।। সমস্ত নৃপো কা সংগ্রাম ঔর নাশ।।
দ্বাত্রিংশাব্দে চ কৃষ্ণাংশে সংপ্রাপ্তে যোগরূপিনী। বেলা নাম শুভা নারী হরিনাগরসংস্থিতা। মহাবতীং সমাগম্য সভায়াং তত্র চাবিশৎ।।১।। এতস্মিন্নন্তরে প্রাপ্তাঃ কৃষ্ণাংশাদ্যা মহাবলাঃ। নত্বা পরমলং ভূপং বেলা বচনমব্রবীৎ।।২।। মহীপতিং প্রিয়ং মত্বা কৃষ্ণাংশং নৃপ দুপ্রিয়ম্। ত্বয়া মে ঘাতিতো ভর্তা ব্রহ্মানন্দো মহালঃ।।৩।। মহীরাজসুতৈধূতৈস্তারকাদৈৰ্মহাবলৈঃ। নারীবেষং চ চামুন্ডো ধুন্ধুকারেণ কারিতঃ।।৪।।
।। সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।।
এই অধ্যায়ে চন্দ্ৰবংশাদি সমস্ত নৃপগণের অন্তিম মহান্ ঘোর সংগ্রাম এবং তাতে সমস্ত রাজগণের ক্ষয় বৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে।।
শ্ৰী সূতজী বললেন–কৃষ্ণাংশ বত্রিম বর্ষে পদার্পণ করলে যোগ রূপিনী বেলা নাম্নী শুভনারী যিনি হরি নগরে সংস্থিত ছিলেন তিনি মহীবতীতে এসে সভা মধ্যে প্রবেশ করলেন। ইতি মধ্যে কৃষ্ণাংশ সেখানে উপস্থিত হলেন। বেলা রাজা পরিমলকে প্রণাম পূর্বক বলেছিলেন যে, হে নৃপ, আপনি মহীপতিকে প্রিয় এবং কৃষ্ণাংশকে দুপ্রিয় মনে করে মহাবলবান্ আমার স্বামী ব্রহ্মানন্দকে মৃত্যু মুখে অগ্রসর করেছেন।। ১-৩।।
মহীরাজের ধূর্ত পুত্র তারক প্রভৃতির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ধুন্ধুকারের মাধ্যমে যে নারী বেশধারী চামুন্ডাকে নিয়ে আমার স্বামীর কাছে এসে ছলের দ্বারা তার প্রিয় হয়ে উঠেছিল এবং এখন আমার স্বামী কুরুক্ষেত্রে মূৰ্চ্ছাপ্রাপ্ত হয়ে আছে। এই জন্য আমি আপনার সাথে তাঁর কাছে যেতে চাই।। ৪-৫।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। স্বামিনং প্রতি চাগম্য তে জগুশ্ছদ্মনা প্রিয়ম্। কুরুক্ষেত্রং স্থিতঃ স্বামী মহত্যা মুর্ছয়ান্বিতঃ। তস্মাদ্যুয়ং ময়া সার্দ্ধং গত্তমৰ্থ তং প্রতি।।৫।। ইতি ঘোরতমং বাক্যং শ্রুত্বা সর্বে শুচান্বিতাঃ। ধিভূপতিং চ মলনাং তাভ্যাং নো ঘাতিতঃ সখা।।৬। ইত্যুক্ত্বোচ্চৈশ্চ রুরুদুঃ কৃষ্ণাংশাদ্যা মহাবলাঃ। পত্রাণি প্রেষয়ামাসু স্বকীয়াত্তুপতীম্প্ৰতি।।৭।। ক্রোধযুক্তা তদা বেলা লিখিত্বা পত্রমুগ্ধণম্। মহীরাজায় সম্প্রেষ্য মলনাগেহমাগমৎ।।৮।। তৎপত্রং চ মহীরাজো বাচয়িত্বা বিধানতঃ। জ্ঞাত্বা তৎকারণং সর্বং তন্নিশম্য বিশাম্পতিঃ।।৯।। চিন্তাকলেবরং প্রাপ্য সুখনিদ্রাং ব্যনাশয়ৎ। আহুয় ভূপতীস্নবানেঘারযুদ্ধোন্মুখোহভবৎ।।১০।।
এই প্রকার ঘোর বচন শ্রবণ করে সকলে শোকাতুর হয়ে গেল। রাজা এবং মলনাকে ধিক্কার দিয়ে কৃষ্ণাংশ প্রভৃতি বলবান্ উচ্চৈ স্বরে রোদন করতে লাগলেন এবং তারা নিজ রাজাদের উদ্দেশ্যে পত্র প্রেরণ করলেন।। ৬-৭।।
সেই সময় ক্রোধ যুক্ত বেলা একটি উল্বণ পত্র লিখে মহীরাজের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে মলনার গৃহে আগত হলেন।। ৮।।
সেই পত্র মহীরাজ যথাবিধানে পাঠ করে তার সমস্ত কারণ জেনে এবং ক্ষত্রিয় স্বামী এই সকল শ্রবণ করে চিন্তা পূর্বক সুখনিদ্রা ত্যাগ করলেন। তিনি সমস্ত ভূপতিকে আহ্বান করে যুদ্ধ করতে উদ্যত হলেন।। ৯- ১০।।
চতুর্বিংশতিলক্ষৈশ্চ শূরৈভূপসমন্বিতৈঃ। কুরুক্ষেত্রং যযৌ শীঘ্রং ধৃতরাষ্ট্রাংশাসংভবঃ।।১১।। তথা পরিমলো ভূপো লক্ষষোড়শসৈন্যপঃ। দ্রুপদাংশো যযৌ শীঘ্রং বেলায়া স্বকুলৈঃ সহ।।১২।। স্যমন্তপঞ্চকে তীর্থে শিবরাণি চকার হ। ব্রহ্মানন্দঃ স্থিতো যত্র সমাধিধ্যানতৎপরঃ।।১৩।। গঙ্গাকুলে চতে সর্বে কৌরবাংশা মহাবলাঃ। শিবরাণি বিচিত্রাণি চক্রস্তে বিজয়ৈষি ণঃ।।১৪।। কৃত্বা তে কার্তিকীস্নানং দত্ত্বা দানান্যনেকশঃ। মার্গকৃষ্ণাদ্বিতীয়ায়াং যুদ্ধভূমিমুপাযঃ।।১৫।। বিম্বস্কেনীয়ভূপালো লহরস্তত্র চাগতঃ। কৌরবাংশাশ্চ তৎপুত্রাঃ ষোড়শৈব মহাবলাঃ। পূর্বজন্মনি তন্নাম যন্নান্না প্ৰশ্ৰিতা ইহ।।১৬।।
ধৃতরাষ্ট অংশ সম্ভূত সেই রাজা চব্বিশ লক্ষ শূর তথা ভূপতি সমন্বিত হয়ে শীঘ্র কুরুক্ষেত্রে আগত হলেন। সেই প্রকারে রাজা পরিমল, যিনি রাজা দ্রুপদের অংশ সম্ভূত ছিলেন তিনি ষোল লক্ষ সেনা নিয়ে তথা নিজকুল ওবেলাকে সঙ্গে নিয়ে শীঘ্র সেখানে চলে গেলেন।। ১১-১২।।
সেখানে সামন্ত পঞ্চক তীর্থে শিবির নির্মাণ করে, যেখানে ব্রহ্মানন্দের সমাধি ছিল সেখানে তাঁরা ধ্যান মগ্ন হলেন।। ১৩।।
গঙ্গাতটে তারা সকল কৌরবাংশ মহাবলবানগণ বিজয় লাভের ইচ্ছাতে সেখানে শিবির স্থাপন করলেন।। ১৪।।
তাঁরা সকলে সেখানে কার্তিকী পূর্ণিমা স্নান করে প্রভূত দান করলেন। মার্গ কৃষ্ণ পক্ষের দ্বিতীয় দিনে তারা সকলে যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হলেন। বিধ্বকসেনীয় রাজা লহরও ও সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁর ষোড়শ, কৌরবাংশ পুত্র মহাবলবান্ ছিলেন। তাঁদের পূর্বজন্মে যে নাম ছিল সেই নামে তাঁরা বর্তমানেও প্রসিদ্ধ। তাঁদের নাম হল দুসসহ দুশম্মল, জলসন্ধ, সম, সহ, রিন্দ, অনুবিন্দ, সুবাহু, দপ্ৰধৰ্মন, দুর্মর্ষণ, সোমকীর্তি, অনূদর, মাল, সত্ব, বিবৎসু এই সকলে ক্রমান্বয়ে বলবান্ ছিলেন।। ১৫-১৮।।
দুস্সহো দুশ্শলশ্চৈব জলসন্ধঃ সমঃ সহঃ। বিন্দস্তথানুবিন্দশ্চ সুবহুদুপ্রধৰ্ষণঃ।।১৭।। দুমষর্ণশ্চ দুষ্কর্ণঃ সোমকীর্তিরদরঃ। শলঃ সত্ত্বো বিবিৎসুশ্চ ক্ৰমাজ্ঞেয়া মহাবলাঃ।।১৮।। তোমরান্বয়ভূপালো বাহ্লীকপতিরাগতঃ। ত্ৰিলক্ষৈশ্চ তথা সৈন্যৈঃ সপ্তপুত্রৈশ্চ ভূপতিঃ।।১৯।। চিত্রোপচিত্রৌ চিত্রাক্ষশ্চারুশ্চিত্রঃ শরাসনঃ। সুলোচনঃ সবর্ণংশ্চ পূর্বজন্মনি কৌরবাঃ।।২০।। তেষামংশাঃ ক্রমাজ্জাতা অভিনন্দনদেহজাঃ। মহানন্দশ্চ নন্দশ্চ পরানন্দোপনন্দকৌ। সুনন্দশ্চ সুরানন্দঃ প্রনন্দঃ কৌরবাংশকঃ।।২১।। নৃপঃ পরিহরবংশীয়ো মায়াবর্মা মহাবলী। লক্ষ সৈন্যযুতঃ প্রাপ্তো দশপুত্ৰসমন্বিতঃ।।২২।। দুমদো দুর্বিগাহশ্চ নন্দশ্চ বিকটাননঃ। চিত্রবর্মা সুমা চ সুদুর্মোচন এব চ।।২৩।।
তোমার বংশের রাজা বাহুকি দেশের অধিপতি সেখানে আগত হলেন, তিনি তিনলক্ষ সেনা এবং সাতপুত্র যুক্ত ছিলেন। চিত্র উপচিত্র চিত্রাক্ষ চারুচিত্র শরাসন সুলোচন সবর্ণ সকলে পূর্ব জন্মে কৌরব ছিলেন। তাঁদের অংশ ক্রমে উৎপন্ন হন এবং তাঁরা সকলে অভিনন্দনের দেহ থেকে জাত হন। মহানন্দ নন্দ পরানন্দ উপনন্দক সুনন্দ সুরানন্দ প্রনন্দ সকলে কৌরবাংশ ছিলেন।। ১৯-২১।।
পরিহর বংশের নৃপতি মায়াবর্মা মহাবলবান্ ছিলেন। তিনি নিজ দশপুত্র এবং একলক্ষ সেনা যুক্ত হয়ে যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হলেন।। দুর্মদ, দুর্বিপাহ, নন্দ, বিকটানন, চিত্রবর্মা, সুবর্মা, সুদুর্মোচন, ঊর্ণনাভ, সুনাভ, উপনন্দ এঁরা সকলে কৌরবাংশ ছিলেন এবং রাজা ছিলেন অংকপতির পুত্র।। ২২-২৪।।
ঊর্ণনাভঃ সুনাভশ্চ চোপনন্দশ্চ কৌরবাঃ। তেষান্মংশাঃ ক্রমাজ্জাতাঃ সুতো অঙ্গপতেঃস্মৃতাঃ।।২৪।। মত্তঃ প্রমত্ত উন্মত্তঃ সুমত্তী দুর্মদস্তথা। দুমুখো দুর্দ্ধরো বায়ুঃ সুরথো বিরুথঃ ক্রমাৎ।।২৫।। শুক্লবংশীয়ভূপালো মূলবৰ্মা সমাগতঃ। লক্ষসৈন্যৈশ্চ বলবান্দশপুত্ৰসমন্বিত।।২৬।। অয়োবাহুর্মহাবালুশ্চিত্রাঙ্গশ্চিত্রকুন্ডলঃ। চিত্রাযুধো নিষঙ্গী চ পাশীবৃন্দারকস্তথা।।২৭। দৃঢ়বর্মা দৃঢ়ক্ষতঃ পূর্বজন্মনি কৌরবাঃ। তেষামংশা মহীং জাতাগৃহে তে মূলবৰ্মণঃ।।২৮।। বলশ্চ প্রবলশ্চৈব সুবলোবলবাম্বলী। সুমুলশ্চ মহামূলো দুর্গো ভীমো ভয়ঙ্করঃ।।২৯। কৈকয়শ্চন্দ্ৰবংশীয়ো লক্ষসৈন্যসমন্বিতঃ। দশপুত্রান্বিতঃ প্রাপ্তঃ কুরুক্ষেত্রে মহারণে।।৩০।
উন্মত্ত, মত্ত, প্রমত্ত, সুমত্ত, দুর্মদ, দুর্মুদ, দুর্মুখ, দুর্ধর, বায়ু, সুরথ, বিরথ এঁরা সকলে ক্রমান্বয়ে জাত হন।। ২৫।।
শুক্লবংশের নৃপতি মূলবর্মা সেই যুদ্ধভূমিতে উপস্থিত হন। একলক্ষ সেনা ও দশপুত্র তাঁদের ছিল। বড় বলবানদের ও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তাদের নাম অয়োবহু, মহাবহু, চিত্রাংগ, চিত্রকুন্ডল, চিত্রায়ুধ, নিম, পাশী, বৃন্দারক, দৃঢ়বর্মা, দৃঢ়ক্ষেত্র। এরা সকলে পূর্বজন্মে কৌরব ছিলেন। তাদের অংশ পৃথিবীতে মূলবর্মার গৃহে জন্মগ্রহণ করেছিল।। ২৬-২৮।।
বল, প্রবল, সুবল, বলবান্, বলী, সুমূল, মহামূল, দূর্গ, ভীম এই সকল ভয়ংকর নাম ছিল। চন্দ্রবংশের এক কৈকয় রাজা একলক্ষ সেনা নিয়ে এবং দশপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে কুরুক্ষেত্রের মহাযুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েছিল।। ২৯-৩০।।
