1 of 2

সোহিনির কুকুর এবং আমি

সোহিনির কুকুর এবং আমি

আমার আড়াই বছরের মেয়েকে আমি একটা ভুটিয়া-কুকুর কিনে দিয়েছিলাম। আউটরাম ঘাটের সামনের বেদেদের কাছ থেকে পঁচিশ টাকা দিয়ে।

সোহিনি কুকুর খুব ভালোবাসে ছোটোবেলা থেকে। পথের কুকুর দেখলেই কুকু-বাচ্চা, কুকু-বাচ্চা বলে চেঁচিয়ে উঠত। কারো বাড়ি বেড়াতে গেলে তাদের কুকুরের গলা জড়িয়ে বসে থাকত।

কুকুরটার গায়ে বড়ো বড়ো লোম। ওকে যেদিন বুকে করে মিনিবাসের সামনের সিটে বসে বাড়ি নিয়ে এলাম সেদিন হইচই পরে গেল বাড়িময়।

সেদিন ভীষণ গরম ছিল। কুকুরটা তার বড়ো বড়ো লোমভরতি শরীরে দরদর করে ঘামছিল। তাকে সাবান দিয়ে চান করিয়ে গায়ে সোহিনিরই পাউডার ঢেলে যখন একটু আরামে রাখা গেল পাখার তলায়, ঠিক তক্ষুনি লোডশেডিং হয়ে গেল।

কুকুরটা গরমে খুব কষ্ট পাচ্ছিল। রানু বলল, আহা, বেচারিকে কেন আনলে মিছিমিছি কষ্ট দেওয়ার জন্যে? ওরা কি গরম সহ্য করতে পারে?

গরমে আই-ঢাই করা ঘামে-জবজব রানুর চেহারার দিকে তাকিয়ে বললাম, মানুষ যদি পারে তা হলে কুকুরও পারবে। কুকুর কি মানুষের চেয়েও বড়ো?

রানু বলল, অত জানি না। তবে কুকুরটার আশ্চর্য সহ্যশক্তি। এত যে কষ্ট পাচ্ছে কোনো চঞ্চলতা নেই। তবু কেমন স্থির হয়ে থাবার ওপর মুখ রেখে শুয়ে আছে দেখো?

আমি অনেকক্ষণ কুকুরটার দিকে চেয়ে রইলাম।

কুকুরটার চোখ দুটো ভারি শান্ত। কোনো অভিযোগ নেই অনুযোগ নেই, কোনো প্রতিবাদ নেই চোখে। ও যে মাথার ওপর একটু ছাদ পেয়েছে, প্রচন্ড খিদের সময় যে দু-দানা যা হোক কিছু খেতে পাবে একথা জেনেছে; তাতেই ও যেন পরমনিশ্চিন্ত হয়েছে। আর কোনো কিছু চাইবার সাহস বুঝি ওর নেই।

পরদিন কুকুরের নামকরণ নিয়ে মহা গোলমাল বেধে গেল।

রানু বলল, ওর নাম রাখো টম। বড়োমেয়ে বলল, না টম-ফম বড়ো বাজে বিদেশি নাম। তার চেয়ে ওর নাম রাখো শান্ত।

আমি বললাম, একটাও নাম পছন্দ হচ্ছে না।

আমাদের রান্নার লোক ভীম ঠাকুর বহুদিনের পুরোনো লোক। সে আমাদের কথোপকথন শুনে বলল, বউদি এর নাম রাখো মানুষ।

রানু বলল, সে কী? কুকুরের নাম মানুষ হয় নাকি?

ও বলল, দেখছেন না কুকুরটার কী বুদ্ধি, কীরকম মানুষের মতো হাবভাব?

