাহা বিবেচনাযোগ্য হইবে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পর বলিল যে,তাহার শৈশবাবস্থায় তাহার পিতা এই বাড়িটি তাহার জন্য ক্রয় করিয়াছিল, কিন্তু ভাড়া নেওয়ার সময় ঐ কথা তাহার স্মরণ ছিল না। এই অবস্থায় সে মালিকানা স্বত্বের দলীলপত্র পেশ করিতে পারিলে আদালতে ভাড়ায় প্রদানকারীর বিরুদ্ধে তাহার দাবি গ্রহণযোগ্য হইবে।

(জ) মৃতের পরিত্যক্ত মাল বণ্টন শুরু করিলে উহার দ্বারা স্বীকারোক্তি করা হইল যে, উহা এখন ওয়ারিসগণের যৌথ মালিকানার সম্পত্তি। অতএব উক্ত মাল বণ্টনের পর কোন ওয়ারিস “সমস্ত মাল তাহার” বলিয়া দাবি করিলে তাহার দাবি বাতিল হইয়া যাইবে।

(ঝ) পরস্পর বিপরীত দৃষ্টিগোচর হয় এইরূপ দুইটি বক্তব্যের মধ্যে সামঞ্জস্য স্থাপন করা সম্ভব হইলে এবং বাদী তাহা মানিয়া নিলে তাহার দ্বারা বৈপরিত্য দূরীভূত হইতে পারে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি স্বীকারোক্তি করিলে যে, সে যে বাড়িতে বসবাস করিতেছে তাহা ভাড়া নিয়াছে। অতঃপর সে দাবি করিল যে, বাড়িটি তাহার। এই অবস্থায় তাহার বক্তব্যের বৈপরিত্যের জন্য তাহার দাবি প্রত্যাখ্যাত হইবে। কিন্তু সে যদি বলে যে, বাড়িটি ভাড়া নেওয়ার পর সে তাহী ক্রয় করিয়াছে, তাহা হইলে তাহার বক্তব্য বিবেচনাযোগ্য হইবে।

ধারা—৬৫৯

মোহরের দাবি (ক) স্ত্রী তাহার স্বামীর নিকট প্রাপ্য মোহরের দাবি উত্থাপন করিলে তাহার দাবি গ্রহণীয় হইবে এবং মোহর বিলম্বে প্রদেয়যোগ্য হইলে তাহা

७१०

প্রদানের জন্য স্বামীকে আদেশ দিতে পারিবে।

(খ) স্ত্রী তাহার মরহুম স্বামীর পরিত্যক্ত মাল হইতে তাহার মোহর পরিশোধের দাবি উত্থাপর করিলে এবং ওয়ারিসগণ বিষয়টি অস্বীকার না করিলে যথারীতি তাহার মোহরের দাবি কার্যকর হইবে।

(গ) স্বামীর পরিত্যক্ত মাল হইতে স্ত্রী তাহার মোহর পরিশোধের দাবি উত্থাপন করিলে এবং ওয়ারিসগণ মৃত ব্যক্তির সহিত তাহার বিবাহের কথা অস্বীকার করিলে স্ত্রীলোকটি সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করিয়া বিবাহের ও মোহরের বিষয়টি প্রমাণ করিতে পারিলে তাহার দাবি কার্যকর হইবে।

ধারা—৬৬০

তালাকপ্রাপ্তার সন্তান প্রসব কোন স্ত্রীলোক ইদ্দাতরত অবস্থায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইয়া সহবাস করার পর তাহাদের বিবাহ ভাঙ্গিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সন্তান প্রসব করিলে

(১) উক্ত সন্তান দুই স্বামীর যে কোনজনের হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে সে প্রথম স্বামীর সন গণ্য হইবে;

(২) প্রথম স্বামীর ঔরসজাত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকিলে সে দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান প্য হইবে;

(৩) দুই মীর কোন একজনেরও ঔরসজাত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকিলে সে মাল সম্ভান বলিয়া গণ্য হইবে।

বিশ্লেষণ

“দুই স্বামীর কোন একজনেরও ঔরসজাত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকিলে” অর্থাৎ প্রথম রী কর্তৃক তালাক প্রদান অথবা তাহার মৃত্যুর পর দুই বৎসর অতিক্রান্ত হওয়া প্র দ্বিতীয় স্বামীর সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে সন্তান ভূমিষ্ঠ হইলে উক্ত সন্তান দুই স্বামীর কোন একজনেরও ঔরসজাত গণ্য হইবে না।

11ধিবদ্ধ ইসলামী আইন

৩৭১

ধারা—৬৬১

সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করিলে বিবাহের ছয় মাসের মাথায় স্ত্রী সন্তান প্রসব করার ক্ষেত্রে—(১) বর্তমান স্বামী উক্ত সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করিলে এবং স্ত্রী তাহার ঔরসজাত বলিয়া দাবি করিলে, সন্তান তাহাদের দুইজনেরই গণ্য হইবে;

(২) বর্তমান স্বামী উক্ত সন্তান পূর্ব-স্বামীর ঔরসজাত বলিয়া দাবি করিলে এবং স্ত্রী বর্তমান স্বামীর ঔরসজাত বলিয়া দাবি করিলেও উক্ত সন্তান বর্তমান স্বামীরই গণ্য হইবে;

(৩) বর্তমান স্বামী উহা জারজ সন্তান বলিয়া দাবি করিলে এবং স্ত্রী তাহার দাবি অস্বীকার করিলে, আদালত উভয়কে ধারা (১৪৭) মোতাবেক লিআন করাইবে, অতঃপর সন্তান মাতার সহিত যুক্ত হইবে।

ধারা-৬৬২

অবৈধ সন্তান সম্পর্কিত দাবি

দুইজন নারী-পুরুষের অবৈধ যৌন সংযোগের ফলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হইলে এবং পুরুষ লোকটি উক্ত সন্তান তাহার দাবি করিলেও তাহা গ্রাহ্য হইবে না এবং সে তাহার মাতার সহিত যুক্ত হইবে।

তথ্য নির্দেশিকা

الدعوى هي طلب احد حقه من اخر في حضور الحاكم. . الدفع هو الاتيان بدعوى من قبل المدعى عليه تدفع دعوى المدعي ډ

‘Defi’ is the putting forward a claim by the defendant to rebut the action of the plaintiff. ৩. আলমগীরী, দাওয়া, বাব ১২। ৪. আলমগীরী, কিতাবুদ দাওয়া, ১২ নং ফাসল। ৫. আলমগীরী, দাওয়া, ১৩ নং ফাসল। ৬. আলামগীরী, দাওয়া, ৮ নং ফাসল।

ওকালাত

৩৭৫

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *