এক সন্ন্যাসিনী। সুলভা মিথিলার রাজা জনকের (ওঁর অন্য নাম ধর্মধ্বজ) খ্যাতি শুনে ওঁকে পরীক্ষা করার জন্য মনোহর রূপ ধারণ করে ওঁর সভায় এলেন। তারপর যোগবলে নিজের সত্ব, বুদ্ধি ও চক্ষু জনকের সত্ব, বুদ্ধি ও চক্ষুতে সন্নিবিষ্ট করলেন। জনক প্রথমে সুলভাকে তত্বজ্ঞান বিষয়ে অনেক কিছু বললেন। তিনি যে, আসক্তি মোহ ইত্যাদি ত্যাগ করতে পেরেছেন তা জানালেন। আরও জানালেন যে, তিনি সবাইকেই সমদৃষ্টিতে দেখেন এবং বিশ্বাস করেন যে, মোক্ষ লাভের সঙ্গে অর্থের কোনও যোগ নেই – শুধু জ্ঞান দ্বারাই মোক্ষ লাভ হয়। তারপর সুলভাকে প্রশ্ন করলেন, কেন সুলভা ওঁর হৃদয়ে প্রবেশ করছেন। জনক ক্ষত্রিয় আর সুলভা ব্রাহ্মণী। তিনি গৃহাশ্রমে আছেন আর সুলভা সন্ন্যাসিনী – ওঁদের দুজনের কখনও মিলন হতে পরে না। সুলভার যদি পতি থাকে, তাহলে তিনি জনকের অগম্যা। অতএব ওঁকে ত্যাগ করে সুলভা যেন চলে যান। সুলভা তখন ওঁকে বললেন যে, জনক যদি যদি সকলকেই সমান দৃষ্টিতে দেখেন তাহলে ওঁর এই কথাগুলি নিরর্থক। জনক যদি সত্যিই জীবন্মুক্ত হন, তাহলে সুলতার স্পর্শে ওঁর কি অপকার হবে? উনি পদ্মপত্রে জলের মতই নির্লিপ্ত ভাবে জনকের দেহে আছেন। সুলভা জনকের স্বজাতি, রাজর্ষি প্রধানের বংশে জন্মেছেন। যোগ্য পতি না পেয়ে মোক্ষ ধর্মের সন্ধানে তিনি সন্ন্যাসিনী হয়েছেন। সেই ধর্ম জানবার জন্যই জনকের কাছে এসেছেন। ওঁর শরীরে এক রাত্রি শয়ন করে উনি কাল প্রস্থান করবেন।