।। শুক্ল বংশ চরিত্র।।
শুক্লবংশ প্রবক্ষ্যামি শৃণু বিপ্রবরাদিতঃ। যদা কৃষ্ণঃ স্বয়ং ব্রহ্ম ত্যক্ত্বা ভূতলে স্বকং পদম্।।১।। দিব্যং বৃন্দাবনং রম্যং প্রযযৌ ভূতলে তদা কলেরাগমনং জ্ঞাত্বা ম্লেচ্ছপা দ্বীপমধ্যগে।।২।। স্থিতা দ্বীপেষু বৈ নানা মনুষা বেদতৎপরাঃ। কলিনামিত্রধমেন দূষিতাস্তে বভূবিরে।।৩।। অষ্টষষ্টিসহস্রাণাং বর্ষাণাং মুনিসত্তম। অদ্য প্রভৃতি বৈ জাতঃ কালঃ কলিসমাগমে।।৪।। ষষ্টিবর্ষসহস্রাণি দ্বীপরাজ্যমচীকরৎ। স কলিল্লৈচ্ছয়া সার্ধং সূর্য পূজনতৎপরঃ।।৫।।
।। শুক্লবংশ চরিত্র।।
এই অধ্যায়ে শুক্ল নামক অগ্নিবংশে জাত ভূপলিকের চরিত্র বর্ণনা করা হয়েছে।
শ্ৰী সূতজী বললেন –হে বিপ্রবর, এখন শুক্লবংশ বর্ণন করছি, তা তুমি প্রথম থেকে শ্রবণ কর। যে সময় ভগবান স্বয়ং ব্রহ্মা নিজ ভূমি পদ ত্যাগ করে সেই সময় দিব্য এবং রম্য বৃন্দাবনে চলে গেলেন। তিনি দ্বীপ মধ্যে ম্লেচ্ছ এবং কলির আগমন জেনেছিলেন।। ১-২।।
দ্বীপের অনেক মনুষ্য বেদ তৎপর ছিলেন তারা ধর্ম শত্রু কলির দ্বারা দূষিত হয়েছিলেন।। ৩।।
হে মুনিসত্তম, আজ থেকে ৩৬৮ হাজার বর্ষের সময় কলির সমাগম হয়েছিল। সেই কলি ম্লেচ্ছ গণের সাথে সূর্য পূজন তৎপর হয়ে ৬০ হাজার বর্ষ পর্যন্ত দ্বীপরাজ্য করেছিলেন। তৎপশ্চাতে ভারতকে লোক পালের দ্বারা পালিত হতে দেখে ম্লেচ্ছগনের সাথে সেই কলি ভারতে এসেছিলেন। শীঘ্র অভীষ্ট এবং ভয়াতুর গন্ধর্বগণের যশকারী সেই কলি সূর্যদেবের সমারাধনা করে সমাধিস্থিত হয়ে গেলেন।। ৪-৭।।
তৎপশ্চাৎ ভারতে বর্ষে ম্লেচ্ছয়া কলিরাযযৌ। দৃষ্ট্বা তদ্ভারতং বর্ষং লোকপালৈশ্চ পালিতম্।।৬।। ভয়ভীতত্ত্বরাবিষ্টো গন্ধবাণাং যশস্করঃ। স কলিঃ সূর্যমারাধ্য সমাধিস্থো বভূব হ।।৭।। ততো বর্ষশতাব্দান্তে সন্তুষ্টো রবিরাগতঃ। সোংশুভিলোকমাতপ্য মসাবৃষ্টিমকারয়ৎ।।৮।। চতুর্বর্ষসহস্রাণি চতুর্বর্ষশতানি চ। ব্যতীতানি মুনিশ্রেষ্ঠ চাদ্য প্ৰভৃতি সংলপে।।৯।। সম্পন্নং ভারতং বর্ষং তদা জাতং সমস্ততঃ। ন্যুহাস্তো যবনো নাম তেন বৈ পূরিতং জগৎ।।১০।। সহস্রাব্দকলৌ প্রাপ্তে মহেন্দ্রো দেবরাট্ স্বয়ম্। কাশ্যপং প্রেষয়ামাস ব্রহ্মবর্তে মহোত্তমে।। ১১।। আর্যাবতী দেবশক্তিস্তৎকরং চা গ্রহীম্মুদা। দশপুত্রান্সমুৎপাদ্য স দ্বিজো মিশ্রমাগমৎ।। ১২।।
অতঃপর একশ বর্ষের শেষে রবি সন্তুষ্ট হয়ে নিজ কিরণের দ্বারা লোককে আতপ্ত করে পুনরায় বৃষ্টি দান করেছিলেন।। ৮।।
