১০৯
সকালেই হেমাঙ্গ হাজির হল বিডন স্ট্রিটের বাড়িতে।
মা!
ছেলের দিকে তাকিয়ে মা একটু অবাক হয়ে বলে, এ কি, আজ অফিসে যাসনি?
না। আজ তোমার হাতের রান্না খেতে এলাম।
ও আবার কোন দিশি কথা! আমি আজকাল রাঁধি নাকি! রাঁধে তো ঠাকুর। কী খেতে চাস?
হেমাঙ্গ বুঝতে পারল না, কেন সে বিডন স্ট্রিটে এল। মায়ের হাতের রান্না? একেবারেই নয়। তার আজ খাওয়ার কোনও ইচ্ছেই হচ্ছে না। তবু কিছুক্ষণ মায়ের সঙ্গে আবোল-তাবোল কথা বলল সে। আবোল-তাবোলই। কারণ বেশির ভাগ সময়েই সে বুঝতে পারল না সে কী বলছে। দুপুরে খাওয়ার পরই সে বেরিয়ে পড়ল গাড়ি নিয়ে। আজ গাড়ি চালানো তার উচিত হচ্ছে না। সে সম্পূর্ণ অন্যমনস্কভাবে চালাচ্ছে। কিছু দেখছে না, কিছু শুনতে পাচ্ছে না। গাড়ি চালিয়ে নিচ্ছে তার রিফ্লেক্স।
গোলপার্কের কাছাকাছি যখন সে পৌঁছলো তখন দুটোও বাজেনি। সাদার্ন অ্যাভেনিউ ধরে অনেকটা গিয়ে সে ফিরে এল। আবার গেল। কিছুক্ষণ লেকের ভিতর দিয়ে চালাল। তারপর ঘুরে এল গোলপার্কের কাছে। মাত্র আড়াইটে। সময় এত ধীরে যায়? গাড়ি নিয়ে ফের ঘুরপাক খেল সে। অনেকক্ষণ। তবু তিনটের ঘরে কিছুতে পৌঁছচ্ছে না ঘড়ির কাঁটা। তাজ্জব ব্যাপার!
ন’ নম্বর বাস টার্মিনাসের কাছেই গাড়ি পার্ক করে বসে থাকে সে। ঝুমকি কোন রাস্তা দিয়ে আসবে তা সে জানে। পূর্ণ দাস রোডের দিকে পলকহীন চোখে চেয়ে থাকল সে।
ঘড়ির কাঁটা তিনটে পেরিয়ে গেল।
কেউই এল না। গাড়ি থেকে নেমে অনেকবার গোটা বাস টার্মিনাস চষে ফেলল সে।
সাড়ে তিনটে নাগাদ সে ফোন করল ঝুমকির বাড়িতে। কেউ ফোন ধরল না।
চারটের পর সে চারুশীলার বাড়িতে ঢুকল। কেমন মাতালের মতো লাগছে নিজেকে। এটা প্রত্যাখ্যান কি না তা সে বুঝতে পারছে না। তার অপমানিত বোধ করা উচিত কি না তাও না।
চারুশীলা বাড়িতে নেই। বাড়ির প্রকাণ্ড লিভিংরুমে একটা গভীর সোফায় ডুবে থেকে চোখ বুজে ঘটনাগুলিকে পরম্পরায় সাজাতে ব্যর্থ চেষ্টা করল কিছুক্ষণ। হল না। চোখ বুজে এল ক্লান্তিতে। কখন যে সে ঘুমিয়ে পড়ল টেরও পেল না।
চারুশীলাই ডেকে তুলল তাকে, কি রে? শরীর খারাপ নাকি?
হাসবার একটা চেষ্টা করে হেমাঙ্গ বলল, কোথায় গিয়েছিলি? বসে আছি কতক্ষণ!
গিয়েছিলাম নার্সিংহোমে। এখনই আবার যেতে হবে।
কেন? কার অসুখ?