আমি কিছু বলার আগেই সোহিনি কুকুরটার কান ধরে আদর করে তাকে ‘মানুষ’ ‘মানুষ’ বলে ডাকতে শুরু করে দিল। তারপর আর অন্য নাম রাখার উপায় ছিল না। আমাদের সকলেরই মনে হল যে যার জন্যে কুকুর কেনা, তারই যখন নামটা মনে ধরেছে তখন আমাদের আপত্তির মানে নেই কোনো।

আমাদের বাড়িতে ‘মানুষ’ এখন পুরোনো হয়ে গেছে। ওর শান্ত সভ্য ব্যবহারে সকলেই খুশি। মানুষের মতো এমন নির্জীব স্বভাবের কুকুর বড়ো একটা দেখা যায় না।

অফিসে সারাদিনের মধ্যে, মানে সকাল ন-টা থেকে রাত সাতটার মধ্যে মাত্র দু-তিন ঘণ্টা কারেন্ট ছিল। সাতটার সময় যখন অফিস থেকে বেরোলাম তখন আমি আর মানুষ নেই। আজকাল বাসে-ট্রামে ভিড় দিনে-রাতের কোনো সময়ই কম-বেশি কিছু নেই। অফিস থেকে যখনই বেরুই, তখনই একইরকম ভিড়।

মনে আছে আট-দশ বছর আগেও ছ-টা নাগাদ বেরিয়ে ধর্মতলার মোড় থেকে দু-নম্বর বাসে উঠতে কোনো বেগ পেতে হত না। বসার জায়গা না পেলেও স্বচ্ছন্দে হাত-পা ছড়িয়ে দাঁড়াবার জায়গা পাওয়া যেত। আজকাল সেসব স্বপ্ন বলে মনে হয়।

বাড়ি পৌঁছোতে পৌঁছোতে আটটা হল।

বাস থেকে নেমে বাড়িতে হেঁটে আসতে আসতে ভাবছিলাম, বাড়ি গিয়ে ভালো করে চান করব। তারপর চান করে উঠে একটু কাগজ কলম নিয়ে বসব। দারুণ একটা রোমান্টিক গল্পের প্লট ঘুরছিল মাথায়। আমাদের এই সওদাগরি অফিসের রিসেপশনিস্ট মেয়েটি ভারি মিষ্টি। তার কাছে প্রায়ই একটি সুন্দর চেহারার লাজুক লাজুক ছেলেকে আসতে দেখি। আমার ঘরের কাচের মধ্যে দিয়ে দেখা যায়। ছেলেটি কোনো কথা বলে না। চুপচাপ ওর সামনে বসে থাকে। কপালের ওপর একরাশ চুল লেপটে থাকে। অনেকক্ষণ বসে থাকে। এককাপ চা খায়। তার পর চলে যায়। যতক্ষণ ও থাকে ততক্ষণ আমাদের রিসেপশনিস্টের গলাটা এমনিতে যত না মিষ্টি, তার চেয়েও বেশি মিষ্টি শোনায়।

ভেবেছিলাম, দারুণ একটা রোমান্টিক গল্প লিখব।

দূর থেকে বাড়ির আলোটা দেখা যাচ্ছিল। মনে মনে খুশি হলাম, আজ আলো নেভেনি বলে। তা হলে লেখাটা আরম্ভ করা যাবে। বাড়ির দরজায় যখন প্রায় পৌঁছে গেছি, তখনই ঝুপ করে আলোটা নিভে গেল।

ঠাকুর যখন দরজা খুলল তখনও ওরা ঘরে ঘরে মোমবাতি জ্বালায়নি।

বাড়িতে দুটো লণ্ঠন ছিল। কিন্তু কেরোসিন তেল নেই। পাওয়া যায় না। লণ্ঠন জ্বালানো যায় না।

বড়োমেয়ের পরীক্ষা। মোমবাতির কাঁপতে-থাকা আলোতে পড়তে পড়তে ওর চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়ছে। আগামী রবিবার ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

রানুর মেজাজ রুক্ষ হয়েছিল। স্বাভাবিক কারণে। বলল, তুমি অফিস যাবার আগে সেই যে কারেন্ট গেল, আর এল আবার বিকেল চারটেয়। এসেই চলে গেল ছ-টার সময়। কিছু ভালো লাগে না আর। আমাকে টিকিট কেটে দাও, আমি মায়ের কাছে চলে যাব শিলং-এ। এরকমভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না। বাচ্চা দুটো ঘেমে ঘেমে মরে গেল। দিনের পর দিন, দিনের পর দিন; আর কত দিন?