হে মুনি শ্রেষ্ঠ, আজ থেকে চার হাজার চারশত বর্ষ ব্যতীত হলে সকলদিক থেকে ভারত বর্ষ পূণরূপে সম্পন্ন হল। ব্যুহনামে এক যবন ছিল তিনি এই সম্পূর্ণ জগৎ পূরিত করেছিলেন।। ৯-১০।।
এক সহস্র বর্ষ কলি প্রাপ্ত হলে দেবেন্দ্র স্বয়ং মহোত্তম ব্রহ্মাবর্তে কাশ্যবাকে প্রেরণ করলেন।। ১১।।
আর্যাবতী দেবশক্তি প্রসন্নতা পূর্বক তার কর গ্রহণ করেছিলেন। তার দশপুত্র জন্ম লাভ করেছিল এবং পুনরায় তিনি মিশতে চলেগিয়েলেন।। ১২।।
মিশ্রদেশোদ্ভবাম্লেচ্ছান্বশীকৃত্যাযুতং মুদা স্বদেশং পুনরাগত্য শিষ্যাংস্তান্সচকার স।।১৩।। নষ্টায়াং সপ্তপূর্যাং চ ব্রহ্মাবর্তং মহোত্তমম্। সরস্বতীদৃষদ্বত্যোমধ্যগং তত্ৰ চাবসৎ।। ১৪।। স্বপুত্রং শুক্লমাহুয় দ্বিজশ্রেষ্ঠং তপোধনম্। আজ্ঞাপ্য রৈবতং শৃঙ্গং তপসে তু পুনঃ স্বয়ম্।।১৫।। নবপুত্রস্তথা শিষ্যান্মনুধর্মং সনাতনম্। শ্রাবয়ামাস ধর্মাত্মা স রাজা মনুধর্মগঃ।।১৬।। শুক্লোপি রৈবতং প্রাপ্য সচ্চিদানন্দবিগ্রহম্। বাসুদেবং জগন্নাথং তপসা সমতোষয়ৎ।।১৭।। তদা প্রসন্নোভগবান্দরকানায়কো বলী। করে গৃহীত্বা তং বিপ্রং সমুদ্ৰান্তমুপাযযৌ।।১৮।। দ্বারকাং দর্শয়ামাস দিব্যশোভাসমন্বিতাম্। ব্যতীতে দ্বিজসহস্রাব্দে কিঞ্চিজ্জাতে ভৃগুত্তম।।১৯।।
সেই সময় দেশের দশসহস্র ম্লেচ্ছকে তিনি নিজ বশে নিয়ে এসেছিলেন। এরপর তিনি তাদের নিজ দেশে নিয়ে এসে তাদের নিজ শিষ্য করেছিলেন। সপ্তপুরী নষ্ট হরে মহোত্তম সরস্বতী এবং দমন্তীর মধ্যে স্থি ব্রহ্মাবর্তে বাস করতেন। তপোধন দ্বিজ শ্রেষ্ঠ নিজ পুত্র শুক্লকে তিনি ডেকে রৈবত শৃঙ্গকে আজ্ঞা দিলেন, এবং পুনরায় স্বয়ং তপ করতে চলে গেলেন।। ১৩-১৫।।
সেখানে রৈবত পর্বতে পৌঁছে তিনি সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ রূপ জগৎ স্বামী বাসুদেবকে নিজ তপ দ্বারা পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট করলেন। সেই সময় বলবান্ দ্বারকাপতি ভগবান্ পরমপ্রসন্ন হয়ে সেই ব্রাহ্মনের হাত ধরে সমুদ্ৰান্তে আগত হলেন। হে ভূগুত্তম সেখানে তিনি দিব্যশোভা সমন্বিত দ্বারকাকে দেখালেন। বত্রিশ হাজার বর্ষ ব্যতীত হলে সেই শুক্ল অগ্নিদ্বার থেকে অর্বুদ পর্বতে চলে গেলেন। সেখানে নিজ তিন অন্য দ্বিজ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বৌদ্ধদের জয় করেছিলেন।। ১৭-২০।