ভীমবেগো ভীমবলো বলাকী বলবৰ্দ্ধনঃ। উগ্রায়ুধো দন্ডধরো দৃঢ়সন্ধো মহীধরঃ। জরাসন্ধঃ সত্যসন্ধঃ পূর্বজন্মনি কৌরবাঃ। তেষামংশা সমুদ্ভূতাঃ কৈকয়স্য গৃহে শুভে।।৩২।। কামঃ প্রকামঃ সংকামো নিষ্কামো নিরপত্রপঃ। জয়শ্চ বিজয়শ্চৈব জয়ত্তো জয়বাঞ্জয়ঃ।।৩৩।। নাগবংশীয়ভূপালো নামবৰ্মা সমাগতঃ। লক্ষসেনান্বিতঃ প্রাপ্তো দশপুত্ৰসমন্বিতঃ।।৩৪। পূর্বজন্মনি যন্নান্না তন্নান্না কৌরবা ভূবি। পুন্ড্রদেশপতেঃ পুত্রা জাতা দশ শিবাজ্ঞয়া।। ৩৫।। উগ্রশ্রবা উগ্রসেনঃ সেনানীদুষ্পরায়ণঃ। অপরাজিতঃ কুন্ডশায়ী বিশালাক্ষো দুরাধরঃ।।৩৬।। দৃঢ়হস্তঃ সুহস্তশ্চ সুতাস্তে নাগবর্মণঃ।।৩৭।
ভীমক, ভীমবল, বলাকী, বলবর্ধন, উগ্রায়ুধ, দন্ডধর, দৃঢ়সন্ধ, মহীধর, জরাসন্ধ, সত্যসন্ধ এই সকল ব্যক্তি পূর্ব জন্মে কৌরব ছিলেন এবং তাদের অংশ বর্তমানে কৈকয় বংশে জাত হয়েছিল।। ৩১-৩২।।
কাম, প্রকাম, সংকাম, নিষ্কাম, নিরপত্রপ, জয়, বিজয়, জয়ন্ত, জয়বান্, জয় এই সকলবীর নাগ বংশের রাজা নাগবর্মার পুত্র। তাঁরা একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে এসেছিলেন।। পূর্বজন্মে তাঁদের এই নামই ছিল এবং এই জন্মে তাদের সেই নামেই জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা সকলে কৌরব ছিলেন এবং অংশাবতার হয়ে এই ভূমন্ডলে জন্মগ্রহণ করেন। পুত্র দেশপতির দশপুত্র শিবাজ্ঞাতে সমুৎপন্ন হন।। তাঁদের নাম উগ্রশ্রবা, উগ্রসেন, সেনানী, দুষ্পারায়ণ, অপরাজিত, কুন্ডশায়ী, বিশালক্ষ, দুরাধর, দৃঢ়হস্ত, সুহস্ত এঁরা সকলে নাগবর্মার পুত্র।। ৩৩-৩৬।।
তোমরে সমুৎপন্ন মদ্রকেশ সেখানে এলেন। তাঁদের সাথে একলক্ষ সেনা এবং দশপুত্রও যুদ্ধ স্থলে এসেছিলেন। তাঁরা হলেন বাতবেগ সুর্বচা নাগদন্ত উগ্রমাদক আদিকেতু বকশী কবচী ক্রাথ কুন্ড কুন্ডধার এঁরা সকলে কৌরব ছিলেন। এই সময় পুনরায় নিজ নিজ নামে এই ভূমন্ডলে মদ্রকেশ গৃহে জাত হন।। ৩৯-৪০।।
মদ্রকেশঃ সমায়াতস্তোমরাস্বয়সম্ভবঃ। লক্ষসৈন্যৈযুতো রাজা দশপুত্ৰসমন্বিতঃ।।৩৮।। বাতবেগঃ সুর্বচাশ্চ নাগদন্তোগ্রযাজকঃ। আদিকেতুশ্চ বকুশী চ কবচী কাথ এব চ।।৩৯।। কুন্ডশ্চ কুণ্ডধারশ্চ কৌরবা পূর্বজন্মনি। তন্নান্না ভূবি বৈ জাতা মদ্রকেশস্য মন্দিরে।।৪০। নৃপঃ শার্দূলবংশীয়ো লক্ষসৈন্যসমন্বিতঃ। পূর্ণামলো মাগধেশো দশপুত্ৰান্বিতো যযৌ।।৪১।। বীরবাহুভীরথশ্চোগ্রশ্চৈব ধনুর্ধরঃ। রৌদ্রকর্মা দৃঢ়রথোহলোলুপশ্চাভয়স্তথা।।৪২।। অনাধৃষ্টঃ কুন্ডভেদী কৌরবাঃ পূর্বজন্মনি। পূর্ণামলস্য বৈ গেহে তন্নান্না ভূবি সম্ভবঃ।।৪৩।। মংকণঃ কিন্নরো নাম রূপদেশে মহীপতিঃ। চীনদেশাৎ পরে পারে রূপদেশঃ স্মৃতো বুধৈঃ। নরঃ কিন্নরঃ জাতীয়ো বসতি প্রিয়দর্শনঃ।। ৪৪।।
শার্দূল বংশের নৃপ একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আসেন। মগধাধি পতি পূর্নামল নিজ দশ পুত্রের সঙ্গে সেখানে আসেন। তাদের নাম বীর বাহু, ভীরথ, উগ্র, ধনুধর, রৌদ্রবর্মা, দৃঢ়রথ, আলোলুপ, অভয়, অনাধষ্ট এবং কুন্ডভেদী। পূর্বজন্মে তাঁরা কৌরব ছিলেন। পুনরায় এই জন্মে তারা রাজা পূর্নামলের গৃহে জন্ম গ্রহণ করেন এবং পূর্বনামে প্রসিদ্ধ হন।। ৪১- ৪০।।
মংকন কিন্নর নামে রূপ দেশের রাজা ছিলেন। চীন দেশের পরপার রূপদেশ নামে খ্যাত। সেখানে কিন্নর জাতীয় নৃপতি নররূপে প্রিয়দর্শন বসবাস করতেন। সেই সময় রাজা মংকন দশসহস্র কিন্নর গণের সঙ্গে এসেছিলেন। তাঁরা আট পুত্রও সঙ্গে এসেছিল। তাদের নাম বিহাবী, প্রথম, প্রমাথী, দীর্ঘরোমক, দীর্ঘবাহু, মহাবাহু, ব্যুড়োহা, বালকধ্বজ। পূর্বজন্মে তারা যে নামে খ্যাত ছিলেন তারা সেই নামেই এই জন্মে খ্যাত হন। বিরজাংশ থেকে মংকন নামে কিন্নর জাত হন।। ৪৪ -৪৭।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। মংকর্ণশ্চ তদা প্রাপ্ত কিন্নরায়ুতসংযুতঃ। অষ্টপুত্ৰান্বিতঃ প্রাপ্তো যত্র সর্বনৃপাঃ স্থিতাঃ।।৪৫।। বিরাবী প্রথমশ্চৈব প্রসাথী দীর্ঘরোমকঃ। দীর্ঘবাহু মহাবাহু ব্যূঢ়োরাঃ কনকধ্বজঃ।।৪৬।। পূর্বজন্মনি যন্নান্না তন্নান্না কিন্নরা ভূবি। বিরজোংশশ্চ যোজাতো মংকণো নাম কিন্নরঃ।।৪৭।। নেত্ৰসিংহ সমায়াতো লক্ষসৈন্যসমন্বিতঃ। শল্যাংশঃ স তু বিজ্ঞেয়ঃ শার্দূলান্বয়সম্ভবঃ।।৪৮।। তদা গণপতি রাজা লক্ষসৈন্যসমন্বিতঃ। সংপ্রাপ্ত শকুনে রংশস্ত্যক্ত্বা গেহে স্বপুত্তকান্।।৪৯।। ময়ূরধ্বজ এবাপি লক্ষসৈন’সমন্বিতঃ। মকরন্দং গৃহে ত্যক্ত্বা বিরাটাংশঃ সমাগতঃ।।৫০।। বীরসেনঃ সমায়াতঃ কামসেনসমন্বিতঃ। লক্ষসেনন্বিতস্তত্র চোগ্রসেনাংশসম্ভবঃ।।৫১।।
নেত্ৰসিংহ এক লক্ষ সেনা সমন্বিত হয়ে সেখানে এসে উপস্থিত হন। তিনি রাজা শল্যের অংশদ্ভূত ছিলেন। তিনি শার্দূল বংশে সমুৎপন্ন হন। সেই সময় রাজা গণপতি একলক্ষ সেনা নিয়ে সেখানে আগত হলেন, তিনি শকুণির অংশে জাত হন। তিনি পুত্রদের গৃহেই ত্যাগ করে আসেন।। ৪৮-৪৯।।
রাজা বিরাটের অং গদ্ভূত রাজা ময়ূধ্বজ একলক্ষ সেনা নিয়ে মকরন্দকে গৃহে ত্যাগ করে আসেন।। ৫০।।
কামসেনের সঙ্গে রাজা বীরসেনও একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন, তিনি রাজা উগ্রসেনের অংশ সম্ভূত ছিলেন। লক্ষণও নিজের সাতলক্ষ সেনা নিয়ে পদ্মিনীরানীকে মহাকষ্টে সেখানে ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিলেন।। ৫১-৫২।।
লক্ষণশ্চ সমায়াতঃ সপ্তলক্ষবলৈযুতঃ। সংত্যজ্য পদ্মিনীং নারীং মহাকষ্টেন ভূপতিঃ।।৫২।। তালনো ধ্যান্যপালশ্চ লল্লসিংহস্তথৈব চ। ভীমস্যামশো যুযুৎসোশ্চ কুন্তিভোজস্য বৈ ক্রমাৎ।।৫৩ আহ্লাদশ্চ সমায়াতঃ কৃষ্ণাংশেন সমন্বিতঃ। জয়ন্তেন চ বৈ বীরো লক্ষসৈন্যন্বিতো বলী।।৫৪।। জগন্নায়ক এবাপি শূরাযুতসমন্বিতঃ। সংপ্রাপ্তো ভগদত্তাংশো গৌতমান্বয়সম্ভবঃ।।৫৫।। অন্যে চ ক্ষুদ্রভূ পাশ্চ সহস্ৰাঢ্যাঃ পৃথক্ পৃথক্ কুরুক্ষেত্রং পরং স্থানং সংযমদবিহুলাঃ।।৫৬।। মূলবমচি নৃপতিঃ সপুত্রো লক্ষসৈন্যপঃ। নৃপং পরিমলং প্রাপ্য সংযুক্তো দেহলী পতেঃ।।৫৭।।
তালন ধান্যপাল এবং লল্লসিংহ ক্রমান্বয়ে ভীমসেন যুযুৎসু এবং কুন্তি ভোজের অংশ ছিলেন। তারা সকলে সেখানে এসে উপস্থিত হন। কৃষ্ণাংশের সাথে আহ্লাদ এবং জয়ন্তের সঙ্গে বলী বীর একলক্ষ সেনা নিয়ে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। ভগবদত্তের অংশ জাত জগন্নাথ দশসহস্র শূরবীর নিয়ে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন।। ৫৩-৫৫।।
এতদ্ ব্যতিরিক্ত অন্য ক্ষুদ্র রাজগণ নিজ নিজ সহস্র শূর যুক্ত হয়ে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ মদবিহ্বল হয়ে এসেছিলেন।। ৫৬।।
মূলবর্মা নৃপতি পুত্রের সঙ্গে একলক্ষ সেনা নিয়ে সেখানে আগত হন। দেহলী পতির সঙ্গে তিনি রাজা পরিমলের পক্ষে যোগ দিলেন।। ৫৬- ৫৭।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। কৈকয়ো লক্ষসৈনাঢ্যঃ সপুত্রো নৃপতিঃ স্বয়ম্। নৃপং পরিমলং প্রাপ্য স যুদ্ধার্থমুপস্থিতঃ।।৫৮।। নেত্ৰসিংহশ্চ নৃপতিঃ স বীরো লক্ষসৈন্যপঃ। ময়ুরধ্বজ এবাপি লক্ষপ শশিবংশিনম্।।৫৯।। বীরসেনশ্চ লক্ষাঢ্য সপুত্রশ্চাদ্ৰিপক্ষগঃ। লক্ষণঃ সপ্তলক্ষাঢ্যোঃ যুদ্ধার্থং সমুপস্থিতঃ।।৬০ আহ্লাদো লক্ষসৈন্যাড্যঃপক্ষগশ্চন্দ্রবংশিনঃ। দ্বিলক্ষংসযুতো রাজা চন্দ্রবংশো রণোন্মুখঃ। এবং ষোড়শলক্ষাঢ্যঃ স্থিতঃ পরিমলো রণে।।৬১।। লহরো ভূপতিশ্রেষ্ঠো লক্ষপঃ পুত্ৰসংযুতঃ। মহীরাজমুপাগম্য যুদ্ধার্থং সমুপস্থিতঃ।।৬২।। অভিনন্দন এবাপি সপুত্রো লক্ষসৈন্যপঃ। মায়াবর্মা চ নৃপতিঃ সপুত্রো লক্ষসৈন্যপঃ।।৬৩।।
কৈকয় একলক্ষ সেনা নিয়ে পূর্ণপুত্রগণের সঙ্গে রাজা পরিমলের পক্ষে যোগ দিলেন। বীর নেত্র সিংহ একলক্ষ সেনা নিয়ে এবং ময়ূরধ্বজ একলক্ষ সেনা নিয়ে চন্দ্রবংশের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দিলেন। লক্ষসেনা নিয়ে বীর সেন ও তাঁর পুত্রগণ চন্দ্রবংশের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দিলেন। লক্ষণ সাতলক্ষ সেনা নিয়ে পূর্নযুদ্ধের জন্য উপস্থিত হলেন। আহ্লাদ একলক্ষ সেনা নিয়ে চন্দ্রবংশী রাজার পক্ষে যুদ্ধে যোগ দিলেন। দুই লক্ষ সেনা নিয়ে রাজা চন্দ্রবংশ রণোন্মুক হলেন। এই প্রকার রাজা পরিমল ষোললক্ষ সেনা দ্বারা পূর্ণ হলেন।। ৫৮-৬১।।
রাজগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ লহর একলক্ষ সেনা নিয়ে পুত্রগণের সঙ্গে মহারাজের কাছে পৌঁছালেন। অভিনন্দনও পুত্রগণের সঙ্গে একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হলেন। মায়াবর্মা রাজা পুত্রগণের সঙ্গে একলক্ষ সেনা নিয়ে উপস্থিত হলেন।। ৬২-৬৩।।
