1 of 2

০৬. চুরির অপরাধ

ষষ্ঠ অধ্যায় – চুরির অপরাধ

ধারা-১৫১

চুরির সংজ্ঞা কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান (মুকা) ব্যক্তি কর্তৃক অপরের দলভুক্ত ‘নিসাব পরিমাণ মাল’ সংরক্ষিত স্থান হইতে গোপনে হস্তগত করাকে ‘চুরি’ বলে।

ব্যাখ্যা চুরির ক্ষেত্রে ৪ দশ দিরহাম বা উহার সমপরিমাণ মালকে নিসাব’ বলে।

বিশ্লেষণ

আভিধানিক অর্থে অপরের মাল গোপনে হস্তগত করাকে চুরি বলে। শরীআতের পৃবিছানায় যদি বলে ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি অপরের মাল নিরাপদে সংরক্ষিত স্থান হইতে সরানের মাধ্যমে হস্তগত করিয়া লয় তবে তাহা চুরি’ বলিয়া গণ্য হইবে। এই বিষয়ে বিখ্যাত ফিকহ গ্রন্থ হিদায়াতে বলা হইয়াছে :

اذا سرق العاقل البالغ عشرة دراهم او ما يبلغ قيمة عشرة دراهم مضروبة من حرز لا شبهة فيه وجنب عابسه

• ‘। “কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি যদি কমপক্ষে দশ দিরহাম বা তাহার সমমূল্যের কোন বস্তু সংরক্ষিত স্থান হইতে চুরি করে তাহা হইলে তাহার হাত কাটা হইবে।”

ইহার কম মূল্যের কোন বস্তু :গাপনে হস্তগত করিলে হাত কাটা হইবে না। এই ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ মাল’ শাহ দশ দিরহাম বা তাহার সমমূল্যের বন্ধুকে বােঝানো হইয়াছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন :

لا قطع الأ في دينار أو عشرة دراهم.

“এক দীনার বা দশ দিরহামের কমে হাত কাটা যাইবে না।”

ধারা-১৫২

চুরির শর্তাবলী কোন কাজের মধ্যে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী বিদ্যমান থাকিলে তবেই তাহাকে ‘চুরি’ বলা যাইবে

১. গোপনে হস্তগত করা; ২. হস্তগতকৃত বন্ধু মাল’ হওয়া; ৩. হাতকৃত মাল অপরের দলভুক্ত হওয়া; ৪. উক্ত মাল নিরাপদ সবক্ষিত স্থান হইতে হ্যগত করা; ৫. হস্তগতকৃত মাল চোর কর্তৃক পুরাপুরি নিজের দলভুক্ত করা; ৬. হস্তগত মাল-এর ‘চুরির নিসাব পরিমাণ মূল্য হওয়া; ৭. উক্ত মাল স্থানান্তরযোগ্য হওয়া; ৮. উত মাল হস্তগত করার অসৎ উদ্দেশ্য থাকা।

বিশ্লেষণ

ঠেীর্যকর্মে লিপ্ত ব্যক্তিকে বালেগ ও বুদ্ধিমাম হইতে হইবে। নাবালেগ বা পাগলকে চুরির শাস্তি দেওয়া যাইবে না। নবী (সা) বলিয়াছেন :

رفع القلم عن ثلاثة من الصبي حتى يبلغ وعن الانم

حتى يستيقظ وعن المجنون حتى يفتن .

“তিন শ্রেণীর মানুষকে (শাস্তি হইতে) অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে। ১. নাবালেগ বালেগ না হওয়া পর্যন্ত; ২. ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত এবং ৩, পাগল সুস্থবুদ্ধি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত।”

গোপনে হস্তগত করিবার অর্থ হইল, মালিকের স য়তি ছাড়া কিংবা তাহার অনুপস্থিতিতে অথবা নিদ্রিতাবস্থায় তাহার দখলভুক্ত কোন মাল হস্তগত করিয়া লওয়া। এই ক্ষেত্রে মাল সম্পূর্ণরূপে হস্তগত হইতে হইবে। সম্পূর্ণরূপে হস্তগতকরণ বুঝাইতে তিনটি শর্ত পূর্ণ হইতে হইবে।

১. চোর চুরিকৃত বন্ধু নিরাপদ সংরক্ষিত স্থান হইতে বাহির করিয়া আনিবে। ২. চুরিকৃত মাল মালিকের দখলমুক্ত হইতে হইবে; এবং ৩, তাহা সম্পূর্ণরূপে চোরের নিজের দখলে আসিতে হইবে।

এই তিনটি শর্তের কোন একটি অপূর্ণ থাকিলে হস্তগতকরণ পূর্ণাঙ্গ বলিয়া বিবেচিত হইবে না এবং সেক্ষেত্রে চুরির শাস্তিও প্রযোজ্য হইবে না। হস্তগত হওয়ার বিষয়টি যদি অপূর্ণ থাকে তাহা হইলে চুরি সম্পূর্ণ হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে না,

বরং চুরি শুরু হইয়াছে বলিয়া ধরা হইবে। এই ক্ষেত্রে হস্ত কর্তনের শান্তি প্রযোজ্য না হইয়া তাযীরের শাস্তি প্রযোজ্য হইবে।

হস্তগত বন্ধু মাল’ হইতে হইবে অর্থাৎ তাহার আর্থিক মূল্য থাকিতে হইবে। যে বক্কর কোন মূল্য নাই কেহ তাহা হস্তগত করিলে উহা চুরি বলিয়া গণ্য হইবে না। কেনা যাহার কোন আর্থিক মূল্য নাই তাহা আদৌ ‘মাল’ নহে।

হস্তগতকৃত মাল অপরের দখল তথা মালিকানাভুক্ত হইতে হইবে, দখলবিহীন বা মালিকানাবিহীন কোন মাল কেহ হস্তগত করিলে তাহার এই কাজ চুরি বলিয়া গণ্য হইবে না। কারণ তাহা কাহারো দখল বা মালিকানাভুক্ত নহে। তাই ইহার মাধ্যমে কেহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। সুতরাং তাহা চুরি বলিয়া গণ্য হইবে না।

হস্তগত মাল সত্নে বা পাহারা বা তত্ত্বাবধানে থাকিতে হইবে। অযতে বা অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া থাকা মাল কেহ হস্তগত করিলে তাহাকে চুরির শাস্তি প্রদান করা যাইবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন :

لا قطع في تمر معلق ولا في حرشة جبل فانا اواد

المراح والممرين فالقطع فيما يبلغ من المجن .

“প্রাচীরের বাহিরে ঝুলন্ত ফল কিংবা রাতের বেলা পাহাড় হইতে ধরিয়া নেওয়া কোন মেষের জন্য হাত কর্তন করিবার শাস্তি দেওয়া যাইবে না। তবে মেষ খোঁয়াড়ে আবদ্ধ থাকিলে এবং ফল শুকাইবার খােলা বা গোলায় থাকাবস্থায় হস্তগত করিলে বাত কাটা হইবে, যদি তাহার মূণ্য একখানা ঢালের সমান হয়।

চুরিকৃত মাল সম্পূৰ্ণৰূপে চোরের দখলে যাইতে হইবে। চোর কর্তৃক সংরক্ষিত স্থা হইতে মাল সরাইয়া লইলেই হইবে না, সম্পূর্ণরূপে তাহার দখলভুক্ত হইতে হইবে। অনাপায় তাহা চুরি বলিয়া গণ্য হইবে না।

চুরিকৃত মালের কি পরিমাণ মূল্য হইতে হইবে। হানাফী ফকীহগণের মতে চুবির নিসাব অর্থাৎ যে পরিমাণ মাল চুরি করিলে হস্ত কর্তন করিবার শান্তি প্রযোজ্য হইবে তাহা এক দীনার কিংবা দশ দিরহাম’। নবী (সা) বলিয়াছেন :

لا تطع اليد الأ في دينار أو في عشرة دراهم .

