একাদশ অধ্যায় – অংশীদারী ও যৌথ মূলধনী কারবার
ধারা-২৪১ অংশীদারী কারবার ও উহার শ্রেণীবিভাগ (ক) কোন বস্তুতে একাধিক ব্যক্তির যৌথ মালিকানাকে অংশীদারিত্ব ( JI) বলে।
(খ) অংশীদারিত্ব দুই ভাগে বিভক্ত
(১) মালিকানায় অংশীদারিত্ব (শিৰাতুল মি)। কোনরূপ চুক্তি ব্যতীত দুই বা ততোধিক ব্যক্তির বয়ং কোন বস্তুতে আশীদার বা মালিক হওয়াকে ‘শিরকাতুল মিল’ (lus.) বলে।
(২) চুক্তিভিতিব অংশীদারিত্ব (শিরকাতুল আব্দ) : চুক্তির মাধ্যমে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মূলধন ও উহা হইতে প্রাপ্ত মুনাফায় শরীক বা অংশীদার হওয়াকে ‘শিকাতুল আ’ (Jist) বলে।
(৩) একের প্রস্তাব ও অপরের সম্মতি প্রদানের মাধ্যমে শিরকাতুল আম্দ। সম্পন্ন হয়।
বিশ্লেষণ
শিরকাত (55) শব্দের অর্থ শমীক বা অংশীদারের অংশ। দুই বা ততোধিক অংশের এমনভাবে মিশ্রিত হইয়া যাওয়া যে, পরশর পৃথক করা যায় না। এখানে শব্দটি কোন বস্তুতে একাধিক ব্যক্তির অংশীদার হওয়া বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হইয়াছে।
মালিকানায় অংশীদারিত্ব (শিরকাতুল মিল্ক), যেমন কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিসগণ কোনরূপ চুক্তি ব্যতীতই তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তির অংশীদার বা মালিক হয়।
শিরকাতুল আকদ হই-চুক্তির মাধ্যমে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মূলধন বিনিয়োগ করিয়া উহা হইতে প্রাপ্ত মুনাফায় অংশীদার হওয়া। এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বলিল, আমি তোমাকে এই কাজে শরীক করিলাম। অপর ব্যক্তি বলিল, আমি কবুল করিলাম। এই অধ্যায়ে শিৱকাত’ বা ‘শিরকাতুল আফ’ পরিভাষা
৪১০
অংশীদারী বা যৌথ মূলধনী কারবার বুঝাইতে ব্যবহৃত হইয়াছে। শিরকাতুল মিলক সম্পর্কে আমরা এই অধ্যায়ে আলোচনা করিব না।
অংশীদারী বা যৌথ মূলধনী কারবারে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মূলধন যোগান দেয়, একত্রে ব্যবসা পরিচালনা করে এবং লাভ-লোকাসনে অংশীদার হয়। মহানবী (সা)-এর আবির্ভাবকালেও এই ব্যবসার প্রচলন ছিল। তিনি ব্যবসায়ের এই পদ্ধতি বহাল রাখেন। নিম্নোক্ত আয়াতে অংশীদারী কারবার অনুমোদন করা হইয়াছে?
ولا تأكلوا أموالكم بينكم بالباطل الأ أن تكون تجارة عن
. I “তোমরা পরস্পরের মাল বাতিল পন্থায় আসা করিও না, তবে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসায়ের মাধ্যমে লাভবান হইতে পার” (সুরা নিসা : ২৯)।
ধাৰা-২৪২ অংশীদারী কারবারের (শিরকাতুল আক) শ্রেণীবিভাগ অংশীদারী কারবার নিম্নোক্ত চার শ্রেণীতে বিভক্ত
(ক) সম-অংশীদারী কারবার (শিরকাতুল মুফাওয়াদা) : অংশীদারগণ যদি এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, তাহারা তাহাদের মূলধন এবং উহা হইতে প্রাপ্ত লাউ-লোকসানে ও ঋণ পরিশোধে সমভাবে অংশীদার হইবে এবং তাহাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বরাবর হইবে, তাহা হইলে ইহাকে ‘সম-অংশীদারী কারবার বা ‘শিরকাতুল মুফাওয়াদা’ (Ljlis০) বলে।
(খ) অসম-অংশীদামী ফারবার শিরকাতুল ইনান) : কোন ব্যবসায়ে অংশীদার গণের মূলধন, দায়িত্ব ও কর্তব্য, মুনাফার অংশ ইত্যাদি সমান সমান না হইলে তাহাকে ‘অসম-অংশীদারী কারবার’ বা শিকাতুল ইনান (jJlus 🙂 বলে।
(গ) পেশাভিত্তিক অংশীদারী কারবার (শিরকাতে সানাই)ঃ একই পেশার দুই বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে তাহাদের পেশা ভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করিয়া উহা হইতে উদ্ভূত লাভ-লোকসানে অংশীদার হওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইলে ঐ ব্যবসাকে পেশাভিক্তিক অংশীদারী কারবার’ বা শিরাতে সানাই ()
০) বলে। * (ঘ) সুনাম ভিত্তিক অংশীদারী কারবার (শিরকাতুল উজুহ) ও দুই বা ততোধিক ব্যক্তি কোন মূলধন ব্যতীত তাহাদের স্ব স্ব প্রতিপত্তি ও বিশ্বস্ততার ভিত্তিতে ধারে মাল ক্রয় করিয়া নগদ বিক্রয় করিবার এবং তাহা হইতে উত লাভ-লোকসানে শরীক হওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইলে তাহাকে ‘সুনাম ভিত্তিক অংশীদারী কারবার বা মিরকাতুল উজুহ (ese Jis) বলে।
৪১১
ধারা-২৪৩ অংশীদারী কারবারের (শিরকাতুল আল) সাধারণ শর্তাবলী (ক) যে কোন প্রকার শিরকাতুল আম্দ-এ ওয়াকার বৈশিষ্ট্য যুক্ত হইবে এবং শরীগণকে বুদ্ধিমান ও দায়িত্ব সচেতন হইতে হইবে।
(খ) শিরকাতুল মুফাওয়াদায় প্রতিনিধিদের বৈশিষ্ট্যসহ জামানতের বৈশিষ্ট্যও যুক্ত হইবে।
(গ) শিরকাতুল ইনানে শুধুমাত্র ওয়াকালার বৈশিষ্ট্য যুক্ত হইবে, কাফালার বৈশিষ্ট্য নহে।
(খ) অংশীদারগণের মধ্যে মুনাফা কিভাবে বন্টিত হইবে তাহা সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকিতে হইবে, অন্যথায় শিল্পকাত ফাসিদ গণ্য হইবে।
(ঙ) অংশীদারগণের মধ্যে মুনাফা বণ্টনের অনুপাত সুনির্দিষ্ট হইতে হইবে, কোন অংশীদারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের শর্ত রাখিলে শিরকাত বাতিল গণ্য হইবে।
বিশ্লেষণ
শিরকাতুল আম্দ-এ অর্থাৎ অংশীদারী বা যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ে অংশীদারগণ পরস্পরের প্রতিনিধি হিসাবে গণ্য। তাহাদের একজন অপরজনের পক্ষে মালের ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়ায় মাল গ্রহণ, পাওনাদারের পাওনা পরিশোধ, বকেয়া আদায় ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করিতে পারে। এইজন্য অংশীদারী কারবারের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইতে হইলে অংশীদারগণের অবশ্যই বুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন হওয়া এবং দায়দায়িত্ব অনুধাবনে সক্ষম হওয়া আবশ্যক।
শিরকাতুল মুফাওয়াদায় অংশীদারগণের পরস্পরের প্রতিনিধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরস্পরের কাফিল অর্থাৎ জামিনদারও। অতএব যে কোন ব্যবসায়িক চুক্তি পালনের ক্ষেত্রে এক শরীক অপর শরীকের যিম্মাদার গণ্য হইবে। কিন্তু শিরকাতুল ইমানের বেলায় অংশীদারগণ কেবল পরস্পরের প্রতিনিধি গণ্য হইবে, জামিনদার নহে। চুক্তিপত্রে জামিনদার হওয়ার শর্ত আরোপ করিলে তাহা শিরকাতুল মুফাওয়াদায় পরিণত হইবে।
শিরকাতুল উতূহ শিরকাতুল মুফাওয়াদার অনুরূপ অর্থাৎ শরীকগণ পরস্পরের প্রতিনিধিও এবং জামিনদারও। তবে চুক্তিপত্রে জামিনদার হওয়ার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান না থাকিলে তাহা শিরকাতুল ইনানের আওতাভুক্ত হইবে।
ধারা-২৪৪
অংশীদারী কারবারের সহিত সংশ্লিষ্ট কিছু বিধান (ক) সাটি ফাজ যেভাবে সম্পাদন করিতে হয় সেইভাবে সম্পাদিত হইতে হইবে এবং কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী তার মূল্য নিরূপিত হইবে, এবং সে কারণে একের কর্ম অন্যের কর্ম হইতে বেশি মূল্যবান হইতে পারে।
৪১২
(খ) কাজের দায়িত্ব বহনও কর্ম হিসাবে গণ্য হইবে।
(গ) মূলধন বিনিয়োগ করিয়া অথবা শ্রম বিনিয়োগ করিয়া যেমন মুনাফায় অংশীদার হওয়ার অধিকার সৃষ্টি হয় অরূপ কাজের দায়দায়িত্ব বহন করিলেও মুনাফায় অংশীদার হওয়ার অধিকার সৃষ্টি হয়।
(ঘ) মূলধন অথবা শ্রম বিনিয়োগ অথবা দায়িত্ব বহন ইহার কোনটিই না করিলে মুনাফায় অংশীদার হওয়ার অধিকার সৃষ্টি হয় না।
(ঙ) যে কোন অংশীদার চুক্তিপত্রে উল্লিখিত শর্ত মোতাবেক মুনাফার অংশীদার হইবে, এমনকি শ্রম বিনিয়োগের শর্ত থাকা সত্তেও শ্রম বিনিয়োগ না করিলেও।
(চ) শরীকগণ ব্যবসায়ে বিনিয়োগকৃত সম্পত্তির ক্ষেত্রে পরস্পরের আমানতদার এবং উক্ত বিনিয়োগ আমানত হিসাবে গণ্য; উক্ত সম্পত্তি কোন অংশীদারের হাতে তাহার অবহেলা বা ত্রুটি ব্যতীত ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হইলে উহার জন্য অপর অংশীদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে সে দায়বদ্ধ হইবে না।
(ছ) অংশীদারগণের প্রদও মূলধন সমানুপাতে হউক অথবা অসমানুপাতে হউক তাহা যৌথ সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হইবে।
(জ) অংশীদারগণের সংখ্যা দুইন হইলে এবং তাহাদের একজন মৃত্যুবরণ ফৰিলেঅথবা পাগল হইয়া গেলেতাহাদেরঅংশীদারী কারবারের বিলুণ্ডি ঘটিবে কিন্তু অংশীদারগণের সংখ্যা দুইজনের অধিক হইলে তাহাদের কোন একজনের মৃত্যুতে অথবা বদ্ধ পাগল হওয়ায় অংশীদারী কারবারের বিলুণ্ডি ঘটিবে না।
(ঝ) কোন একজন অংশীদার অংশীদারী কারবার বাতিল (L) করিলে এবং তাহা অপর অংশীদারগণ অবহিত থাকিলে উক্ত কারবারের বিলুপ্তি ঘটিবে, অন্যথায় তাহারা অবহিত না হওয়া পর্যন্ত বিলুপ্তি ঘটিবে না।
(ঞ) অংশীদারী কারবার বিলোপ করিলে উহার নগদ অর্থ এবং আদায়যোগ্য ঋণ অংশীদারগণের সকলের মধ্যে বন্টিত হইবে; কোন অংশীদারের ভাগে নগদ অর্থ এবং কোন অংশীদারের ভাগে আদায়যোগ্য ঋণ বটন করিলে তাহা সিদ্ধ ( ৭) হইবে না।
(ট) কোন অংশীদার অংশীদারী কারবারের কিছু পরিমাণ সম্পত্তি গ্রহণ করিলে এবং উহা ব্যবহারকালে উহার কথা ভুলিয়া যাওয়া অবস্থায় মারা গেলে অপরাপর অংশীদারগণের প্রাপ্য অংশ তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হইতে পরিশোধযোগ্য হইবে।
বিশ্লেষণ
কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী অংশীদারগণের প্রাপ্য মুনাফার অনুপাত অসম হইতে পারে। কারণ অংশীদারগণের কাজের আর্থিক মূল্য পরস্পর কমবেশী হইতে পারে অর্থাৎ একজনের কাজ বেশি মূল্যবহ এবং অপরজনের কাজ তদপেক্ষা কম মূল্যবহ হইতে পারে। একজন ব্যবসায়িক কাজে অপরজন অপেক্ষা অধিক যোগ্য, দক্ষ ও প্রয়োজনীয় হইতে পারে। তদনুযায়ী তাহাদের প্রাপ্য মুনাফার অংশও অসম হইতে পারে।
৪১৩
আবার সরাসরি কাজ না করিয়াও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করিয়া দিলে বা কাজের দায়দায়িত্ব বহন করিলেও কাজে অংশগ্রহণ করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইতে পারে। যেমন কোন ব্যক্তি একজন দক্ষ কারিগরকে নির্দিষ্ট কিছু উৎপাদনের জন্য তাহার দোকানে বসাইল এবং তাহারা এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হইল যে, উক্ত কাজ হইতে উদ্ভূত মুনাফা দুইজনে সমানুপাতে ভাগ করিয়া লইবে। তাহাদের এইরূপে চুক্তিবদ্ধ হওয়া বৈধ। এখানে দোকানের মালিক দুইটি কারণে মুনাফায় অংশীদার সাব্যস্ত হইতেছে। এক, সে কাজের দায়দায়িত্ব বহন করিতেছে এবং দ্বিতীয়ত, সে তাহার দোকানঘর কারিগরকে ব্যবহার করিতে দিতেছে।
তিনভাবে কারবারের মুনাফায় অংশীদার হওয়া যায়। কারবারে মূলধন বিনিয়োগ করিয়া, শ্রম বিনিয়োগ করিয়া অথবা কারবারের দায়দায়িত্ব বহন করিয়া। যেমন মুদারাবা কারবারে এক অংশীদার মূলধন এবং অপর অংশীদার শ্রম বিনিয়োগ করিয়া উদূত মুনাফায় অংশীদার হয়।
অনুরুপভাবে কোন ব্যক্তি যদি কোন কারিগরকে নির্দিষ্ট কোন কাজের জন্য শিক্ষানবিশ নিয়োগ করে এবং উৎপাদিত মালের অর্ধেক মুনাফা তাহাকে দেওয়ার এবং অর্ধেক নিজে গ্রহণের চুক্তি করে তবে তাহা বৈধ পণ্য হইবে। এখানে শিক্ষানবিশ শ্রম বিনিয়োগের এবং বিনিয়োগকর্তা »জের দায়িদায়িত্ব গ্রহণের জন! মুনাফায় অংশীদার হইয়াছে।
কিন্তু মূলধন অথবা শ্রম বিনিয়োগ না করিয়: অথবা দায়দায়িত্ব অর্থাৎ বুকি বহন না করিয়া কোন কারবারের মুনাফায় অংশীদার হওয়া বৈধ নহে।
ব্যবসায়ের মুনাফা চুক্তিপত্রে উল্লিখিত শর্ত মোতাবেক অশীদারগণের মণ্যে বর্ণিত হইবে এবং মুনাফার অনুপাত এমন : ২, ১:৩, ১ :, ১ ভতি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকিতে হইবে। কেন তাংশীদারের কাজ করার কথা থাকা সত্ত্বেও কাজ। করলেও সে মুনাফায় ‘অংশীদার হইবে। বরণ অংশীদারী কাবরে ০.শাদারগণ
পরস্পরের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে।
অংশীদারী কারবারে অংশীদারগণ যেমন পরস্পরের প্রতিনিধি, দ্রুপ তাহারা পরস্পরের আমানতদারও। অতএব কোন অংশীদারের অবহেলা বা ত্রুটির জন্য কারবারের সম্পত্তি ক্ষস্তি বা ধ্বংস হইলে তাহার জন্য দোয়া হইবে, কিন্তু তাহার কোনরূপ অবহেলা ব্যতীত ধ্বংস হইলে উহার জন্য সে দায়ী হইবে না।
ধারা-২৪৫ সম-অংশীদারী কারবার (শিরকাতুল মুফাওয়াদা) (ক) দুই বা ততোধিক বালেগ ব্যক্তির পারস্পরিক প্রস্তাব ও সম্মতি প্রদানের যারা শিরকাতুল মুফাওয়াদা চুক্তি অনুষ্ঠিত হইবে।
৪১৪
(খ) শিয়াতুল মুফাওয়াদয় বা সম-অংশীদারী কারবারে অংশীদারগণ পরস্পরের প্রতিনিধিও এবং জামিনদারও। অতএব
(১) একজন অংশীদার কোন দায়দায়িত্ব স্বীকার করিলে তাহা অপর
অংশীদারগণের উপরও বর্তাইবে;
(২) একজন অংশীদার ফোন ঋণ স্বীকার করিলে ঋণদাতা যে কোন অংশীদারের নিকট তাহা দাবি করিতে পারিবে;
(৩) কোন অংশীদার কর্তৃক সাধারণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈধ ব্যবসায়িক লেনদেন, যেমন ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়ায় কিছু এহণ ইত্যাদি করার ফলে ঋণের দায় সৃষ্টি হইলে তাহা সকল অংগীকারের উপর বর্তাইবে;
(৪) কোন অংশীদার মাল বিক্রয় করিলে মালের রুটির কারণে ক্রেতা তাহা যে কোন অংশীদারের নিকট ফেরত দিতে পারিবে;
(৫) কোন অংশীদার মাল ক্রয় করিয়ে মালের ক্ষতির কারণে তারা যে কোন অংশীদার বিক্রেতাকে ফেরত দিতে পারিবে।
(গ) কোন অংশীদার নিজের বা পরিবার-পরিজনের প্রয়োজনীয় জিনিস অংশীদারী বার হতে এ করিলে তাহা তাহার মাল হিসাবে গণ্য হইবে এবং উহার জন্য তাহাকে মূল্য পরিশোধ করিতে হইবে।
(খ) পশীদারগণের প্রত্যেকের মূলধন সমপরিমাণ হইতে হইবে এবং কোন অংশীদ ফুলনেন জিম শক্তি ব্যবসায়ে নিয়োজিত থাকি না; তবে কোন অংশীদার অপর অংশীদারের নিকট হইতে ঋণ গ্রহণ করিয়া তাহা মূলধন হিসাবে বিনিয়োগ করিলে ঐ ঋণ সম-অংশীদারিত্বের জন্য ক্ষতিকর হইবে না।
(ঙ) সম-অংশীদারী কারবার গঠনকালে ‘সম-অংশীদারিত্ব’ (মুফাওয়াদা) কথাটির অবশ্যই উল্লেখ করিতে হইবে, অথবা চুক্তিপত্রে সম-অংশীদারী কারবারের যাবতীয় শর্তের উল্লেখ থাকিতে হইবে।
ধারা-২৪৬ অংশীদারী কারবারের বিকল্প শ্রেণীবিভাগ (ক) কোন অংশীদারী কারবার সম-অংশীদারী (মুফাওয়াদা) হউক অথবা অসম-অংশীদারী (ইনান) হউক, তাহা আবার তিন শ্রেণীতে বিভক্ত
(১) সকল অংশীদার কর্তৃক প্রদত্ত মূলধনযুক্ত অংশীদারী কারবার (S,
; (الاموال
(২) শ্ৰমযুক্ত অংশীদারী কারবার (JLes ); (৩) ঋণের দ্বারা পরিচালিত অংশীদারী কারবার (০/s
);
(খ) দুই বা ততোধিক ব্যক্তি পৃথক পৃথকভাবে অথবা যৌথভাবে এ এ কোনভাবে সম-পরিমাণ মাল প্রদান করিয়া যৌথভাবে অংশীদারী কারবার গঠনের এবং তাহা হইতে উত মুনাফা নিজেদের মধ্যে বন্টনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইলে উক্ত কারবারকে ‘শিরফাতুল আমওয়াল’ বা মূলধনযুক্ত অংশীদারী কারবার বলে।
(গ) দুই বা ততোধিক ব্যক্তি যৌথভাবে কোন কর্মে তাহাদের শ্রম বিনিয়োগ করিতে এবং তাহা হইতে উতে সাড অথবা পারিশ্রমিক নিজেদের মধ্যে বন্টনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইলে উক্ত কারবারকে শিরকাতুল আমাল’ বা শ্ৰমযুক্ত অংশীদারী কারবার বলে।
(ঘ) যে অংশীদারী কারবারে কোন মূলধন থাকে না, বরং অংশীদারগণ ধারে ক্রয়-বিক্রয় করিবার এবং তাহা হইতে উহুত মুনাফা নিজেদের মধ্যে বন্টন করিবার জন্য ছবি হইলে উক্ত কারবারকে শিরকাতুল উজুহ’ বা ঋণের দ্বারা। পরিচালিত অংশীদারী কারবার বলে।
বিশ্লেষণ