অগ্নিদ্বারেণ প্রযযৌ স শুক্লোহ বুদপর্বতে। জিত্বা বৌদ্বান্দ্বিজৈঃ সার্ধং ত্রিভিন্যৈশ্চ বন্ধুভিঃ।।২০।। দ্বারকাং কারয়ামাস হরেশ্চ কৃপয়া হি সঃ। তদ্রোষ্য মুদিতো রাজা কৃষ্ণধ্যানপরো ভবৎ।।২১।। পশ্চিমে ভারতে বর্ষে দশাব্দং কৃতবান্মদম্। নারায়ণস্য কৃপয়া বিম্বক্সেনঃ সুতোহ ভবৎ।।২২।। বিংশদব্দং কৃতং রাজ্যং জয়সেনস্ততোহ ভবৎ। ত্রিংশদব্দং কৃতং রাজ্যং বিসেনস্তস্য চাত্মজঃ।।২৩।। শতার্থাব্দং কৃতং রাজ্যং মিথুনং তস্য চ ভবৎ। প্রমেদো মোদসিংহশ্চ বিক্রমায় নিজাং সুতাম্।।২৪।। বিসেনশ্চ দদৌ প্রীত্যা রাষ্ট্রং পুত্রায় চোত্তমম্। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং সিন্ধুবর্মা সুতোহ ভবৎ।।২৫। সিন্ধুকুলে কৃতং রাজ্যং ত্যক্ত্বা তৎপৈতৃকং পদম্। সিন্ধুদেশস্ততো নাম্না প্রসিদ্ধোভূন্মহীতলে।।২৬।।
তিনি হরি কৃপাতে দ্বারকা বিজয় করে প্রসন্নতা পূর্বক সেখানে বাস করে কৃষ্ণের ধ্যানে মগ্ন হলেন।। ২১।
পশ্চিমবারতবর্ষে দশবর্ষ পর্যন্ত রাজত্ব করে পুনরায় নারায়ন কৃপাতে বিষ্কসেন নামক পুত্র লাভ করলেন।। তিনি সেখানে ২০ বৎসর রাজশাসন করলেন। তার পুত্র জয়সেন ত্রিশ বৎসর রাজ্য শাসন করেন। তার পুত্র বিসেন ৫০ বছর রাজ্য পালন করেন। তার যমজ পুত্র জাত হয়। তাদের নাম প্রমোদ এবং মোদসিংহ। বিসেন নিজ কন্যাকে রাজা বিক্রমের সঙ্গে বিবাহ দিয়েছিলেন এবং প্রীতি পূর্বক উত্তম রাষ্ট্র পুত্রকে দিয়েছিলেন। তিনি পিতৃতুল্য রাজ্য শাসন করেন। তার পুত্র সিন্ধু বর্মা পৈতৃক পদ ত্যাগ করে সিন্ধু তটে নিজরাজ্য প্রস্তুত করেন। তখন থেকে এই দেশ সিন্ধু নামে পরিচিত।। ২২-২৬।।
পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং রাজা বৈ সিন্ধুবর্মনা। সিন্ধুদ্বীপস্তস্য সুতঃ পিতুস্তল্যং কৃতং পদম্।।২৭।। শ্রীপতিস্তস্য তনয়ো গৌতমান্বয়সংভবাম্। কাচ্ছপীং মহিষীং প্রাপ্য কচ্ছদেশমুপাযযৌ।।২৮।। পুলিন্দান্যবনাঞ্জিত্বা তত্র দেশমকারয়ৎ। দেশো বৈ শ্রীপতিনাম্না সিন্ধুকূলে বভূব হ।।২৯।। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং ভূজবর্মা ততোহ ভবৎ। জিত্বা স শবরাম্ভিল্লাংস্তত্র রাষ্ট্রমকারয়ৎ।।৩০॥
রাজা সিন্ধু বর্মা পিতৃতুল্য রাজ্য পালন করেন। তার পুত্র সিন্ধুদ্বীপও পিতার ন্যায় রাজ্য ভোগ করেন। তার পুত্র শ্রীপতি গৌতম বংশীয় কাচ্ছপী রানীকে প্রাপ্ত হয়ে পুনরায় কচ্ছপ দেশে এসেছিলেন।। ২৭-২৮।।
সেখানে পুলিঙ্গ এবং যবনদের জয় করে নিজ দেশ তৈরী করেন। এই কারণে সেই দেশ সিন্ধুতটে শ্রীপতির নামেই পরিচিত। এই শ্ৰীপতি পিতৃতুল্য রাজ্য পালন করেন। তার পুত্র ভুজবর্মা সেখানে শবর এবং ভীলগণকে জয় করে নিজ রাষ্ট্র নির্মাণ করেন। তখন থেকে ঐ মহীতল ভূজ নামে পরিচিতঅ। তিনিও পিতার ন্যায় রাজ্য শাসন করেন। তার পুত্র রণবর্মা পিতৃতুল্য রাজ্য পালন করেন এবং পুত্র চিত্রবর্মা গভীর বনমধ্যে চিত্র নগরী নির্মাণ করেন। তিনিও পিতার মতো রাজ্য ভোগ করেন। তার পুত্র ধর্মবর্মা ও তার বংশধর কৃষ্ণাবর্মা পিতার ন্যায় রাজ্যা ভোগ করেন। পুনরায় তার পুত্র উদয় গভীর বনমদ্যে উদয়পুর নির্মাণ করেন। তিনিও পিতৃতুল্য রাজ্য পালন করেন। তার পুত্র বাপ্য বর্মা অনেক প্রকার চাপী, কৃষা, তড়াগ বিভিন্ন প্রকার হর্ম্য নির্মাণ করেন!। ২৯-৩০।।
ভূজদেশস্ততৌ জাতঃ প্রসিদ্ধোহ ভূন্মহীতলে। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং রণবর্মা সুতোহ ভবৎ।।৩১।। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং চিত্রবর্মা সুতোহ ভবৎ। কৃত্বা স চিত্রনগরীং বনমধ্যে নৃপোত্তমঃ।।৩২।। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং ধর্মবর্মা সুতোহ ভবৎ। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং রাজ্যমুদয়স্ততোহ ভবৎ।।৩৩। পিতৃস্তল্যং কৃতং রাজ্যমুদয়ম্মুতোহ ভবৎ। কৃত্বোদয়পুরং রম্যং বনমধ্যে নৃপোত্তমঃ।।৩৪। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং বাপ্যকর্মা সুতোহ ভবৎ। বাপীকূপতড়াগানি নানাহৰ্মানি তেন বৈ।।৩৫।। ধর্মার্থে কারয়ামাস ধর্মাত্মা স চ বৈ পুরম্। এতস্মিন্নন্তরে প্রাপ্তো বলদো নাম ভূপতিঃ।।৩৬।। লক্ষসৈন্যযুতো বীরো মহামদমতে স্থিতঃ। তেন সাধম ভূদ্যুদ্ধং রাজ্ঞো বৈ বাপ্যকর্মণঃ।।৩৭।। জিত্বা পৈশাচকানস্লেচ্ছামকৃষ্ণোৎসবমকারয়ৎ। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং গুহিলস্তৎসুতোহ ভবৎ।।৩৮। পিতুস্তল্যং কৃতং রাজ্যং কালভোজঃ সুতোহ ভবৎ। পিতুস্তল্যং কৃতৎ রাজ্যং রাষ্ট্রপালস্ততোহ ভবৎ।।৩৯। স ত্যক্ত্বা পৈতৃকং স্থানং বৈষ্ণবীং শক্তিমাগম। তপসারধয়ামাস শারদাং সর্বমঙ্গলাম্।।৪০।।
