যযাতির কন্যা মাধবীর কানীন (কন্যা অবস্থায় জাত) পুত্র। এঁর পিতা ছিলেন ভোজরাজ উশীনর। রাজা শিবি এক সময় কুরুবংশীয় রাজা সুহোত্রের সঙ্গে পথিমধ্যে মিলিত হয়েছিলেন। দুজনেই প্রায় সমান গুণবান, কে তাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থির না করতে পেরে কেউই কাউকে পথ ছাড়লেন না। তখন দেবর্ষি নারদ এসে সব শুনে বললেন যে, শিবি সুহোর্তের থেকে সাধু স্বভাবের। আর ওঁরা দুজনেই উদার। কিন্তু যিনি বেশি উদার তিনিই সরে গিয়ে পথ করে দেবেন। সেই শুনে সুহোর্ত শিবিকে প্রদক্ষিণ করে পথ ছেড়ে দিয়ে শিবির অনেক প্রশংসা করে নিজের মাহাত্ম দেখিয়ে চলে গেলেন। একবার শিবি ও তাঁর বৈপিত্র ভ্রাতাদের (অষ্টক, প্রতর্দন ও বসুমনা) সঙ্গে ভ্রমণ করতে করতে স্বর্গ থেকে ভ্রাতাদের মধ্যে কে আগে নরলোকে ফিরে আসবেন – এই প্রশ্নের উত্তরে নারদ বলেছিলেন যে, শিবি স্বর্গে থাকবেন। তার আগে ভ্রাতাদেরতো হবেই – এমনকি ওঁর নিজেরও পতন হবে। শিবি যে কত বড় পুণ্যাত্মা তার প্রসঙ্গে নারদ ভ্রাতাদের এই গল্পটি বলেছিলেন – একদিন এক ব্রাহ্মণ শিবির কাছে এসে বলেছিলেন যে, তিনি অন্ন প্রার্থী,তিনি শিবির পুত্র বৃহদগর্ভের মাংস খেতে চান. এই বলে সেই ব্রাহ্মণ চলে গিয়েছিলেন। শিবি তাঁর পুত্রকে বধ করে তার মাংস ও অন্ন প্রস্তুত করে ব্রাহ্মণকে খুঁজতে বেরোলেন। একজন শিবিকে খবর দিলেন যে,সেই ব্রাহ্মণ কোনও কারণে ক্রুদ্ধ হয়ে শিবির গৃহ, কোষাগার, অশ্বশালা ইত্যাদি ধবংস করেছেন। শিবি তাতে বিচলিত না হয়ে ব্রাহ্মণের দেখা পেয়ে তাঁকে মাংস ও অন্ন ভোজন করতে অনুরোধ করলেন। ব্রাহ্মণ নিজে না খেয়ে শিবিকে বললেন সেই মাংস ভক্ষণ করতে। শিবি যখন শান্ত ভাবে ব্রাহ্মণের সেই আজ্ঞা পালন করতে উদ্যত হচ্ছেন,তখন ব্রাহ্মণ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে অন্তর্হিত হলেন। শিবি দেখলেন যে, তাঁর পুত্র জীবিত অবস্থায় তাঁর সন্মুখেই রয়েছেন। সেই ব্রাহ্মণ আসলে বিধাতা। শিবিকে পরীক্ষা করতে এসেছিলেন। শিবিকে যখন তাঁর আমত্যেরা জিজ্ঞেস করলেন যে, তিনি কোন ফল লাভের আশায় এই কঠিন কর্ম করলেন। শিবি উত্তর দিলেন যে, কোনও কর্মফল লাভের আশায় নয়, সাধুজনের যে আচরণ করা উচিত – তাই তিনি করেছেন।