মণীশবাবুর। হার্ট অ্যাটাক।
মণীশবাবুর! বলে হাঁ করে থাকে হেমাঙ্গ।
তোর ওখান থেকে ফিরেই নাকি বুকে ব্যথার কথা বলছিলেন, আজ সকালে নার্সিংহোমে রিমুভ করতে বলে ডাক্তার। ঝুমকি ফোন করেছিল, গাড়ি নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এলাম।
হেমাঙ্গ বলল, ওঃ।
আমি তো লাঞ্চ করতেই পারিনি। ভীষণ খিদে পাওয়ায় বাড়িতে এসেছি। এখনই যাবো। তুই যাবি?
হেমাঙ্গ উঠে পড়ল। বলল, যাবো।
মুখে চোখে জল-টল দে, ততক্ষণে আমি লাইট কিছু খেয়ে নিই।
একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে হেমাঙ্গ। ঠিক বুঝতে পারছে না, এ সব অদ্ভুত ঘটনা অদ্ভুত সময়ে ঘটছে কেন। এ সব ঘটনা কি কোনও ইঙ্গিত?
বিশাল নার্সিংহোমের রিসেপশনে শুকনো মুখে তিনজন বসে আছে। অপর্ণা, ঝুমকি আর অনু। হেমাঙ্গর বুকে চলকে উঠল কয়েক কোষ বাড়তি রক্ত। ঝুমকির পরনে কালো টেম্পল পাড়ের সাদা খোলের শাড়ি।
তাদের দেখে তিনজনই উঠে দাঁড়াল। অপর্ণা একটু এগিয়ে এসে হেমাঙ্গর দিকে চেয়ে বলল, দেখুন তো কী কাণ্ড!
কিভাবে হল?
পরশু তো আমরা ফিরে এলাম। সন্ধে থেকেই বলছিল, বুকে একটা পেইন হচ্ছে। খুব অ্যাকিউট নয়। কাল ছুটি ছিল, সারাদিন রেস্ট নিল। আজ সকালে অসহ্য ব্যথা।
ডাক্তার কী বলছে?
আমাদের ভেঙে কিছু বলছে না। মুখটা গম্ভীর।
ডাক্তারটি কে?
কে একজন ভট্টাচার্য। বড্ড কম বয়স। কেমন যেন ভরসা হয় না, অত বাচ্চা ডাক্তার কি পারবে? তবে অনেক নাকি ডিগ্রি।
আগে কে দেখত?
সে আর একজন। এখন বিদেশে আছেন।
ওঃ। বলে চুপ করে রইল হেমাঙ্গ। ঝুমকি তার দিকে তাকাচ্ছে না। একটু তফাতে অনু আর চারুদির সঙ্গে কথা বলছে। বলুক। হেমাঙ্গর বুকটা তৃপ্তিতে ভরা। ঝুমকি আজ সাদা খোলের শাড়ি পরেছে।
হেমাঙ্গ আলগাভাবে প্রশ্ন করল, ইনটেনসিভ কেয়ারে নিয়ে গেছে নাকি?
অপর্ণা বলল, আমরা তা জানি না। আমাদের তো ভেতরে যেতেই দেয়নি।
জ্ঞান ছিল?
ছিল। কী হবে বলুন তো! আমার ছেলে খড়গপুর হোস্টেলে। তাকে কি খবর দেওয়া দরকার?
না, এখনই নয়। আমরা তো আছি। দেখা যাক। তেমন দরকার হলে আমি আই আই টি-তে ফোন করে দেবো। ভাববেন না।
রাশভারী বড় ডাক্তাররা রুগীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে বেশি মাখামাখি করে না। কিন্তু এ ডাক্তারটি তেমন রাশভারী নয়। ছিপছিপে, লম্বা, দারুণ ফর্সা এবং অতিশয় সুদর্শন ডাক্তারটি খুব স্মার্ট ভঙ্গিতে একটা কাচের দরজা ঠেলে লবিতে ঢুকে সোজা ঝুমকির সামনে চলে এল।
ওয়েল, আপনারা এখন আর থেকে কী করবেন? আমি ওঁকে ভর্তি করে নিয়েছি।
ঝুমকি তার দু’খানা অপরূপ চোখ তুলে ডাক্তারের চোখের দিকে চেয়ে বলল, বাবা কেমন আছে?
