1 of 2

২৪. গসব ও ইতলাফ (অন্যায়ভাবে দখল ও বিনাশসাধন)

অধ্যায় : ২৪ গসব ও ইতলাফ (অন্যায়ভাবে দখল ও বিনাশসাধন)

ধারা—৬৩৯

গসব-এর সংজ্ঞা (ক) কোন ব্যক্তির স্বত্ব দখলীয় মাল তাহার বিনা অনুমতিতে দখল করাকে “গসব” বলে;

(খ) যে ব্যক্তি এইভাবে অন্যের স্বত্ব দখলীয় মাল দখল করে তাহাকে “গাসিব” (০) বলে;

(গ) যাহার মাল হরণ করিয়া দখলিভুক্ত করা হয় তাহাকে “মাগসূব মিনহু”( ৩৭ বলে; এবং

(ঘ) যে মাল হরণ করা হয় তাহাকে মাগসূব (৪ ০ ) বলে।

বিশ্লেষণ

গসব শব্দের আভিধানিক অর্থ “জোরপূর্বক অপরের নিকট হইতে কোন কিছু দখলিভুক্ত করা।”

أخذ الشيئ من القير على سبيل الممب

আইনের পরিভাষায় গসব বলা হয়? কোন ব্যক্তির মূল্যবান ও পবিত্র মাল তাহার অনুমতি ব্যতীত অপর ব্যক্তির এমনভাবে হস্তগত করা যাহার দ্বারা মালিকের দখল বিনাশ হইয়া যায়।

أخذ ما تقوم محترم بغير إذن المالك على

د اوجه يزيل يده)

৩৪ ২।

অপরের মালিকানাভুক্ত মাল গসব অর্থাৎ অন্যায়ভাবে দখল বা হস্তগত করা বৈধ নহে। মহান আল্লাহ বলেনঃ

ولا تأكلوا أموالكم بينكم بالباطل .

“তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের মাল অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করিও না।” ২

ধারা—৬৪০

গসব-এর বিধান (ক) যে মাল গসব করা হইয়াছে হুবহু সেই মাল তাহার মালিককে যেই স্থান হইতে তাহা গসব করা হইয়াছে সেই স্থানে ফেরত দিতে গাসিব বাধ্য থাকিবে, যদি তাহা বিদ্যমান থাকে।

• (খ) মালিক অন্যত্র গাসিবের সহিত সাক্ষাত করিয়া তাহার মাল ফেরত চাহিলে সে উক্ত স্থানেও তাহা ফেরত লইতে পারিবে অথবা যে স্থান হইতে গসব করিয়াছে সেই স্থানেও উহার প্রত্যর্পণ দাবি করিতে পারিবে। উভয় ক্ষেত্রে মালের পরিবহন খরচ গাসিবকে বহন করিতে হইবে।

(গ) গসবকৃত মাল গাসিবের অবহেলার কারণে বা অবহেলা ব্যতীত ধ্বংস বা নষ্ট হইলে সে উহার ক্ষতিপূরণ করিতে বাধ্য। অনুরূপ মাল বাজারে সহজলভ্য না হইলে গসবের দিন উহার যে মূল্য ছিল সেই পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে এবং বাজারে অনুরূপ মাল সহজলভ্য হইলে গসবকৃত মালের সমপরিমাণ মাল ক্রয় করিয়া মালিককে অর্পণ করিতে হইবে।

(ঘ) যে স্থান হইতে মাল গসব করা হইয়াছে সেই স্থানে তাহা মালিকের নিকট অৰ্পণ করিলে গাসিব দায়মুক্ত হইয়া যাইবে।

(ঙ) গাসিব গসবকৃত মাল উহার মালিকের নিকট এমন স্থানে উপস্থিত করিল যেখানে উহাকে দখলভুক্ত করিতে মালিকের জন্য কোন প্রতিবন্ধকতা নাই, এই অবস্থায় সে প্রকৃতপক্ষে তাহা দখলভুক্ত না করিলেও উহা বুঝিয়া পাইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং গাসিব দায়মুক্ত হইয়া যাইবে। কিন্তু মাল ধ্বংস হইয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে উহার মূল্য মালিকের নিকট উপস্থিত করা হইলে তাহা সে বাস্তবিকই গ্রহণ না করা পর্যন্ত গাসিব দায়মুক্ত হইতে পারিবে না।

৪৩

(চ) গাসিব কোন বিপদজনক স্থানে গসবকৃত মাল উহার মালিকের নিকট উপস্থিত করিলে সে তাহা সেখানে গ্রহণ করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবে এবং এই অবস্থায় গাসিব দায়মুক্ত হইতে পারিবে না।

(ছ) গসবকৃত মাল ধ্বংস হইয়া গেলে এবং উহার মূল্য মালিকের নিকট অর্পণ করা হইলে সে তাহা গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে গাসিব আদালতের শরণাপন্ন হইবে এবং আদালত মালিককে মূল্য গ্রহণ করিবার নির্দেশ প্রদান করিবে।

(জ) গাসিব যাহার মাল গসব করিয়াছে সে সগীর মুমায়্যিয হইলে এবং নিজের বিষয়াদি পরিচালনায় সক্ষম হইলে গাসিব তাহার নিকট উক্ত মাল অৰ্পণ করিলে তাহা বৈধ হইবে; সে সগীর গায়ের মুমায়্যিম হইলে উক্ত অৰ্পণ বৈধ হইবে না।

(ঝ) গসবকৃত মালের অবস্থার পরিবর্তন হইলে, যেমন পরিপক্ক ফল গাসিবের নিকট শুকনা অবস্থায় পৌছিলে, মালিক ইচ্ছা করিলে উহাই ফেরত নিতে পারে অথবা ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারে।

(ঞ) গাসিব নিজের মাল হইতে যোগ করিয়া গসবকৃত মালের বৈশিষ্ট্য প.. হন করিলে মালিক চাহিলে তাহার মালের ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারে, অথবা পরিবর্ধনের জন্য ব্যয়িত মূল্য পরিশোধ করিয়া নিজ মালও ফেরত লইতে পারে।

উদাহরণঃ গাসিব কোন ব্যক্তির উৎপাদিত কাপড় গসব করিয়া নিয়া তাহাতে রং লাগাইল। এই অবস্থায় মালিক চাহিলে গাসিবের নিকট হইতে তাহার মালের ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারে, অথবা রং করার খরচ প্রদান করিয়া কাপড় ফেরত লইতে পারে।

(ট) গসবকৃত মালে গাসিবের পরিবর্তন সাধন করার ফলে উহার মান পরিবর্তিত হইয়া গেলে, সে উক্ত মালের মালিক হইবে এবং মূল মালিককে ক্ষতিপূরণ করিতে বাধ্য থাকিবে। ক্ষতিপূরণ না করা পর্যন্ত উক্ত মাল ব্যবহার করা গাসিবের জন্য বৈধ হইব না।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি গম গসব করিয়া আনিয়া উহা পিষিয়া আটা তৈরী করিল। এই অবস্থায় গাসিব উক্ত আটার মালিক হইবে এবং গমের মালিককে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে। (ঠ) গসবকৃত মালের বর্তমান মূল্য কমিয়া

৩৪৪

গেলে এবং মালিক উক্ত মাল ফেরত নিতে রাজী না হইলে সে গসব করার তারিখের মূল্য দাবি করিতে পারিবে না, তাহাকে বাজারমূল্যই গ্রহণ করিতে হইবে; কিন্তু গাসিবের ব্যবহারের কারণে উক্ত মালের মূল্য হ্রাস পাইলে মালিক অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারিবে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির একটি পশু গসব করিল এবং মালিকের নিকট ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত উহার স্বাস্থ্যহানি হইল। এই ক্ষেত্রে পশুর মূল্য হ্রাস পাওয়ার জন্য গসবকারী দায়ী হইবে। একইভাবে কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির উৎপাদিত কাপড় গসব করার পর তাহা ছিড়িয়া বা ফাড়িয়া যাওয়ার ফলে উহার মূল্য হ্রাস পাইল। ইহার পরিমাণ (মূল্যহ্রাস) কাপড়ের মূল্যের এক-চতুর্থাংশের অধিক হইলে মালিক হয় ক্ষতিপূরণসহ কাপড় ফেরত নিবে অথবা কাপড়ের ন্যায্য মূল্য আদায় করিয়া উহা গাসিবকে ছাড়িয়া দিবে। কিন্তু মূল্যহ্রাস এক-চতুর্থাংশের কম হইলে গাসিব মূল্যহ্রাসের ক্ষতিপূরণ বহন করিবে।

(ড) মালের ভোগ-ব্যবহারের ক্ষমতা বঞ্চিত করার মত এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হইলে, যাহা গসবের সহিত তুলনীয় হইতে পারে, তাহা গসব-এর আওতায় পড়িবে। অতএব কোন ব্যক্তি নিরাপদ হেফাজতে রাখার (ওয়াদিআ) জন্য কাহারও মাল গ্রহণ করার পর তাহা অস্বীকার করিলে সে গাসিব গণ্য হইবে এবং এই অবস্থায় গচ্ছিত মাল তাহার অবহেলা বা অযত্ন ব্যতীত ধ্বংস হইলেও সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(ঢ) গসবকৃত মাল হইতে প্রাপ্ত উৎপাদন গাসিব ধ্বংস বা নষ্ট করিলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

উদাহরণঃ গসবকৃত পশুর বাচ্চা বা দুধ অথবা বাগানের ফল বা বাগানসহ মৌচাক বা মৌচাকের মধু গসবকারী ধ্বংস বা নষ্ট করিলে তাহার জন্য তাহাকে দায়ী হইতে হইবে।

বিশ্লেষণ

গসবকৃত মাল বিদ্যমান থাকিলে গাসিব ঠিক তাহাই উহার মালিককে ফেরত দিতে বাধ্য। কেননা মহানবী (স) বলিয়াছনঃ

على البر ما أخذت حتی توی ۔

৩৪৫

“কোন হাত (ব্যক্তি) যাহা (মালিকের অনুমতি ব্যতীত) লইয়াছে তাহা ফেরত দেওয়া পর্যন্ত সে উহার যামিন”। ৩

متاع أخيه لأعبا و جادا فان

لا يحل لأحد أن يا أخذه فيره عليه.

হাট্টাচ্ছলে অথবা

হে; যদি হস্তগত

কে যেন ফেরত

“কোন ব্যক্তির জন্য তার ভাইয়ের (অপরের) মাল ঠাট্টাচ্ছলে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে হস্তগত করা হালাল নহে; যদি হস্তগত করিয়া থাকে তবে উহা তাহার মালিককে যেন ফেরত দেয়”। *

গাসিব যে স্থান হইতে কোন মাল গসব করিবে তাহাকে সেই স্থানেই উহা মালিকের নিকট ফেরত দিতে হইবে। কেননা স্থানের পার্থক্যের কারণে মালের মূল্যেও পার্থক্য হইয়া থাকে। ৫।

গাসিব গসবকৃত মাল ধ্বংস হইয়া যাওয়ার দাবি করিলে আদালত তাহাকে বন্দী করিয়া রাখিবে, যতক্ষণ না তাহার দাবি যথার্থ প্রমাণিত হয় অথবা সে সাক্ষ্য উপস্থিত করে। মাল প্রকৃতই ধ্বংস বা নষ্ট হইয়া গেলে আদালত গাসিবকে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ প্রদান করিবে। গসবকৃত মাল ওজনযোগ্য বা পরিমাপযোগ্য হইলে অনুরূপ মাল বাজারে সহজলভ্য হইলে গাসিবকে তাহা ক্রয় করিয়া যাহার মাল গসব করিয়াছে তাহাকে প্রত্যর্পণ করিবে। কারণ মহান আল্লাহ বলেনঃ

فمن اعتدي عليگم فاعتدوا عليه بمثل ما اقتدای علم

۔

“সুতরাং যে কেহ তোমাদের ব্যাপারে সীমা অতিক্রম করে তোমরা তাহাদের ব্যাপারে ততটুকু সীমা অতিক্রম কর যতটুকু তাহারা তোমাদের ব্যাপারে সীমা অতিক্রম করিয়াছে” (সূরা বাকারাঃ ১৯৪)।

অনুরূপ মাল সহজলভ্য না হইলে গাসিব গসবকৃত মালের মূল্য পরিশোধ করিবে। ইমাম আবু হানীফা (র)-এর মতে আদালতে মামলা দায়ের করার দিন উক্ত মালের যে মূল্য ছিল সেই পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে। আবু ইউসুফ (র)-এর মতে গসব করার দিনের মূল্য এবং মুহাম্মাদ (র)-এর মতে যেদিন মাল বাজারে দুষ্পপ্য বা নিঃশেষ হইয়া গিয়াছে সেই দিনের মূল্য

৩৪৬

পরিশোধ করিতে হইবে। কিন্তু গণনাযোগ্য জিনিসের ক্ষেত্রে গসব করার দিনের মূল্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে পরিশোেধ বাধ্যকর হইবে। মাল ধ্বংস বা নষ্ট হইয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে গাসিবের অবহেলা বা অযত্নের দখল না থাকিলেও সে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।

গসবকৃত মাল হইতে প্রাপ্ত উৎপাদন, যেমন পশুর দুধ, বাচ্চা, বাগানের ফল ইত্যাদি গাসিব ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করিলে বা মালিক তাহা ফেরত চাওয়া সত্ত্বেও ফেরত না দিলে সে উহার জন্য তাহাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হইবে। কিন্তু তাহা প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট বা ধ্বংস হইলে তাহাকে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে

হইবে না। ৬

ধারা—৬৪১

পশু গসব করিয়া যবেহ করিলে। (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির দখলস্থিত পশু গসব করিয়া আনিয়া তাহা যবেহ করিলে মালিক গাসিবের নিকট হইতে পশুর মূল্যও আদায় করিতে পারে, অথবা (পশুর গোশতসহ) ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারে।

(খ) যে পশুর গোশত খাওয়া হয় না সেই শ্রেণীর পশু গসব করিয়া যবেহ বা অংগ কর্তন করা হইলে মালিক গাসিবের নিকট হইতে উহার মূল্য আদায়, করিতে পারিবে।

বিশ্লেষণ

ক্ষতিপূরণ আদায়ের ক্ষেত্রে জীবিত ও যবেহকৃত পশুর মধ্যে মূল্যের যে ব্যবধান হইবে সেই পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসাবে ধার্য হইবে। পশুর মূল্য পরিশোধ না করা পর্যন্ত গাসিবের জন্য উহা দ্বারা উপকার লাভ করা বৈধ হইবে না, কারণ সে উহার মালিক নহে।” যে পশুর গোশত খাওয়া হয় না, যেমন পোষা বিড়াল, কুকুর ইত্যাদি, সেই পশু হত্যা করিলে বা পঙ্গু করিয়া দিলে গাসিব উহার মূল্য পরিশোধ করিতে বাধ্য।

৩৪৭

ধারা-৬৪২

কাপড় গসব করিলে (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির কাপড় গসব করিয়া তাহা সামান্য ছিড়িয়া ফেলিলে সে মালিককে উহা ফেরত প্রদান করিবে এবং কাপড়ে ত্রুটি সৃষ্টি করার জন্য ক্ষতিপূরণ দিবে।

(খ) কাপড়ের ছেড়ার পরিমাণ বেশী হইলে মালিক চাহিলে উক্ত কাপড় গাসিবকে প্রদান করিয়া তাহার নিকট হইতে উহার মূল্য আদায়া করিতে পারে, অথবা কাপড় ফেরত নিয়া ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারে।

(গ) গাসিব কাপড় রঞ্জিত করিয়া ফেলিলে উহার মালিক ইচ্ছা করিলে তাহার নিকট হইতে উহার মূল্যও আদায় করিতে পারে অথবা রং করার খরচ প্রদান করিয়া কাপড়ও ফেরত নিতে পারে।

বিশ্লেষণ

কাপড়ে সামান্য ত্রুটি সৃষ্টি হইলে মালিক গাসিবের নিকট হইতে উহা ফেরত নিবে এবং ত্রুটির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করিবে। কিন্তু বেশী ভেঁড়ার কারণে যেহেতু কাপড়ের মূল্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পায়, তাই মালিক ইচ্ছা করিলে উক্ত কাপড় গাসিবকে ছাড়িয়া দিয়া তাহার নিকট হইতে উহার মূল্যও আদায় করিতে পারে, অথবা কাপড় ফেরত লইয়া হেঁড়ার কারণে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পাইয়াছে সেই পরিমাণ ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারে। রং করার ক্ষেত্রেও মালিক কাপড় গাসিবকে ছাড়িয়া দিয়া তাহার নিকট হইতে উহার মূল্য আদায় করিতে পারে অথবা রং করার কারণে কাপড়ের যতটুকু মূল্য বৃদ্ধি পাইয়াছে তত পরিমাণ অর্থ প্রদান করিয়া কাপড় ফেরত নিতে পারে।

ধারা-৬৪৩

মাল গসব করিয়া উধাও করিলে (ক) গাসিব গসবকৃত মাল গায়েব হওয়ার ক্ষেত্রে মালিককে উহার মূল্য প্রদান করিলে, ঐ মাল প্রাপ্তির পর উহার মালিকানা গাসিবের নিকট বর্তিবে।

৩৪৮

‘ 

(খ) অতঃপর গসবকৃত মাল আবিষ্কৃত হইলে যদি উহার মূল্য গাসিব কর্তৃক পরিশোধিত মূল্যের অধিক হয় তবে-(১) পরিশোধিত মূল্য মালিক কর্তৃক নির্ধারিত হইয়া থাকিলে গাসিবই উহার মালিক হইবে;

(২) পরিশোধিত মূল্য গাসিব কর্তৃক তাহার শপথসহ নির্ধারিত হইয়া থাকিলে মালিক ইচ্ছা করিলে মূল্য ফেরত দিয়া মূল মালও ফিরাইয়া নিতে পারে অথবা উহা গাসিবকে ছাড়িয়া দিয়া তাহার নিকট হইতে বর্ধিত মূল্য আদায় করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

ইমাম শাফিঈর মতে গাসিব গসবকৃত মাল উধাও করিয়া রাখার পর মূল্য পরিশোধ করিলেও সে উহার মালিক হইবে না। কারণ গসব একটি যুলুম বা অন্যায় কাজ, যুলুমের দ্বারা মালের মালিকানাস্বত্ব অর্জিত হয় না। হানাফীমতে যেহেতু মালিক মূল্য গ্রহণ করিয়া স্বেচ্ছায় মালিকানাস্বত্ব ত্যাগের সম্মতি ব্যক্ত করিয়াছে, তাই গাসিব এখন উহার বৈধ মালিক সাব্যস্ত হইবে।