নাগবর্মা সমায়াতঃ সপুত্রো লক্ষসৈন্যপঃ। মদ্রকেশঃ সপুত্রশ্চ লক্ষসৈন্যো রণোন্মুখঃ।।৬৪।। পূর্ণমিলঃ সপুত্রশ্চ লক্ষপশ্চৈব পক্ষগঃ। মঙ্কণঃ কিন্নরো নাম সপুত্ৰস্তত্ৰ সংস্থিথঃ।।৬৫।। গজরাজঃ সমায়াতো মহীরাজং হি লক্ষপঃ। ধুন্ধুকারঃ সমায়াতোঃ পঞ্চলক্ষপতিঃ স্বয়ম্।।৬৬।। পুত্রঃ কৃষ্ণকুমারস্য ভগদত্তঃ সমাগতঃ। ত্রিলক্ষবলসংযুক্তো মহীরাজং মহীপতিম্।।৬৭।। দলবাহনপুত্রশ্চ দেশগোপাল সংস্থিতঃ। অঙ্গদস্তত্র সংপ্রাপ্তঃ সাযুতো দেবকী প্রিয়ঃ। মহীরাজমুপাগম্য যুদ্ধার্থং সমুপস্থিতঃ।।৬৮।। কলিঙ্গশ্চ নৃপঃ প্রাপ্তস্ত্রিকোণশ্চ তথৈব চ। শ্রীপতিশ্চ তথা রাজা শ্রীতারশ্চ তথ্য গতঃ।।৬৯। মুকুন্দশ্চ সুকেতুশ্চ রুহিলো গুহিলস্তথা। ইন্দুবারশ্চ বলবাঞ্জয়ন্তশ্চ তথাবিধঃ। সর্বে দশসহস্রাঢ্যা মহীরাজমুপস্থিতাঃ।।৭০।
নাগবর্মা পুত্রগণের সঙ্গে লক্ষসৈন্য নিয়ে সেখানে এলেন এবং মন্ত্রবেশ সপুত্র লক্ষসৈন্য নিয়ে সপুত্র রণোৎমুখ হলেন।। ৬৪।
পূর্ণমল একলক্ষ সৈন্য তথা পুত্রগণের সঙ্গে এবং মংকণ কিন্নর নামক পুত্রগণের সঙ্গে সেখানে যুদ্ধার্থে উপস্থিত হলেন।। ৬৫।।
গজরাজ লক্ষ সৈন্য নিয়ে মহীরাজের কাছে এলেন এবং ধুন্ধুকার পাঁচলক্ষ সৈন্য নিয়ে স্বয়ং যুদ্ধ করতে এলেন। কৃষ্ণকুমারের পুত্র ভগদত্ত তিনলক্ষ সেনা নিয়ে মহীরাজ মহীপতির পক্ষে যুদ্ধ করতে এলেন। দেশ গোপাল সংস্থিত দলবাহনের পুত্র দেবকী প্রিয় অঙ্গদ দশসহস্ৰ সেনা নিয়ে যুদ্ধ করতে মহীরাজের কাছে এলেন।। ৬৬-৬৮।।
কলিঙ্গপতি তথা ত্রিকোণ শ্রীপতি এবং শ্রীতারও সেখানে এলেন। মুকুন্দ, সুকেতু, রুহিল, গুহিল, ইন্দুকর তথা বলবান্, জয়ন্ত দশসহস্র করে সেনা নিয়ে মহীরাজের কাছে যুদ্ধ করতে এলেন।। ৬৯-৭০।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। মহীরাজস্য পক্ষে তু সহস্ৰং ক্ষুদ্রভূমিপাঃ। তে তু সাহস্রসেনাঢ্যা মহীরাজমুপস্থিতাঃ।।৭১।। তেষাং মধ্যে চ বৈ ভূপন্দ্বিশতান্দেহলীং প্রতি। সসৈন্যান্ প্রেষয়ামাস রাষ্ট্ররক্ষণহেতবে। এবং স দেহলীরাজশ্চতুবিংশতিলক্ষপঃ।।৭২।। যুদ্ধমষ্টাদশাহানি সঞ্জাতং সর্বসংক্ষয়ম। শৃণু যুদ্ধ কথাং রম্যাং ভৃগুবর্য সুবিস্তরাৎ।।৭৩।। মার্গকৃষ্ণদ্বিতীয়ায়াং মহীরাজো মহাবলঃ। আহ্বয় লহরং ভূপং বচনং প্ৰাহ নিৰ্ভয়ঃ।।৭৪।। ভবান্সপুত্রঃ সেনাঢ্যো ধুন্ধুকারেণ রক্ষিতঃ। চামুণ্ডেন যুতো যুদ্ধে গত্তমহতি সত্তমঃ। ইতি শ্রুত্বা যযৌ শীঘ্রং কুরুক্ষেত্রে মহারণে।।৭৫।। তদাপরিমলো রাজা ময়ূরধ্বজ মেব হি। সমাহুয় বচঃ প্রাহ শৃণু পার্থিবসত্তম।।৭৬।।
মহীরাজের পক্ষে একসহস্র ছোট রাজা ছিলেন। তারা সকলে সহস্র সেনা নিয়ে যুদ্ধার্থে এলেন।। ৭১।।
তাদের মধ্যে দুই শত রাজাকে সেনাদের সঙ্গে মহীরাজ দেহলী নগর রক্ষার্থে প্রেরণ করলেন। এই প্রকারে দেহলী পতি চব্বিশলক্ষ সেনা যুক্ত ছিলেন।। ৭২।।
সেই যুদ্ধ আঠার দিন ধরে চলেছিল, যাতে সকল সৈন্য ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। হে ভৃগুবৰ্ষ, এখন এই রম্যযুদ্ধের কথা তুমি বিস্তারিত শ্রবণ কর।। ৭৩।।
মার্গশীশষ মাসের কৃষ্ণ ২য়া তিথিতে লহর রাজাকে আহ্বান করে নির্ভয়ে বললেন, আপনি পুত্রগণের সঙ্গে সেনা নিয়ে পূর্ণরূপে যুক্ত এবং ধুন্ধুকারের দ্বারা রক্ষিত। আপনি চামুন্ডাকে সাথে নিয়ে যুদ্ধ করতে যান। এই কথা শ্রবণ করে তিনি শীঘ্র কুরুক্ষেত্রের মহারণে উপস্থিত হলেন। সেই সময় রাজা পরিমল ময়ূরধ্বজাকে ডেকে বললেন, হে পার্থিব শ্রেষ্ঠ, আপনি আমার কথা শ্রবণ করুন। আপনি কৃষ্ণাংশ জয়ন্ত এবং দেবসিংহ দ্বারা রক্ষিত একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধে প্রস্তুত হোন। ময়ূরধ্বজা রাজাদেশ শ্রবণ করে তা পালন করতে রাজা লহরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে উদ্যত হলেন।। ৭৪-৭৯।।
কৃষ্ণাংশেন জয়ন্তেন দেবসিংহেন রক্ষিতঃ। স ভবাল্লক্ষসৈন্যাঢ্যো গন্তুমর্হতি বৈ রণে।।৭৭।। ইতি শ্রুত্বা তু বচনং ময়ূরধ্বজ এব হি। লক্ষসৈন্যান্বিতঃ প্রাপ্তো লহরং নৃপতিং প্রতি।।৭৮।। তয়োশ্চাসীন্মহদ্যুদ্ধং সেনয়োরুভয়ো রণে। সেনা তু লক্ষবীরস্য তত্র যুদ্ধে প্রকীর্তিতা।।৭৯।। একো রথে গজাস্তত্র জ্ঞেয়াঃ পঞ্চশতং রণে। হয়াশ্চ পঞ্চসাহস্রা পত্তয়স্তগুর্ণা দশ। এতে সৈন্যা নরা জ্ঞেয়া সৈন্যপাংশ্চ শৃণুম্ব ভোঃ।।৮০। দশানাং পচ্চারাণাং চ পতিনাম্না স পত্তিপঃ। পঞ্চনাং চ হয়ানাং চ পতিনাম্না স গুল্মপঃ।।৮১।। পঞ্চানাং চ গজানাং চ পতিনাম্মা গজাধিপঃ। এতৈ সার্দ্ধং রথী জ্ঞেয়ো রণেহস্মিন্দারণে কলৌ।।৮২।
যুদ্ধে দুইপক্ষের সেনাদের সঙ্গে সেই দুইবীরের মহা যুদ্ধ হয়েছিল। লক্ষ্মীর সেনা সেই যুদ্ধে লিপ্ত হল। একরথ এবং পাঁচশতহাতী, পাঁচসহস্র অশ্ব এবং তার দশগুণ পদাতিক সৈন্য ছিল। এই সকল সৈন্য সকলকে নর বলা হত। দশপদাতিক সৈন্য পতি পত্তিয় নামে পরিচিত ছিল।। ৮০।।
পঞ্চ অশ্বপতি গুল্মপ, পাঁচগজাপতিগজধিপ নামে প্রসিদ্ধ ছিল। এই সকল সেনাদের সাথে রথীগণও ছিলেন।। ৮১-৮২।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। উষ্ট্রারূঢ়াঃ স্মৃতা দূতাশ্চত্বারিংশচ্চ তদ্বলে। শতঘ্ন্য স্তত্র সাহস্রাস্তেষাং মধ্যে পৃথক্ পৃথক্ ষট্ ত্রিংশদ্বৈ পদরাস্তেষাং কর্মাণি মে শৃণু।।৮৩।। দশ গোলকদাতারো দশ তৎপুষ্টিকারকাঃ। দশ চান্দ্রকরাস্তা বৈ এয়স্তে বহ্লিন্দায়িনঃ। এয়ো দৃষ্টিকরাজ্ঞেয়াস্ত্রিয়ামেষু পৃথক্ পৃথক্।।৮৪।। শেষাঃ শূদ্রাস্ত সেনানাং শূরকৃত্যপরায়ণাঃ। এবং চ লক্ষবীরাণাং সেনা তত্র প্রকীর্তিতা।।৮৫।। তত্রাসীত্তমূলং যুদ্ধং ধৰ্মেণ চ সমস্ততঃ। প্রাতঃ কালাৎসমারভ্য মধ্যাহ্নং সৈন্যযোদ্বয়োঃ।।৮৬।। তৎপশ্চাদ্যামমাত্রেণ সৈন্যপা যুদ্ধমাগতাঃ। তৎপশ্চাচ্চ মহাশূরা ধুন্ধুকারাদয়োবলাঃ।।৮৭।।
সেই সেনাদের মধ্যে উষ্টারূঢ় চল্লিশদূত ছিলেন। শতঘ্নী একসহস্র এবং তাদের মধ্যে পৃথক পৃথক ছত্রিশ পদচর ছিলেন। এখন তাদের কার্য বিষয়ে শ্রবণ করুন।। ৮৩।।
গোলক প্রদানকারী দশজন, দশজন পুষ্ঠি বিধানকারী দশজন তাদের আর্দ্রকারী এবং তিনজন অগ্নি প্রদানকারী ছিলেন। তিনজন দৃষ্টিকর তিন প্রহরে পৃথক পৃথক ছিলেন।। ৮৪।।
এতদব্যতিরিক্ত শেষব্যক্তি সেনাশূরকৃত্য পরায়ণ ছিলেন। এই প্রকারে লক্ষবীর সেনা সেখানে ছিলেন।। ৮৫।।
সেখানে তুমুল ধর্মযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। প্রাতঃকাল থেকে শুরুকরে দুই পক্ষের সেনাগণ মধ্যাহ্ন পর্যন্ত যুদ্ধে লিপ্ত থাকত। এরপর তার নামমাত্ৰ বিশ্রাম গ্রহণ করে সৈন্যগণ যুদ্ধ ক্ষেত্রে এসে উপস্থিত হতেন। এরপর একপ্রহরের জন্য ধুন্ধুকারাদি মহাবলবান্ আসতেন এবং উন্নত মস্তকে রণে লিপ্ত থাকতেন। চামুন্ডার সঙ্গে কৃষ্ণাংশ এবং ধুন্ধুকারের সাথে ইন্দুল, ভগদত্তের সঙ্গে দেবসিংহ উত্তম যুদ্ধ করলেন। সায়ংকালে সমস্তবীর ক্ষয়প্রাপ্ত হলেন। সেখানে কৃষ্ণাংশ চামুন্ডাকে জয় করে লহরের ষোলপুত্রকে নিহত করলেন এবং এক ঘটিকাতে বীর্যশালী সকলকে নিহত করলেন। তিনি প্রসন্ন হয়ে বিজয় শংখ বাজরলেন এবং লক্ষনের কাছে এসে উপস্থিত হলেন।। ৮৬-৯০।।
যামমাত্রং চ যুদ্ধায় সংস্থিতা রণমূর্ধনি। চামুন্ডেন চ কৃষ্ণাংশো ধুন্ধুকারেণ চেন্দুলঃ।।৮৮।। ভগদত্তেন বৈ দেবঃ কৃতবান্যুদ্ধমুত্তমম্। সায়ংকালে তু সম্প্রাপ্তে সর্বে শূরাঃ ক্ষয়ং গতঃ।।৮৯।। কৃষ্ণাংশস্তত্র চামুন্ডং জিত্বা তু লহরাত্মজান। ষোড়শৈব জঘানাশু ঘটীমাত্রেণ বীর্যবান। দঋৌ শঙ্খং প্রসন্নাত্মা লক্ষণান্ত মুপাযযৌ।।৯০। চামুন্ডো ধুন্ধুকারশ্চ ভগদত্তো যুতঃ শতৈঃ। মহীরাজমুপাগম্য সুষুপুৰ্নিশি নিৰ্ভয়াঃ।।৯১।। ইন্দুলো দেবসিংহশ্চ সহস্রৈঃ সংযুতৌ মুদা। গত্বা পরিমলং ভূপং রাত্রৌ সুষুপতুস্তদা।।৯২।। প্রাতঃ কালে তু সম্প্রাপ্তে তৃতীয়ায়াং ভয়ঙ্করে। মহীরাজস্তাদায় নৃপং গজপতিং বলী।।৯৩।। বচনং প্রাহ ভো রাজস্ত্বং ত্রিবীরৈঃ সুরক্ষিতঃ। স্বকীয়ৈলক্ষসৈন্যৈশ্চ গন্তুমর্হসি বৈ রণে।।৯৪।।
চামুন্ডা-ধুন্ধুকার এবং ভগদত্ত শতসৈন্য নিয়ে মহীরাজের কাছে নিৰ্ভয়ে শয়ন করলেন।। ৯১।।
ইন্দুল দেবসিংহ প্রমুখ সানন্দে দেবরাজা পরিমলেন কাছে শয়ন করতে গেলেন।। ৯২।।