তার পর বলল, জানো, সারাদিন রুমির স্কুলেও কারেন্ট থাকে না। স্কুলের ইউনিফর্ম পরে সারাদিন ঘামে। যখন বাড়ি ফেরে, মনে হয়, সমস্ত জীবনীশক্তি বুঝি কেউ নিংড়ে নিয়েছে। মুখটা লাল হয়ে থাকে, চোখ দুটো ফ্যাকাশে।

সারাদিন লোডশেডিং-এর মধ্যেও শত ঝামেলার পর আমার এসব কথা আর ভালো লাগছিল না।

বললাম, কী করবে বলো? কষ্ট তো সকলেই করছে। তুমি বা তোমরা তো আর একা করছ না? কলকাতা শহরের লোক, গ্রামের লোক, সকলেই করছে।

রানু রেগে বলল, সকলেই এমন কষ্ট করছে, কিন্তু এর কোনো প্রতিকার নেই? আমরা কি মানুষ না জন্তু?

আমি দার্শনিকের মতো বললাম, আমরা মানুষ। অত সহজে অধৈর্য হলে চলে না। ধৈর্য ধরো। পাগলামি কোরো না। দেখো তো, সোহিনির ‘মানুষ’-কে। ওর দেশ ভুটান। তবুও কী করে ও মুখ গুঁজে এই গরম সহ্য করছে। কখনো ওকে রাগতে দেখেছ? কামড়াতে দেখেছ কাউকে? ওকে দেখে শেখো। তুমি বড়ো বেশি অধৈর্য। তুমি কি ওর কাছে, একটা কুকুরের কাছেও হেরে যেতে চাও? তোমার বাড়ি তো শিলং-এ। শিলং কি থিম্পুর চেয়েও ঠাণ্ডা?

রানু কথা না বলে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল।

শুধু গায়ে একটা পাতলা ব্লাউজ পরেছে ও। চুলগুলোকে বাউলের মতো ঝুঁটি করে মাথার ওপর বেঁধে রেখেছে। গা দিয়ে ঘামের গা-গোলানো গন্ধ বেরুচ্ছে।

আমি একটা দারুণ রোমান্টিক গল্প লিখব। এখন আমার নষ্ট করার মতো সময় নেই।

আমি জামাকাপড় ছেড়ে বাথরুমে গেলাম।

কলের নীচে বালতিটা টং টং করছিল। বালতিতে একফোঁটা জল নেই। চৌবাচ্চাতেও নয়। কল খুললাম। কলে কোনো আওয়াজই নেই। এমনকী চোঁ চোঁ আওয়াজ নিয়ে জল যে অদূর ভবিষ্যতে আসতে পারে এমন সান্ত্বনাও কল দিল না।

আমি রেগে সবেগে বাথরুমের দরজা খুলে বাইরে এলাম। সত্যি সত্যি। এরা ভেবেছে কী? সারাদিন রোজগারের ধান্ধা করে, চাকরির গ্লানি সেরে বাড়ি ফিরলাম। যাদের ভালো রাখার জন্যে যাদের সুখের জন্যে আমার এত হয়রানি, তাদের একটুও কনসিডারেশন নেই আমার প্রতি?

রানুকে বললাম, সব জল তো না ফুরোলেও পারতে! আমার জন্যে কি একবালতি জলও ধরে রাখতে পারোনি?