শিরকাতুল আমালের অন্যান্য নাম শিরকাতুল আবদান (CJ1। ), শিরকাতু তাকাবুল (L. (১) ও শিরকাতু সানাই (LLS -)। শিরকাতুল আমাল-এ অংশীদারগণের শ্রমই মূলধন। যেমন দুই বা ততোধিক দরজি অথবা সূতার একত্রে নিজ নিজ পেশার কাজ করিতে চুক্তিবদ্ধ হইলে তাহা শিরকাতুল আমাল হিসাবে গণ্য হইবে।
শিরকাতুল উজুহ-এর মূলধন হইতেছে অংশীদারগণের সুনাম বা প্রতিপত্তি। প্রত্যেক অংশীদার নিজ নিজ সুনামবলে ধারে মাল ক্রয় করিয়া তাহা পুনরায় বিক্রয় করে এবং তাহা হইতে উজত মুনাফা চুক্তি মোতাবেক নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে।
ধারা-২৪৭
শিরকাল আমওয়াল (Tx। s ) (ক) দুই বা ততোধিক ব্যক্তির প্রত্যেকে স্বতন্ত্রভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে অথবা অন্য কোনভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মাল প্রদানপূর্বক যৌথভাবে অংশীদারী কারবার গঠন এবং তাহা হইতে উত মুনাফা নিজেদের মধ্যে বন্টনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইলে উক্ত কারবারকে ‘শিরকাতুল আমওয়াল’ (Jy০১। Sa) বলে।
(খ) অংশীদারগণের প্রত্যেকের মূলধন সমপরিমাণ হওয়া শর্ত নহে; তাহারা নিজেদের সমস্ত সম্পত্তি অথবা উহার অংশবিশেষ মূলধন হিসাবে বিনিয়োগ করিতে পারে এবং মূলধনের অতিরিক্ত অর্থও কারবারে বিনিয়োগ করিতে পারে।
(গ) অংশীদারগণ যেমন সাধারণভাবে যে কোন ধরনের কারবার পরিচালনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইতে পারে, তেমনি বিশেষ কোন ধরনের কারবার পরিচালনার জন্য ও চুক্তিবদ্ধ হইতে পারে।
৪১৬
(ঘ) অর্জিত মুনাফা চুক্তি অনুযায়ী অংশীদারগণের মধ্যে বন্টিত হইবে।
(ঙ) অংশীদারী কারবার ত্রুটিপূর্ণ ( L) হইলে অর্জিত মুনাফা মূলধনের অনুপাত অনুযায়ী অংশীদারগণের মধ্যে বন্টিত হইবে, কোন অংশীদারকে অধিক মুনাফা প্রদানের চুক্তি থাকিলেও তাহা অনুসৃত হইবে না।
(চ) কোমরূপ ক্রটি বা অবহেলা ব্যতীত কাবৰারে লোকশান বা ক্ষতি হইলে তাহা মূলধনের অনুপাত অনুযায়ী অংশীদারগণ বহন করিবে, ভিন্নতর চুক্তি থাকিলে তাহা অনুসৃত হইবে না।
(ছ) অংশীদারগণের মূলধন সমানুপাতে হউক বা না হউক, তাহারা মূলধনের অনুপাত অনুযায়ী মুনাফা বণ্টনের চুক্তি করিলে তাহা বৈধ ও কার্যকর হইবে, যদি তাহারা সকলে কারবারে শ্রম বিনিয়োগের চুক্তি করিয়া থাকে; যদি ফি সংখ্যক অংশীদারের কারবারে শ্রম বিনিয়োগের চুক্তি হইয়া থাকে তবে তাহাদের হাতে অপর অংশীদারগণের মূলধন বিদাআ (acLL) হিসাবে গণ্য হইবে।
ব্যাখ্যা কোন ব্যক্তি যদি এই মর্মে অপর ব্যক্তিকে মূলধন প্রদান করে যে, অর্জিত সমস্ত মনাফা মূলধন সরবরাহকারী পাইবে, তাহা হইলে উক্ত মূলধনকে বিদাআ (a.) বলে।
(জ) অংশীদারগণ সমানুপাতে মূলধন বিনিয়োগ করিলে এবং কোন অংশীদারকে মূলধনের অনুপাত অপেক্ষা আধৰু মুনাফা প্রদানের চুক্তি করিলে তাহা কার্যকর হইবে, এমনকি সকল অংশীদার কারবারে শ্রম বিনিয়োগের চুক্তি করিলেও। কিন্তু যদি কিছু সংখ্যক অংশীদারের শ্রম বিনিয়োগের চুক্তি হইয়া থাকে তবে তাহা
১) যে অংশীদারগণ শ্রম বিনিয়োগ করিবে তাহাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে এবং তাহারা মলনের জন্য মুনাফার একটি অংশ এবং শ্রমের জন্য অতিরিক্ত অংশ পাইবে, কিন্তু এই অবস্থায় তাহাদের হাতে অপর অংশীদারগণের মূলধন মুদারাবার মূলধরে অনুরূপ গণ্য হইবে, এবং উক্ত কারবার মুদারাবা হিসাবে গণ্য হইবে;
(২) যে অং দারগণ পেক্ষাকৃত কম মুনাফা পাইবে তাহাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইলে তাহা ধৈ হইবে। এবং এই অবস্থায় অংশীদারগণের মধ্যে মূলধনের
অনুপাত অনুযায়ী মুনাফা বন্টিত হইবে।
(ঝ) ‘অংশীদারগণের মূলধন সমানুপাতে না হইলে এবং তাহাদের মধ্যে সমানুপাতে মুনাফা বণ্টনের চুক্তি হইলে স্বভাবতই যাহার মূলধন কম সে তুলনামূলকভাবে অধিক মুনাফা পাইবে এবং যাহার মূলধন বেশি সে তুলনামূলকভাবে কম মুনাফা পাইবে; এই অবস্থায়
(১) সকল অংশীদারের অথবা যাহার মুনাফার অংশ বেশি তাহার এম বিনিয়োগের চুক্তি করা হইলে অংশীদারী কারবার বৈধ হইবে এবং চুক্তিও
অনুসরণযোগ্য হইবে;
৪১৭
(২) যাহার বা যাহাদের মুনাফার অংশ কম অর্থাৎ মূলধন বেশি তাহার বা তাহাদের শ্রম বিনিয়োগের চুক্তি করা হইলে তাহা বৈধ হইবে না এবং এই অবস্থায় মূলধনের অনুপাত অনুযায়ী অংশীদারগণের মধ্যে মুনাফা বন্টিত হইবে।
(ঞ) অংশীদারগণের যে কেহ নগদ মূল্যে, বাকিতে, কম মূল্যে অথবা অধিক মূল্যে অংশীদারী সম্পত্তি বিক্রয় করিতে পারিবে।
(ট) কোন একজন অংশীদারের হাতে কারবারের মূলধন থাকিলে সে নগদ, অর্থে অথবা বাকিতে সম্পত্তি ক্রয় করিতে পারিবে; কিন্তু সে প্রকৃত মূল্যের চাইতে অত্যধিক মূল্যে সম্পত্তি ক্রয় করিলে তাহা অংশীদারী কারবারের সম্পত্তি গণ্য না হইয়া তাহার ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হইবে।
(ঠ) কোন একজন অংশীদারের হাতে কারবারের মূলধন থাকিলে সে কারবারের অনুকূলে সম্পত্তি ক্রয় করিতে পারিবে না; যদি ক্রয় করে তবে তাহা তাহার ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হইবে।
