ঐরাবত নাগের বংশজাত চিকুরের পুত্র ও মাতলি-কন্যা গুণকেশীর পতি। গুণকেশীর জন্য যোগ্য পতি খুঁজতে মাতলি দেবর্ষি নারদকে নিয়ে নানান জায়গায় ঘুরেছিলেন। অবশেষে অনন্ত নাগ বাসুকির পুরীতে গিয়ে একটি সুদর্শন নাগকে দেখে ওঁর পছন্দ হল। নারদের কাছে মাতলি জানলেন যে, সেই নাগটি হল ঐরাবত নাগের বংশজাত আর্যকের পৌত্র সুমুখ। মাতলি যখন সুমুখের হস্তেই কন্যাকে সম্প্রদান করবেন ঠিক করলেন, তখন আর্যক বললেন যে, সুমুখের পিতা চিকুরকে গরুড় ভক্ষণ করেছেন এবং এক মাস পরে সুমুখকেও গরুড় ভক্ষণ করবেন স্থির করেছে। সেই শুনে মাতলি সুমুখকে নিয়ে ইন্দ্রের কাছে গেলেন। বিষ্ণু সেখানে ছিলেন। সব শুনে তিনি ইন্দ্রকে বললেন সুমুখকে অমৃত পান করাতে। ইন্দ্র বর দিলেন সুমুখ দীর্ঘায়ু হবেন বলে। তখন আস্বস্ত হয়ে মাতলি গুণকেশীকে সুমুখ হস্তে সম্প্রদান করলেন। সুমুখ দীর্ঘায়ু পেয়েছেন জেনে গরুড় ক্রুদ্ধ হয়ে ইন্দ্রকে প্রশ্ন করলেন যে, ইন্দ্র গরুড়কে নাগভোজনের বর দিয়ে এখন তাতে বাদ সাধছেন কেন। গরুড়কে রুষ্ট দেখে ইন্দ্র বললেন যে, তিনি নন – বিষ্ণু সুমুখকে অভয় দিয়েছেন। উত্তর শুনে গরুড় আরও ক্রুদ্ধ হলেন। বিষ্ণু, যাঁর ভার গরুড় অতি সহজে বহন করেন, তিনি কি করে ওঁর ভোজনে বাধা দিতে পারেন! বিষ্ণুর সন্মুখে গিয়ে গরুড় নিজের বল নিয়ে আস্ফালন করতেই, বিষ্ণু তাঁর বাম বাহুর ভার গরুড়ের ওপর রাখলেন। সেই ভারে গরুড় হতচেতন হয়ে পড়লেন। চেতনা পেয়ে গরুড় বিষ্ণুর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। বললেন, তিনি শুধু বিষ্ণুর ধবজবাসী পক্ষী মাত্র – বিষ্ণু যে অত বলশালী তিনি তা জানতেন না। বিষ্ণু তখন সুমুখকে গরুরের বক্ষে নিক্ষেপ করলেন। গরুড়ের কাছে সুমুখের আর কোনও ভয় রইলো না।