ডাক্তার একটু হেসে বলল, এখনই বলতে পারছি না। তবে ই সি জি-টা একটু গোলমেলে।
অবস্থা কি খুব খারাপ?
কাল সকালে বলব। চিন্তা করবেন না। ম্যাসিভ অ্যাটাক নয়। ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েছে।
কথা বলতে বলতে দুজনে কাচের দরজাটার দিকে হেঁটে গেল পাশাপাশি। হেমাঙ্গর অন্তরাত্মা বলে উঠল, কী কথা তাহার সাথে? তার সাথে?
অপর্ণা কিছু একটা বলছিল। হেমাঙ্গ বুঝতে পারছিল না।
অপর্ণা ফের বলল, বড্ড বাচ্চা না ডাক্তারটি?
হেমাঙ্গ বলল, হ্যাঁ। আমি বড় ডাক্তার আজই ডেকে আনব।
না না, তার দরকার নেই এখনই। এও নাকি খুব বড় ডাক্তার।
কাচের দরজার পাশে দুজন মুখোমুখি দাঁড়ানো। ডাক্তারটি মিটিমিটি হেসে কী যে বলছে! ঝুমকি অত উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছে কেন?
অপর্ণা ফের কী একটা বলল।
হেমাঙ্গ খুব অবাক হয়ে বলল, অ্যাঁ।
অপর্ণা ফের বলল।
হেমাঙ্গ আর চেষ্টা করল না বুঝতে। সে আর বুঝতে পারবেও না।
চারুশীলাও তাকে কিছু বলল।
হেমাঙ্গ ফ্যালফ্যাল করে তার দিকে চেয়ে রইল কিছুক্ষণ।
ফের অপর্ণাও কিছু বলল।
হেমাঙ্গ হাল ছেড়ে দিয়ে সামনের সোফাটায় বসে পড়ল ধপ করে। রুমালে মুখ মুছতে লাগল।
সে স্বাভাবিক নেই। কেমন একটা জ্বালাপোড়া হচ্ছে বুকে।
অপর্ণা তার পাশেই এসে বসল। বলল, আপনি নিজেকে গিল্টি ভাবছেন না তো!
গিল্টি!
মানে আপনার ওখান থেকে ফিরেই তো হল! ওটা কিন্তু কারণ নয়। ওর তো একবার হয়ে গেছে। আপনাকে ভীষণ আপসেট দেখাচ্ছে।
নিজের রাশ শক্ত হাতে ধরার একটা চেষ্টা করে হেমাঙ্গ। বলল, ইটস্ এ স্যাড কেস। অতটা জার্নি করা বোধহয় উচিত হয়নি।
জার্নি তো এমন কিছু নয়। শুধু দুবার একটু চড়াই ভাঙতে হয়েছিল ঘাটে উঠতে গিয়ে।
হয়তো সেটাই কারণ।
তাতেই বা আপনার দায়িত্ব কি বলুন!
হেমাঙ্গ চুপ করে রইল। ডাক্তারটি এত কথা বলছে কেন ঝুমকির সঙ্গে? এত কথা কিসের?
নিশ্চয়ই ব্যাচেলর, না? বলেই হেমাঙ্গ তাকিয়ে দেখল তিনজন মহিলা তার দিকে বিস্ময়ভরা চোখে চেয়ে আছে। এত লজ্জা পেল সে যে উঠে একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসতে হল।
ফিরে এসে দেখল, ঝুমকি সেফায় মাথা নিচু করে মায়ের পাশে বসা।
অস্থির হেমাঙ্গ আবার বেরিয়ে এল। ফের ঢুকল। তারপর হঠাৎ বলল, ঝুমকি!