অনুরূপভাবে মাল পরে আবিষ্কৃত হইলে এবং উহার মূল্য মালিক কর্তৃক বা সাক্ষ্য-প্রমাণ দ্বারা স্থির করা হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্রেও মালিকের মালিকানাস্বত্ব ত্যাগের সম্মতি বিদ্যমান ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত মাল গাসিবই পাইবে। কিন্তু উক্ত মূল্য গাসিব কর্তৃক তাহার শপথসহ স্থির হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্রে মালিক অনিচ্ছা সত্ত্বেও উক্ত মূল্য গ্রহণে বাধ্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। তাই সে গাসিবের নিকট হইতে যে মূল্য গ্রহণ করিয়াছে তাহা তাহাকে ফেরত দিয়া মাল হস্তগত করিতে পারে অথবা চাহিলে গাসিবের নিকট হইতে বর্ধিত মূল্য আদায় করিয়া তাহার অনুকূলে মালের দাবি ত্যাগ করিতে পারে। কিন্তু মালের মূল্য মালিককে প্রদত্ত মূল্যের সমান অথবা উহার চাইতে কম হইলে ইমাম কারখীর মতে মাল ফেরত লওয়ার অধিকার মালিকের নাই। তবে যাহিরী রিওয়ায়াত অনুযায়ী মালিক আদায়কৃত মূল্য ফেরত দিয়া গাসিবের নিকট হইতে মাল ফেরত পাইতে পারে। এই শেষোক্ত মতই সঠিক।

৩৪৯

ধারা—৬৪৪ গসবকৃত মাল অন্য মালের সহিত মিশাইয়া ফেলিলে

(ক) গাসিব গসবকৃত মাল তাহার মালের সহিত মিলাইয়া একাকার করিয়া ফেলিলে এবং উভয়ের পৃথকীকরণ সম্ভব না হইলে মালিকের মালিকানা রহিত হইয়া যাইবে এবং গাসিব ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে।

(খ) মালের পৃথকীকরণ সম্ভব হইলে অর্থাৎ মিশ্রিত মাল একই প্রজাতিভুক্ত হইলে মালিক ইচ্ছা করিলে গাসিবের নিকট হইতে ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারে অথবা মিশ্রিত মাল উভয়ের মধ্যে বণ্টন করিয়া লইতেও পারে।

(গ) মিশ্রিত মাল বিনা আয়াসে অথবা স্বল্প আয়াসে পরস্পর পৃথক করা সম্ভব হইলে গাসিব মালিকের অংশ পৃথক করিয়া উহা তাহাকে প্রত্যর্পণ করিবে।

(ঘ) মিশ্রিত মাল পরস্পর পৃথক করা যথেষ্ট আয়াসসাধ্য হইলে মালিক গাসিবের নিকট হইতে ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারে, অথবা মিশ্রিত মাল উভয়ের মধ্যে আনুপাতিকভাবে বণ্টন করিয়াও লইতে পারে।

বিশ্লেষণ

মিশ্রিত মাল পরস্পর পৃথক করা সম্ভব না হইলে মালিকের মালিকানা রহিত হইয়া যাওয়ার ব্যাপারে ফকীহগণ একমত। যেমন নারিকেল তৈল সরিষার তৈলের সহিত মিশ্রিত করা হইয়াছে। এই ক্ষেত্রে উভয়ের পৃথকীকরণ সম্ভব নহে। পৃথকীকরণ সম্ভব হইলে, যেমন গাসিবের ও মালিকের একই প্রজাতিভুক্ত মাল পরস্পর মিশ্রিত করা হইয়াছে অর্থাৎ গমের সহিত গম অথবা দুধের সহিত দুধ মিশ্রিত করা হইয়াছে, এই ক্ষেত্রে মালিক ইচ্ছা করিলে তাহার গমের মূল্যও আদায় করিতে পারে অথবা মিশ্রিত গম উভয়ের মধ্যে বণ্টন করিয়াও লইতে পারে। মিশ্রিত মাল পরস্পর পৃথক করা বেশ আয়াসসাধ্য হইলে, যেমন ধানের সহিত গম মিশ্রিত করা হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে মালিক গাসিবের নিকট হইতে তাহার মালের মূল্য আদায় করিবে। মূল্য আদায় করার অথবা মিশ্রিত মালে শরীক হওয়ার এখতিয়ার মালিকের থাকিবে কি না তাহাতে মতভেদ আছে। ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (র)-এর মতে মালিক এখতিয়ার লাভ করিবে। আর ইমাম

৩৫০

আবু হানীফা (র)-এর মতে মালিককে ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করিতে হইবে। ১৩

ধারা-৬৪৫ স্থাবর মাল গসব করিলে (গাসাবুল ‘ইকার) (ক) স্থাবর মাল গসব করিলে গাসিব তাহা কোন পরিবর্তন বা ক্ষতিসাধন ব্যতীতই মালিককে ফেরত প্রদান করিতে বাধ্য এবং গাসিবের কোন কাজের (বিসাইল-গাসিব ওয়া ফিলিহি) দ্বারা উক্ত মালের মূল্যহ্রাস পাইলে সে উহার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।

উদাহরণঃ গাসিব গসবকৃত বাড়ির অংশবিশেষ ভাঙ্গিয়া ফেলিলে অথবা বসবাসের কারণে তাহা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে অথবা আগুন লাগিয়া পুড়িয়া গেলে গাসিবকে উহার জন্য ক্ষতিপূরণ করিতে হইবে।

(খ) গসবকৃত মাল জমি হইলে এবং গাসিব উহাতে বাড়িঘর নির্মাণ করিলে বা গাছপালা রোপণ করিলে আদালত তাহাকে উক্ত বাড়িঘর ও গাছপালা সরাইয়া নিয়া জমি উহার মালিককে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দিবে। অপসারণের ফলে জমির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে জমির মালিক বাড়িঘর ও গাছপালার মূল্য, অপসারণের ( আনুমানিক) খরচ বিয়োগ করিয়া, গাসিবকে প্রদান করিয়া বাড়িঘর ও গাছপালাসহ জমি ফেরত নিতে পারে। কিন্তু বাড়িঘর ও গাছপালার মূল্য জমির মূল্যের চাইতে অধিক হইলে এবং তাহা শরীআত প্রসূত ধারণার ভিত্তিতে (

