মহান তিন দেবতার (ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর) একজন। ইনি উগ্র, প্রবলপ্রতাপ ও জগতের দহনকর্তা বলে ওঁর এক নাম রুদ্র। মহান দেবতা হিসেবে উনি বিশ্বসংসারকে প্রতিপালন করেন বলে ওঁর এক নাম মহাদেব। উনি ধূমরূপী বলে ওঁর নাম ধূর্জটি। উনি মনুষ্যগণের মঙ্গলাকামনা করে নিয়ত কর্মদ্বারা তাদের উন্নত করেন বলে ওঁর নাম শিব। উনি পশুদের অধিপতি হযে সতত তাদের প্রতিপালন করেন বলে উনি পশুপতি। পার্বতী মহাদেবের পত্নী। মহাভারতে মহাদেবের এক আত্মভোলা রূপ দেখা যায়। মাঝে মাঝে তিনি অল্পতেই ক্রুদ্ধ, আবার সেই রকম অল্পতেই হৃষ্ট। মহাদেব ছিলেন নীলকণ্ঠ এবং ওঁর দুই চক্ষুর ওপরে একটি তৃতীয় নয়ন ছিল। একবার পার্বতী পরিহাসচ্ছলে করতল দিয়ে মহাদেবের দুই চক্ষু আবৃত করেছিলেন। ফলে সমুদয় লোক আলোকবিহীন হয়ে বিনষ্টপ্রায় হল। স্ত্রীর পরিহাসে বাধা না দিয়ে মহাদেব তৃতীয় নয়ন সৃষ্টি করে সবাইকে রক্ষা করেন (মহাদেবের তৃতীয় নেত্রের সৃষ্টি নিয়ে আরও অনেক গল্প রয়েছে)। অমৃতমন্থনের সময় শেষনাগের মুখ থেকে যে বিশ্ববিনাশকারী গরল নির্গত হয়েছিল, সেই বিষ পান করে মহাদেব নীলকণ্ঠ হন। মহাদেবের বাহন হল বৃষভ। একবার কপিলাগাভীদের দুগ্ধফেন মহাদের মাথায় পতিত হলে, তিনি রুষ্ট হয়ে কপিলাগাভীদের দিকে তাকান। ফলে কপিলাগাভীদের অমৃতবর্ণ দগ্ধ হয়ে নানান বর্ণ হল। প্রজাপতি দক্ষ (অন্যস্থানে ব্রহ্মা বদে উল্লেখিত হয়েছে) এসে মহাদেবকে বোঝালেন যে, দুগ্ধফেন কখনও উচ্ছিষ্ট বা দুষিত হয় না। তারপর তিনি মহাদেবকে পরিতুষ্ট করার জন্য কয়েকটি গাভীর সঙ্গে একটি বৃষভ মহাদেবকে দিলেন। মহাদেব খুসি হয়ে সেই বৃষভকেই তাঁর বাহন করলেন। দেবতাদের বিশেষ বিপদে মহাদেব সাহায্য করতেন। দেবতাদের অনুরোধে উনি দৈত্যদের ত্রিপুর ধবংস করেন। পরশুরাম মহাদেবের তপস্যা করে ওঁর কাছে অস্ত্রবিদ্যা লাভ করেন। মহাদেব তাঁর পাশুপত অস্ত্রবিদ্যা অর্জুনকে দান করেছিলেন।