পাণ্ডবদের কনিষ্ঠ ভ্রাতা – পাণ্ডুর পত্নী মাদ্রীর সন্তান। কিন্দম মুনির অভিশাপে পাণ্ডুর পক্ষে পিতা হওয়া সম্ভব ছিল না। মাদ্রী পুত্র কামনা করলে, পাণ্ডু তাঁর অপর ভার্যা কুন্তির সাহায্য চান। দুর্বাসা মুনির প্রদত্ত বরে কুন্তি যে-কোনও দেবতাকে আহবান করে তাঁর পুত্র ধারণ করতে পারতেন। কুন্তি মাদ্রীকে তাঁর শক্তি প্রদান করলে মাদ্রী অশ্বিনীকুমারদ্বয়কে আহবান করে নকুল ও সহদেবকে জন্ম দিলেন। পাণ্ডুর মৃত্যুর পর মাদ্রী সহমরণে গেলে কুন্তিই নকুল ও সহদেবকে পুত্রবৎ পালন করেন। সহদেবকে কুন্তি বিশেষ স্নেহ করতেন। সহদেবের বহুবিবাহ – দ্রৌপদী (যিনি অন্য পঞ্চ পাণ্ডবেরও ভার্যা) ছাড়া ওঁর আরও দুই ভার্যা ছিলেন। মদ্ররাজ-দুহিতা বিজয়া স্বয়ংবর সভায় সহদেবের গলায় মালা দেন। সহদেবের অপর ভার্যা মগধ-রাজ জরাসন্ধের কন্যা। ওঁর দুই পুত্র – শ্রুতকর্মা দ্রৌপদীর গর্ভে ও সুহোত্র বিজয়ার গর্ভে জন্মেছিলেন। রাজসূয়-যজ্ঞের আগে শূরসেন, মৎস্য, পাণ্ড্য, ইত্যাদি দেশ জয় করলেও, যোদ্ধা হিসেবে সহদেবের বিশেষ খ্যাতি ছিল না। কিন্তু পণ্ডিত হিসেবে ওঁর খ্যাতি ছিল। শকুনি ও তাঁর পুত্রের অশ্লীল আচরণে ক্রুদ্ধ হয়ে সহদেব প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, শকুনিকে তিনি সবংশে বধ করবেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সেই শপথ তিনি পালন করতে পেরেছিলেন। পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানের পথে দ্রৌপদীর পতনের পরেই সহদেবের পতন ঘটে। ভীম তার কারণ জিজ্ঞাসা করায় যুধিষ্ঠির উত্তর দেন যে, সহদেবের গর্ব ছিল যে, তাঁর মত প্রাজ্ঞ কেউ নন। এই অহঙ্কারই তাঁর পতনের কারণ।