রানু বলল, আজ সারাদিন আমি এবং মেয়েরা চান করিনি। তুমিই একমাত্র লোক যে চান করে গেছ সকালে। কাপড় কাচা হয়নি। কোনোক্রমে বাসন মাজা হয়েছে, কোনোক্রমে খাওয়ার জল শুধু ভরে রাখা হয়েছে। আমি চটে উঠে বললাম, কেন? আমি কি মাসে মাসে বাড়িওয়ালাকে একবাণ্ডিল টাকা দিই না? আমরা কী করেছি?

রানু মুখ ঘুরিয়ে বলল, বাড়িওয়ালার কী দোষ? পাম্প চললে, তবেই না ট্যাঙ্কে জল উঠবে? সারাদিনে দু-ঘণ্টা পাম্প চললে আর বাড়িওয়ালা কী করবে?

আমি ভেবেছিলাম, দারুণ একটা রোমান্টিক গল্প লিখব।

বন্ধুরা বলে, আমার হাতে নাকি প্রেমের গল্প দারুণ খোলে।

ঘরে ঢুকে দেখি, আমার ন-বছরের, বড়োমেয়ে রুমি খালি গায়ে টেবিলের সামনে ইজের পরে বসে আছে। এই বয়েসেও শরীরে একটুও বড়ো হয়নি। যতটুকু বিশেষত্ব ওর তা ওর উজ্জ্বল চোখ দুটিতে। মোমবাতির সামনে উপুড় হয়ে ও পরীক্ষার পড়া তৈরি করছে। ঘরের কোনায় আয়নায়, মোমবাতির কাঁপা-কাঁপা আলোয় ওর শীর্ণ, অসম্ভব ফর্সা; রুগণ পাঠরতা শরীরের ছায়া পড়েছে।

ও আমাকে দেখতে পায়নি।

আমার মেয়ে। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। ওর এখনও ভোট দেওয়ার বয়েস হয়নি। যখন হবে, তখন ও নি:সংশয়ে আমারই মতো বুঝতে পারবে যে, ওর ভোটের জন্যে কেউ লালায়িত নয়। মধ্যবিত্তর ভোট থাকল কি গেল তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কোনো দলেরই; এই বিরাট সমাজতান্ত্রিক গরিবি-হঠানোর গণতন্ত্রে। ও জানে না, ওর এই মোম-গলানো, চোখ-গলানো পড়াশুনোর বিনিময়ে একদিন সাবালিকা হয়ে ওঠার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ও যে ছাপটা পাবে, (কলকাতার বাজারের মরা-পাঁঠার পেছনে কর্পোরেশনের ছাপেরই মতো) সেই ছাপের বিনিময়ে ও হয়তো মাথা খুঁড়েও কোনো চাকরি পাবে না। ওকে মানুষ করার জন্যে সমস্ত কষ্টস্বীকার আমার বৃথাই হবে। ওর সমস্ত কষ্টও বৃথা হবে। রুমি এখনও জানে না, ওর ভবিষ্যৎ-ও আজকের অন্ধকার গুমোট রাতের কম্পমান মোমবাতির আলোর মতোই কম্পমান; অনিশ্চিত।

আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছিলাম। ঘামে আমার মাথার চুল, সারা-গা ভিজে গেছিল। ওর ঘর থেকে বেরিয়ে আসছি এমন সময় পাশের ঘর থেকে সোহিনি হঠাৎ ভীষণ চিৎকার করে কেঁদে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটাও ভৌ ভৌ করে ডেকে উঠল। বোবা কুকুরের ভৌ ভৌ ও সোহিনির কান্না প্রায় একইসঙ্গে শোনা গেল।

আমি দৌড়ে ওঘরে যেতে যেতেই রানু বারান্দা থেকে এবং ঠাকুর রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এল।

‘মানুষ’ সোহিনিকে কামড়ে দিয়েছে। ওর গাল থেকে একখাবলা মাংস কেটে নিয়েছে ‘মানুষ’। সোহিনির বাধ্য শান্ত-শিষ্ট কুকুর।

