সংকটার কথা
এক রাজা ছিলেন—তাঁর সাত রানি। তাঁদের ছেলেপুলে কিছুই হয়নি, সেই জন্যে তাঁরা বড়ো মনের দুঃখে থাকেন। একদিন রাজা সকালে উঠে দেখেন যে, উঠানে ঝাঁটপাট কিছুই পড়েনি, সেইজন্যে তিনি রেগে কোটালকে হুকুম দিলেন—‘ঝাড়ুদারকে ধরে নিয়ে এসো।’ কোটাল ঝাড়ুদারের বাড়ি গিয়ে দেখলেন যে, ঝাড়ুদার খেতে বসেছে। কোটাল বললেন, ‘তুই রাজবাড়ির কাজ ফেলে রেখে খেতে বসেছিস যে?’ ঝাড়ুদার উত্তর করলে, ‘হুজুর, যদি রাগ না করেন, বা আমায় কিছু না বলেন, তাহলে বলি।’ কোটাল বললেন, ‘কোনো ভয় নেই, ঠিক কথা বল।’ তখন ঝাড়ুদার বললে, ‘হুজুর, সকালে ওই আঁটকুড়ো রাজার মুখ দেখলে আমার সমস্ত দিন খাওয়া হয় না। তাই এত সকালে চাট্টি খেয়ে নিচ্চি, এইবার কাজে যাব।’ ঝাড়ুদারের কথা শুনে কোটাল অবাক হয়ে চলে গেলেন। কোটাল রাজাকে ঝাড়ুদারের কথা বলতে তাঁর মনে বড়ো ধিক্কার হল। তিনি দুঃখে বললেন যে, ‘এ মুখ আর কাউকে দেখাব না।’ এই বলে তিনি ঘরে গিয়ে শুয়ে রইলেন।
এমন সময় এক সন্ন্যাসী এসে রাজাকে ডাকলেন। রাজা এসে সন্ন্যাসীকে প্রণাম করে রাজসভায় নিয়ে গেলেন। সেখানে যেতে সন্ন্যাসী বললেন, ‘মহারাজ! আপনার এত চিন্তা কেন? আমি সব জানি। এই একটি ওষুধ দিচ্ছি, এইটি শিলে বেটে রানিদের খেতে বলবেন, তাহলে আপনার ছেলে হবে। কিন্তু আমার কাছে একটি প্রতিজ্ঞা করতে হবে, আপনার সাত রানির সাতটি ছেলে হবে, তার মধ্যে যে ছেলেটি সুন্দর হবে সেটিকে আমায় দিতে হবে।’ রাজা সম্মত হলেন, মনে ভাবলেন, সাতটির একটি দিব, তার আর বাধা কী! সন্ন্যাসী বিদেয় হলেন, রাজা রানিদের সেই ওষুধ শিলেবেটে খেতে বললেন। ছোটো রানিকে রাজা বেশি ভালোবাসেন বলে ছয়রানি ছোটো রানিকে ওষুধ না-দিয়ে তাঁরা সকলে মিলে ওষুধ খেলেন। যখন ছোটো রানি এসে ওষুধ চাইলেন, তখন সতীনরা বললেন, ‘আমাদের মনে ছিল না, আমরা ভুলে সব খেয়ে ফেলেছি। ওই শিলে ওষুধ বাটা হয়েছিল, শিল নোড়াটা ধুয়ে খাওগে।’ ছোটো রানি ভালো মানুষ, তিনি তাই করলেন। ক্রমে তাঁদের গর্ভ হল, দশ মাস দশ দিনে ছয় রানির ছয়টি ছেলে হল, কিন্তু কারুর নিখুঁত ছেলে হল না। কারুর কানা, কারুর খোঁড়া, কারুর কুঁজো, এই রকম সব ছেলে হল। ছোটো রানি একটি শাঁখ প্রসব করলেন। রাজা ছেলেদের দেখে বললেন, ‘এগুলোর যা হোক মানুষের মতো চেহারা হয়েছে। কিন্তু ছোটো রানির এটা কী হল! রাজা এই না দেখে ছোটো রানির কাছে আর গেলেন না, তাঁকে এক রকম ত্যাগ করলেন। ছোটো রানি মনের দুঃখে শাঁখটি নিয়ে একটি কুঁড়েঘরে গিয়ে বাস করতে লাগলেন।