(ড) অংশীদারগণ যেসব মালের ব্যবসা করে, কোন অংশীদার তাহার ব্যক্তিগত অর্থে ভিন্নরূপ মাল ক্রয় করিলে তাহা কায়বারের মাল গণ্য না হইয়া উক্ত অংশীদারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হইবে; কিন্তু উক্ত অংশীদার কারবারের মূলধন তাহার হাতে থাকা অবস্থায় নিজ অর্থে এমন মাল ক্রয় করিলে, যাহার কারবার তাহারা করে, তাহা কারবারের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হইবে।
(ঢ) কোন অংশীদার কোন ব্যক্তির সহিত চুক্তিব হইলে উহা হইতে উত অধিকার সে-ই ভোগ করিবে; অতএব এই অবস্থায় উক্ত অংশীদার কোন সম্পত্তি ক্রয় করিলে তাহার মূল্য পরিশোধ ও তাহা হস্তগত কার দায়িত্ব উক্ত অংশীদারের উপর বর্তায় এবং উক্ত সম্পত্তির মূল্য তাহার নিকটই দাবি করা যাইবে, অপর অংশীদারগণের নিকট দাবি করা যাইবে না।
(ণ) যে কোন অংশীদার কারবারের সম্পত্তি নিরাপদ হেফাজতে ৫ul) প্রদান করিতে পারিবে, মুদারাবা বা বিদাআর (L .) ভিত্তিতে অপরকে ব্যবসা করতে দিতে পারিবে এবং ভাড়া চুক্তিও করিতে পারিবে; কিন্তু উক্ত সম্পত্তি অংশীদারগণের অনুমতি ব্যতীত নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তির সহিত মিশ্রিত করিতে পারিবে না এবং অন্যের সহিত অশীদারী কারবারে চুক্তিবদ্ধও হইতে পারিবে না; নিজের সম্পত্তির সহিত মিশ্রিত করিলে এবং উহায় ক্ষতি হইলে সে অপর অংশীদারগণের অংশের জন্য দায়ী হইবে।
(ত) অপর অংশীদারগণের অনুমতি ব্যতীত কোন অংশীদার কারবারের সম্পত্তি হইতে কোন ব্যক্তিকে ঋণ প্রদান করিতে পারিবে না, কিন্তু কারবারের জন্য ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং তাহা কারবারের দায় হিসাবে গণ্য হইবে।
(খ)কারবারের প্রয়োজনে এবংঅংশীদারগণের সম্মতিতে কোন অংশীদার বিদেশ সফর করিলে তাহার খরচপত্র কারবারের সম্পত্তি হইতে গ্রহণ করিতে পারিবে। ২৭-~
৪১৮
(দ) যদি কোন অংশীদার অপর অংশীদারের উপর কারবারের কাজকর্ম অর্পণ করে এবং বলে, “তোমার সুবিবেচনা অনুযায়ী কাজ কর” অথবা “তোমার পকমত কাজ কর”, তবে প্রত্যেক অংশীদার স্বাধীনভাবে কারবারের কাজকর্ম করিতে পারিবে, কারবারের সম্পত্তি বন্ধক রাখিতে পারিবে, কারবারের অনুকূলে অন্যের সম্পত্তি বন্ধক রাখিতে পারিবে, কারবারের সম্পত্তি নিজের সম্পত্তির সহিত মিশ্রিত করিতে পারিবে এবং অন্য কোন ব্যক্তির সহিত অংশীদামী কারবারের চুক্তিতে আবদ্ধ হইতে পারিবে, কিন্তু অংশীদারগণের শট অনুমতি ব্যতীত কোন বিনিময় ছাড়া কারবারের সম্পত্তি হস্তান্তর করিতে পারিবে না।
(ধ) যখন এক অংশীদার অপর অংশীদারকে বলে, “কারবারের সশক্তি সই বিদেশে যাওয়া যাইবে না” অথবা “ধারে বিক্রয় করা যাইবে না”, তখন অপর অংশীদার উক্ত নিষেধাজ্ঞা লংঘন করায় কোন লোকসান হইলে সে অপর অংশীদারের অংশের জন্য দায়ী হইবে।
ধারা-২৪৮ শ্ৰমযুক্ত অংশীদারী কারবায় (শিরকাতুল আমাল) (ক)শিরকতুল আমাল-এরঅধীন চুক্তি অংশীদারগণ চুক্তি মোতাবেক ব্যক্তি গতভাবে অথবা সমষ্টিগতভাবে নিয়োগকর্তার নিকট সংণি কাজের জন্য দায়বদ্ধ থাকিবে এবং তাহাদের দায়দায়িত্ব সমানও হইতে পারে, অসমানও হইতে পারে।
(খ) যে কোন অংশীদার কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইতে পারিবে এবং একজন অংশীদার চুক্তিবদ্ধ হইলে উক্ত কাজ সকল অংশীদারের করণীয় হইবে এবং তাহারা পরস্পরের প্রতিনিধি গণ্য হইবে।
(গ) অংশীদারগণের প্রত্যেকে স্বতন্ত্রভাবে অথবা সমাগতভাবে নিয়োগকর্তার নিকট মজুরী অথবা বেতন দাবি করিতে পারিবে এবং নিয়োগকর্তা মঞ্জুরী বা বেতন প্রদান করিয়া যে কোন একজনকে অথবা সকলকে বরখাস্ত করিতে পারিবে।
(ঘ) যে কোন অংশীদার কোন কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করিলে সে একা তাহা সম্পন্ন করিতে বাধ্য নহে; সে ইহা করিলে তাহা নিজেও করিতে পারে, অংশীদারগণ সমভিব্যাহারে করিতে পারে অথবা তোক নিয়োগ করিয়াও করিতে পারে; কিন্তু নিয়োগকর্তা সংশ্লিষ্ট কাজ দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্তৃক সম্পন্ন করিবার চুক্তি করিলে উক্ত কাজ তাহাকেই করিতে হইবে।
(ঙ) অর্জিত মুনাফা চুক্তি মোতাবেক অংশীদারগণের মধ্যে বন্টিত হইবে।
(চ) অংশীদারগণের প্রত্যেকে সমপরিমাণ মুনাফা পাইবে, কিন্তু কাজ সম পরিমাণে করিবে না এইরূপ চুক্তি করিলে তাহা বৈধ হইবে।
(ছ) কাজের পরিমাণ, ঝুকি এবং চুক্তি অনুযায়ী অর্জিত মজুরী বা বেতন নির্ধারিত হইতে পারিবে।
৪১৯
(জ) নিয়োগকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত মাল কোন অংশীদার কর্তৃক নষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে উহার দায় সকল অংশীদার বহন করিবে এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব
অনুপাতে তাহা বহন করিবে।
(ঝ) দোকান ঘরের মালিক এবং মেশিনপত্রের মালিক অংশীদারী কারবারে চুক্তিবদ্ধ হইতে পারে।
(ঞ) শিরকাতুল আমাল-এ সাধারণত দায়িত্বের (Responsibility) মাত্রা অনুপাতে অংশীদারগণের মধ্যে উতে মুনাফা বঞ্চিত হয়।
ধারা-২৪৯ সুনামভিত্তিক অংশীদারী কারবার (০৪ / Sa) (ক) ক্রয়কৃত মালে অংশীদারগণের সমানুপাতে অংশ থাকা শর্ত নহে।