সোহিনি ভয়ে যন্ত্রণায় নীল হয়ে গেছে। মুখ হাঁ করে কাঁদছে সোহিনি।

আমি দৌড়ে গিয়ে বসবার ঘর থেকে টেলিফোন করতে গেলাম ডাক্তারবাবুকে। ডায়ালটোন পেলাম না। রুমিও দৌড়ে এসেছিল পড়া ছেড়ে। রুমি বলল, লোডশেডিং-এর সময় টেলিফোন কাজ করে না বাবা।

আমি তাড়াতাড়ি করে জামা পরতে গেলাম। ডাক্তারের কাছে এক্ষুনি নিয়ে যেতে হবে ওকে। এখনই অ্যান্টি-র‌্যাবিস ইনজেকশান দেওয়া দরকার কি?

জামা পরে ও ঘরে গিয়ে ফিরে আসতেই দেখি রানু হি-হি করে হাসছে। ওর মাথার চুলের ঝুঁটি ভেঙে পড়েছে, পিঠময়; বুকময়। মেঝেতে পা-ছড়িয়ে বসে ও ভুটিয়া-কুকুরটাকে কোলে নিয়ে চুমু খাচ্ছে। হাসছে আর চুমু খাচ্ছে। সোহিনির দিকে একবারও ফিরে তাকাচ্ছে না। ঠাকুর সোহিনিকে কোলে করে অবাক চোখে রানুর দিকে চেয়ে আছে। সোহিনির গাল গড়িয়ে, বুক গড়িয়ে রক্ত পড়ছে।

রানু কি পাগল হয়ে গেল? আমার মনে হল রানু পাগল হয়ে গেছে। না গেলেও, মনে হল যেকোনো মুহূর্তে ও পাগল হয়ে যেতে পারে।

আমি ডাকলাম, রানু! এই রানু!

রানু হি-হি করে হাসতে হাসতে আমার দিকে আঙুল তুলে পাগলের মতো বলল, কিছু একটা করো। প্লিজ তোমরা কিছু একটা করো।

তোমরা বলতে ও কাদের বোঝাল বুঝলাম না! আমি তো একাই ছিলাম—নাকি আমার পেছনে আর কেউ ছিল?

রানু বলল, কুকুরটার পর্যন্ত অসহ্য হয়েছে। তারও সহ্যশক্তি শেষ হয়ে গেছে।

তার পর আমার দিকে ঘৃণার চোখে, আগুনের চোখে চেয়ে বলল, তুমি কি এই ‘মানুষ’টার চেয়েও অধম? কুকুরের চেয়েও অধম?

আমার আর দাঁড়াবার উপায় ছিল না।

আমি সোহিনিকে বুকে করে অন্ধকারের মধ্যে মোড়ের ডাক্তারখানার দিকে যাচ্ছিলাম। একহাতে টর্চ ধরে হাঁটছিলাম আমি, কলকাতা মহানগরীর এই গভীর অরণ্যের অন্ধকারে। অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। কিছু ভাবাও যাচ্ছিল না। কিন্তু অন্ধকারের মধ্যে একটা অস্পষ্ট বোধ লক্ষ লক্ষ ঘুণপোকার মতো আমার মস্তিষ্কর কোষগুলো কুরে কুরে খাচ্ছিল। সেই চাপ-চাপ অন্ধকারের মধ্যে থেকে অন্ধকারতর কে যেন তার ভৌতিক হাত নেড়ে আমাকে বার বার ইশারা করছিল।

সেই ভৌতিক অন্ধকারে অন্ধকারতর কেউ বার বার বলছিল, সোহিনির জন্যে, রুমির জন্যে, ঠাকুরের জন্যে, রানুর জন্যে এমনকী আমারও জন্যে, আমাদের প্রত্যেকের জন্যেই কিছু একটা করতে হবে। কিছু একটা করতে হবেই।

আমি হোঁচট খেতে খেতে, রক্তাক্ত মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম সেটা কী?

আমাদের কর্তব্যটা কী?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *