অগ্নিপুত্র সুদর্শনের মাতা ছিলেন ইক্ষ্বাকুবংশীয় রাজা দুর্যোধন ও দেবনদী নর্মদার কন্যা সুদর্শনা। রাজা ওঘবানের কন্যা ওঘবতীকে উনি বিবাহ করেছিলেন। সুদর্শন, যিনি সস্ত্রীক কুরুক্ষেত্রে বাস করতেন, স্থির করেছিলেন যে, গৃহস্থাশ্রমে থেকেই তিনি মৃত্যুকে জয় করবেন। তাঁর পতিপরায়না ভার্যা ওঘবতীকে সুদর্শন নির্দেশ দিয়েছিলেন সর্ব প্রকারে অতিথিদের তুষ্ট রাখতে – প্রয়োজন হলে নিজেকে দান করেও। সুদর্শনের অবর্তমানে একদিন ধর্ম ব্রাহ্মণের বেশে এসে ওঘবতীর কাছে এলেন। ওঘবতী যখন জানতে চাইলেন ব্রাহ্মণ কি চান। ব্রাহ্মণ বললেন যে, তিনি ওঘবতীকে চান। ওঘবতী অন্যান্য জিনিস দিতে চাইলেও ব্রাহ্মণ তা নিতে সন্মত হলেন না। তখন পতির নির্দেশ স্মরণ করে সলজ্জে নিজেকে দান করলেন। এই সময়ে সুদর্শন ফিরে এসে ব্রাহ্মণ অতিথি ওঁর স্ত্রীকে ভোগ করছেন বুঝতে পেরেও ক্রোধান্বিত হলেন না। বরং বললেন যে, ওঁর পত্নী ছাড়াও আর যা কিছু আছে তা তিনি অতিথিকে দান করতে প্রস্তুত। তখন ধর্ম আত্মপ্রকাশ করে বললেন যে, তিনি সুদর্শনকে পরীক্ষা করতে এসেছিলেন। সুদর্শন তাঁর সত্যনিষ্ঠায় মৃত্যুকে জয় করেছেন। ওঁর পতিব্রতা পত্নীর দিকে ত্রিলোকের কেউই দৃষ্টিপাত সক্ষম হবেন না। ওঘবতী তাঁর অর্ধশরীর দ্বারা নদী হয়ে লোকপাবন করবেন, বাকি অর্ধশরীরে সুদর্শনের সঙ্গে শাশ্বত সনাতন লোক লাভ করবেন। এই ওঘবতী নদীর তীরেই ভীষ্ম শরশযায় শায়িত ছিলেন।