প্রাতঃকালে তৃতীয়া তিথিতে যুদ্ধ ভয়ংকর হয়ে উঠলে বলী মহীরাজ গজপতি নৃপতিকে ডেকে বললেন- হে রাজন, তুমি তিন বীরের দ্বারা রক্ষিত হয়ে নিজ লক্ষ সেনা নিয়ে রণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হোন।। ৯৩-৯৪।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ!। তদা পরিমলো ভূপো নেত্ৰসিংহং মহীপতিম্। যুদ্ধায়াজ্ঞাপয়ামাস কৃষ্ণাংশাদ্যৈঃ সুরক্ষিতম্।।৯৫।। তয়োশ্চাসীন্মহদ্যুদ্ধং সেনয়োরুভয়োঃ ক্রমাৎ। হয়া হয়ৈঃ ক্ষয়ং জগজাশ্চৈব তথা গজৈঃ।। পচ্চরাঃ পচ্চরৈঃ সার্দ্ধং শতঘ্ন্যশ্চ শতঘ্নিভিঃ।।৯৬।। অপরাহ্ণে মুনিশ্রেষ্ঠ নেত্ৰসিংহো মহাবলঃ। মহাগজং গজপতিং গত্বা যুদ্ধমচীকরৎ।।৯৭।। পরস্পরং চ বিরথো সংছিন্নধনুষৌ তদা। খড়্গহস্তৌ মহীং প্রাপ্য চক্রতূ রণমুল্বর্ণম্। অন্যোন্যেন বধং কৃত্বা স্বৰ্গলোকমুপাগতৌ।।৯৮।। ইন্দুস্তং তু চামুন্ডং দেবো বৈ ধুন্ধুকং তথা। কৃষ্ণাংশো ভগদত্তং চ জিত্বা রজানমাযযুঃ।।৯৯।। শেষৈঃ পঞ্চশতৈঃ শুরৈস্তৈঃ সার্দ্ধং লক্ষণং প্রতি। পরাজিতাশ্চ তে সর্বে সহস্রৈঃ সহিতা যযুঃ।। ১০০।।
সেই সময় রাজা পরিমল মহীপতি নেত্রসিংহকে কৃষ্ণাংশাদির দ্বারা রক্ষিত হয়ে যুদ্ধ করতে আদেশ দিলেন।। সেই দুই সেনার মধ্যে মহাযুদ্ধ হয়েছিল, অশ্বারোহী অশ্বের দ্বারা গজ গজের দ্বারা, পদাতিক পদাতিকের দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছিল। হে মুনি শ্রেষ্ঠ অপরাহ্নে মহাবলবান্ নেত্রসিংহ মহারাজ গজপতির কাছে গিয়ে যুদ্ধ করেছিল। সেই দুইজনই রথহীন, ছিন্নধনুষ হয়ে গজারোহী হয়ে খড়্গহস্তে উল্কন যুদ্ধ করেছিল। উভয়ে উভয়কে বধ করে স্বর্গারোহন করেছিলেন।। ৯৫-৯৮।।
ইন্দুল চামুন্ডাকে, দেবসিংহ ধুন্ধুকারকে এবং কৃষ্ণাংশ ভগদত্তকে জয করে রাজার কাছে এলেন। শেষ পাঁচশত শূরকে সঙ্গে নিয়ে তারা লক্ষণের কাছে চলে গেলেন। পরাজিত হয়ে তারা সহস্র সৈন্য নিয়ে পলায়ন করল।। ৯৯-১০০।।
প্রাতঃকালে তু সম্প্রাপ্তে মহীরাজো মহাবলঃ। মায়াবর্মানমাহুয় বচনং প্রাহ নিৰ্ভয়ঃ।।১০১।। ভবান্দশসুতৈবীরে লক্ষসৈন্যৈশ্চ সংযুতঃ।। সর্বশত্রুবিনাশায় গন্তুমর্হসি সত্তম। ইতি শ্রুত্বা স নৃপতির্বাদ্যাসংবাদ্য চাযযৌ।। ১০২।। দৃষ্ট্বা পরিমলো ভূপো মায়াবর্মানমাগতম্। জগন্নায়কমায় বচনং প্ৰাহ নিৰ্ভয়ঃ।।১০৩।। ভবান্দশসহস্রৈশ্চ সার্দ্ধং তৈ িভিরন্বিতঃ। গন্তুমর্হসি যুদ্ধায় শীঘ্রং মদ্বিজয়ং কুরু।। ১০৪। ইতি শ্রুত্বা যযৌ শীঘ্রং সেনয়োরুভয়ৌমহৎ। যুদ্ধং চাসীমুনিশ্রেষ্ঠ যামমাত্রং ভয়ানকম্।।১০৫।। হতাস্তে দশসাহস্রাঃ কৃষ্ণাংশাদ্যৈঃ সুরক্ষিতাঃ। শঙ্খান্দঋশ্চ তে সর্বে চাঙ্গদেশনিবাসিনঃ।। ১০৬।। এতস্মিন্নন্তরে ধীরাঃ কৃষ্ণাংশাদ্যাস্তুরীয়কাঃ।। যামমাত্রেন সংজন্ধুলক্ষসৈন্যং রিপোস্তদা।।১০৭।।
প্রাতঃকালে মহাবলী মহীরাজ একলক্ষ সেনা এবং নিজ দশপুত্রকে মায়াবর্মাকে যুদ্ধকরতে আদেশ দিলেন। সেই আদেশ শ্রবণ করে রাজা যুদ্ধবাদ্য বাদন করে সেখানে উপস্থিত হলেন।। ১০১-১০২।।
রাজা পরিমল যুদ্ধস্থলে মায়াবর্মাকে দেখে জগন্নায়ককে দশসহস্র সেনা নিয়ে যুদ্ধ করার আদেশ দিলেন।। ১০৩-১০৪।।
এই আদেশ শ্রবণ করে তিনি শীঘ্র যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হয়ে মহাযুদ্ধ করেছিলেন। হে মুনি শ্রেষ্ঠ, তিনি এক প্রহর পর্যন্ত ভয়ানক যুদ্ধ করেছিলেন। কৃষ্ণাংশাদি দ্বারা রক্ষিত দশসহস্ৰ সেনা সেখানে দূত হয়ে গেলেন। তারা বিজয় শংখ বাদন করলেন।। ১০৫-১০৬।।
ইতিমধ্যে কৃষ্ণাংশাদি তুরীয়ক বীরগণ পরমধীর ছিলেন। তারা একপ্রহরে শত্রু পক্ষের একলক্ষ সেনা হনন করেছিলেন।। ১০৭।।
অপরাহ্ণে মহারাজো মায়াবৰ্মা সুতৈঃ সহ। কৃষ্ণাংশং দেবসিংহং চ সম্প্রাপ্তো জগনায়কম্।।১০৮। অথাঙ্গভূপং দশ পুত্রযুক্তং কৃষ্ণাংশ এবাশু জগাম শীঘ্রম্ হয়স্থিতো বীরবরঃ প্রমাথী কলৈকজাতো মধুসূদনস্য।। ১০৯।। ততোঙ্গভূপস্ত্রিভিরেবঃ বাণৈরতাড্যমুর্রি চ পার্শ্বয়োৰ্বে। অমর্যমাণো বলবান্মহীপতি দন্তৈহতঃ কাল ইবাশু সৰ্পঃ।।১১০।। হয়ং সমুড্ডীয় স পুষ্করান্তং ততোভ্যগান্তং নৃপতিং রথস্থম্। হয়স্য পাতৈবিরথীচকার স এব ভূপোহসিমুপাদধানঃ।।১১১।। স্বেনাসিনা বিন্দুলমঙ্গল্যং কৃত্বা স কৃষ্ণাংশমুবাচ বাক্যম্। কল্লোলমায়াত্তব নাশনায় ত্বয়া জিতা ভূপতয়ঃ প্ৰধানঃ।।১১২।। তদৈব কীর্তিৰ্ভবিতা মমাশু হত্বা ভবন্তং চ সুখী ভবামি। ইত্যুক্তবন্তং নৃপতিং মহান্তং স্বেনাসিনা তস্য শিরো জহার।।১১৩।।
অপরাহ্নে মহারাজ মায়াবর্মা নিজ পুত্রগণের সাথে কৃষ্ণাংশ-দেবসিংহ জগন্নায়কের কাছে গেলেন।। ১০৮।।
অতঃপর দশপুত্রযুক্ত অঙ্গাধিপতির কাছে কৃষ্ণাংশ শীঘ্র চলে গেলেন। বীরগনের মধ্যে পরমশ্রেষ্ঠ প্রমথনকারী অশ্বারূঢ় ভগবান্ মধুসূদনের এককলা ছিলেন তিনি।। অঙ্গপতিকে তিনটি বাণের দ্বারা মস্তকে এবং পার্শ্বে প্রহার করলেন। সেই বলবান্ মহীপতি অমর্যমান হয়ে দন্তের দ্বারা কালসর্পের ন্যায় অতিশীঘ্র নিজ অশ্ব উড্ডীন করে রথস্থিত সেই নৃপতির পশ্চাতে পুষ্কর পর্যন্ত গেলেন। তিনি অশ্বকে পাড়ের দ্বারা তাকে বেরথী করলেন। সেই রাজা খর্গ ধারণ করে বিন্দুলের অঙ্গে আঘাত করলে কৃষ্ণাংশকে বললেন তোমার বিনাশের সময় উপস্থিত, তুমি অনেক রাজাকে জয় করেছো। আমার কীর্তি তো এই সংসারে তখন হবে যখন আমি তোমাকে জয় করে এবং হত্যা করে সুখী হব। এই প্রকার বাক্য বলে মহান অঙ্গধিপতি কে কৃষ্ণাংশ খড়্গের দ্বারা শির কর্তন করলেন। সেই অঙ্গপতি মারা গেলে তার দশপুত্রও সেখানে উপস্থিত হলেন, তারা সকলে কৌরবাংশ ছিলেন। তাদের পাঁচজনকে ইন্দুল ক্রোধান্বিত হয়ে বাণের দ্বারা হত্যা করেছিলেন। দুইজনকে দেবসিংহ নিজ সিদ্ধ ভল্পের দ্বারা নিহত করলেন। জ্যেষ্ঠ পুত্রকে গৌতম এবং অবশেষ দুইজনকে কৃষ্ণাংশ হনন করলেন।। ১০৯-১১৫।।
হতেহঙ্গভূপে দশ তস্য পুত্রাস্তমেব জন্মযুধি কৌ রবাংশাঃ। তানাগতানিন্দুল এব পঞ্চ জঘান বাণৈস্ত তদা সমুন্যঃ।।১১৪।। উভৌ চ দেবস্তু জঘান তত্র ভল্লেন সিদ্ধেন নৃপাত্মজৌ চ জ্যেষ্ঠং সুতং গৌতম এব হত্বা দ্বৌ যৌ স কৃষ্ণাংশ উপাজঘান।।১১৫।। শংখাম্প্রদঋরুচিরাননাস্তে প্রদোষকালে শিরিরাণি জম্মুঃ। শ্ৰমান্বিতাস্তে সুষুপুনিশায়াং প্রাতঃ সমুখায় স্বকর্ম কৃত্বা।।১১৬।। গত্বা সভায়াং নৃপতিং বাক্যং সমুচুঃ শৃণু চন্দ্রবংশিন্। অদ্যৈব সেনাপতিরস্তি কো বৈ চাজ্ঞাপয়াস্মান্নপ তস্য গুপ্ত্যৈ।।১১৭।। শ্রুত্বাহ ভূপোদ্য তু বীরসেনঃ সকামসেনঃ স্ববলৈঃ সমেতঃ। রণং করিষ্যত্যচিরেণ বীরাস্তস্মাৎসুরক্ষধ্বমরিভ্য এব।।১১৮।। স বীরসেনো নৃপতিং প্রণম্য লক্ষৈ স্বসৈন্যৈযুধি সংজগাম। তদা মহীরাজনৃপঃ প্রতাপী স নাগবর্মানমুবাচ তাপী।।১১৯।।
প্রসন্ন হয়ে তারা বিজয় শংখ বাদন করলেন, এবং প্রদোষ সময়ে সকলে নিজ নিজ শিবিরে চলে গেলেন। সেদিন অত্যন্ত পরিশ্রম বশতঃ তারা সকলে শরন করলেন। প্রাতঃকালে উঠে তারা নিজ নিজ দৈনিক কর্ম সম্পাদন করে সভামধ্যে গিয়ে রাজাকে প্রণাম করে সেই রাজাকে বললেন। হে চন্দ্রবংশী রাজন, আজ সেনাপতি কে হবেন। হে নৃপ, তাকে রক্ষা করার জন্য আপনি আদেশ দিন, সে কথা শুনে রাজা বললেন–আজ বীরসেন রাজা কামসেনের সঙ্গে নিজ সেনা নিয়ে যুদ্ধ করবে। বীরগণ তাকে শত্রুদের থেকে রক্ষা করবেন। এর পর শীঘ্র রাজা বীরসেন রাজাকে প্রণাম করে নিজ একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধভূমিতে চলে গেলেন। সেই সময় প্রতাপী মহীরাজ নাগবর্মাকে বললেন–আজ আপনি পুত্রগণের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান। হে ভূপ শ্রেষ্ঠ, একলক্ষ সেনা নিয়ে আপনি যান। অত্যন্ত ঘোর পরমবীর শত্রু বীরসেনকে যুদ্ধে হত্যা করুন। এই আদেশ শুনে রাজাকে প্রণাম করে যুদ্ধ দামামা বাদন করেছিলেন। সেই দুই বীরের মধ্যে মহাযুদ্ধ শুরু হয়েছিল।। ১১৬-১২০।।
রণায় গচ্ছাশু সুতৈঃ সমেতো লক্ষৈঃ স্বসৈন্যৈরুতে ভূপবর্য। হত্বা রিপু ঘোরতমং হি বীরং পতিং মহান্তযুধি বীরসেনম্।।১২০।। ইত্যুক্তবন্তং নৃপতিং প্রণম্য সুবাদয়ামাস তদা হি বীর। তয়োবভূবাশু রণো মহাম্বে সুসেনয়োঃ সঙ্কলযুদ্ধকত্রো।।১২১।। ত্রিযামমাত্রেণ হতাশ্চ সর্বে বিমানমারুহ্য যযুশ্চ নাকম্ হতেষু সর্বেষু চ নাগবর্মা সুতেষু বৈ যাদবভূপ মাহ।।১২২।। ভবান্বিসৈন্যৈশ্চ তথৈব চাহং ভবাস্নপুত্রশ্চ তথাহমেব। সংস্কৃত্য ধর্মং কুরু যুদ্ধমাশু ততো রথস্থঃ সুধনুগৃহীত্বা।। ১২৩।। বাণৈশ্চ বানাম্ভূবি তৌ চছিত্ত্বা বভূবস্তুস্তৌ বিরথৌ নৃপাগ্রযৌ। খড়েগন খড়্গং চ তথৈব ছিত্ত্বা বিমানমারুহ্য গতৌহিনাকম্।।১২৪।। স কামসেনঃ স্বরিপোশ্চ পুত্রাঞ্জঘান বাণৈশ্চ তদাষ্টসংখ্যান্। জ্যেষ্ঠৌ তদা কোপসমন্বিতৌ তং গৃহীতখড়েগী চ সমীয়তুশ্চ।। ১২৫।। রিপো শিরো জহ্নতুরুগ্রবেগৌ সকামসেনশ্চ কবন্ধ এব। হত্বারিপু তৌ তদা মিলিত্বা স্বর্গংযযুস্তে চ বিমানরূঢ়াঃ।।১২৬।।