“এক দীনার কিংবা দশ দিরহামের কমে হাত কাটা যাইবে না।

لا تطع فيما دون عشرة دراهم.

“দশ দিরহামের কম হইলে হাত কাটা যাইবে না।”

বর্তমানে চার দশমিক চার শত সাতান্ন (৪.৪৫৭) গ্রাম স্বর্ণ অথবা তাহার সমপরিমাণ মূল্যের কোন মাল চুরির নিসাব’ হিসাবে গণ্য হইবে।

৩২১

চুরিকৃত মাল স্থানান্তরযোগ্য হইতে হইবে। চুরির ক্ষেত্রে ইহা একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। কারণ চুরি অর্থ অন্যের সম্পদ সরাইয়া নিজের দখলে লইয়া যাওয়া। ইহা কেবল স্থানান্তরযোগ্য মালের বেলায় সম্ভব। যেসব মাল এক স্থান হইতে সরাইয়া অন্য স্থানে নেওয়া যায় না তাহা চুরি করা যাইতে পারে না।

হস্তগতকৃত মাল অন্যায়ভাবে দখল বা মালিকানাভুক্ত করিয়া লওয়ার অভিপ্রায় থাকিতে হইবে। কোন মাল হস্তগত করা চুরি কিনা তাহা হস্তগতকারীর নিয়তের উপর নির্ভর করে। যেখানে অন্যায়ভাবে গ্রহণের নিয়ত থাকে না সেখানে তাহা চুরি বলিয়া বিবেচিত হইবে না।”

ধারা-১৫৩

চুরির প্রমাণ দুইটি উপায়ে চুরি প্রমাণিত হইবে ১. সাক্ষীদের সাক্ষ্য যারা এবং ২. অভিযুক্ত অপরাধীর স্বীকারোক্তি দ্বারা।

विभिने। চুরি প্রমাণের জন্য যাহার সম্পদ চুরি করা হইয়াছে তাহাকে ছাড়া কমপক্ষে দুইজন ন্যায়পরায়ণ বালেগ মুসলিম সাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রয়োজন। সাক্ষী যদি দুইজনের কম হয় অথবা একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও অপরজন শ্রোতা সাক্ষী হয় তাহা হইলে সেই ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে চুরির শাস্তি দেওয়া যাইবে না, বরং তাযীরের শাস্তি দেওয়া হইবে।

চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি চুরির স্বীকারোক্তি করে অর্থাৎ সে চুরি করিয়াছে বলিয়া স্বীকার করে তাহা হইলে চুরি প্রমাণিত হইবে এবং তাহাকে চুরির শাস্তি ভোগ করিতে হইবে।

ধারা-১৫৪

চুরির দণ্ড চুরি প্রমাণিত হইলে চোরকে দুই ধরনের শাস্তি ভোগ করিতে হইবে (ক) ছুরিকৃত মাল কিংবা তাহার মূল্য ফেরত দিতে হইবে; (খ) বার কল করা হইবে।

বিশ্লেষণ

ইমাম আবু হানীফা (র) ও তাঁর অনুসারীদের মতে চুরি প্রমাণিত হইলে চোরকে চুরিকৃত মাল কিংবা তাহার মূল্য মালিকের নিকট ফেরত দিতে হইবে এবং চোরের হস্ত কর্তন করিতে হইবে। তবে অন্যান্য ফিকবিদের মতে, চোরের হস্তকর্তন ও চুরিকৃত মাল ফেরত দেওয়ার শাকি একসাথে দেওয়া যাইবে না। তাহাদের যুক্তি হইল, কুরআনের আয়াতে শুধু হন্ত কর্তনের শাস্তির কথাই উল্লেখ করা হইয়াছে।

৩২২

অর্থাৎ সে যে অপরাধ করিয়াছে তাহার সবটুকুর শাস্তি হইল হস্তকৃর্তন। অতএব ইহার সহিত আর কোন শাস্তি যুক্ত করা যাইবে না। আবদুর রহমান ইবন আওফ (র) কর্তৃক নবী (সা)-এর একটি হাদীস বর্ণিত হইয়াছে, তাহাও এ মতটিকে শক্তিশালী করে :

اذا تطع السارق فلا تحرم عليه .