এই সকল নির্মাণ তিনি ধর্মার্থে করেন, কারণ সেই পুরীতে অনেক ধর্মাত্মা বাস করতেন। ইতিমধ্যে সেই মহান নৃপতি বলদ প্রাপ্ত হন। সেই বীর একলক্ষ সেনা নিয়ে এসেছিলেন এবং তিনি মুসলমান ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তার সাথে বাপ্য বর্মার প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। তিনি সেই পৈশাচিক ম্লেচ্ছকে জয় করে পিতৃতুল্য রাজ্য শাসন করেন এবং কৃষ্ণোৎসব করেন। তার পুত্র পৌত্রাদিগণ হলেন গুহিল কালভোজ। তাঁরাও পিতার ন্যায় রাজ্য শাসন করেন। কালভোজ পুত্র রাষ্ট্রপাল পিতৃস্থান ত্যাগ করে বৈষ্ণবী শক্তি স্থানে চলে গেলেন। তৎপর দ্বারা তিনি সর্ব মঙ্গলা শারদা দেবীর আরাধনা করেন।। শারদা দেবী প্রসন্ন হয়ে পুরী রচনা করেন। সেই পুরীতে মহারম্য মহাবতী নাম্নী মনিদেব রক্ষিত নগরী ছিল। সেখানে ধীমান নৃপ নিবাস করে দশবৎসর রাজত্ব করেন। তার দুই পুত্র বিজয় এবং প্রজয়।। ৩০- ৪২।।
প্রসন্না সা তদা দেবী কারয়ামাস বৈ পুরীম্। মহাবতীং মহারম্যাং মনিদেবেন রক্ষিতাম্।।৪১।। তত্রোষ্য নৃপতিধীমান্দশাব্দং রাজ্যমাপ্তবান্। তস্যোভৌ তনয়ৌ জাতৌ বিজয়ঃ প্রজয়স্তথা।। ৪২।। প্রজয়ঃ পিতরৌ ত্যক্ত্বা গঙ্গাকুলমুপাযযৌ। দ্বাদশাব্দং চ তপসা পূজয়ামাস শারদাম্।।৪৩।। কন্যামূর্তিময়ী দেবী বেনুবাদনতৎপরা। হয়মারুহ্য সম্প্রাপ্তা বিহস্যাহ মহীপতিম্।।৪৪।। কিন্নিমিত্তং ভূপসুত ত্বয়া চরাধিতা শিবা। তৎফলং ত্বং হি তপসা মত্তঃ শীঘ্রমবাস্প্যসি।। ৪৫।। ইতি শ্রুত্বা স হোবাচ কুমারি মধুরস্বরে। নবীনং নগরং মহ্যং কুরু দেবি নমোহুস্তু তে।।৪৬।। ইতি শ্রুত্বা তু সা দেবী দদৌ তস্মৈ হয়ং শুভম্। পুরো ভূত্বা বাদ্যকরী দক্ষিণাং দিশমাগতা।।৪৭।
প্রজয় নিজ মাতা -পিতাকে ত্যাগ করে গঙ্গাতটে প্রস্থান করেন। সেখানে তিনি বারো বৎসর তপস্যা করে শারদা দেবীর অর্চনা করলেন। কন্যা মূর্তিধারী বংশী বাদনকারী দেবী অশ্বে সমারোহণ করে সেখানে উপস্থিত হলেন এবং সহাস্যে রাজাকে বললেন–হে ভূপ পুত্র, তুমি কি কারণে দেবী শিবার আরাধনা করেছো। এই তপস্যার ফল তুমি শীঘ্র লাভ করবে। একথা শ্রবণ করে সেই রাজা বললেন–হে মধুর স্বরযুক্তা কুমারী, আমার জন্য একটা নতুন নগরী রচনা করেদিন। হে দেবী আপনাকে প্রণাময়। রাজার এই কথা শ্রবণ করে সেই দেবী রাজাকে শুভ অশ্ব দিয়ে দিলেন এবং সম্মুখে বাদ্য বাদন করে দক্ষিণ দিকে চলে গেলেন। সেই রাজাও অশ্বে আরোহন করে নেত্র আচ্ছাদিত করে চলে গেলেন। পুনরায় রাজা পশ্চিম দিকে চলে গেলেন। অনন্তর অকর্ষণ পরীক্ষায় রাজা কাছে গেলেন। রাজা তাতে ভয়ভীত হয়ে নিজ নেত্র উন্মীলন করলেন।। ৪৩-৪৯।
স ভূপো হয়মারুহ্য নেত্র আচ্ছাদ্য চাযযৌ। পুনঃ স ভূপতিঃ পশ্চাৎ পশ্চিমাং দিশমাগতা।।৪৮।। ততোনুপ্রযযৌ পূর্বমকনো যত্র পক্ষিরাট। ভয়ভীতো নৃপস্তেন সমুন্মীল্য স চক্ষুষী।।৪৯।। দদর্শ নগরং রম্যং কন্যায়া রচিতং শুভম্। উত্তরে তস্য বৈ গঙ্গা দক্ষিণেনাস পান্ডুরা।।৫০।। পশ্চিমে ঈশসরিতা পূর্বে পক্ষী স মর্কণঃ। কুব্জভূতমভূদ্ গ্রামং কান্যকুব্জ ইতি স্মৃতঃ।।৫১।। দশবর্ষং চ তেনৈব জয়পালেন বৈ পদম্। কৃতং তস্য সুতো জাতো বেণুবাদ্য াচ্চ বেণুকঃ।।৫২।। স বেণুশ্চ মহীপালো দেবীদত্তাং মনোহর।হ্ । পত্নীং কন্যাবতীং নাম্না সমুদ্বাহ্য ররাজ হ’।।৫৩।।
সেখানে দেবী শিবার দ্বারা নির্মিত প্রভূত সুন্দর এবং শুভ নগর দেখলেন যার উত্তর দিকে গঙ্গা এবং দক্ষিণ দিকে পান্ডুয়া ছিল। পশ্চিম দিকে ঈশাসরিতা এবং পূর্বে মর্কণ পক্ষী ছিল। সেই গ্রাম এই প্রকার কুচ্ছভূত ছিল।। ৫০-৫১।।
সেই জয় পাল দশবর্ষ পর্যন্ত নিজ পদ ভোগ করেছিলেন। তার পুত্র বেনবাদ্যের দ্বারা বেনুক নামে পরিচিত ছিল।। সেই বেনু রাজা মনোহর দেবী কন্যাবতী নাত্নীকে নিজ পত্নীরূপে লাভ করেন। তাঁর দ্বারা তিনি দীপ্তিমান হন।।৫২-৫৩।।
তস্যাং সপ্ত সুতা জাতা মাতৃণাং মঙ্গলাঃ কলাঃ। শীতলা পার্বতী কন্যা তথা পুষ্পবতী স্মৃতা।।৫৪।। গোবধনী চ সিন্দুরা কালী নান্না প্রকীর্তিতা। ব্রাহ্মী মাহেশ্বরী চৈব কৌমারী বৈষ্ণবী তথা।।৫৫।। বারাহী চ তথৈন্দ্রাণী চামুন্ডাঃ ক্ৰমতোহ ভবন্। একদা ভূপতেঃ পত্নী তন্তুনা মৃত্তিকাঘটম্।।৫৬।। কূপে কৃতবর্তী প্রেন্না যথা পূর্বং তথাদ্য সা। দদর্শ বহুলা নারীনানাভূষণ ভূষিতাঃ।।৫৭।। স্বয়মেকৈব বসনা মনোগ্লানিমুপাযযৌ। তদৈব স ঘটো ভূমৌ ন প্রাপ্তঃ সপ্ৰবৃত্তিকাম্।।৫৮।। দৃষ্ট্বা কন্যাবতী দেবী ঘটহীনা গৃহং যযৌ। তদা তু সপ্ত কন্যাশ্চ শিলাভূতা গৃহে স্থিতাঃ।।৫৯।।
সেই পত্নী মাতৃকা মঙ্গল কলাযুক্ত সাত পুত্রীর জন্ম দিয়েছিলেন। তাদের নাম শীতলা -পাবৃতী -কন্যা-পুষ্পবতী-গোবর্দ্ধনী-সিন্দুরা এবং কালী। তারা ব্রাক্ষী মাহেশ্বরী কৌমারী বৈষ্ণবী বারাহী ইন্দ্রানী এবং চামুন্ডা এই দেবীর কলা ভূত হয়ে প্রসিদ্ধ লাভ করেন। একবার রাজপত্নী তন্তু দ্বারা পূর্বের ন্যায় মৃত্তিকা ঘট নির্মাণ করে সেখানেই তিনি নানা ভরনে ভূহিতা নারীদের দেখেন।। ৫৪-৫৭।।
তিনি স্বয়ং এক বস্ত্রধারী ছিলেন বলে মনোগ্লাগিপ্রাপ্ত হন। সেই সময় সেই ঘট ভূমিতে প্রাপ্তহলনা। সপ্রবৃত্তিকাকে দেখে তিনি গৃহত্যাগ করে চলে গেলে সেই সময় সাত কন্যা শিলা রূপ প্রাপ্ত হল।। ৫৮-৫৯।।