এই রকমে কিছুদিন যায়, ছোটো রানির শাঁখটি ক্রমেই বড়ো হতে লাগল। রাত্তিরে ঘুমের ঘোরে তিনি টের পেতেন, যেন কেউ তাঁর বুকের দুধ চুষে চুষে খাচ্ছে, ঘুম ভাঙলে তিনি কিছুই দেখতে পেতেন না। একদিন রাত্রে ছোটো রানি ঘুমের ভান করে শুয়ে আছেন, এমন সময় দেখতে পেলেন যে শাঁখের ভিতর থেকে একটি ছেলে বেরিয়ে খেলা করছে। যেই দেখা, আর অমনি ধরে তিনি আহ্লাদে ছেলেটিকে কোলে করে চুমু খেতে খেতে বললেন, ‘বাবা আমার, আমি তোমায় আর ছাড়বো না।’ এই বলে তিনি শাঁখটি ভেঙে ফেলে দিলেন, যাতে ছেলেটি আর শাঁখের ভিতর না-যেতে পারে। ছেলেটি বললে, ‘মা, তুমি কী করলে, সন্ন্যাসী জানতে পারলে, আমায় নিয়ে যাবে।’ ছেলেটির মুখে মধুমাখা কথা শুনে ছোটো রানি আহ্লাদে আটখানা হলেন। মনে মনে ভাবলেন—‘সকাল হোক, আগে রাজাকে ছেলে দেখাব, তারপর যা হয় হবে।’ সকাল হতে মা মঙ্গলচন্ডীর নাম করে ছোটো রানি ছেলেটিকে নিয়ে রাজার কাছে গেলেন। রাজা ছেলেটিকে দেখে আহ্লাদে আটখানা হলেন। তিনি হেসে হেসে বললেন, ‘এই ছেলেটি তুমি কোথায় পেলে?’ রানি রাত্তিরের সব ঘটনা বললেন, রাজা শুনে আহ্লাদে রানির হাত ধরে বললেন, ‘তোমায় কত কষ্ট দিয়েছি কিছু মনে করো না, আমায় মাপ করো। তোমা হতে আজ এমন সোনার চাঁদ ছেলে পেলুম। সন্ন্যাসী এলে এ ছেলেটি দোবো না।’ ছেলেকে নিয়ে রাজা-রানি মনের সুখে ঘর করতে লাগলেন।
বারো বৎসর পরে সেই সন্ন্যাসী এসে উপস্থিত। সন্ন্যাসীকে দেখে রাজার প্রাণ উড়ে গেল, মুখে আর কোনো কথা নেই। সন্ন্যাসী বললেন, ‘মহারাজ! কৈ, আপনার ছেলেদের নিয়ে আসুন। আপনার প্রতিজ্ঞার কথা মনে আছে তো?’ রাজা বললেন, ‘আছে বৈ কি ঠাকুর, কিন্তু ছয় রানির ছয়টি ছেলে হয়েছে, আর এক রানি একটি শাঁখ প্রসব করেছে।’ সন্ন্যাসী বললেন, ‘কৈ, তাদের নিয়ে আসুন।’ রাজা ছয় রানির ছয়টি ছেলে দাঁড় করিয়ে বললেন, আপনার যেটি পছন্দ হয় নিয়ে যান। সন্ন্যাসী দেখে বললেন, ‘কানা, খোঁড়া, এসব কি ছেলে হয়েছে! কৈ, আমার শঙ্খনাথ বুটেশ্বর কৈ?’ —এই বলে তিনি একটি শাঁখে খুব জোরে ফুঁ দিলেন। তারপর শঙ্খনাথ বুটেশ্বর বলে ডাকতেই ছোটো রানির ছেলে এসে হাজির। সন্ন্যাসী রাজাকে বললেন, ‘একে লুকিয়ে রেখে যত কানা, খোঁড়া আমায় দেখাচ্ছিলেন। যাহোক আমি একেই খুঁজছিলাম, এখন আসি।’ এই বলে, সন্ন্যাসী ছোটো রানির ছেলেকে নিয়ে চলে গেলেন। রাজা ভয়ে কিছু-না বলতে পেরে চুপ করে বসে বসে চক্ষের জল ফেলতে লাগলেন। ছোটো রানি ছেলের জন্যে ডাকছেড়ে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর কান্নাতে পাড়ার মেয়েরা এসে জড় হল। সব কথা শুনে একজন বুড়ি বললে, ‘মা! তুমি সংকটার ব্রত করো। মার বরে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবে।’ এই কথা শুনে রানি যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন। তিনি মনের আবেগে আগ্রহের সঙ্গে বললেন, ‘মা! কী করে এ সংকট হতে উদ্ধার হবো? সংকটার নিয়মই বা কী? বুড়ি সংকটার সব নিয়ম বলে দিলেন। তিনি শুক্রবারে সমস্ত দিন উপবাস করে একমনে সংকটার ধ্যানে তন্ময় হয়ে ব্রত করে রইলেন। কোনো আর জ্ঞান-সংজ্ঞা নেই, ঐকান্তিক মনে আকুল হয়ে মার চরণ ধরে পড়ে রইলেন।
এদিকে সন্ন্যাসী কিছুদূরে এসে শঙ্খনাথকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি সোজা রাস্তা দিয়ে যাবে, না-বাঁকা রাস্তা দিয়ে যাবে? বাঁকা পথে বন জঙ্গল, সেখানে বাঘ ভাল্লুকের ভয় আছে, কিন্তু সে পথ দিয়ে গেলে শীগগির যাওয়া যায়। আর সোজা পথে কোনো ভয় নেই, কিন্তু যেতে অনেক দেরি হবে।’ এই কথা শুনে শঙ্খনাথ বললে, ‘আমি রাজার ছেলে, আমার কাকেও ভয় নেই, আমি বাঁকা পথেই যাব।’ এই কথা শুনে সন্ন্যাসী ভারি খুশি, মনে মনে ভাবলেন, এই ছেলেটি মায়ের পূজার ঠিক উপযুক্ত পাত্র। এই রকম করে সন্ন্যাসী অনেক দূরে গিয়ে এক বিজন বনে ঢুকলেন।
সেখানে গিয়ে শঙ্খনাথ দেখলে, একটি মন্দিরে মা কালী রয়েছেন। শঙ্খনাথ মাকে ভক্তিভরে প্রণাম করলে। তারপর সন্ন্যাসীর সঙ্গে একটি কুঁড়েঘরে গেল। এই ঘরটিতে সন্ন্যাসী থাকেন। সন্ন্যাসী শঙ্খনাথকে বললেন, ‘বাবা, তুমি কাপড় ছেড়ে আমার সঙ্গে স্নান করবে এসো।’ এই বলে দুইজনে স্নান করে এলেন। স্নানের পর সন্ন্যাসী বললেন, ‘দেখো শঙ্খনাথ! তুমি এই ঘরে কিছুক্ষণ থাকো, আমি মায়ের পূজা সেরে আসি। আর দেখো, তুমি ওই দক্ষিণ দিকের দরজাটা যেন খুলো না।’ এই বলে তিনি মায়ের পূজা করতে চলে গেলেন। শঙ্খনাথের মনে কীরকম একটা খটকা হল। মনে মনে ভাবলে, ‘তাইতো, সন্ন্যাসী দক্ষিণ দিকের দরজা খুলতে কেন বারণ করলেন! এর মানে কী? নিশ্চয়ই একটা কারণ আছে, দেখতে হবে।’ এই ঠিক করে শঙ্খনাথ চুপি চুপি সেই দরজাটা খুললে। তারপর যা দেখলে, তাতে তার প্রাণ উড়ে গেল। একটা পুকুরের রক্তের মতো লাল জলে, অনেক কাটামুন্ডু পদ্মের মতো ভাসছে। তাকে দেখে মুন্ডুগুলি খিলখিল করে হাসতে লাগল। শঙ্খনাথ দেখে আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ‘তোমরা সব কারা, এই জলে মুখ বার করে আমায় দেখে হাসছ কেন?’ কাটামুন্ডুগুলি বললে, ‘আমরাও রাজপুত্র ছিলুম, ওই সন্ন্যাসী বেটা আমাদের সকলকে মার কাছে বলি দিয়েছে, আজ তোমারও সেই দশা হবে।’ এইকথা শুনে শঙ্খনাথের ভাবনা হল, বললে, ‘এখন উপায়?’ কাটামুন্ডুগুলি বললে, ‘যদি আমাদের বাঁচাও, তাহলে বলি।’ শঙ্খনাথ বললে, ‘তোমরা আজ আমাকে বাঁচালে, আমার দ্বারা তোমাদের অনেক উপকার হবে, যা বলবে তাই করবো, আমাকে বাঁচাও।’ তখন তারা বললে, ‘দেখো, যখন সন্ন্যাসী তোমায় ঠাকুরের কাছে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে বলবে, তখন তুমি বলবে যে আমি রাজার ছেলে, কেমন করে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে হয় জানি না। আগে আমায় দেখিয়ে দিন, তারপর আমি সেই রকম করে প্রণাম করব। যখন সন্ন্যাসী তোমায় সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে দেখাবে, সেই সময় তুমি খাঁড়া দিয়ে সন্ন্যাসীকে কেটে ফেলবে। নচেৎ আর তোমার বাঁচবার উপায় নেই। তারপর সন্ন্যাসী মরে গেলে, সেই কাটারক্ত আর পূজার ফুল আমাদের গায়ে ছড়িয়ে দেবে, তাহলেই আমরা বেঁচে উঠব। দেখো খুব সাবধান, যেন ভুলো না।’ শঙ্খনাথ এই সমস্ত শুনে বললে, ‘তোমরা নিশ্চিন্ত থাকো, আমি ঠিক কাজ হাসিল করব।’ এই বলে সেই দরজা বন্ধ করে, শঙ্খনাথ চুপ করে ঘরে বসে বসে মা মঙ্গলচন্ডীর নাম স্মরণ করতে লাগল।
এদিকে সন্ন্যাসীর আর আহ্লাদের সীমা নেই। ১০৭টা বলি শেষ হয়েছে, এটা হলেই তার মনস্কামনা পূর্ণ হবে। সন্ন্যাসী তাড়াতাড়ি করে কোনোরকমে মার পূজা শেষ করলেন। সমস্ত পূজা হয়ে উঠল না, মা কালী বিরূপ হলেন। খানিক পরে সন্ন্যাসী রাজপুত্রকে নিয়ে মন্দিরের ভিতরে এলেন। রাজপুত্র মনে মনে ভক্তিভরে মাকে প্রণাম করলে। সন্ন্যাসী বললেন, ‘শঙ্খনাথ! বেলা হয়েছে, তুমি মাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে কিছু প্রসাদ খাও।’ শঙ্খনাথ বললে, ‘ঠাকুর, কী রকম করে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে হয়, তা-তো জানি না, আপনি দেখিয়ে দিন।’ তখন সন্ন্যাসী বললে, ‘এই দেখো, এমনি করে মাকে প্রণাম করতে হয়।’ এই কথা বলে যেমনি সন্ন্যাসী সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করছেন, অমনি শঙ্খনাথ খাঁড়া দিয়ে এককোপে সন্ন্যাসীকে কেটে ফেললে। তারপর মা কালীকে প্রণাম করে তাঁর চরণামৃত, ফুল ও সেই রক্ত নিয়ে পুকুরে কাটামুন্ডুগুলির উপর ছড়িয়ে দিলে। তখন সব কাটামুন্ডু বেঁচে উঠে শঙ্খনাথকে ধন্যবাদ দিতে লাগল। শঙ্খনাথের নাম ও যশ দেশ-বিদেশে রাষ্ট্র হল। সন্ন্যাসী নিপাত হয়েছে শুনে সেই দেশের রাজা তখনি এসে আহ্লাদ করে মহাধূমধামের সঙ্গে শঙ্খনাথকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন। তারপর শঙ্খনাথের পরিচয় পেয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। রাজা হাতি, ঘোড়া, জিনিসপত্র সঙ্গে দিয়ে বর-কনে পাঠালেন। শঙ্খনাথ বাজনা বাদ্দি করে মহাধূমধামের সঙ্গে বউ নিয়ে বাড়িতে যেতে লাগল। কাটামুন্ডু রাজপুত্ররাও বর কনের সঙ্গে রাজবাড়িতে চললেন।
রাজা খবর পেয়ে আহ্লাদে এসে দেখেন যে, সত্যি তাঁর শঙ্খনাথ বিয়ে করে বউ নিয়ে আসছে। তখন রানিদের কাছে খবর গেল। সেদিন শুক্রবার, ছোটো রানি তখন পূজা শেষ করে মাকে প্রণাম করছিলেন, এমন সময় খবর এল—‘ওগো রানিমা, তোমার ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে এসেছে।’ এই কথা শুনে শঙ্খনাথের মা আহ্লাদে কেঁদে ফেললেন। তখন সাত রানি সকলে মিলে আহ্লাদে বর-কনে বরণ করতে এলেন। চাঁদের মতো বউ দেখে সকলে খুশি হলেন। বরণ হলে বর-কনে ঘরে গেল। রাজা রাজপুত্রদের মুখে সন্ন্যাসীর সব কথা শুনে বললেন, ‘বাবা, তোমরাই আমার ছেলেকে বাঁচিয়েছ।’ এমন সময় সেই বুড়ি এসে উপস্থিত। রাজা বুড়িকে দেখেই বললে, ‘তুমি ভাগগিস সংকটার পূজা করতে বলে গিয়েছিলে, তাই আজ হারানো রতন পেলুম। তোমার কৃপায় বউ-বেটা পেলুম, আজ কী আনন্দ!’ তখন সকলে মিলে সংকটার স্তব-স্তুতি করে মহা ঘটা করে সংকটার পূজা করলেন। বুড়ি বললে, ‘দেখলে তো বাবা! সংকটার কী মহিমা! তাঁর কৃপায় তোমার ঘরের ছেলে, বউ নিয়ে নির্বিঘ্নে ফিরে এল। বুড়ি ছোটো রানিকে বললে, ‘সংকটার অর্ঘ্য বউ-বেটার মাথায় ছুঁইয়ে দাও।’ তিনি তাই করলেন। রাজা তখন হুকুম দিলেন, যেন আমার সকল প্রজা এই সংকটার পূজা করে। রাজপুত্তুরদেরও বললেন, ‘তোমরা দেখলে তো মার কী রকম মহিমা! তাঁর কৃপায় তোমরাও উদ্ধার পেলে, নিজেদের রাজ্যে গিয়ে মা সংকটার পূজা প্রচার করবে।’ রাজা তাঁদের আদর যত্ন করে নিজেদের রাজ্যে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা দেশে গিয়ে সংকটার পূজা প্রচার করলেন। এই রকমে চতুর্দিকে মার মাহাত্ম্য রাষ্ট্র হল। সেই থেকে সংকটার পূজা প্রচার হল।
সংকটার কথা সমাপ্ত