() অংশীদারগণের ঝুঁকি ও দায় বহনের অনুপাত অনুযায়ী তাহাদের মধ্যে অর্জিত মুনাফা বটিত হইবে।
(গ) ক্রয়কৃত যালে অংশীদারগণের অংশ অনুপাতে উক্ত মালের মূল্যের অন্য তাহাৱা দায়ী থাকিবে।
(ঘ) প্রত্যেক অংশীদার ক্রয়কৃত মালে নিজ নিজ অংশ অনুপাতে মুনাফার অংশ লাভ করিবে এবংইহার ব্যতিক্রম হওয়া শর্ত করিলে তাহা ধর্তব্য হইবেনা।
(ঙ) প্রত্যেক অংশীদার ক্রয়কৃত মালে নিজ নিজ অংশ অনুপাতে উদ্যত লোকসান বা ক্ষতি বহন করিবে, উক্ত মাল তাহারা একত্রে ক্রয় করুক অথবা একজনে ক্রয় করুক।
ধারা-২৫০
মুদারাবা ও তাহার শ্রেণীবিভাগ (ক) একের মূলধন এবং অন্যের শ্রম দ্বারা ব্যবসায় প্রভৃতি ক্ষেত্রে চুক্তিমূলে মুনাফায় যে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় তাহাকে “মুদারাবা’ (L) বলে।
(৭) মূলধমের অধিকারীকে ‘বুল মাল’ (Ju )) এবং শ্রম দানকারীকে ‘মুসারি’ ( L.) বলে।
(গ) রব্দুল মালের প্রস্তাব ( l) এবং মুদারিবের সম্মতি ( 1) যারা মুদারাবা চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়।
(ঘ) মুদারাবা দুই শ্রেণীতে বিভক্ত-মুদারাবা মুতলাক (Gas ) ও মুদারাবা মুকাইয়া (L L,L.)।
(১) যে মুদারাবা চুক্তিতে ব্যবসায়ের সময়সীমা, হাম, শ্ৰেণী, অংশীদারগণের সংখ্যা, ফাহার নিকট হইতে মাল ক্রয় করিতে হইবে এবং কাহার নিকট বিক্রয় করিতে হইবে তাহা নির্দিষ্ট থাকে না তাহাকে “মুদারাবা মুতলাক’ বলে।
৪২০
(২) মুদাৱাৰা চুক্তিতে উপধারা (১)-এ উল্লিখিত কোন বা সকল বিষয় সুনির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইলে তাহাকে মুদারাবা মুকাইয়াদা’ বলে।
বিশ্লেষণ
মুদারাবা এক প্রকার অংশীদারী কারবার। এই ব্যবসায়ে অংশগ্রহণকারীগণ দুই ভাগে বিভক্ত। এক বা একদল অংশীদার ব্যবসায়ের মূলধন সরবরাহ করে এবং অপর এক বা একদল অংশীদার ঐ মূলধন বিনিয়োগ করিয়া সরাসরি ব্যবসা পরিচালনা করে। এইভাবে একজনের পুঁজি ও অপরজনের দৈহিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রমের সমন্বয়ে যে ব্যবসা পরিচালিত হয় তাহাই মুদারাবা’।
মুদারাবা ( L ) ‘দারব’ (১) শব্দ হইতে গঠিত, যাহার অর্থ জমীনে পদাঘাত করা, চলাফেরা করা ইত্যাদি। শ্রম বিনিয়োগকারী যেহেতু জমীনের বুকে পদচারণা করিয়া স্থানান্তরে গমন করিয়া ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাই হানাফী ফকীহগণ এই ব্যবসায়ের নাম দিয়াছেন মুদারাবা এবং অন্যান্য মাযহাবের ফকীহগণ ইহার নাম দিয়াছেন কিরাদ (1) বা ধারে ব্যবসা।
ফকীহগণ মুদারাবার বৈধতার পক্ষে কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াত পেশ করিয়াছেন :
وآخرون يضربون في الأرض يبتغون من فضل الله .
“এবং কিছু লোেক আল্লাহর অনুগ্রহের সন্ধানে ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণ করে” (সূরা মুযযাম্মিল : ২০)।
মহানবী (সা) তাঁহার নবুয়াত-পূর্বকালে হযরত খাদীজা (রা)-এর অর্থে এই ধরনের ব্যবসা করিয়াছেন এবং তাঁহার নবুয়াতকালে আরব জাহানে এই ব্যবসা প্রচলিত ছিল। নবুয়াত প্রাপ্তির পর তিনি ব্যবসায়ের উপরোক্ত পদ্ধতি বহাল রাখেন এবং সাহাবীগণও পরস্পর এইরূপ ব্যবসা পরিচালনা করিয়াছেন।
অন্যান্য চুক্তির মত মুদারাবা চুক্তিও দুই পক্ষের পারস্পরিক প্রস্তাব ও সম্মতির ভিত্তিতে সম্পাদিত হয়। যেমন পুঁজির মালিক কোন ব্যক্তিকে বলিল, তুমি এই দশ হাজার টাকা গ্রহণ কর এবং তাহা ব্যবসায়ে বিনিয়োগ কর, মুনাফার অর্ধেক আমার। এবং অর্ধেক তোমার। দ্বিতীয় ব্যক্তি প্রস্তাবিত অর্থ গ্রহণ করিলে মুদারাবা চুক্তি সম্পাদিত হইবে।
মুদারাবা মুতলাক’ অর্থাৎ মুদারবকে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করিবার জন্য পুঁজি প্রদান করা হইলে সে যে কোন এলাকায়, যে কোন পণ্যের এবং যে কোন ব্যক্তির সহিত ক্রয়-বিক্রয় করিতে পারিবে, এমনকি সে ধারেও ক্রয়-বিক্রয় করিতে পারিবে। এবং প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে পারিবে। তবে মুদারি অপরকে মুদারাবা ব্যবসা করার জন্য পুঁজি প্রদান করিতে পারিবে না, কিন্তু পুঁজিপতির সহিত চুক্তি থাকিলে পারিবে।
৪২১
মুদারাবা মুকাইয়াদ অর্থাৎ মুগরিবকে ব্যায়ের এলাকা, পরিধি ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় সুনির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইলে সে তাহা লজন করিতে পারিবে না। কারণ মুদারাবা চুক্তি এক ধরনের প্রতিনিধি নিয়োগের অনুরূপ। ব্যবসায়ের যাবতীয় বিষয় নির্দিষ্ট ( 1) করিয়া দেওয়ার মধ্যে কোন উপকার নিহিত থাকিলে এইরূপ করা বৈধ।
ধারা-২৫১
মুদারাবার শর্তাবলী (ক) আল-মাল (লুজিপতি)-এর সুপারিকে তাহার সহিত যুক্ত করার এবং মুদরিবের তাহার সহিত চুক্তি ভিত্তিক মুনাফায় অংশীদার হওয়ার যোগ্যতা থাকিতে হইবে।
(খ) নবুল মাল এর মাল এমন জিমি হতে ইবে যাহা অংশীদারী কারবারের মূলধন হইতে পারে।
(খ) মন-মাল-কে মূলধন মুদাল্লিবের নিকট অৰ্পণ করিতে হইবে।
(খ) মূলধনের পরিমাণ এবং মুনাফায় বুল মাল ও মুদারিবের অংশ পৃথকভাবে সুনিকি হইতে হইবে, মুনাফার অংশ নির্ধারিত না করা হইলে উভয়ে সমান হারে তাহা লাভ করিবে।