শ্রুত্বা বেনুস্তদাগত্য ভৎর্সয়িত্বা স্বকাং প্রিয়াম্। ব্রহ্মচর্য ব্রতং ত্যক্ত্বা রময়ামাস যোষিতম্।।৬০।। নৃপদ্বৈ বীরবত্যাং চ যশোবিগ্রহ আত্মজঃ। বভূব বলবান্ধমীং চার্যদেশপতিঃ স্বয়ম্।।৬১।। বিংশদ্বর্ষং কৃতং রাজ্যং তেন রাজ্ঞা মহীতলে। মহীচন্দ্ৰস্তস্য সুতঃ পিতুস্তল্যং কৃতং পদম্।।৬২।। চন্দ্রদেবস্তস্য সুতে রাজ্যং তেন পিতুঃ সমম্। কৃতং তস্মাৎসুতো জাতো মন্দপালো মহীপতিঃ।।৬৩। তস্য ভূপস্য সময়ে সর্বে ভূপাঃ সমস্ততঃ। ত্যক্ত্বা তং মন্দপালং চ তদ্দত্তে সংস্থিতা গৃহে।।৬৪।। পিতুরর্দ্ধং কৃতং রাজ্যং কুম্ভপালস্ততোহ ভবৎ। রাজনীয়া চ নগরী পিশাচ বিষয়ে স্থিতা।।৬৫।। তৎপতিশ্চ মহামোদো ম্লেচ্ছপৈশাচধর্মগঃ। স জিত্বা বহুধা দেশাল্লুন্ঠয়িত্বা ধনং বহু।।৬৬।।
রাজা বেনু যখন শ্রবণ করলেন তখন তিনি এসে নিজ প্রিয়াকে ভৎসনা করলেন এবং পুনরায় ব্রহ্মচর্ম ব্রত ত্যাগ করে মোসিতের সঙ্গে রমন করলেন। সেই রাজা তখন বীরবর্তীতে যশোনিগ্রহ নামক পুত্র লাভ করলেন। সেই বলবান-ধর্মাত্মা স্বয়ং আর্যদেশের রাজা ছিলেন। সেই রাজা কুড়ি বৎসর পৃথিবীতে রাজত্ব করেন। পুন তার মহীচন্দ্র নামক পুত্র জাত হলে তিনি পিতৃতুল্য পদলাভ করলেন। মহীচন্দ্রের পুত্র চন্দ্রদেবও পিতৃতুল্য রাজত্ব করেন। তার পুত্র মন্দপাল মহীপতি ছিলেন। সেই রাজার রাজত্ব কালে সমস্ত রাজগন তাঁকে ত্যাগ করলেন এবং তদ্দত্ত গৃহে গিয়ে স্থিত হলেন। তিনি পিতার অর্ধেক রাজত্ব করেন। তার পুত্র কুম্ভ পাল রাজা হন। তিনি রাজনীয় নগরী পিশাচের দেশে স্থিত ছিলেন। সেই রাজনীয় নগরীর স্বামী মহামোদ পিশাচ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি বহুদেশ জয় করে প্রচুর ধনলুন্ঠন করেন। কুম্ভপাল ম্লেচ্ছ ধর্ম গ্রহণকরেন। হে নৃপ কলি দ্বারা নির্মিত কুম্ভ পালকে মহামোদক দেখে তাকে প্রণাম করেছিলেন তখন ম্লেচ্ছপতি তাকে প্রভূত ধনসম্পদ দিয়েছিলেন। পুনরায় তিনি নিজ রাজনীয় নগরীতে চলে গিয়েছিলেন। ধীমান কুম্ভপাল বিশ বৎসর পর্যন্ত মূর্তি খন্ডক রাজত্ব করেছিলেন। তার পুত্র দেবপাল অনঙ্গ রাজকন্যা চন্দ্রকান্তি র সাথে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন এবং তার সাথে আনন্দে জীবন যাপন করেন।। ৬০-৭০।।