“চোরের হস্ত কর্তন করা হইলে তাহাকে কোন প্রকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হইবে না।”

চুরি হদ্দের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি প্রমাণিত। পবিত্র কুরআনে চুরির শাস্তি উল্লেখ করিয়া আল্লাহ্ তা’আলা বলিয়াছেন :

والسارق والسارقة فاقطعوا أيديهما جزءا بما كسبا

نگاه من الله والله عزيز حكيم.

“পুরুষ কিংবা নারী চুরি করিলে তাহাদের হস্তছেদন কর, ইহা উহাদের কৃতকর্মের ফল এবং আল্লাহর নির্ধারিত আম্‌দর্শ দণ্ড। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়” (সুরা মাইদা : ৩০)।

ইসলামী যুগে রাসুলুল্লাহ (সা) সর্বপ্রথম যে পুরুষ চোরের হাত কাটিয়াছিলেন তাহার নাম খিয়ার ইন আর্দী ইন নাওফাল এবং যে মহিলা চোরের হাত কাটিয়াছিলেন

সে ছিল মাখম গোত্রের মুররা বিনত সুফিয়ান ইবন আবদুল আসাদ।

ধারা-১৫৫

চুরির ভুল বা মিথ্যা সাক্ষ্যদান যদি সাক্ষীয় সাক্ষ্যদান করিতে ভুল করে এবং ফলে কাহারো হাত কাটা হয় এবং পরে তাহাদের সাক্ষ্য মিথ্যা হওয়া প্রকাশ পায়, যথা : কোন ব্যক্তি স্বীকার করে যে, সে নিজে চুরি করিয়াছে অথবা অপর কাহারো বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সে চুরি করিয়াহে অথবা সাক্ষীদ্বয় যদি বলে যে, তাহারা জানিয়া নিয়াই তাহার বিরুয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়াছে, তাহা হইলে কর্তিত হাতের জন্য সাবয়কে দিয়াত আদায় করিতে হইবে এবং এই ক্ষেত্রে হাতের বিনিময়ে তাহাদের উভয়ের হাত কাটা যাইবে না।”

ধারা-১৫৬

আত্মীয় কর্তৃক চুরি চোর এবং যাহার সম্পদ চুরি করা হইয়াছে তাহার মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকিলে চোরের উপর চুরির শান্তি কার্যকর হইবে না।”

৩২৩

বিশ্লেষণ

যেমন স্বামী-স্ত্রী, পিতৃগত বা মাতুগত উর্ধ্ব-পুরুষগণ, পিতুগত বা মাতুগত নিম্ন-পুরুষগণ এবং ভাইবােন বা তাহাদের সন্তান-সন্ততি। ইহাদের একে অপরের মাল চুরি করিলে হদ কার্যকর হইবে না।

. ধারা-১৫৭

মেহমান কর্তৃক চুরি মেহমান যদি তাহার মেজবানের বাড়ি হইতে কোন মাল চুরি করে তাহা হইলে চুরিরশাণ্ডিকার্যকহইবেনা। এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্রতাযীরের শাস্তি কার্যকরকরা যাইবে।

ধারা-১৫৮

চাকর বা কর্মচারী চুরি করিলে কোন চাকর বা কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তি যদি তাহার মনিবের বা নিয়োগকর্তার মাল নিরাপদে সংরক্ষিত স্থান হইতে চুরি করে, যেখানে তাহাকে প্রবেশ করিবার অধিকার দেওয়া হইয়াছে, তাহা হইলে হজ কার্যকর হইবে না; বরং তাযীরের শাস্তি হইবে।