কেবল তিন প্রহর মধ্যে তারা সকলে হত হয়ে বিমানে সমারূঢ় হয়ে স্বর্গে চলে গেলেন। নাগবর্মা ও তার পুত্রগণ মারা গেলে যাদব ভূপ বলেছিলেন–আপনি এখন সেনারহিত এবং আমিও সেনাবিহীন। আপনি ও আমি সপুত্র। অতএব ধর্মের কথা স্মরণ করে শীঘ্র যুদ্ধ করুন। অতঃপর রথস্থিত ধনুষ গ্রহণ করে সেই দুইজন বাণের দ্বারা বাণ ছেদন করতে লাগলেন এবং বিরথ হয়ে গেলেন। খর্গের দ্বারা খর্গ ছেদন করে তারা স্বর্গে গমন করলেন।। ১২১-১২৪।।
কাম সেন শত্রুর অষ্টপুত্রকে বাণের দ্বারা মেরে ফেললেন। জ্যেষ্ঠ দুইজন ক্রোধান্বিত হয়ে খড়্গহস্তে তার কাছে এলেন। উগ্রবেগ সেই শত্রু কামসেনকে শিরচ্ছেদ করলে কামসেনের কবন্ধ তাদের হত্যা করল। তারা সকলে বিমানে চড়ে স্বর্গে চলেগেলেন।। ১২৫-১২৬।
পুতেষু সর্বেষু তদা ত্রয়স্তে চামুন্ডকাদ্যা জগনায়কন্তে। রুদ্ধা সমেতাঃ স্বশরৈঃ কঠোরৈজ স্তংমশ্চং হরিনাগরং চ।।১২৭।। স দিব্যবাজী চ সদা স্বপক্ষৌ প্রসায্য খেনাশু রিপুং জগাম। স ধুন্ধুকারস্য গজং বিহত্য চামুন্ড কস্যৈব গজং বিমদ।।১২৮।। রথং চ ভূমৌ ভগদত্তকস্য বিচূর্ণ শীঘ্রং চ নভো জগাম। প্রবাদ্য শঙ্খং জগনায়কশ্চ কৃষ্ণাংশমাগম্য কথাং চকার।।১২৯।। নিশামুষিত্বা জগনায়কাদ্যাঃ প্রাতঃ সমুখায় রণং প্রজম্মুঃ। তদা মহীরাজ উতাশু কারী স কিন্নরেশং কণকং সপুত্রম্।।১৩০।। উবাচ রাজঞ্জণু কিন্নরাণাং মহাবলাস্তে রিপবো মমতে। বিনাশয়াও প্রবলারিঘাতান্দেবৈর্ন সার্দ্ধং যুধি বৈ মনুষ্যাঃ।।১৩১। ইত্যুক্তবান্মঙ্কণভূপতিস্তু যযৌ সপুত্রোহযুতসন্যপশ্চ। তমাগতং তত্র বিলোক্য রাজা বীরাস্নবকীয়াংশ্চ সমাদিদেশ।।১৩২।।
সেই সময় সকলে হত হলে চামুন্ডাদি তিন বীর জগনায়কে রুদ্ধ করলেন এবং তারা সকলে নিজ নিজ কঠোর শরের দ্বারা তাকে ও হরিনাগর অশ্বকে হত্যা করল।। ১২৭-১২৮।।
সেই সময় সেই দিব্য অশ্ব নিজ পক্ষ বিস্তার করে আকাশ মার্গে শত্রু সমীপে চলে গেল। সে ধুন্ধুকারের হাতীকে হনন করে এবং চামুন্ডার গজকে বিমর্দন করে তথা ভূমিতে ভগদত্তের রথকে চূর্ণ করে শীঘ্র আকাশে চলে গেল। জগনায়ক বিজয় শংখ বাদন করে কৃষ্ণাংশের কাছে গিয়ে তাকে সকল বৃত্তান্ত বলেছিল।। ১২৯।।
জগনায়কাদি রাত্রে নিবাস করে প্রাতঃকালে রণভূমিতে চলে গেল। সেই সময় মহীরাজ শীঘ্র পুত্রদের সঙ্গে কিন্নরেশকে ডেকে তাকে বললেন হে রাজন আপনি কিন্নরগণের মধ্যে মহাবলবান্ যোদ্ধা। এরা আমার শত্রু, আপনি অস্ত্র প্রহারে তাদের হত্যা করুন। কারণ দেবগণের সঙ্গে মনুষ্যগণ যুদ্ধে সমর্থ হয়না। মংকণ ভূপতি একথা শুনে দশসহস্ৰ সেনা তথা পুত্রগণের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে গেলেন। রাজা তাদের আসতে দেখে নিজ বীরগণকে আদেশ দিলেন মনোরথেস্থিত জগনায়ক এবং বড়বা গ্রহণ কারী তালন করালে সংস্থিত জয়ন্ত নিজ নিজ ধনুর গ্রহণ করে বেগের সঙ্গে সেখানে গেলেন।। ১৩০-১৩৩।।
মনোরহস্থো জগনায়কশ্চ স তালনো বৈ বড়বাং বিগৃহ্য। করালসংস্থশ্চ তদা জয়ন্তো বিগৃহ্য চাপং তরসা জগাম।। ১৩৩।। পপীহকস্থশ্চ স রূপণৌ বৈ জগাম কৃষ্ণাংশসমন্বিতশ্চ। স লল্লসিংহো গজমত্তসংস্থঃ স ধান্যপালো হয়মারুরোহ।।১৩৪।। সমস্ততঃ কিন্নরসৈন্যঘোরং বিনাশয়ামারু পাংশুখড়ৈাঃ। বিনশ্যমানে ত্রিসহস্ৰসৈন্যে স কিন্নরেশস্তরসা জগাম।। ১৩৫।। ধ্যাত্বা কুবেরং চ গৃহীতচাপো নভোগতস্তত্র বভূব সূক্ষ্মঃ।।১৩৬।। অদৃশ্যমানঃ স্বশরৈঃ কঠৌরৈবিনদ্য সর্বাস্থি ননদ ঘোরম্। বিলপ্যমানে চ সমস্তশূরে জয়ন্ত এবাশু জগাম শত্রুম্। ১৩৭।। ধ্যাত্বা মহেন্দ্ৰং কৰ্ণকং চ বদ্ধা কৃষ্ণাংশমাগম্য পদৌ ননাম তদা তুতে শত্রুসহস্ৰসৈন্যে নিশম্য বদ্ধং কর্ণকং নিজেন্দ্রম্।।১৩৮।।
রূপণ পপীহকে আরোহণ করে কৃষ্ণাংশের সঙ্গে সেখানে গেলেন। লল্লসিংহ মত্তগজে আরোহন করে এবং ধান্য পাল অশ্বে সংস্থিত ছিলেন।। ১৩৪।।
সকলে কিন্নরের ঘোর সেনাদেরকে উপাংশু খন্ডের দ্বারা বিনাশ করলেন। যখন তিন সহস্র সেনা বিনষ্ট হল তখন কিন্নরেশ প্রচন্ড বেগে গমন করলেন। তিনি কুবেরের ধ্যান করে চাপগ্রহণ করে আকাশে গিয়ে অত্যন্ত সূক্ষ হয়ে গেলেন।।১৩৫-১৩৬।।
তিনি অদৃশ্য হয়ে নিজ কঠোর শরের দ্বারা সকলকে হত্যা করে ঘোর গর্জন করেছিলেন। সমস্ত শত্রু বিলাপ্যমান হলে জয়ন্ত শত্রুদের কাছে গেলেন। তিনি মহেন্দ্রের ধ্যান করে কণককে বন্ধন করে শীঘ্র কৃষ্ণাংশের চরণে প্রণাম করলেন। সেই সময় শত্রুর সহস্র সেনামধ্যে নিজ স্বামী কণককে বদ্ধ হতে দেখে তার সেনাগণ সমস্ত মায়াবিকে রুদ্ধ করে গুহ্যকের অস্ত্র গ্রহণ করেছিল। পুনরায় সাতদিন ও রাত্রে মহাযুদ্ধ হয়েছিল। সাত মহাবীর শ্রমিত হয়ে সকলকে হত্যা করে যখন শয়ন করল তখন কণক কুবেরের ধ্যান করে বর প্রাপ্ত হলেন এবং শীঘ্র বন্ধন ছেদন করলেন।। ১৩৭-১৪০।।
বিনর্ঘ ঘোরং রুরুঙ্কুশ্চ সর্বান্নয়া বিনো গুহ্যকমন্ত্ৰমূহুঃ। দিনেষু সপ্তেষু তথা নিশাসু বভূব যুদ্ধং চ সমন্ততস্তেঃ।।১৩৯।। শ্রমন্বিতাঃ সপ্ত মহাপ্রবীরা হতেষু সর্বেষু সুষুপুশ্চ বৈ যদা। তদা কুবেরং কর্ণকশ্চ ধ্যাত্বা লব্ধা বরং বন্ধনমাশু ছিম্বা।।১৪০।। সুপ্তাস্নমুখায় চ সপ্ত শূরান্নিশীথ কালে স চকার যুদ্ধম্। জিত্বা চ তাম্মুটু স বরপ্রভাবাত্তদেন্দুলেনৈব রণং চকার।।১৪১।। গৃহীতখড়েগী রণঘোরমত্তৌ হত্বা ততো বৈ ভূবি চেযতুশ্চ। প্রজতুনাকমুপান্তদেবৌ সস্তূয় মানো সুরসত্তমৈশ্চ।।১৪২।। ততঃ প্রভাতে বিমলে বিজাতে রুরোধ রামাংশ উতাললাপ। পাপৈঃ কলাপৈ পরিপীড্যমানঃ কুলান্বিতঃ সর্বর্য তো মুনীন্দ্ৰ।। ১৪৩।। স পঞ্চশব্দং গজমারুরোহ ত্রিলক্ষসৈন্যৈস্তরসা জগাম। তদা মহীরাজ উতাহ শৃণ্বগ্নচ্ছধ্বমদ্যৈব ময়া সমেতাঃ।। ১৪৪।।
শায়িত সেই সাত শূরদের জাগরিত করে অর্ধরাত্রে যুদ্ধ করেছিল। তিনি বরের প্রভাবে তাদের মধ্যে ছয়জনকে জয় করলেন এবং ইন্দুলের সাথে যুদ্ধ করলেন।। ১৪১।।
যুদ্ধ করতে একমত্ত হাতীতে আরোহণ করে হাতে খড়্গা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রহার করে ভূমিতে তারা দুইজনই আগত হলেন। পুনরায় তারা স্বর্গে গমন করলেন।। ১৪১-১৪২।।
অনন্তর বিমল প্রভাতে রামাংশ রোধ করলেন এবং অলাপ করলেন। হে মুনীন্দ্ৰ, তিনি পাপসমুদ্রে পরিপীড়িত হয়ে কুলের সকলের সঙ্গে ছিলেন। তিনি পঞ্চশব্দ নামক গজে আরোহন করে তিনলক্ষ সেনা নিয়ে মহাবেগে গমন করলেন। সেই সময় মহীরাজ বললেন আমার সঙ্গে আজই চলো। নিজের পাঁচলক্ষ সেনা নিয়ে তিনি শত্রু সেনকে রুদ্ধ করলেন। তারা দুইজন যুদ্ধ করতে বিশেষক রূপে গর্জন করলেন।। ১৪৩-১৪৫।।
স্বপঞ্চলক্ষৈঃ প্ৰবলৈশ্চ শুরৈঃ সার্দ্ধং রুরোধাশু রিপোশ্চ সেনাম্। তয়োবভূবাষশু রণঃ প্রঘোরো বিনতোযুদ্ধনিমিত্তমাশু।। ১৪৫।। ত্রিযামমাত্রেণ হতাশ্চ সর্বে দ্বয়োশ্চ পক্ষা বলশালিনশ্চ। তদা মহীরাজ উতাযযৌ বৈ সমনজলীকশ্চ ধনুবিগৃহ্য।। ১৪৬।। স ধুন্ধুকারশ্চ তদা জগাম রথস্তিতং লক্ষণমুগ্রবীরম্। তদোদয়ো বৈ ভগাদত্তমেব চামুন্ডকং ভীষ্মকরাজসূনুঃ।।১৪৭।। স পঞ্চশব্দং গজমাস্থিতো বৈ গতঃ স এবাশু জগাম ভূপম্। ধনুবিগৃহ্যশুগমুসল্বণং চ নৃপস্থিতশ্চাথ ভয়ঙ্করং চ।।১৪৮।। গজং প্রমত্তাগ্রগজেন্দ্র শূরঃ জয়ং চ মে দেহি শিবপ্ৰদত্ত।।১৪৯।। স মন্ডলীকো রণদুমদশ্চ রামাংশ আহ্লাদ ইতি প্রসিদ্ধিঃ। তস্মাচ্চ মাং রক্ষ জবেন হস্তিন্মহাবলাৎকাল রসাচ্চ বীরাৎ।। ১৫০।।
কেবল তিন প্রহরের যুদ্ধে দুই পক্ষের সকল বীর হত হলেন। তখন মহীরাজ সমন্ডলীক হাতে ধনুর্বাণ গ্রহণ করে সেখানে এলেন।। ধুন্ধকার সেই সময় রথে স্থিত উগ্রবীর লক্ষনের কাছে গেলেন। উদয় সিংহ ভগদত্তের সমীপে এবং ভীষ্মকে রাজপুত্র চামুন্ডার নিকট যুদ্ধ করতে গেলেন।। ১৪৬-১৪৭।।
তিনি পঞ্চশব্দ গজে আরোহণ করে শীঘ্র রাজার কাছে গেলেন। অত্যন্ত প্রমত্ত এবং মহাউগ্র তথা আহ্লাদকে হত্যাকারী শিবদত্ত নামক গজকে তিনি বললেন–রে প্রমত্ত গজের শিরোমণি, হে শিবদত্ত, হেশূর আমাকে জয় প্রদান কর।। ১৪৮-১৪৯।।
সেই মন্ডলীক রণে দুহৃদ রামাংশ যিনি আহ্লাদ নামে পরিচিত। হে হস্তিন, বেগের দ্বারা আমাকে রক্ষা কর। সেই বলবানের হাত থেকে, কাল স্বরূপ এবং বীরের হাত থেকে আমাকে রক্ষা কর।।১৫০।।
ইত্যেবমুক্তো নৃপতিং স হস্তী বচস্তমাহাশু শৃণুম্ব রাজন। যাবদহং বৈ তনু জীবধারী তাবদ্ভবাঞ্ছ ক্রভয়ঙ্করশ্চ।।১৫১।। ইত্যুক্তবন্তং গজং প্রমত্তং স পঞ্চশব্দশ্চ তদা স্বদন্তৈঃ। মুখং চতুৰ্ভিশ্চ বিদার্য শত্রোননদ ঘোরং স মহেন্দ্রদত্তঃ।।১৫২।। স রুদ্রদত্তশ্চ গজঃ প্রমত্তো রুষান্বধাবওরসা গজেন্দ্রম্। রিপু স্বপদভ্যাং চ চখান কুম্ভৈঃ স্বতুন্ডদন্ডেন তুদং প্ৰকুৰ্বন্।।১৫৩।। অবাপ মূৰ্চ্ছাং চ স পঞ্চশব্দস্তাদাশু ভূপং প্রতি মন্ডলীকঃ। স্বতোমরেণাঙ্গব্রণং প্রদায় খঙ্গেন হত্বা গজরাজমুগ্রম্। জগাম পদভ্যাং রিপুপ্রমাহী যত্র স্থিতশ্চেন্দুল উগ্ৰধৰা।।১৫৪।। উত্থাপ্য পুত্ৰং চ বিলপ্যমানাং পত্নীং স্বকীয়াং প্রতি চাজগাম। তদা প্রমত্তৌ চ গজো সুমূৰ্চ্ছাং ত্যক্ত্বা পুনশ্চক্রতুরেব যুদ্ধম্।।১৫৫।। স লক্ষণঃ খড়্গবণে বাণান্নিপোশ্চ ছিত্ত্বানিজবেষ্ণবা ম্। দধার চাপে চ সুমন্ত্রয়িত্বা স ধুন্ধুকারশ্চ গজং দদাহ।। ১৫৬।।
রাজা হাতীকে একথা বললে হাতী রাজাকে বলল -হে রাজন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি শত্রুর পক্ষে ভয়ংকর হবেন।। ১৫১।।
এই প্রকার বলে সেই প্রমত্ত গজ সেই সময় নিজ চারটি দাঁতের দ্বারা শত্রু মুখ বিদীর্ণ করে মহেন্দ্র দত্ত অত্যন্ত ঘোররূপে নর্দন করতে লাগলেন। সেই প্রমত্ত রুদ্র দত্তগজ তুন্ডের দ্বারা পীড়িত করে কুম্ভ স্থলে এবং নিজ পদের দ্বারা শত্রুকে দলন করলেন। সেই পঞ্চশব্দ মূৰ্চ্ছা প্রাপ্ত হলো। মন্ডলীক নিজ তোমর অংগে ব্রণ করে এবং খর্গের দ্বারা উগ গজরাজকে হনন করে শীঘ্র ভূপের প্রতি চলে গেল। শত্রুকে পদের দ্বারা প্রমথন কারী ইন্দুলের কাছে গেল।। ১৫২-১৫৪।।
নিজ পুত্রকে উঠিয়ে বিলাপ কারী নিজ পত্নীর কাছে সমাগত হল। সেই সময় দুই প্রমত্ত গজ মূৰ্চ্ছা ত্যাগ করে যুদ্ধ করতে লাগল।। ১৫৫।। লক্ষণ নিজ শ্রেষ্ঠ খর্গের দ্বারা শত্রুর বাণ ছেদন করে নিজ চাপে বৈষ্ণব অস্ত্র সমন্বিত করে ধুন্ধুকারের সঙ্গে নিজ গজের দাহ করল।। ১৫৬।।
হতে চ তস্মিন্নিজমুখবন্ধৌ সভূমিরাজশ্চ গৃহীতচাপঃ। শরেণ রৌদ্রেণ চ লক্ষণং তং জঘান তত্রাদিভয়ঙ্করস্থঃ।।১৫৭।। স মূর্ছিতঃ শুক্ল কুলেষু সূর্যস্তদোদয়ো বৈ ভগদত্তমেব। সুমূৰ্চ্ছয়িত্বা চ জগাম শীঘ্রং যত্রস্থিতো লক্ষণ একবীরঃ।।১৫৮।। ভয়ান্বিতস্তং চ বিলোক্য রাজা জবেন দুদ্রাব চ রক্তবীজম্। তদা সুদেবং চ স রক্তবীজো জিত্বা তু কৃষ্ণাংশযুতং জগাম।।১৫৯।। বানেন শীঘ্রং স চ মূৰ্চ্ছয়িত্বা পুনশ্চ দেবং চ স মূৰ্চ্ছয়িত্বা। তদ্বন্ধনায়োদ্যত আশুকারী স লক্ষণস্তত্র তদা জগাম।।১৬০।। প্রধায় চাপে চ স বৈষ্ণবাস্ত্রং প্রচোদয়ামাস চ রক্তবীজে। তদা স সামন্তসুতো বলীয়ান্নণং বিহায়াশু বিলোক্য সন্ধ্যাম্। ভয়ান্বিতঃ স্বৈশ্চ যুতো যযৌ বৈ যত্র স্থিতা ভূপতয়ঃ সকোপাঃ।।১৬১।। বিলোক্য শত্রুং চ স রত্নভানো যতো যযৌ বৈ শিবিরাণি যুক্তঃ। নিশাম্য ভপ স চ চন্দ্রবংশী জয়ং স্বকীয়ং সুষুপুস্ত তে বৈ। প্রাতশ্চ কালে স চ চন্দ্রবংশী বিলোক্য শুক্লান্বয়মাহ ভূপম্।।১৬২।।
নিজ বন্ধু হত হলে ভূমিরাজ চাপ গ্রহণ করে রৌদ্র শরের দ্বারা লক্ষণকে আঘাত করলে শুরুকুলের সূর্য মূর্ছিত হয়ে গেল। তখন উদয় ভগদত্তকে মূর্ছিত করে বীর লক্ষণ যেখানে মূর্ছিত ছিলেন সেখানে চলে এলেন।।১৫৭-১৫৮।।
ভয়াতুর রাজা তাকে দেখে শীঘ্র রক্তবীজের পশ্চাতে দৌড়ালেন। সেই সময় রক্তবীজ সুদেবকে কৃষ্ণাংশের সঙ্গে জয় করে গমন করলেন। তিনি বাণের দ্বারা শীঘ্র দেবকে মূর্ছিত করে তাকে বন্ধন করতে উদ্যত হলেন। সেই সময় লক্ষণ সেখানে উপস্থিত হল।। ১৫৯-১৬০।।
তিনি ধনুষ বৈষ্ণবাস্ত্র গ্রহণ করে রক্ত বীজের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করলেন। সেই সময় ভয়ান্বিত হয়ে সেই বলবান্ সামন্ত পুত্র সন্ধ্যাকে দেখে রণভূমি ত্যাগ করে ক্রোধান্বিত রাজগণের কাছে চলে গেলেন।। ১৬১।।
অয়ে গুর্জরদেশীয় মূলবৰ্মস্তুতৈঃ সহ। লক্ষ সৈন্যান্বিতো ভূত্বা গত্তমহতু বৈ ভবান্।।১৬৩।। ইত্যুক্তঃ স তু ভূপালো যুদ্ধভূমিমুপাযযৌ। মহীরাজাজ্ঞয়া প্রাপ্তো নাম্না পূর্ণামলো বলী।।১৬৪।। দশপুত্ৰান্বিতো যুদ্ধে সৈন্য লক্ষেণ সংযুতঃ। তয়োশ্চাসীন্নহদ্যুদ্ধ যামদ্বয়মুপস্থিতম্।।১৬৫।। হতেষু তেষু সর্বেষু তৌ নৃপৌ সমুতৈলৌ। অনোন্যেন রণং কৃত্বা যমলোকমুপাগতৌ।।১৬৬।। মার্গকৃষ্ণচতুৰ্দশ্যাং প্রভাতে বিমলে রবৌ। কৈকয়ো লক্ষসেনাঢ্যো দয়া পুত্ৰসমন্বিতঃ। লক্ষণানুজ্ঞয়া প্রাপ্তস্তস্মিন্যুধি ভয়ানকে।।১৬৭।। মদ্রকেশস্তদা রাজা দশপুত্ৰসমন্বিতঃ। লক্ষসৈন্যান্বিতস্তত্র যত্র যুদ্ধং সমন্বভূৎ। পরস্পরং হতাঃ সর্বে দিনান্তে ক্ষত্রিয়া রণে।। ১৬৮।।
রত্নভানুসুত শত্রুকে দেখে শিবিরে চলে গেলেন এবং চন্দ্রবংশী ভূপ জয় শ্রবণ করে শয়ন করতে ইচ্ছা করলেন। প্রাতে চন্দবংশী রাজা শুক্লবংশী নৃপতিকে দেখে বললেন হে গুর্জর দেশবাসী মূল বর্মন, আপনি আপনার পুত্রদের সাথে একলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধ স্থলে চলে যান। রাজা আদেশ পেয়ে বলবান্ পূর্ণামল সেখানে চলে গেলেন। পূর্ণমল এক লক্ষ সেনা তথা নিজ দশপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলেন। সেই দুই রাজার মধ্যে দুই প্রহর ধরে প্রবল যুদ্ধ হয়েছিল। দুই পক্ষের সেনাগণ যারা মারা গেলে দুই রাজা নিজ পুত্রদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে স্বর্গলোক প্রাপ্ত হল।। ১৬২-১৬৬।।
মার্গশীর্ষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে বিমল প্রভাতে রবিউদিত হলে লক্ষ সেনা নিয়ে দশপুত্রসহ কৈকয় রাজা লক্ষনের আদেশে যুদ্ধক্ষেত্রে আগত হলেন। সেই সময় মদ্রকেশ রাজা দশপুত্রের সঙ্গে একলক্ষ সেনা নিয়ে সেখানে এলেন। তারা সমস্ত ক্ষত্রিয় সমস্ত দিন যুদ্ধ করে হত হল।। ১৬৭-১৬৮।।
পুনঃ প্রভাতে বিমলে ভগদত্তো মহাবলী। ত্রিলক্ষবলসংযুক্তো জগজ্জ রণমূর্দ্ধনি।।১৬৯।। দৃষ্ট্বা তং লক্ষণো বীরস্ত্রিলক্ষ মহাবলাঃ। চকার তুমুলং ঘোরং সেনয়া চ স্বকীয়য়া।। ১৭০।। অপরাহ্ণে হতাঃ সর্বে সৈনিকা নৃপয়োস্তদা। ভগদত্তঃ স্বয়ং ক্রুদ্ধো রথস্থো লক্ষণং যযৌ।।১৭১।। লক্ষণৌ রথমারুহ্য স্বপিতুঃ শত্রুজং নৃপম্। ত্রিভির্বানৈশ্চ সন্তোদ্য ভল্লেন সমতাড়য়ৎ।।১৭২।। ভগদত্তস্তদা ক্রুদ্ধো বিরথং তং চকার হ। ক্রুদ্ধবন্তং রিপুং ঘোরং লক্ষণঃ খড়্গপাণিকঃ। হত্বা হয়াংস্তথা সূতং ভগদত্তমুপাযযৌ।। ১৭৩।। মদয়িত্বা চ তচ্চমচ্ছিত্ত্বা বর্ম তদুদ্রবম্। ত্রিধা চকার বলবাম্ভগদত্তং রিপোসসুতম্।।১৭৪।। সন্ধ্যাকালে হতে তস্মিল্লক্ষণস্তুরয়ান্বিতঃ। একাকী শিবিরং প্রাপ্তো হস্তিন্যুপরি সংস্থিতঃ।।১৭৫।।
পুনরায় বিমল প্রাতকালে বলবান্ ভগদত্ত তিন লক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে গর্জন করতে লাগলেন। তাকে গর্জন করতে দেখে তিন লক্ষ মহাবলবান সেনা নিয়ে লক্ষণ অত্যন্ত ঘোর যুদ্ধ করল।। মধ্যাহ্নের পর সেই দুই রাজার সকল সৈন্য হত হল। ১৬৯-১৭০।। ভগদত্ত রথোপরি আরূহ হয়ে অত্যন্ত ক্রোধের সঙ্গে লক্ষণের দিকে গেল। লক্ষণ রথের উপর সমারূঢ় হয়ে নিজ পিতার শত্রুজ নৃপকে তিন বাণের দ্বারা পীড়িত করে ভল্লের দ্বারা তাড়িত করলেন। পুনরায় ভগদত্ত অত্যন্ত ক্রোধিত হয়ে তাকে রথহীন করে দিলেন। এই প্রকারে ক্রোধান্বিত হয়ে লক্ষণ হাতে খড়্গা গ্রহণ করে অশ্ব এবং সারথিকে হত্যা করে ভগদত্তের উপর আরূঢ় হল।। ১৭১-১৭৩।।
লক্ষণ ভগদত্তের চর্ম মর্দন করে, তার বর্ম ছেদন পূর্বক তাকে তিনটি খন্ডে মন্ডিত করলেন। তার মৃত্যুর পর সন্ধ্যাতে লক্ষণ একাকী হস্তিনী আরূঢ়া হয়ে শিবিরে গিয়ে উপস্থিত হল।। ১৭৪-১৭৫।
ভগদত্তে হতে তস্মিন্স রাজা ক্রোধমূর্ছিতঃ। স্বকীয়াস্নবভূপাংশ্চ চামুন্ডেন সমন্বিতান্। প্রেষয়ামাস যুদ্ধায় মার্গে চ প্ৰতিপদ্দিনে।।১৭৬।। অঙ্গদশ্চ কলিঙ্গশ্চ ত্রিকোণঃ শ্রীপতিস্তথা। শ্রীতারশ্চ মুকুন্দশ্চ রুহিলো গুহিলস্তথা।।১৭৭।। সুকেতুর্নব ভূপাস্তে নবাযুতবলৈযুতাঃ। বাদ্যানি বাদয়ামাসুস্তস্মিন্মুমহোস্তবে।।১৭৮।। দষ্টা তাল্লুক্ষণো বীরো রাজভিশ্চ স্বকীয় কৈঃ। সার্দ্ধং জগাম যুদ্ধায় তথা ব্যুহ্যাযুধদ্রিপূন্।।১৭৯।। রুদ্রবর্মা চ নৃপতিঃ শূরৈদশসহস্রকৈঃ। অঙ্গদং বৈরিণং মত্বা তেন সার্দ্ধমযুধ্যত।। ১৮০।। কালীবৰ্মাহযুতৈ সার্ধং কলিঙ্গং প্রত্যযুধ্যত। বীরসিংহোহযুতৈ সার্ধং ত্রিকোণং প্ৰত্যযুধ্যত।।১৮১। ততোনুজঃ প্রবীরশ্চ শ্রীপতিং সোহযুতৈস্স হ। নৃপঃ সূর্যো ধরো বীরোহতাঢ্যো বলবাত্রণে। শ্রীতারং নৃপমাসাদ্য মহদ্যুদ্ধমচীকরৎ।।১৮২।।
ভগদত্ত মারা গেলে রাজা চামুন্ডার সঙ্গে সকলকে যুদ্ধ করতে প্রেরণ করলেন।।১৭৬।।
অঙ্গদ, কলিঙ্গ, ত্রেকোণ, শ্রীপতি, শ্রীধর, মুকুন্দ, রুহিল, গুহিল এবং সুকেতু প্রমুখ নয় রাজা নব্বই হাজার সেনা যুক্ত ছিলেন। তারা সকলে যুদ্ধ মহোৎসবে বাদ্য বাদন করলেন। বীর লক্ষণ তখন তাদের দেখে নিজ রাজগণের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ব্যুহ রচনা করলেন। রুদ্রবর্মা রাজা দশসহস্ৰ সেনা নিয়ে অংগদকে শত্রু মনে করে যুদ্ধ করলেন। কালী বৰ্মা দশসহস্র সেনা নিয়ে কলিঙ্গের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। বীর সিংহ দশসহস্র সেনা নিয়ে ত্রিকোণের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। তার ভ্রাতা প্রবীর দশসহস্র সেনা নিয়ে শ্রীপতির সাথে যুদ্ধ করেছিল। সূর্যধর এক অযুত সেনা নিয়ে বলবান্ রাজা শ্রীধরে সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। বামন দশহাজার সেনা নিয়ে ছোট রাজগণ ছোট তিনশত রাজগণের সাথে যুদ্ধ করেছিল। এবং তারা একে অপরের দ্বারা হত হলেন।।১৮৫।।
বামনোযুতসংযুক্তো মুকুন্দং প্রতি সোহমৎ। গঙ্গাঁসিংহশ্চ বলবান্মহিলং প্রতি সাযুতঃ।।১৮৩।। লল্লসিংহোযুতৈসসার্ধং গুহিলং প্রতি সোহগমৎ ত্রিশতানি ততো ভূপাঃ সহস্রাঢ্যাঃ পৃথক্ পৃথক্।।১৮৪ ক্ষুদ্রভূপাঃ ক্ষুদ্রভূপাংস্ত্রিশতানি সমাযযুঃ। অন্যোন্যেন হতাঃ সর্বে কৃত্বা যুদ্ধং ভয়ানকম্।।১৮৫। চামুন্ডস্তু তদা দৃষ্ট্বা মৃতকান্সৰ্বভূপতীন্।
লক্ষণন্তমুপাগম্য মহদ্যুদ্ধং চকার হ।।১৮৬।। লক্ষণো রক্তবীজং তং জ্ঞাত্বা ব্রাহ্মণসমস্তম্। বৈষ্ণবাস্ত্ৰং তদা তস্মৈ ন দদৌ তেন পীড়িতঃ।।১৮৭।। সায়ংকালে তু সংপ্রাপ্তে লক্ষণো হস্তিনীস্থিতঃ। একাকী শিবিরং প্রাপ্তশ্চামুন্ডং নৃপমাযযৌ।।১৮৮।।
মুকুন্দের সাথে যুদ্ধ করেছিল। বলবান গংগাসিংহ অযুত সেনা নিয়ে মহিলের সাথে যুদ্ধ করেছিল। লল্লসিংহ এক অযুত সেনা নিয়ে গুহিলের প্রতি যুদ্ধ করেছিল। এই প্রকারে তিন শত রাজা পৃথক পৃথক এক সহস্র করে সেনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিল।। ১৭৭-১৮৪।।
সেই সময় চামুন্ডা সমস্ত রাজগণকে মারা যেতে দেখে স্বয়ং লক্ষণের কাছে এসে উপস্থিত হয়েছিল। লক্ষণ ব্রাহ্মণ সম্মত তাকে রক্তবীজ মনেকরে তার দ্বারা পীড়িত হয়ে বৈষ্ণবাস্ত্র প্রেরণ করলেন।। ১৮৬-১৮৭।।
সায়ংকালে লক্ষণ হস্তিনীতে সমস্থিত হয়ে একলা শিবিরে চলে এলেন এবং চামুন্ডা নৃপতির কাছে এলেন। দ্বিতীয়া তিথিতে প্রভাত হলে কৃষ্ণাংশ দশসহস্র শূরবীরের সাথে যুদ্ধ ভূমিতে আগত হলেন।। ১৮৮।।
দ্বিতীয়ায়াং প্রভাতে চ কৃষ্ণাংশো দেবসংযুতঃ। শুরৈদর্শসহস্রৈশ্চ যুদ্ধভূমিমুপাযযৌ।।১৮৯।। তারকশ্চ সচামুন্ডো দ্বিলক্ষবল সংযুতঃ। দ্বিশতৈশ্চ তথা ভূপৈঃ সার্দ্ধং যুদ্ধমুপস্থিতৌ।।১৯০।। পুরস্কৃত্য নৃপান্সর্বান্সসৈন্যৌ বলবত্তরৌ। তেষামনু স্থিতৌ যুদ্ধে তত্র জাতো মহারণঃ।।১৯১।। যামমাত্রেণ তৌ বীরৌ হত্বা সর্বমহীপতীন্ লক্ষসৈন্যাংস্তথা হত্বা সংস্থিতো শ্রমকর্ষিতো।।১৯২।। চামুন্ডস্তারকো ধূর্তঃ সংপ্রাপ্তো ছিদ্রদর্শিনৌ। তাভ্যাং শ্ৰমান্বিতাভ্যাং চ চক্রতুস্তো সমং রণম্।।১৯৩। তেষাং ত্রিযামমাত্রেণ সংভূব মহাম্ৰণঃ সায়ংকালে তু সংপ্রাপ্তে কৃষ্ণাংশশ্চ নিরায়ুধঃ। তলপ্রহারেণ রিপুং মূৰ্চ্ছয়ামাস বীর্যবান্।।১৯৪।। এতস্মিন্নন্তরে বীরস্তারকো দেবসিংহকম্। হয়ং মনোরথং হত্বা শঙ্খশব্দমথাকরোৎ।।১৯৫।।
তারক চামুন্ডার সঙ্গে দুই লক্ষ সেনা নিয়ে এবং দুইশত নৃপতিকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে উপস্থিত হলেন। ১৮৯-১৯০।।
সমস্ত নৃপতিকে সম্মুখে রেখে দুই বলবান পশ্চাতে রইলেন। সেই সময় রণভূমিতে প্রচন্ড ঘোর যুদ্ধ হয়েছিল। এক প্রহর ধরে সেই দুই নৃপতি সমস্ত ভূপ তথা একলক্ষ সেনাকে হত্যা করে অত্যন্ত পরিশ্রান্ত হল। চামুন্ডা এবং তারক প্রচন্ড ধূর্ত এবং ছিদ্রদর্শী ছিলেন। তারা পরিশ্রান্ত দুই নৃপতির সাথে যুদ্ধ করেছিলেন।। ১৯১ -১৯৩।।
তাদের মধ্যে তিনপ্রহর ধরে মহাযুদ্ধ হয়েছিল। সায়ংকালে কৃষ্ণাংশ নিরায়ুধ হয়ে তলপ্রহারের দ্বারা শত্রুকে মূর্ছিত করেছিলেন। ইতিমধ্যে বীরতারক দেবসিংহ মনোরথ অশ্বকে মেরে ফেলে শংখধ্বনি করল।। ১৯৪-১৯৫।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। তচ্ছব্দাস চ চামুন্ডস্ত্যক্ত্বা মূর্ছাং মহাবলঃ। কৃষ্ণাংশস্য শিরঃ কায়াদপহৃত্য চ বেগবান্। তয়োগৃহীত্বা শিরসী মহীরাজমুপাযযৌ।।১৯৬।। মহীরাজস্তু তে দষ্টা পরমানন্দনির্ভরঃ। দত্ত্বা দানং দ্বিজাতিভ্যো মহোৎসবমকারয়ৎ।।১৯৭।। লক্ষণস্য তদা সৈন্যে হাহাশব্দো মহানভূৎ। শ্রুত্বা কোলহলং তেষাং জ্ঞাত্বা তৌ চ হতৌ নৃপঃ ব্রহ্মানন্দস্তদা মূৰ্চ্ছাং ত্যক্ত্বা বেলামুবাচ হ।।১৯৮।। প্রিয়ে গচ্ছ রণং শীঘ্রং হরিনাগরমাস্থিতা।। মম বেষং শুভং কৃত্বা তারকং জহি মা চিরম্।।১৯৯।। ইতি শ্রুত্বা তু সা বেলাং রামাংশেন সমন্বিতা। সহস্রশূরসহিতা যুদ্ধভূমিমুপাযযৌ।।২০০।। শ্রুত্বা স লক্ষণো বীরস্তালনেন সমন্বিতঃ। সৈন্যৈশ্চ দশসাহস্রৈমহীরাজমুপাযযৌ।।২১১।।
সেই শব্দে মহাবলবান্ চামুন্ডা মূৰ্চ্ছা ত্যাগ করে প্রচন্ড বেগে সেখানে এসে কৃষ্ণাংশের শির শরীর থেকে ছিন্ন করলেন এবং সেই দুইজনের মস্ত ক নিয়ে শীঘ্র মহীরাজের কাছে গেলেন। মহীরাজ সেই দুই শির দেখে পরমানন্দ লাভ করলেন। তিনি ব্রাহ্মণ গণকে দান করে মহোৎসব করলেন।। ১৯৬ -১৯৭।।
সেই সময় লক্ষণের সেনা মধ্যে মহা হাহাকার ধ্বণি উঠল। সেই কোলাহলের মাধ্যমে রাজা তাদের নিহত সংবাদ জানতে পারলেন। অতঃপর ব্রহ্মানন্দ মূৰ্চ্ছা ত্যাগ পূর্বক বেলাকে বললেন–হে প্রিয়ে, এখন তুমি আমার বেশ ধারণ করে হরিণপর থেকে শীঘ্র রণে যাও। এই কথা শ্রবণ করে বেলা রামাংশের সঙ্গে একসহস্র শূরের সাথে যুদ্ধভূমিতে আগত হলেন। সেই বীর লক্ষণ তালনের সাথে দশসহস্র সেনা নিয়ে মহীরাজের কাছে পৌঁছালেন।।১৯৮-২০১।।
তৃতীয়ায়াং প্রভাতে চ তারকো বলবত্তরঃ। ব্রহ্মানন্দ চ তং মত্বা মহযুদ্ধমচীকরৎ।।২০২।। রক্তবীজশ্চ চামুন্ডো রামাংশো বলবত্তরঃ। চকার দারুণং যুদ্ধং তস্মিন্বীর সমাগমে।।২০৩।। যামমাত্রেণ রামাংশো হত্বা তস্য মহাগজম্। তচ্ছস্ত্রানি তথা চ্ছিত্ত্বা মল্লযুদ্ধমচীকরৎ।।২০৪।। ত্রিযামমাত্রেণ তদা সায়ংকালে সমাগতে। মমন্থ ভ্রাতৃহন্তারং স চ বীরো মমার হ।।২০৫।। তদা বেলা মহাশত্রুং তারকং বলবত্তরম্। ছিত্তাস্ত্রানি স্বখড়েন শিরঃ কায়াদপাহরৎ।।২০৬।। চিতাং কৃত্বা বিধানেন সা দেবী দ্রুপদাত্মজা। ব্রহ্মানন্দং নমস্কৃত্য তচ্চিতায়াং সমারুহৎ।।২০৭।। তেন সার্দ্ধং চ সা শুদ্ধা শ্বশুরস্যাজ্ঞয়া মুদা। সপ্তজন্মকথাং কৃত্বা স্বপতেস্তু দদাহ বৈ।।২০৮।।
তৃতীয়া তিথিতে বলবান্ তারক বেলাকে ব্রহ্মানন্দ মনেকরে মহাযুদ্ধ করেছিলেন এবং রক্তবীজ মূৰ্চ্ছা যিনি রামাংশের অধিক বলবান্ ছিলেন তিনিও সেইবীর সমগণে মহাযুদ্ধ করেছিলেন।। কেবলমাত্র একপ্রহরে সেই রামাংশ তার গৃহপতিকেক মেরে দিয়ে তার শস্ত্র ছেদেন করে পুনরায় মল্লযুদ্ধ করেছিলেন।। ২০২-২০৬।।
পুনরায় সেই দ্রুপদাত্মজা দেবী বিধি-বিধানে চিতা রচনা করে ব্রহ্মানন্দকে প্রণাম করে নিজেও সেই চিতায় সমারোহণ করলেন।। ২০৭।।
সেই শুদ্ধানারী নিজ শ্বশুরের আজ্ঞাতে নিজ পতির সাথে সপ্ত জন্মের সম্পর্কের কথা বলে চিত্ত অগ্নি সংকল্প করলেন।। ২০৮।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। তচ্চিতায়াং চ ভর্তারমিন্দুলং সার্দ্ধং কলেবরম্।।২০৯। রাত্রৌ পরিমলো রাজা লক্ষণেন সমন্বিতঃ। মহীরাজমুপাগম্য মহদ্যুদ্ধমকারৎ।।২১০।
সপাদলক্ষাশ্চ তদা হতশেষা মহাবলাঃ। ত্ৰিলক্ষৈহতশেষৈশ্চ সার্দ্ধং যোদ্ধমুপস্থিতা।।২১১।। ধান্যপালঃ শতং ভূপাঁল্লক্ষণশ্চ তথা শতম্। তালনশ্চ শতং ভূপান্থত্বা রাজানমাযযৌ।।২১২। মহীরাজস্তদা দুঃখী ধ্যাত্বা রুদ্রং মহেশ্বরম্। নিশীথে সমনুপ্রাপ্তে হত শেষৈ সমাগতঃ। একাকী গজমারুহ্য যযৌ চাদিভয়ঙ্করম্।।২১৩।। রুদ্রদত্তেন বানেন হত্বা পরিমলং নৃপম্ ধান্যপালং তথা হত্বা তালনং বলবত্তরম্। লক্ষণান্তমুপাগম্য মহদ্যুদ্ধমচীকরৎ।।২১৪।।
সেই চিতাতে বলবান্ ভর্তা ইন্দুলকে সংস্থাপিত করে তার সাথে মহীরাজের কাছে গিয়ে মহাযুদ্ধ করেছিলেন।। ২০৯-২১০।।
সেই সময় সপাদ এক লক্ষ মহাবলীশূর জীবিত ছিলেন তারা অপরপক্ষের হতশেষ তিনলক্ষ সেনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে তারা সেখানে উপস্থিত হল।। ২১১।।
ধন্যপাল একশত রাজাকে তথা লক্ষণ একশত, এবং তালন একশত রাজাকে হত্যা করে রাজার কাছে গেলেন।। ২১২।।
মহীরাজ অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে রুদ্র মহেশ্বরের ধ্যান করে অর্ধরাত্রে হতশেষ সেনাদের নিয়ে যুদ্ধ করতে আগত হলেন। একাকী তিনি গজারূঢ় হয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠলেন।। রুদ্রদত্ত বাণের দ্বারা রাজা পরিমলকেক হনন করে বলবান্ ধান্যপাল তথা তালনকে বধ করে লক্ষণের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়ে মহাযুদ্ধ করলেন।। ২১৩-২১৪।।
মহীরাজস্য রৌদ্রাস্ত্রৈ সৈসন্যাসর্বে ক্ষয়ং গতাঃ লক্ষণং প্রতি রৌদ্রাস্ত্রং মহীরাজঃ সমাদধে।।২১৫।। তদা তু লক্ষণো বীরো বৈষ্ণবাস্ত্রং সমাদধে। তেনস্ক্রেন ক্ষয়ং জাতো মহীরাজস্য সায়কঃ তেনাস্ত্রতেজসা রাজা মহাসন্তপমাপ্তবান্।।২১৬।। ধ্যাত্বা দ্রং মহাদেবং ত্যক্ত্বা বিদ্যাং চ বৈষ্ণবীম্। স্বভল্লেন শিরঃ কায়াদপাহরত ভূমিপঃ।।২১৭।। হস্তিনী চ তদা রুষ্টা গজমাদিভয়ঙ্করম্। গত্বা যুদ্ধং মুহূর্ত্তেন কৃত্বা স্বৰ্গমুপাযযৌ।।২১৮।। উষঃকালে চ সংপ্রাপ্তে মলনা পতিমুত্তমম্। তচ্চিতায়াং সমারোপ্য দদাহ স্বং কলেবরম্।।২১৯।। তদা তু দেবকী শুদ্ধং লক্ষণং বলবত্তরম্। তালনাদীস্তথা লুত্বা দদাহ স্বং কলেবরম্।।২২০।।
মহীরাজের রৌদ্র অস্ত্রে সকলে ক্ষয় প্রাপ্ত হলেন। পুনরায় লক্ষণের প্রতি মহীরাজ রৌদ্র অস্ত্র প্রয়োগ করলেন। তখন লক্ষণ বেষ্ণবাস্ত্রে তা ছেদন করলেন। সেই অস্ত্রে মহীরাজের সায়ক ক্ষয়প্রাপ্ত হল এবং সেই অশ্বের তেজে রাজা মহা সনতাপ করতে লাগলেন। পুনরায় তিনি রুদ্র দেবের ধ্যান করে বৈষ্ণবী বিদ্যা ত্যাগ করে নিজ ভল্লের দ্বারা শরীর থেকে শির বিচ্ছিন্ন করলেন।। ২১৫ -২১৭।।
সেই সময় হস্তিনী প্রবল রুষ্ট হয়ে আদি ভয়ংকর গজের কাছে গিয়ে যুদ্ধ করে স্বর্গ প্রাপ্ত হলেন।। ২১৮।।
উষাকালে মলনা নিজ পতির উত্তম চিতা প্রস্তুত করে নিজে তাতে সমারোহণ করলেন।। ২১৯।।
সেই সময় শুদ্ধ দেবকী বলবান লক্ষণ তথা তালনাদি বীরগণকে দাহ করে নিজ শরীরও দাহ করলেন।। ২২০।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ। প্রভাতে বিমলে জাতে চতুর্থে ভৌমবাসরে। তথা লুত্বা স্বর্ণবতীং কৃত্বা তেষাং তিলাঞ্জলিম্। ধ্যাত্বা সর্বময়ীং দেবীং স্থিরীভয় স্বয়ং স্থিতঃ।।২২১।। এতস্মিন্নন্তরে তত্র কলিভাৰ্যাসমন্বিতঃ। বাঞ্ছিতং ফলমাগম্য তুষ্টাব শ্লয়া গিরা।।২২২।। নম আহ্লাদ মহতে সৰ্বানন্দপ্রদায়িনে। যোগেশ্বরায় শুদ্ধায় মহাবতীনিবাসিনে।।২২৩।। রামাংশস্ত্বং মহাবাহো মম পালনতৎপরঃ। কলৈকয়া সমাগম্য ভুবো ভারত্বয়া হৃতঃ।।২২৪।। রাজানঃ পাবকীয়াশ্চ তপোবলসমন্বিতাঃ। হত্বা তাপঞ্চসাহস্রাক্ষুদ্রভূপাননেকশঃ। যোগমধ্যে সমাসীনো নমস্তস্মৈ মহাত্মনে।।২২৫।। তেষাং সৈন্যা ষষ্টিলক্ষাঃ ক্রমাদ্বীর ত্বয়া হতাঃ। বরং ব্রৃহি মহাভাগ যত্তে মনসি বর্ততে।।২২৬।।
চতুর্থ ভৌমবার দিন বিমল প্রভাতে স্বর্ণবতী দেবীকে দাহ করে সকলকে তিলাঞ্জলি দিয়ে স্বর্ণময়ী দেবীর ধ্যানে স্বয়ং মগ্ন হলেন।। ২২১।।
ইতিমধ্যে সপত্নী কলি সেখানে বাঞ্ছিত ফলপ্রাপ্ত হয়ে শ্লক্ষণ বাণীর দ্বারা স্তুত হলেন।। ২২২।।
কলি বললেন–হে আহ্লাদ, সর্বানন্দ প্রদানকারী, যোগেশ্বর -শুদ্ধ- মহান এবং মহাবলী নিবাসী আপনাকে আমার প্রণাম। হে মহাবাহু, আপনি রামের অংশাবতার, আমার পালনকারী। এককলার দ্বারা এখানে এসে আপনি এই ভূমন্ডলের ভার গ্রহণ করেছেন।। ২২৩-২২৪।।
পাবকীয় রাজগণের তপস্যাবল সমন্বিত পাঁচ হাজার রাজাকে বধ করে আপনি যোগ মধ্যে সমাসীন হয়েছেন, মহাত্মা আপনাকে প্রণাম।। ২২৫।।
সেই নৃপতিগণের ষাট লক্ষ সেনা হে বীর, আপনি ক্রমান্বয়ে হনন করেছেন। হে মহাভাগ, আপনার মনে যা কিছু ইচ্ছা বর দান প্ৰাৰ্থনা করুন।। ২২৬।।
ইতি শ্রুত্বা স আহ্লাদো বচনং প্রাহ নিৰ্ভয়ঃ। মম কীর্তিস্ত্বয়া দেব কর্তব্যা চ জনে জনে।।২২৭।। পুনস্তে কার্যমতুলং করিষ্যামি শৃণুম্ব ভোঃ। মহীরাজশ্চ ধর্মত্মো শিবভক্তি পরায়ণঃ। তস্য নেত্রে ময়া শুদ্ধে কর্তব্যে নীলরূপকে।।২২৮।। তব প্রিয়ঃ সদা নালস্তথৈব চ মম প্রিয়ঃ। দেবানাং দুঃখদো দেব দৈত্যানাং হৰ্ষবৰ্দ্ধনঃ।।২২৯।। ইত্যুক্ত্বা স তু রামাংশো গজমারুহ্যঃ বেগতঃ। মহীরাজমুপাগম্য মহুদ্যুদ্ধং চকার হ।।২৩০।। রুদ্রদত্তো গজস্তূর্ণং পঞ্চশব্দমুপস্থিতঃ। পদ্মদন্তান্সমারুহ্য যুযুধাতে পরস্পরম্।।২৩১।। অন্যোন্যেন তথা হত্বা গজৌ স্বর্গমুপেয়তুঃ।।২৩২।। তদা ভয়াতুবো রাজা ত্যক্ত্বা যুদ্ধং ভয়ঙ্করম্। স তু দুদ্রাব বেগেন রামাংশোহনুযযৌ ততঃ।।২৩৩।।
কলিযুগের একথা শ্রবণ করে আহ্লাদ নির্ভয়ে বললেন – হে দেব, আপনি আমার এই কীর্তি জনে জনে ছড়িয়ে দিন। আমি পুনরায় আপনার অনুপম কার্য করব, তা শ্রবণ করুন। শিব ভক্তিপরায়ণ ধর্মাত্মা মহীরাজের নীল নেত্র শুদ্ধ করতে হবে। আপনার রূপনীল, আমারও নীলরং প্রিয়। দেবতার পক্ষে এ রং দুঃখদায়ী এবং দৈত্যগণের হর্ষপ্রদানকারী।। ২২৭- ২২৯।।
রামাংশ একথা বলে গজোপরি সমারোহণ করে বেগের দ্বারা মহীরাজের কাছে গিয়ে মহাযুদ্ধ করেছিল।। ২৩০।।
রুদ্রদত্ত গজ শীঘ্র পঞ্চশব্দের কাছে উপস্থিত হয়েছিল। পদ্মদন্তের উপর আরোহণ করে পরস্পর পরস্পরকে হনন করে সেই দুই গজ স্বর্গে গমন করল।। ২৩১ -২৩২।।
সেই সময় রাজা ভয়াতুর হয়ে সেই ভয়ংকর যুদ্ধ ত্যাগ করে প্রচন্ড বেগে দৌড়ালে রামাংশ তার পশ্চাতে ধাবন করল।। ২৩৩।।
সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ।। কেশেষু চ মহীরাজং গৃহীত্বা তরসা বলী। কলিদত্তং মহানীলং নেত্রয়োস্তেন তৎকৃতম।।২৩৪।। তদাপ্রভৃতি বৈ শম্ভুরশুদ্ধং নৃপতি প্রিয়ম্। মত্বা ত্যক্ত্বা যযৌ স্থানে কৈলাসে গুহ্যকালয়ে।।২৩৫। আহ্লাদঃ কলিনা সার্দ্ধং কদলীবনমুত্তমম্। গত্বা যোগং চকারাশু পর্বতে গন্ধমাদনে।।২৩৬।। তথা ভূতং চ রামাংশং কলিদষ্টামুদান্বিতঃ। বলিপার্শ্বমুপাগম্য বৰ্ণয়ামাস সৰ্বশঃ।।২৩৭।। স বৈ বলিদৈত্যরাজোহযুতৈঃ সহ বিনির্গতঃ। গৌর দেশমুপাগম্য সহোড্ডীমনুবাচ হ।।২৩৮।। গচ্ছ বীর বলৈসার্দ্ধং নিশায়াং রক্ষিতোময়া। হত্বা ভূপং মহীরাজং বিদ্যুৎমালাং গৃহাণ ভোঃ।।২৩৯ ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য ষোড়শাব্দান্তরে গতে। সপাদলক্ষৈশ্চ বলৈঃ কুরুক্ষেত্রমুপাযযৌ।।২৪০।।
সেই মহাবলবান্ কেশ আকর্ষণ করে মহীরাজকে গ্রহণ করলেন। কলিদত্ত মহানীল তিনি মহীরাজের নেত্রে ঢেলে দিলেন। তখন থেকে ভগবান্ শম্ভু সেই অশুদ্ধ নৃপতিকে ত্যাগ করে কৈলাম পর্বতের গুহ্যস্থানে চলে গেলে। আহ্লাদ তখন কলিযুগের সাথে উত্তম কদলী বনে গিয়ে গন্ধমাদন পর্বতের উপর যোগক্রিয়া করেছিলেন।। ২৩৪-২৩৬।।
রামাংশকে সেই প্রকারে দেখে আনন্দমুক্ত কলি বলির কাছে গিয়ে সকলকিছু বর্ণন করলেন।। ২৩৭।।
সেখানে দৈত্য রাজবলি দশসহস্র সেনা নিয়ে গৌড় দেশে গিয়ে মহোড্ডীনকে বললেন, হে বীর, আমার সাথে চলো এবং সেনাদের ও সাথে নিয়ে চলো। নিশাকালে আমি আপনাকে রক্ষা করব। রাজা মহারাজকে হত্যা করে বিন্দুমালাকে গ্রহণ কর। এই প্রকার বাক্য শ্রবণ করে ষোড়শ বর্ষ পর সপাদ একলক্ষ সেনা নিয়ে কুরুক্ষেত্রে আগত হলেন। মহীরাজের পুত্রকে আহ্বান করে তাকে জয়করে মহাবতীতে মহীপতির কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং তার সকল সম্পদ লুঠ করলেন। তারপর কীর্তিসাগরে লিঙ্গের অন্বেষণ করলেন। সেই রাজা তা শেষে স্বগৃহে মিশতে গেলেন।। ২৩৮-২৪২।।
মহীরাজসুতাঞ্জিত্বা সমাহয় মহাবতীম্। মহীপতিং প্রেষয়িত্বা লুন্ঠয়িত্বা চ তত্ত্বসু।।২৪১।। লিঙ্গার্থং কৃতবান্যত্ন স নৃপঃ কীর্তিসাগরে। ন প্রাপ্তসনৃপস্ত বৈ স্বগেহায় তদা যযৌ।।২৪২।। লক্ষচন্ডীং কারয়িত্বা পরমানন্দমাপ্তবান্। জয়চন্দ্ৰস্তু তচ্ছ্বত্বা পুত্রশোকসমন্বিতঃ।।২৪৩।। নিরাহারো যতিভূত্বা মৃতঃ স্বর্গপুরং যযৌ। সহোড্ডীনেন স নৃপঃ কৃত্বা যুদ্ধং ভয়ঙ্করম্।।২৪৪।। সপ্তাহোরাত্রমাত্রেণ স্লৈচ্ছরাজবংশং গতঃ। মারিতো বহুযত্নেন মহীরাজো ন বৈ মৃতঃ।।২৪৫।। তদা ম্লেচ্ছ সহোড্ডীনো নির্বন্ধনমথাকরোৎ। জ্যোতিরূপস্থিতং তত্ৰ চন্দ্ৰভট্রো নৃপাজ্ঞয়া। ক্ষুরপ্রেণ চ বানেন হত্বা বহ্নৌ দদার বৈ।।২৪৬।। বিদ্যুৎমালা স চ ম্লেচ্ছো গৃহীত্বা চ ধনং বহু। তত্রাস্থাপ্য স্বদাসং চ কুতুকোড্ডীনমাগতঃ।। ২৪৭।।
সেখানে একলক্ষ চন্ডী প্রস্তুত করে রাজা পরমানন্দ প্রাপ্ত হলেন। পুত্রশোকাতুর রাজা চন্ডী শ্রবণ করে নিরাহারী হয়ে যতি হয়ে গেলেন এবং মৃত্যুপ্রাপ্ত হলেন। মৃত্যুর পর তিনি স্বর্গে গমন করলেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি মহোড্ডীনের সাথে ভয়ংকর যুদ্ধ করলেন। সাত অহোরাত্রে ম্লেচ্ছ রাজে বশীভূত মহীরাজকে প্রচুর প্রহার করলেন, কিন্তু তিনি নিহত হননি। সেই সময় মহোড্ডীন ম্লেচ্ছ নির্বন্ধন করলে চন্দ্রভট্ট নৃপতির আদেশে জ্যোতি রূপে স্থিত হয়ে ক্ষুরপ্র বাণের দ্বারা তাকে হত্যা করে অগ্নিতে দাহ করলেন।। অতঃপর সেই ম্লেচ্ছ বিদ্যুন্মালকে প্রচুর ধনসম্পদ দ্বারা গ্রহণ করে নিজ দাসকে সেখানে নিযুক্ত করে তিনি কুতুকোড্ডীনে চলে গেলেন।। ২৪৩- ২৪৭।।