ম্লেচ্ছধর্মকরঃ প্রাপ্তঃ কুম্ভপালো যতঃ স্থিতঃ। কুম্ভপালস্তুতং দৃষ্ট্বা কলিনা নিৰ্মিতং নৃপ।।৬৭।। মহমোদং সমাগম্য প্রণনাম স বুদ্ধিমান্। তদা ম্লেচ্ছপতিঃ শূরো দত্ত্বা তস্মৈ ধনং বহু।।৬৮।। রাজনীয়াং চ নগরীং প্রাপ্তবামূর্তিখন্ডকম্। বিংশদব্দং কৃতং রাজ্যং কুম্ভপালেন ধীমতা।।৬৯।। তৎপুত্রো দেবপালশ্চানঙ্গ ভূপস্য কন্যকাম্ সমুদ্বাহ্য বিধানেন চন্দ্ৰকান্তিং তয়া সহ।।৭০।। কান্যকুব্জ গৃহং প্রাপ্য জিত্বা ভূপাননেকশঃ। পিতৃস্বল্যং কৃতং রাজ্যং তস্যোভৌ তনয়ৌস্যুতৌ।।৭১। জয়চন্দ্রো রত্নভানুদিশং পূর্বাং তথোত্তরাম্। আর্যদেশস্য বৈ জিত্বা বৈষ্ণবো রাজ্যমাপ্তবান্।।৭২।। রত্নভানেশ্চিতনয়ো লক্ষণো নাম বিশ্রুতঃ। কুরুক্ষেত্রে রণং প্রাপ্য ত্যক্ত্বা প্রাণান্দিবং গতঃ।।৭৩।।
দেবপাল চন্দ্রকান্তিকে সঙ্গে নিয়ে কান্যযুদ্ধে পৌঁছে সেখানে অনেক ভুপতিকে জ্য কের পিততুল্য রাজ্য লাভ করেন। তার দুই পুত্র জয়চন্দ্ৰ এবং রত্নভান। তারা পূর্ব এবং উত্তর দিকের আর্যদেশ জয় করে বৈষ্ণব রাজ্য প্রাপ্ত হন।।৭১-৭২।।
রত্নভানু পুত্র লক্ষণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে প্রাণ ত্যাগ করে স্বর্গে গমন করেন।। ৭৩।।
সমাপ্তিমগমদ্বংশো বৈশ্যপালস্য ধীমতঃ। কুম্ভপালস্য শৌক্লস্য বৈশ্যানাং রক্ষকস্য চ।।৭৪।। বিম্বক্সেনান্বয়ে জাতা বিম্বকেনা নৃপাঃ স্মৃতাঃ। বিসেনস্য কুলে জাতা বিসেনাঃ ক্ষত্রিয়াঃ স্মৃতাঃ।।৭৫। গুহিলস্য কুলে জাতা গৌহিলাঃ ক্ষত্রিয়া হি তে। রাষ্ট্রপালন্বয়ে জাতা রাষ্ট্রপালা নৃপাঃ স্মৃতাঃ।।৭৬।। বৈশ্যপালস্য বৈ বংশে কুম্ভপালস্য ধীমতঃ। বৈশ্যপালাশ্চ রাজন্যা বভূবুবহুধা হি তে।।৭৭।। লক্ষণে মরণং প্রাপ্তে শুক্লং বংশধুরন্ধুরে। সৰ্বে তে ক্ষত্ৰিয়া মুখ্যাঃ কুরুক্ষেত্রে লয়ং গতাঃ।।৭৮।। শেষাস্তু ক্ষুদ্রভূপালা বর্ণসংকরসম্ভবাঃ। ম্লেচ্ছৈশ্চ দূষতা জাতা ম্লেচ্ছরাজ্য ভয়ানকে।।৭৯।।
ধীমান বৈশ্যপাল বৈশ্যরক্ষক শৌক্লবংশ প্রাপ্ত হন। বিম্বক্ সেনের বংশ জাত বিষকসেনেন নৃপ বলাহয়।। যারা বিসেন কুলেজাত তাদের বিসেন ক্ষত্রিয় বলা হয়।। ৭৪-৭৫।।
গুহিল কুলিজাত গৌহিল ক্ষত্রিয় এবং রাষ্ট্রপাল বংশজাত রাষ্ট্রপাল নামে প্রসিদ্ধ।। ৭৬।।
বৈশ্য পাল এবং ধীমান কুম্ভপাল বংশ জাত বৈশ্যপাল ক্ষত্রিয়। শুক্ল বংশের বুরন্ধর লক্ষন মৃত্যু প্রাপ্ত হলে সমস্ত ক্ষত্রিয় সেই কুকুক্ষেত্রে লয় প্রাপ্ত হন।। ৭৭-৭৮।।
শেষ ক্ষুদ্র রাজা বণসংকর উৎপন্ন এবং তিনি ম্লেচ্ছের দ্বারা সেই অতি ভয়ানক ম্লেচ্ছ রাজ্যে দূষিত হয়েছিলেন।। ৭৯।।