ধারা-১৫১

বিবিধ মাল চুরি চুরিকৃত মান যদি বন্য ঘাস, মাই, পাখি, কুকুর, শূকর, মাদকদ্রব্য, বাদ্যযন্ত্র কিবা অসংরক্ষণযোগ্য পচনশীল দ্রব্য হয় তাহা হইলেও হদ কার্যকর হইবে না,

বরং ধীরের আওতায় শান্তি হইবে।

ধারা-১৬০

মালের অংশীদার চুরি করিলে। চোর যদি চুরিকৃত মালের অংশীদার হয় এবং তাহার নিজের অংশ বাদ দেওয়ার পর চুরিকৃত অবশিষ্ট মালের মূল্য ‘নিসাব পরিমাণ না হয়, তাহা হইলে অপরাধীর উপর হল কার্যকর হইবে না, বরং তাবীরের আওতায় শাস্তি হইবে।

ধারা-১৬১

ঋণদাতা ঋণগ্রহীতার মাল চুরি করিলে ঋণদাতা যদি ঋণগ্রহীতার মাল হইতে চুরি করে এবং চুরিকৃত মাল হইতে প্রান্তব্য পরিমাণ বাদ দেওয়ার পর নিসাব পরিমাণ মাল অবশিষ্ট না থাকে তাহা হইলে হদ কার্যকর হইবে না।

ধারা-১৬২

চুরি করিতে বাধ্য করা হইলে কোন ব্যক্তিকে চুরি করিতে বলোেগ বাধ্য করা হইলে এবং বলপ্রয়োগ প্রমাণিত হইলে কিংবা অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে চুরি করিলে তাহার উপর হদ্দ কার্যকর হইবে না।

L

.

পপি হপাল এমন

৩২৪

ধারা-১৬৩

চোর আত্মসমর্পণ করিলে

চোর যদি গ্রেফতারের পূর্বেই অনুতপ্ত হইয়া চুরিকৃত মাল মালিককে ফেরত দেয় এবং নিজেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সমর্পণ করে তাহা হইলে হই কার্যকর হইবে না।

ধারা-১৬৪

বই-পুস্তক চুরি করিলে কুরআন শরীফ বা অন্য কোন বই-পুস্তক চুরি করিলে চোরের উপর হদ কার্যকর হইবে না, বরং সে তাযীরের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে।

বান-১৫

বায়তুল মাল বা গনীমতের মাল হইতে চুরি করিলে যদি কেহ বায়তুল মাল (রাধীয় কোষাগার) বা গনীমতের মাল হইতে চুরি করে তবে তাহার উপর হল প্রযোজ্য হইবে না, বরং তাৰীরের শান্তি কার্যকর হইবে।

ধারা-১৬৬

চারণভূমি হইতে প চুরি করিলে কোন ব্যক্তি চারণভূমি হইতে পশু চুরি করিলে তাহার উপর হদ কার্যকর হইবে না, বরং সে তাযীরের আওতায় শাকিযোগ্য হইবে।

ধারা-১৬৭

কাফন চুরি কোন ব্যক্তি কবর হইতে কাফন চুরি করিলে তাহাকে চুরির শাস্তি দেওয়া যাইবে না।

বিশ্লেষণ

ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মুহাম্মাদ (র)-এর মতে কাফন চোরকে চুরির শাস্তি দেওয়ার কারণ হইল, সংরক্ষিত মাল চুরি না করিলে তাহা ছুরি বলিয়া গণ্য হইবে। কাফন নিরাপদ হেফাজতে রাখা মাল নহে।

ধারা-১৬৮

দলবদ্ধভাবে চুরি যদি একসাথে একাধিক ব্যক্তি চুরি করে এবং চুরিকৃত মাল চুরিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সমানভাবে বন্টন করিয়া দিলে প্রত্যেকের প্রাপ্য অংশ