(ঙ) উপরোক্ত শর্তগুলির মধ্যে কোন একটি শর্ত অনুলেখ থাকিলে এবং কোন পক্ষের জন্য মুনাফার পরিমাণ নির্মি না করিয়া এক পক্ষের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্ধারণ করিলে অথবা কুল-মাল ব্যবসায়ে অংশগ্রহণ করিলে মুদারাবা ফাসিদ গণ্য হইবে।
(চ) ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতা ঋণের অর্থ দ্বারা ব্যবসা করিবার জন্য মুদারাবা চুক্তিতে আবদ্ধ হইতে পারিবে না; তবে ঋণদাতা অন্য ব্যক্তিকে খাতকের নিকট হইতে উক্ত ঋণ আদায় করিয়া উহার দ্বারা মুদারাবা কারবার করিতে বলিলে তাহা বৈধ হইবে।
বিশ্লেষণ
ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার জন্য পক্ষদ্বয়ের বালেগ হওয়া শর্ত নহে, তবে চুক্তির ফলে তাহাদের উপর কি ধরনের দায়িত্বভার অর্পিত হইতেছে সেই সম্পর্কিত জ্ঞান অবশ্যই থাকিতে হইবে।
রকুল-মাল মুদাবিবকে যে পুঁজি প্রদান করিবে তাহা অবশই নগদ মুদ্রায় হইতে হইবে। এই বিষয়ে ফকীহগণ একমত। তবে রব্বল-মাল নগদ অর্থের পরিবর্তে মুদাবিবকে কিছু মাল প্রদান করিয়া তাহার বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়া মুদারাবা ব্যবসা করিতে বলিলে তাহাও বৈধ হইবে।”
৪২২
মূলধনের পরিমাণও সুনির্দিষ্ট হইতে হইবে এবং রব্দুল মালকে অবশ্যই মূলধন মুদারিবের পূর্ণ দখলে অৰ্পণ করিতে হইবে। মূলধনের কিছু অংশ অর্পণ এবং কিছু অংশ নিজ দখলে রাখা রব্দুল মালের জন্য বৈধ নহে। অনন্তর সে মুদারিবের সহিত সশরীরে ব্যবসায়ে অংশগ্রহণ করিলে মুদারাবা ফাসিদ হইয়া যাইবে।
ঋণের দ্বারা মুদারাবা বৈধ নহে। এই বিষয়েও ফকীহগণ একমত। যেমন ঋণদাতা ঋণগ্রহীতাকে বলিল, তোমার নিকট আমার প্রাপ্য ঋণ দ্বারা মুদারাবা কর। ইহা বৈধ নহে। ঐ ঋণের দ্বারা ঋণগ্রহীতা ব্যবসা করিলে উহার লাভ সেই-ই ভোগ করিবে এবং লোকসানও সে-ই বহন করিবে, ঋণ ঋণ হিসাবেই থাকিয়া যাইবে। তবে অপর ব্যক্তিকে উক্ত ঋণ খাতকের নিকট হইতে আদায় করিয়া তাহাকে উহার দ্বারা মুদারিবা করিতে বলিলে তাহা বৈধ হইবে।
মুনাফায় রঙ্কুল-মাল ও মুদারিব উভয়ের অংশের হার (যেমন ১১, ২:১,১৫ ২ ইত্যাদি) সুনির্দিষ্ট হইতে হইবে। যদি এইরূপ চুক্তি করা হয় যে, মুনাফা যে পরিমাণই উক মুদাৱিব একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাইবে তাহা হইলে মুদারাবা বৈধ হইবে
। লাভের সমস্তটা মুদারিবের জন্য চুক্তি করা হইলে তাহাকে এদও মূলধন বিদাআ (3_cLA) হিসাবে এবং রবুল-মাল যিবসা’ (u ) ও মুদারি মুসতাবলি (L. ) হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাহা আর মুদারাবা থাকিবে না।”
ধারা-২৫২
মুদারাবার ফলাফল (ক) মুদালিব মূলধনের আমানতদার হিসাবে গণ্য যখন তাহা তাহার দখলে থাকে; সে উহা যখন ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করে তখন নবুল-মালের প্রতিনিধি হিসাবে গণ্য এবং ব্যবসায় লাভ হইলে সে উহার অংশীদার।
(খ) মুদারাবা মুতলাক-এর ক্ষেত্রে মুদারি ব্যবসায়ের সহিত সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ে ব্যবস্থাপনা গ্রহণের এখতিয়ার ভোগ করিবে। অতএব সে
(১) মুনাফা অর্জনের জন্য মালের ক্রয়-বিক্রয় করিতে পারিবে, কিন্তু অত্যধিক লোকসানে L = ধারা-২১২ দ্র.]মালয় করিলে তাহা তাহার নিজের জন্য ক্রয়করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং তাহা মুদারাবাব সহিত যুক্ত হইবে না;
(২) নগদ অথবা ধারে কার অথবা অধিক টাকার মাল বিক্রয় করিতে পারিলে এবং থাকবে মৃল্য পরিশোধের জন্য ব্যায়ের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কিছু সময়ের অবকাশ দিতে পারিবে, কিন্তু অধিক কাল অবকাশ দিতে পারিবে না;
(৩) বিক্রয়কৃত মালের মূল্য হওয়ালা (0 ) হিসাবে গ্রহণ করিতে পারিবে। (৪) কোন ব্যক্তিকে নিজের ক্রয় বা বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ করিতে পারিবে;
৪২৩
(৫) মুদারাবার মাল আমানত (১০) রাখিতে পারিবে, ইদা (L ) চুক্তিতে পরি করিতে পারিবে, বন্ধক রাখিতে পারিবে, তাড়ায় খাটাইতে পারিবে; বন্ধক গ্রহণ করিতে পারিবে এবং ভাড়ায়ও মাল গ্রহণ করিতে পারিবে;
(৬) ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে স্থানান্তর গমন করিতে পারিবে।
(গ) মুদারাবা মুতলাক-এ মুদালিব মূলধন তাহার নিজের মালের সহিত মিশ্রিত করিতে পারিবে না এবং অপরকেও মুদারাবা চুক্তিতে ব্যবসা করিতে প্রদান করিতে পারিবে না।
(খ) যুদয়াব মুলা-এ রসুন-মাল যদি মুরিকে বলে, “তুমি যাহা সঠিক মনে কর তদনুযায়ী কর” এবং তাহাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার এখতিয়ার দেয় তবে সে তাহার নিজের মূলধনের সহিত মুদারাবার মূলধন যোগ করিতে পারিবে এবং তাহা অপরকেও মুদারাবা চুক্তিতে ব্যবসা করিতে দিতে পারিবে; কিন্তু বহুল-মালের অনুমতি ব্যতীত মুদারাবার পুঁজি হেবা করিতে পারিবে না, মূলধনের পরিমাণের অধিক ঋণও গ্রহণ করিতে পারিবে না।
(ঙ) মূলধনের সহিত মুনিব তাহার নিজের মূলধন যোগ করিলে অর্জিত মুনাফাতনের মূলধনের হার অনুযায়ী বিভক্ত হইবে; অতঃপর সুপারিবের মূলধনের মুনাফার অংশ মুদরি পাইবে এবং মল-মালের মূলধনের মুনাফার অংশ চুক্তি অনুযায়ী উভয়ের মধ্যে বঞ্চিত হইবে।
(চ) রঙ্কুশ-মাল-এর সম্মতিক্রমে মুদারি মূলধনের অতিরিক্ত যে মাল ঋণ হিসাবে গ্রহণ করিয়াছে তাহা শিরকাতুল উজুহ-এর নীতিমালা অনুযায়ী উভয়ের সখিলিত মূলধন হিসাবে গণ্য হইবে।
(ছ) মুদারাবা মুকায়্যার ক্ষেত্রে রবুল-মাল কর্তৃক আরোপিত যাবতীয় শর্ত মুদরি মানিয়া চলিতে বাধ্য থাকিবে।
(জ) মুদারি ব্যবসায় উপলক্ষে স্থানান্তর গমন করিলে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ আনুসঙ্গিক খরচ ব্যবসায় হইতে এত হইবে।
(ঝ) মুদালিব তাহার কার্যসীমার বহির্ভূত কাজ করিলে অথবা শর্তের খেলাফ করিলে আত্মসাৎকারী ( L) গণ্য হইবে এবং ব্যবসায়ের মুনাফা হইতে বঞ্চিত হইবে, শোেকসান বহন করিবে এবং মুদারাবার মূলধন ধংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে তাহার জন্য দায়ী হইবে।
(ঞ) বকুল-মাল যদি মুদালিবকে বলে, “মুদারাবার মাল লইয়া তুমি অমুক স্থানে যাইবে না; অথবা “ধারে মাল বিক্রয় করিবে না”, এই অবস্থায় সে উহার খেলাফকাজ করিলে এবংমূলধন ধ্বংস ক্ষতিগ্রস্ত হইলে তাহার জন্য দায়ী থাকিবে।
(ট) বকুল-মান কর্তৃক ব্যবসায়ের মেয়াদ নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইলে মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুদারাবা চুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটিবে।
৪১৪
(ঠ) মুদালিব চুক্তির কোন মূল শর্ত ভঙ্গ কিংবা ব্যবসায়ের হানিকর কোন কিছু করিলে বন্ধুল-মাল নোটিশ দিয়া তাহাকে বরখাস্ত করিতে পারিবে এবং তাহা করিলে বরখাস্তের খবর পাওয়া পর্যন্ত তাহার কার্যক্রম বৈধ গণ্য হইবে; খবর পাওয়ার পর মূলধনের নগদ অর্থ দ্বারা পুনরায় মাল ক্রয় করিতে পারিবে না, তবে পূর্বের ক্রীত অবশিষ্ট মাল নগদ অর্থে রূপান্তর করিতে পারিবে।
(ড) মুদারিবের কর্মের পরিমাণ চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত হইবে এবং চুক্তিপত্রে তাহার জন্য যে পরিমাণ মুনাফা নির্ধারণ করা হইবে সে সেই পরিমাণই পাইবে।
(ঢ) রব্দুল মাল তাহার মূলধনের কারণে মুনাফায় অংশীদার হয়; অতএব মুদারাবা ফাসিদ হইলে সমস্ত মুনাফা সে লাভ করিবে এবং মুদারি শ্রমিক হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাহার কাজের যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ মজুরী পাত করিবে; তবে উহার পরিমাণ চুক্তিপত্রে নির্ধারিত তাহার মুনাফার পরিমাণের অধিক হইবে
এবং মুনাফা অর্জিত না হইলে যুক্তিসঙ্গত মজুমীও পাইবে না।
(ণ) মুদারাবার মাল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে তাহা সর্বাগ্রে মুনাফা হইতে পূর্ণ করিতে হইবে, মূলধন হইতে বিয়োগ হইবে না; ক্ষতির পরিমাণ মুনাফার পরিমাণের অধিক হইলে মুনাফার অধিক পরিমাণটুকু মূলধন হইতে বিয়োগ হইবে এবং ইহার দায় মুদালিব বহন করিবে না, এমনকি মুদারাবা সহীহ বা ফাসিদ যাহাই হউক না কেন।
(ত) যে কোন অবস্থায় মুদারাবার লোকশান এবং ক্ষতি হল-মাল বহন করিবে, মুদারিবের উহা বহনের শর্ত রাখিলে উক্ত শর্ত বাতিল গণ্য হইবে।
(থ) বহুল-মাল অথবা মুসারিব মৃত্যুবরণ করিলে অথবা স্থায়ীভাবে পাগল হইয়া গেলে মুদারাবা চুক্তির অবসান ঘটিবে।
(দ) মুদালিব যদি এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যে, সে মূলধন কি করিয়াছে তাহার কোন হদিস নাই, এই অবস্থায় তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি দ্বারা ক্ষতিপূরণ করা হইবে।
তথ্যনির্দেশিকা ১. তুর্কী মাজাল্লা, ধারা ১৩৩২। ২. তুর্কী মাজাল্লা, ধারা ১৩৬৫-১৩৮৩। ৩. তুর্কী মাজার, ধারা ১৩৮৫-১৩৯৮। ৪. আলমগিরী, বায়ু, ৪র্থ বাব। ৫. (ক) তুর্কী মাজাল্লা, ধারা ১৪০৪ :
المضاربة نوع شركة على ان راس المال من طرف والسعي
والعمل من الطرف الاخر .
(খ) হিদায়া, কিতাবুল মুদারাবা, ৩, পৃ. ২৪১ :
৪২৫
المضاربة عقد بقع على الشركة بمال من احد الجانبين و مراده الشركة في المربع و هو يستحق بالمال من احد
الجانبين والعمل من الجانب الاخر ولا مضاربة بدونها
(গ) আলমগিরী, কিতাবুল মুদারাবা, ৪খ, পৃ: ২৮৫ :
فهي عبارة عن عقد على الشركة في الربع بمال من احد
الجانبين والعمل من الجانب الاخر .
“এক পক্ষের পুঁজি এবং অপর পক্ষের শ্রমের দ্বারা পরিচালিত ব্যবসায়ের মুনাফা অংশীদার হওয়ার চুক্তিকে মুদারাবা বলে!” (ঘ) শাহ ওয়ালীউল্লাহ্ (র), হজ্জাতুল্লাহিল বালিগা, বৈরূত সংস্করণ, ২খ, পৃ ১১৬
و هي! ..كون 11.ال. لانمسهمان والعمل في التجارة من الاخر
ليكون الربح بينهما على ما ينبینا له .
৬. হিদায়া, কিতাবুল মুদারাবা, ৩, পৃ. ২৪১, পাখী। ৭. তু মারা, ধারা ১৪০৫।
হিয়া, ৩থ, পৃ. ২৪৩। ৯. হিদায়া, ৩থ, পৃ. ২৪৪। ১০. হিদায়া, কিতাবুল শিরকা, ২, পৃ. ৬০৭; আলমগিরী, কিতাবুল মুদারাব, ৫৭,?
২৮৫-৬। ১১. আলমগিরী, ৪খ, পৃ. ২৮৫-৬।
আলমগিরী, ৪খ, পৃ. ২৮৬। ১৩. আলমগিরী, কিতাবুল মুদারাবা, ৪খ, পৃ. ২৮৭; তুর্কী মাজাল্লা, ধারা ১১৫ ৬
(আরবী) ২৩৫, (ইংরেজী) ১৬৭।