~ ~ ) নির্মিত ও রোপিত হইলে গাসিব জমির মালিককে উহার মূল্য পরিশোধ করিয়া জমির মালিকানা লাভ করিবে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি ওয়ারিসীসূত্রে প্রাপ্ত বাড়ির সংলগ্ন জমিখণ্ডে (আরাসাহ) নিজব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করিল, যাহার মূল্য জমিখণ্ডের মূল্যের পরিমাণের চাইতে অধিক। অতঃপর উক্ত জমিখণ্ডের প্রকৃত মালিক আসিয়া, উপস্থিত হইল। এই অবস্থায় বাড়ি নির্মাতা উক্ত মালিককে জমিখণ্ডের মূল্য প্রদান করিয়া উহার মালিকানাস্বত্ব গ্রহণ করিবে।

৩৫১

(গ) মালিতে মনুমতি না লইয়া কোন ব্যক্তি তাহার জমি চাষাবাদ করিলে, অতঃপর মালিক তাহা ফেরত দাবি করিলে চাষাবাদকারী তাহা ফেরত দিতে বাধ্য এবং ভূমি কর্ষণের কারণে উহার মূল্য কমিয়া গেলে তাহার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতেও বাধ্য।

(ঘ) মালিকের অনুমতি না লইয়া কোন ব্যক্তি তাহার জমি কর্ষণ করিয়া বীজ বপনের জন্য প্রস্তুত করার পর মালিক তাহা ফেরত চাহিলে কৰ্ষণকারী তাহা ফেরত দিতে বাধ্য এবং সে কর্ষণ বাবদ ব্যয় দাবি করিতে পারিবে না।

(ঙ) কোন ব্যক্তি মালিকের অনুমতি না লইয়া তাহার জমিতে কোন বস্তু রাখিলে মালিকের দাবির প্রেক্ষিতে সে উহা অপসারণ করিয়া জমি খালি করিয়া দিতে বাধ্য।

বিশ্লেষণ

গসবকৃত স্থাবর মাল গাসিবের দখলে থাকা অবস্থায় ধ্বংস হইয়া গেলে ইমাম আবু হানীফা ও আবু ইউসুফ (র)-এর মতে ইহার জন্য গাসিব দায়ী হইবে না, কিন্তু ইমাম মুহাম্মাদ ও শাফিঈ (র)-এর মতে ইহার জন্য গাসিব ক্ষতিপূরণ করিতে বাধ্য। ১৪ গসবকৃত স্থাবর মাল গাসিবের ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হইলে ইমাম আবু হানীফা,আবু ইউসুফ, মুহাম্মাদ ও শাফিঈ (র) সকলের মতে গাসিব ইহার ক্ষতিপূরণ করিতে বাধ্য।১৫।

গসবকৃত জমি গাসিবের চাষাবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হইলে ইহার জন্য তাহাকে জমি ফেরত দেওয়ার সংগে সংগে ক্ষতিপূরণও প্রদান করিতে হইবে। ১৬ কেহ অপরের জায়গা দখল করিয়া তাহাতে বাড়িঘর নির্মাণ করিলে ইহার উপর হইতে মালিকের মালিকানা রহিত হইয়া যাইবে এবং গাসিবের মালিকানা বর্তাইবে এবং গাসিবকে উক্ত জমির মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে, কিন্তু ইমাম শাফিঈ (র)-এর মতে মালিকের মালিকানা অটুট থাকিবে।১৭।

কেহ অপরের জমি গসব করিয়া তাহাতে বৃক্ষ রোপণ করিলে বা বাড়িঘর নির্মাণ করিলে আদালত তাহাকে ইহার মূলোৎপাটন করিয়া জমি মালিককে ফেরত প্রদান করিতে নির্দেশ দিবে। কেননা মহানবী (স) বলিয়াছেনঃ

ليس لعرق ظالم حق۔

“কেহ অপরের জমি অন্যায়ভাবে দখলের উদ্দেশ্যে তাহাতে কিছু রোপন করিলে তাহাতে তাহার কোন অধিকার বর্তাইবে না”।

উচ্ছেদকার্যে জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে মালিক ইচ্ছা করিলে গাসিবের দ্বারা নির্মিত বাড়িঘর ও রোপিত গাছপালার মূল্য প্রদান করিয়া তাহার মালিকানা অর্জন করিতে পারে। তবে নির্ণীত মূল্য হইতে উচ্ছেদের অনুমানিক খরচ বিয়োগ হইবে। এই পন্থা অবলম্বন করিলে কোন পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। ২০

ধারা--৬৪৬

গসবকৃত মাল গসবকারীর নিকট হইতে গসব হইলে (ক) কোন ব্যক্তি গাসিবের নিকট হইতে গসবকৃত মাল পুনরায় গসব করিলে সেও ‘গাসিব’ গণ্য হইবে এবং উক্ত মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সে দায়ী হইবে। এই অবস্থায় মালিক ইচ্ছা করিলে প্রথমোক্ত গাসিবের নিকট হইতে অথবা শেষোক্ত গাসিবের নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারে, অথবা আংশিক ক্ষতিপূরণ প্রথমোক্ত গাসিবের নিকট হইতে এবং আংশিক শেষোক্ত গাসিবের নিকট হইতে আদায় করিতে পারে। এমনকি প্রথমোক্ত গাসিব ক্ষতিপূরণ করিতে বাধ্য হইলেও মালিক শেষোক্ত গাসিবের নিকটও ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারে, কিন্তু শেষোক্ত গাসিব ক্ষতিপূরণ দিলে মালিক প্রথমোক্ত গাসিবের নিকট ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারে না।

(খ) শেষোক্ত গাসিব গসবকৃত মাল প্রথমোক্ত গাসিবের নিকট ফেরত দিলে সে একা দায়মুক্ত হইয়া যাইবে; কিন্তু মূল মালিকের নিকট ফেরত দিলে উভয়ই দায়মুক্ত হইয়া যাইবে।

ধারা-৬৪৭

ইতলাফ-এর সংজ্ঞা

কোন মাল হইতে যে উপকার লাভ করা যায় সেই উপকারের বিলোপসাধনকে ইতলাফ ( 3) বলে।

1.পিবদ্ধ ইসলামী আইন

বিশ্লেষণ

ইতলাফের শাব্দিক অর্থ ক্ষতিসাধন বা ধ্বংসসাধন অর্থাৎ কোন জিনিস দ্বারা যে উপকার লাভ করা যায় তাহা বিলুপ্ত হইয়া যাওয়া। ইহা এক ধরনের ক্ষতিসাধন। মহান আল্লাহর বাণীঃ

و ان عاقبتم فعاقبوا بمثل ما عوقبتم به.

“যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর তবে ঠিক ততখানি করিবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হইয়াছে” –(সূরা নাহলঃ ১২৬)।

و من عاقب بمثل ماعوقب به ثم بغى ينصره

“কোন ব্যক্তি নিপীড়িত হইয়া তুল্য প্রতিশোধ গ্রহণ করিলে এবং পুনরায় সে অত্যাচারিত হইলে আল্লাহ অবশ্যই তাহাকে সাহায্য করিবেন”-(সূরা হজ্জঃ ৬০)। মহানবী (স.) বলেনঃ

لا ضرر ولا ضرار في الاسلام –

“ইসলামে (থাকিয়া) ক্ষতি করাও যাইবে না এবং ক্ষতি সহাও যাইবে না।”২১ ইতলাফ বা ক্ষতিসাধন মানবদেহ বা মানবজীবনেরও হইতে পারে এবং মানুষের মালিকানাধীন মালেরও হইতে পারে। প্রথমোক্ত প্রকারের ক্ষতিসাধনের প্রতিকার সম্পর্কে কিসাস ও হদ্দ-এর অধীন আলোচনা করা হইয়াছে। এখানে মালের ক্ষতিসাধনের প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হইবে।

ধারা-৬৪৮

ইতলাফের শ্রেণীবিভাগ ইতলাফ অর্থাৎ ক্ষতিসাধন নিম্নোক্ত চার প্রকারে বিভক্ত— (ক) সম্পূর্ণ মালের ক্ষতিসাধন;

(খ) মালের আংশিক ক্ষতিসাধন; (গ) মাল হইতে প্রাপ্ত উপকারিতার সম্পূর্ণ ক্ষতিসাধন; (ঘ) মাল হইতে প্রাপ্ত উপকারিতার আংশিক ক্ষতিসাধন।

৩৫৪

বিশ্লেষণ

মালের ‘সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিসাধন’ অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যে মালটি ব্যবহার করিয়া উপকৃত হয় সেই মালটির সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিসাধন করা। যেমন কোন ব্যক্তি তাহার নৌকা দ্বারা মানুষকে নদী পার করিয়া দেওয়ার বিনিময়ে ভাড়া আদায় করিয়া উপকৃত হইত। কোন ব্যক্তি নৌকাটিতে আগুন ধরাইয়া দিল। ফলে উহা সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হইল। এই দ্বিবিধ অবস্থায় বিচারক তাহার সুবিবেচনা অনুযায়ী ক্ষতিসাধনকারীর উপর. ক্ষতিপূরণ ধার্য

করিবেন।

‘মালের উপকারিতার সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিসাধন’ অর্থাৎ মাল মবিকল বিদ্যমান আছে কিন্তু তাহা হইতে প্রাপ্তব্য উপকারিতার সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিসাধন করা হইয়াছে। যেমন কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির দুধেল গাভীকে শত্রুতামূলকভাবে এমন ঔষধ সেবন করাইল যে, উহার দুধ আহরণ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব হইয়া গেল। এই ক্ষেত্রেও বিচারক তাহার সুবিবেচনা অনুযায়ী ক্ষতিসাধনকারীর উপর ক্ষতিপূরণ ধার্য করিবেন।

ধারা-৬৪৯ দামান (ক্ষতিপূরণ) বাধ্যকর হওয়ার শর্তাবলী ক্ষতিগ্রস্ত জিনিসের মধ্যে নিম্নলিখিত শর্তাবলী বিদ্যমান থাকিলে ক্ষতিপূরণ প্রদান বাধ্যকর হইবে— (ক) ক্ষতিগ্রস্ত জিনিস “মাল” হইতে হইবে, তাহা যেভাবেই উপার্জিত হউক;

(খ) ক্ষতিগ্রস্ত জিনিস মালে মুতাকাব্বিম হইতে হইবে; (গ) ক্ষতিসাধনকারীকে মানুষ হইতে হইবে; (ঘ) ক্ষতিপূরণ ধার্য করার মধ্যে কোন উপকার বিদ্যমান থাকিতে হইবে।

বিশ্লেষণ

ক্ষতিগ্রস্ত জিনিসটি ধারা (১৮৩) মোতাবেক ‘মাল’ হইতে হইবে। যদি উহা মাল না হয় অর্থাৎ হারাম বা নিষিদ্ধ জিনিস হয়, যেমন শূকর, মদ, মৃতজীব ইত্যাদি, তবে উহা ধ্বংস বা ক্ষতি করিলে কোনরূপ ক্ষতিপূরণ প্রদান বাধ্যকর হইবে না। কিন্তু হারাম জিনিস অমুসলিমের মালিকানাভুক্ত হইলে এবং তাহা

111ধবদ্ধ ইসলামী আইন

•ান মুসলিম বা অমুসলিম ব্যক্তি ধ্বংস করিলে উহার ক্ষতিপূরণ বাধ্যকর হইবে।

ক্ষতিগ্রস্ত জিনিসটি ‘মালে মুতাকাব্বিন অর্থাৎ যে মালের আর্থিক মূল্য আছে এইরূপ মাল হইতে হইবে। যেমন নদীর মাছ, আকাশে উড়ন্ত পাখি ধরিয়া হস্তগত না করা পর্যন্ত উহা মালও নহে এবং উহার আর্থিক মূল্যও নাই। কিন্তু উহা করায়ত্ত করার সংগে সংগে করায়ত্তকারীর মাল হিসাবে গণ্য হয় এবং তখন উহার আর্থিক মূল্যও সৃষ্টি হয়। এই জাতীয় মালকে ‘মালে মুতাকামি’ বলে (আরও দ্র. ধারা ১৯১)।

তৃতীয় শর্ত এই যে, মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্তকারীকে এমন হইতে হইবে যাহার উপর আইনত ক্ষতিপূরণ ধার্য করা যাইতে পারে। অতএব এক ব্যক্তির মাল অপর ব্যক্তির চতুষ্পদ জন্তু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে জন্তুর মালিকের উপর ক্ষতিপূরণ ধার্য হইবে না। কারণ বাকশক্তিহীন অবােধ প্রাণীর কৃত ক্ষতি ক্ষতিপূরণযোগ্য

নহে।

চতুর্থ শর্ত হইল, ক্ষতিগ্রস্ত জিনিসের জন্য ক্ষতিপূরণ ধার্য করার মধ্যে কোন লাভ বা উপকার বিদ্যমান থাকিতে হইবে। যেমন যুদ্ধরত শত্রুপক্ষের মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণে ক্ষতিপূরণ আরোপ করায় কোন উপকার নাই।

কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির মাল ধ্বংস করার সময় যদি অবহিত থাকে যে, মালটি তাহার নহে, অপরের মালিকানাভুক্ত, তাহা হইলে তাহার এই অজ্ঞতা তাহাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান হইতে রক্ষা করিতে পারিবে না। কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে কাহারও মাল ধ্বংস করিলে সে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, জ্ঞাতসারে এই কাজ করিলে সে ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়াও আল্লাহর কাছে গুনাহগার সাব্যস্ত হইবে এবং অজ্ঞাতসারে ঘটিলে গুনাহগার

হইবে না। ২২

ধারা-৬৫০

দামান-এর পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্ত মালের অনুরূপ মাল বাজারে সহজলভ্য হইলে ক্ষতিগ্রস্তকারী ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে অনুরূপ মাল ক্রয় করিয়া দিবে; আর অনুরূপ মাল সহজলভ্য না হইলে ইহার মূল্য প্রদান করিবে।

৩৫৬

বিশ্লেষণ

অপরের মাল গসব করার পর তাহা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সেই ক্ষেত্রে যেভাবে ক্ষতিপূরণ করিতে হয়, ইতলাফের বেলায়ও অনুরূপ নিয়ম প্রযোজ্য। অর্থাৎ মাল সহজলভ্য হইলে তাহা ক্রয় করিয়া দিতে হইবে, অন্যথায় উহার মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে। ২৩

ধারা-৬৫১ মালের ইতলাফ (ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন) (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির মাল, তাহার দখলে থাকা অবস্থায় অথবা তাহার নিয়োগকৃত আমানতদারের দখলে থাকা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা ইচ্ছা ব্যতীত, ধ্বংস বা ক্ষতিসাধন করিলে সে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে।

(খ) গসবকৃত মাল গাসিবের দখলে থাকা অবস্থায় কোন ব্যক্তি তাহা ধ্বংস বা ক্ষতি সাধন করিলে মালিক চাহিলে গাসিবের নিকট হইতেও ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারে অথবা ধ্বংসকারী বা ক্ষতিসাধনকারীর নিকট হইতেও ক্ষতিপূরণ আদায় করিতে পারে এবং এই শেষোক্ত অবস্থায় সে পুনরায় গাসিবের নিকট ক্ষতিপূরণ দাবি করিতে পারিবে না।

(গ) কোন ব্যক্তি আছাড় খাইয়া অপর ব্যক্তির মালের উপর পতিত হইলে এবং তাহাতে উক্ত মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে।

(ঘ) কোন ব্যক্তি নিজের মালিকানাভুক্ত মাল ধারণা করিয়া অপরের মাল ধ্বংস বা ক্ষন্ত্রিস্ত করিলে সে উহার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে।

(ঙ) কোন নাবালেগ অপর ব্যক্তির মাল ধ্বংস করিলে তাহার মাল হইতে উহার ক্ষতিপূরণ প্রদান বাধ্যকর হইবে। তাহার মাল না থাকিলে সে ক্ষতিপূরণ দিতে সক্ষম হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান স্থগিত থাকিবে, কিন্তু তাহার অভিভাবকের নিকট হইতে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাইবে না।

(চ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির দালানকোঠা প্রভৃতি ধ্বংস করিলে মালিক উহার মূল্য আদায় করিয়া তাহার নির্মাণ সামগ্রী ধ্বংসকারী ব্যক্তিকে প্রদান করিতে পারে অথবা নির্মাণ সামগ্রী নিজে রাখিয়া দিয়া মালের মোট মূল্য

11ধিবদ্ধ ইসলামী আইন

৩৫৭

হইতে উহার মূল্য বাদ দিয়া অবশিষ্ট মূল্য ধ্বংসকারীর নিকট হইতে আদায় করিতে পারে। কিন্তু গাসিব নির্মাণকার্য করিয়া থাকিলে এবং সে তাহা ধ্বংস করিলে সে দায়মুক্ত থাকিবে।

(ছ) কোন মহল্লায় আগুন লাগিলে সেই অবস্থায় কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির ঘর তাহার অনুমতি ব্যতীত অসদুদ্দেশ্যে ভাঙ্গিয়া ফেলিলে এবং ইত্যবসরে আগুন নিভিয়া গেলে সে উক্ত কার্যের জন্য দায়ী হইবে, তবে সরকারী কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাহা করিয়া থাকিলে দায়ী হইবে না।

(জ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির বিনা অনুমতিতে তাহার বাগানের বৃক্ষ কর্তন করিলে এই অবস্থায় মালিক ইচ্ছা করিলে কর্তনকৃত গাছ কতৃনকারীকে ছাড়িয়া দিয়া তাহার নিকট হইতে ইহার মূল্য আদায় করিতে পারে, অথবা কর্তন করার ফলে বৃক্ষের মূল্য যতখানি হ্রাস পাইয়াছে তত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ আদায় করিয়া গাছ রাখিয়া দিতে পারে।

(ঝ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করিলে প্রতিশোধস্বরূপ সে তাহার মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করিতে পারিবে না, যদি করে তবে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

উদাহরণঃ যায়েদ আমরের একটি গরু শত্রুতামূলকভাবে বিষ প্রয়োগে হত্যা করিয়াছে। এই অবস্থায় আমর প্রতিশোধস্বরূপ যায়েদের গরু বা মহিষ বা অন্য কোন সম্পত্তি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করার অনুমতি পাইবে না। সে তদ্রপ কার্য করিলে উহার জন্য দায়ী হইবে এবং তাহাকে ক্ষতিগ্রস্তকারী ব্যক্তিও নিজ কর্মের জন্য দায়ী হইবে।

(ঞ) কোন ব্যক্তি জাল মুদ্রা পাইয়া এবং উহা জাল জানিয়া অপর ব্যক্তিকে প্রদান করিলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

ধারা-৬৫২

ধ্বংসের কারণ হওয়া (ক) কোন ব্যক্তির প্রত্যক্ষ কাজের ফলে অপর ব্যক্তির মাল ধ্বংস বা উহার মূলহােস পাইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(খ) কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে অপর ব্যক্তির বাগানের বা ফসলের ক্ষেতে