৩২৫

চুরির ‘নিসাব পরিমাণ বা তাহার অধিক হয় তাহা হইলে সকলের উপর হজ কার্যকর হইবে, অন্যথায় তাযীরের আওতায় শান্তি হইবে।

ধারা-১৬৯ চুরিকৃত মালের মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ না হয় চুরিকৃত মালের মূল্য যদি নিসাব পরিমাণ না হয়, তাহা হইলে হদ কার্যকর হইবে না; বরং তাযীরের আওতায় শান্তি কার্যকর হইবে।

ধারা-১৭০ .।

হদ কার্যকর করা সব না হইলে চুরি পূর্ণরূপে প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও কোন কারণে যদি অপরাধীর উপর হদ কার্যকরকরা সবনা হয় তাহা হইলে সে তাৰীরের আওতায় শাস্তি ভোগ করিবে।”

السرقة في اللغة اخذ شيء من الغير على وجه الخفية

তথ্যনির্দেশিকা ১.

কাওয়াইদুল ফিকহ, মুফতী সাইয়েদ আমীমুল ইহসান, এমদাদিয়া লাইব্রেরী, ঢাকা।

১। এla L. I মুজামু লুগাতিল ফুকাহা, ইদারাতুল কুরআন ওয়া উলূমিল ইসলামিয়া, আশরাফ মঞ্জিল, করাচী, পাকিস্তান, আল-

ফিল ইসলামী ওয়া আদিয়াতুহ, ডঃ ওয়াহবা আয-যুহায়লী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পারুল ফিকর, পৃ. ৯২; হিদায়া ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫১৭, কুতুবখানায়ে রহিমিয়া, দেওবন্দ, ভারত। হিদায়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫১৭। আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, আবদুল কাদের আওদা, ২য় খণ্ড, পৃ. ৫১; আল-হুদূদ ফিল ইসলাম, আহমাদ ফাতহী বারানযী, মাকতাবাতু আম্মার; The Penal Law of Islam, Mohammad Iqbal Siddiqi, New Delhi 1988, P. 11. আবূ দাউদ, কিতাবুল হুদ, বাব ফিল মাজনূন ইয়াসরি আও ইউসিবু হান্দান; তিরমিযী, কিতাবুল হদ্দ, বাব মা জাআ ফীমান লা ইয়াজিবু আলাইহিল হাদ্দ।

The Penal Law of Islam. মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক; তাবারানী ফিল মুজাম।

মুসনাদে আহমাদ। ৮. The Penal Law of Islam, পৃ. ৩৮।

The Penal Law of Islam. so. The Penal Law of Islam.

আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬১৮। কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবাআ, ৫ম খণ্ড।

১২.

৩২৬

১৩. ঐ গ্রন্থ, ৫খ, পৃ. ১৬৫। ১৪. আল-হুদূদ ফিল ইসলাম, আহমাদ ফাতহী বারানী, পৃষ্ঠা ৬৬। ১৫.. বাদাইউস সানাই, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭৫।

ঐ, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৯; আল-মাবসূত, ৯ম খণ্ড, পৃ. ১৫। ১৫৭ তে ১৬৯ পর্যন্ত খামার অন্য দেখুন আল ফিল ইসলাম, আমার ফাতহী রানী, পৃষ্ঠা ৬২ হইতে ৭১।

অর্থাৎ চোরের যদি হাত ও পা না থাকে, যা চুরির অপরাধে পূর্বেই তাহার হাত ও পা কাটা হইয়া থাকে তবে তাহাকে ধীরে শান্তি দিতে হইবে।

১৮.

1 Comment
Collapse Comments
Mohammed shoohidul Haque June 28, 2023 at 3:33 pm

আমাদের দেশের চুরির সঙ্গে বা চোরের সাথে পুলিশের যোগাযোগ থাকে আর বড় বড় চোরেরা পুলিশকে বিভিন্নভাবে টাকা দিয়ে থাকে চোরের কথা পুলিশ শুনে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *