সব - পেয়েছি ' র দেশে কারো নাই রে কোঠাবাড়ি— দুয়ার খোলা পড়ে আছে , কোথায় গেল দ্বারী । অশ্বশালায় অশ্ব কোথায় , হস্তীশালায় হাতি , স্ফটিকদীপে গন্ধতৈলে জ্বালায় না কেউ বাতি । রমণীরা মোতির সিঁথি পরে না কেউ কেশে , দেউলে নেই সোনার চূড়া সব - পেয়েছি ' র দেশে । পথের ধারে ঘাস উঠেছে গাছের ছায়াতলে , স্বচ্ছতরল স্রোতের ধারা পাশ দিয়ে তার চলে । কুটিরেতে বেড়ার'পরে দোলে ঝুমকা - লতা , সকাল হতে মৌমাছিদের ব্যস্ত ব্যাকুলতা । ভোরের বেলা পথিকেরা কী কাজে যায় হেসে , সাঁজে ফেরে বিনা - বেতন সব - পেয়েছি ' র দেশে । আঙিনাতে দুপুরবেলা মৃদুকরুণ গেয়ে বকুলতলার ছায়ায় বসে চরকা কাটে মেয়ে । মাঠে মাঠে ঢেউ দিয়েছে নতুন কচি ধানে— কিসের গন্ধ , কাহার বাঁশি হঠাৎ আসে প্রাণে । নীল আকাশের হৃদয়খানি সবুজ বনে মেশে , যে চলে সেই গান গেয়ে যায় সব - পেয়েছি ' র দেশে । সদাগরের নৌকা যত চলে নদীর'পরে— হেথায় ঘাটে বাঁধে না কেউ কেনাবেচার তরে । সৈন্যদলে উড়িয়ে ধ্বজা কাঁপিয়ে চলে পথ— হেথায় কভু নহি থামে মহারাজের রথ । এক রজনীর তরে হেথা দূরের পান্থ এসে দেখতে না পায় কী আছে এই সব - পেয়েছি ' র দেশে । নাইকো পথে ঠেলাঠেলি , নাইকো হাটে গোল— ওরে কবি , এইখানে তোর কুটিরখানি তোল্ । ধুয়ে ফেল্ রে পথের ধুলো নামিয়ে দে রে বোঝা— বেঁধে নে তোর সেতারখানা , রেখে দে তোর খোঁজা । পা ছড়িয়ে বোস্ রে হেথায় সারা দিনের শেষে তারায় - ভরা আকাশ - তলে সব - পেয়েছি ' র দেশে ।