৩৫৮

প্রবহমান পানির নালা বন্ধ করিয়া দিলে এবং উহার ফলে বাগানের গাছপালা, ফল এবং ক্ষেতের ফসল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(গ) কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে অপর ব্যক্তির বাগান অথবা ক্ষেতে পানি প্রবাহিত করিলে এবং উহার ফলে উক্ত বাগান বা ক্ষেত জলমগ্ন হইয়া ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(ঘ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পশুর খোঁয়াড় বা পাখির খাঁচার দরজা খুলিয়া রাখিলে এবং তাহা হইতে পশু ও পাখি পলাইয়া বা হারাইয়া গেলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(ঙ) কোন ব্যক্তির আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির শব্দ শুনিয়া ভীতসন্ত্রস্ত হইয়া অপর ব্যক্তির পশু দৌড়াইয়া পলায়ন করিলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে না, কিন্তু সে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুলি ছােড়ার কারণে উক্ত দুর্ঘটনা ঘটিলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(চ) কোন ব্যক্তির কাজের দ্বারা অপর ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে উহার জন্য তখনই দায়ী হইবে যখন সে উক্ত কাজ বেআইনীভাবে অথবা অপরের অধিকার খর্ব করিয়া করিয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হইবে।

উদাহরণঃ কোন ব্যক্তি জনগণের যাতাযাতের রাস্তার পার্শ্বে সরকারী অনুমোদন ব্যতীত একটি কূপ খনন করিল এবং উহাতে পতিত হইয়া অপর ব্যক্তির পশু নিহত বা আহত হইল। এই অবস্থায় সে উক্ত পশুর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। তবে তৃতীয় কোন ব্যক্তি উক্ত পশু উক্ত কূপে নিক্ষেপ করিলে উহার জন্য এই শেষোক্ত ব্যক্তিই দায়ী হইবে, অন্যায়ভাবে কূপ খননকারী দায়ী হইবে না। সে যদি নিজ মালিকানাভুক্ত জমিতে কূপ খনন করে এবং তাহাতে পতিত হইয়া উক্ত দুর্ঘটনা ঘটে তবে উহার জন্য সে দায়ী হইবে

।২৫

ধারা—৬৫৩

যাতায়াতের রাস্তায় সংঘটিত দুর্ঘটনা (ক) কোন ব্যক্তি জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা দিয়া মাল বা অন্য কিছু বহন করিয়া লইয়া যাওয়ার সময় তাহা পতিত হওয়ার ফলে অপরের ক্ষতি

৩৫৯

হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(খ) কোন ব্যক্তি সরকারের অনুমোদন ব্যতীত পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য জনপথে বসিলে, পথােপরি কিছু রাখিলে বা নির্মাণ করিলে এবং উহার দ্বারা কোন ক্ষতি হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে।

(গ) কোন ব্যক্তির বাড়ির ছাটদেওয়াল ধ্বসিয়া পড়ার ফলে অপর ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে না, তবে তাহাকে দেওয়াল ধ্বসিয়া পড়ার আশংকা আছে বলিয়া সতর্ক করা সত্ত্বেও সে কোনরূপ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করিলে এবং উহা ধ্বসিয়া পড়ায় অপরের ক্ষতি হইলে সে উহার জন্য দায়ী হইবে। ২৬

তথ্য নির্দেশিকা

১. হিদায, কিতাবুল গাস্ব, ৩খ, পৃ. ৩৫৬! তুর্কী মাজাল্লায় বলা হইয়াছে (ধারা-৮৮১)ঃ

النصب هو اخذ وضبط مال احد بدون اذنه.

২. সূর: বাবাঃ ১৮৮; সূরা নিসাঃ ২৯! : ৩. আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবন মাজা, মুসনাদে আহমাদ, তাবারানী, হিদায়ার পার্শ্বীক! হইতে, ৩খ, পৃ. ৩৫৭, টীকা ৩। ৪. তিরমিযী, কিতাবুল ফিতান, বাব ৩; আবু দাউদ, কিতাবুল আদাব, বাবুল মাযাহ (হিদাযা, ৩থ, পৃ. ৩৫৭, উকা ৪)। ৫. হিযা, এখ, পৃ. ৩৫৭। ৬. হিদা, কিতাবুল গাসব, ৩খ, পৃ. ৩৫৬-৫, ৩৫৮, ৩৬৫। ৭. হিদায়া, ৩খ, পৃ. ৩৬২। ৮. হিদায়া, ৩থ, পৃ. ৩৬০। ৯. হিদায়া, ৩খ, পৃ. ৩৬২। ১০. হিদায়া, ৩খ, পৃ. ৩৬২-৬৩। ১১. হিদাযা, ৩থ, পৃ. ৩৬৪। ১২. হিদায়া, ৩খ, পৃ. ৩৬৫। ১৩. আলমগীরী, কিতাবুল গাসব, ৫ম বাব। ১৪. হিদায়া, কিতাবুল গাসব, ৩ খ, পৃ.৩৫৭-৮।

৩৬০

১৫. হিদায়া, ৩, পৃ. ৩৫৮। ১৬. ঐ, ৩থ, পৃ. ৩৫৮। ১৭. ঐ, পৃ. ৩৬২। ১৮. ঐ, ৩২, পৃ. ৩৬৩। ১৯. উপরোক্ত হাদীস ছয়জন সাহাবী হইতে বর্ণিত। সাঈদ ই যায়দ (রা)- আবু দাউদ, তিরমিযী।

উবাদা ইবনুস সামিত (রা- তাবারানীর আবদুলাহ ইবন আমর (রা)- তাবারানী। আমর ইবন আওফ (রা)- ইসহাক, বাযযার, তাবারানী’। আইশা (রা)- আবু দাউদ তায়ালিসী, দারু কুতনী, বাযযার।

অপর এক সাহাবী থেকে- আবূ দাউদ। ২০. হিদায়া, কিতাবুল গাব, ৩খ, পৃ. ৩৬৩। ২১. মুওয়াত্তা ইমাম মালেক, মুসনাদে আহমাদ, ইবন মাজা, তাবারানী ( ফিকহল ইসলামী হইতে।

এখানে উধৃত, ৬খ, পৃ. ৫৫৩)। ২২. বাদাইউস সানাই, কিতাবুল গাস্ব, বাব ইতলাফ, ৭খ। ২৩. পূর্বোক্ত বরাত দ্র.। ২৪. বাদাইউস সানাই, কিতাবুল গাসব, বাবুল ইতলাফ, ৭খ। ২৫. তুর্কী মাজাল্লা, ধারা ৯২২-৯২৫। ২৬. তুর্কী মাজাল্লা, ধারা- ৯২৬-৯২৮।

দাবি

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *