১৩ জুন, রবিবার ১৯৭১
দুপুর হতে হতে বহুজনের মুখে বিস্তারিত খবর জানা গেল। তিনটে গ্রেনেড গতকাল ইন্টারকনের পোর্চেই বিস্ফোরিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা গেরিলাদের কাজ এটা। বিশ্বব্যাঙ্ক মিশনের লোকজন ও উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিনকে একটুখানি জানান দেওয়া যে পূর্ব পাকিস্তান আর নেই। এটা এখন যুদ্ধরত বাংলাদেশ।
রুমী আগামীকাল যাবে। ওর প্যান্টের মুড়ি খুলে একশো টাকার নোট বের করে জমা দিতে হয়েছে। এখন আবার পঞ্চাশ টাকার নোট ভাঁজ করে সেলাই করলাম। আগের মতো অত দেওয়া গেল না। মুড়ি বেশি মোটা দেখায়। খানসেনারা সার্চ করার সময় কোমর হাতিয়ে দেখে।
সন্ধ্যার পর রুমী নাদিমকে বাসায় নিয়ে এল। মেজর (অবঃ) কাজি নুরুজ্জামানের ছেলে। মেজর জামান ক্র্যাকডাউনের সঙ্গে সঙ্গেই ওপারে চলে গেছেন। বর্ডার সংলগ্ন কোনো এক রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধে রত আছেন। ওঁর স্ত্রী সুলতানা জামান এবং দুই মেয়ে নায়লা এহমার ও লুবনা মরিয়ম মে মাসে চলে গেছে ওপারে। বাকি শুধু নাদিম। এখন রুমীর সঙ্গে যাবে। আজ রাতটা এখানেই থাকবে।
রাত নটার দিকে নাদিমের মামা এলেন ওর সঙ্গে দেখা করতে। আর এল সাদ আন্দোলিব। রুমীর অভিন্নহৃদয় বন্ধু। সাদ আবার নাদিমের ফুফাত ভাইও বটে। ওরা খানিকক্ষণ থেকে তারপর চলে গেছে।