ঝুমকি তার দুখানা চোখ সমেত বিষন্ন মুখখানা তুলল। নীরব।
একটু এদিকে আসবেন? কথা আছে।
ঝুমকি ধীরে উঠল। এগিয়ে এল।
বলুন।
বাইরে।
অস্থির পায়ে বাইরে এসে ঝুমকির মুখোমুখি দাঁড়ায় হেমাঙ্গ।
সরি। ভেরি সরি।
ঝুমকি যে অনেক কেঁদেছে তা তার মুখ দেখলেই বোঝা যায়। দুখানা টানা চোখ এখনও টলটল করছে। মৃদু স্বরে বলল, কী যে হয়ে গেল হঠাৎ!
আমার খুব খারাপ লাগছে।
জানি। আপনি নিজেকে রেসপনসিবল ভাবছেন।
আমি তো খানিকটা রেসপনসিবলই।
না। তা কেন?
হেমাঙ্গ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ডাক্তার কী বলল?
ঝুমকি মাথা নেড়ে বলল, তেমন কিছু নয়।
অনেক কথা হচ্ছিল আপনার সঙ্গে।
হ্যাঁ। উনি অনেকগুলো কেস হিস্ট্রির কথা বলছিলেন।
কেস হিস্ট্রি?
হ্যাঁ। এই সব ক্ষেত্রে কি কি হতে পারে। বলছিলেন ই সি জি রিপোর্ট তেমন খারাপ কিছু নয়। তবে জোর করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
ওঃ। আচ্ছা, আপনাদের বোধহয় আজ খাওয়া হয়নি!
খাওয়া! না, সে সব আমাদের মনেই নেই। চারুমাসি একবার বলেছিল। কিন্তু আমাদের কি এখন খাওয়ার সময়?
হেমাঙ্গ বলল, কিন্তু উইক হয়ে পড়বেন যে!
বাবার একটু ভাল খবর না পেলে খাবো কি করে? গলা দিয়ে নামবেই না।
তাই কি হয়? এরকম করতে নেই। আমি ওদের বুঝিয়ে বলছি।
গমনোদ্যত হেমাঙ্গর পথ আটকাল ঝুমকি, প্লিজ! কেউ কিছু খেতে পারবে না এখন। ডাক্তার এখনই আসবে খবর দিতে। আমাদের অপেক্ষা করতে বলে গেছে।
খবর! বলে হেমাঙ্গ ঝুমকির দিকে চেয়ে চোখ নামিয়ে নিল।
আবার লবিতে এসে বসল তারা। চারজন মহিলা একসঙ্গে। একটু তফাতে হেমাঙ্গ। সে চুপ করে চোখ বুজে বসা। মাথার পিছনে জড়ো করা দুটো হাত। মন অস্থির। মাথা পাগল পাগল।
পাশে কেউ এসে বসল। একটা পারফিউমের গন্ধ।
হেমাঙ্গদা!
হেমাঙ্গ চোখ খুলল। অনু।
আপনার কী হয়েছে? এত আপসেট কেন?
ও কিছু নয়।
ভীষণ আপসেট। আমাদের চেয়েও বেশি।
হেমাঙ্গ একটু হাসল।
আই অ্যাম ভেরি সরি। মাই অ্যাপোলজি।
কেন বলো তো!
পরশু আমি আপনার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি।
হেমাঙ্গ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ভালই করেছিলে। তোমার বাবার হার্ট অ্যাটাকটা নিশিপুরে হলে কী বিপদ হত বলো তো!
ওখানে ডাক্তার নেই, না?
না। ওখানে কিছু নেই। কিচ্ছু নেই। ডাক্তার না, নার্সিংহোম না, অ্যাম্বুলেন্স না, গাড়ি না।
তা হলে কারও অসুখ করলে কী করে লোকেরা?
ভটভটিতে চাপিয়ে শহরে আনে। যদি না আনা যায় তা হলে ভগবানকে ডাকে।
ইস।
তোমার বাবা লাকি। তুমি রাগ করে চলে এসে ভালই করেছে।
আপনি সেই জন্য আপসেট?
না।
তা হলে?
হেমাঙ্গ একটু হাসল।
দিদিকে বাইরে নিয়ে গিয়ে কী বললেন?
বললাম তোমাদের কিছু খাওয়া উচিত।
মাত্র এই কথা?
হেমাঙ্গ হাসল, আর কী বলব?
অনু চুপ করে রইল।
কী ভাবছো অনু?
আপনার ভীষণ ইগো।
তাই বুঝি?
অথচ আপনি ভীষণ ভালও তো।
ভাল?
হ্যাঁ, ভাল।
কে জানে কী!
আমি জানি আপনি ভীষণ ভাল। যদিও ইউ আর নট মাই টাইপ অফ এ ম্যান। তবু আপনি আপনার মতো করে ভীষণ ভাল।
তোমার ফেভারিট টাইপ কেমন?
স্মার্ট, প্র্যাক্টিক্যাল, ড্যাশিং। ওই যে, ডাক্তার ভট্টাচার্য আসছে।
সুদর্শন ডাক্তারটি এসেই ঝুমকিকে ডেকে নিয়ে গেল। হেমাঙ্গর অন্তরাত্মা বলে উঠল, যেও নাকো অই যুবকের সাথে…
কাচের দরজাটা ঠেলে ওরা ভিতরে চলে গেল। খানিক দূর দেখা গেল ওদের। তারপর চোখের আড়ালে।
হেমাঙ্গ হতাশায় কেমন স্থবির হয়ে যাচ্ছে এখন। তার মনে হচ্ছে সে একটা ভুল করছে। এখনই তার যা করা উচিত তা সে করছে না। বয়ে যাচ্ছে একটা জরুরি সময়। এর পর দেরি হয়ে যাবে।
অনু বলল, আজ আপনি সত্যিই খুব রেস্টলেস। তাই না?
হেমাঙ্গ স্তিমিত গলায় বলল, মানুষ তো ঘটনাবলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
কিন্তু কী হয়েছে?
কথাটার জবাব দেওয়ার আগেই ঝুমকিকে দেখা গেল, ফিরে আসছে।
বাবাকে দেখে এলাম মা!
অপর্ণা চমকে উঠে বলল, কী দেখলি?
ব্যথাটা কমেছে একটু।
কথা বলল?
ডাক্তার বলতে দিল না। বাবা আমার হাতটা একটু ধরল।
কিছু বলল না?
একটু হাসল।
এখন আমরা কী করব?
ডাক্তারবাবু বলল, ভয় নেই। আপনারা বাড়ি চলে যান। অনেকগুলো টেস্ট করা হচ্ছে। কাল-পরশুর মধ্যেই অবস্থাটা বোঝা যাবে। হয়তো সিরিয়াস কিছু নয়।
বলল?
হ্যাঁ তো।
ঠিক শুনেছিস?
হ্যাঁ মা। চলো আমরা বাড়ি যাই।
ঝুমকিদের বাড়িতে নয়, চারুশীলা তাদের নিয়ে এল নিজের বাড়িতে। বলল, তোমাদের তো আজ রান্নাই হয়নি, বাড়ি গিয়ে বেঁধে খেতে হবে। আমার বাড়িতে সব অ্যারেঞ্জমেন্ট করা আছে, চলো।
বিপর্যস্ত, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত একটি পরিবার জড়ো হল চারুশীলার বাড়িতে। আজ কারও মন ভাল নেই। হেমাঙ্গ চুপ করে ওদের পাশাপাশি বসে রইল সোফায়। একজোড়া চোখ তাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে। তার চোখও ছুঁয়ে আসছে ওকে। মাঝে মাঝে আটকে যাচ্ছে চোখে চোখ। হেমাঙ্গর ভিতরে একটা জ্বালা। ওই ডাক্তারকে সে ভুলতে পারছে না।
তিন দিন বাদে ছাড়া পেল মণীশ। জানা গেছে তার হার্টে কিছু হয়নি, পেটে গ্যাস জমে চাপ ধরেছিল বুকে। আপাতত ভয় নেই।