।। শালিবাহন বংশীয় নৃপতি বর্ণনম্।।
শালিবাহনবংশে চ রাজানো দশ চা ভবন। রাজ্যং পঞ্চদশাব্দং চ কৃত্বা লোকান্তরং যযুঃ।।১।। মৰ্য্যায়া ক্ৰমতে লীনা জাতা ভূমন্ডলে তদা। ভূপতিদশমো যো বৈ ভোজরাজ ইতি স্মৃতঃ। দৃষ্ট্বা প্রক্ষীণমর্যাদাং বলী দিগ্বিজয়ং যযৌ।।২।। সেনয়া দশসাহস্যা কালিদাসেন সংযুতঃ। তথান্যৈব্ৰাহ্মণৈঃ সার্দ্ধং সিন্ধুপারমুপাযযৌ।।৩।। জিত্বা গান্ধারজান্ ম্লেচ্ছান্কাশ্মীরান্নারবাঞ্ছঠান। তেষাং প্রাপ্য মহাকোশং দন্ডয়ো গ্যানকারয়ৎ।।৪।। এতস্মিন্নন্তরে ম্লেচ্ছঃ আচার্য্যেণ সমন্বিতঃ। মহামদ ইতি খ্যাত শিষ্য শাখা সমন্বিতঃ।।৫।। নৃপশ্চৈব মহাদৈনং মরুস্থলনিবাসিনম্। গংগাজলৈশ্চ সংস্নাপ্য পঞ্চগব্য সমন্বিতৈঃ।। চন্দনাদিভিরভ্যর্চ্যৈ তুষ্টা মনসা হরম্।।৬।।
।। শালিবাহন বংশীয় নৃপতি বৰ্ণন।।
এই অধ্যায়ে শালিবাহন বংশের রাজাদের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
শ্রীসূতজী বললেন রাজা শালিবাহন বংশে দশরাজা ছিলেন। তারা সকলে পাঁচশত বৎসর রাজ্য শাসন করেছিলেন এবং অন্তে পরলোক প্রাপ্ত হন। তন্মধ্যে দশম রাজা ভোজরাজ প্রসিদ্ধি লাভ করেন। তিনি নিজবংশের মর্যাদাহীনতা দেখে দিগ্বিজয় করতে গমন করলেন। দশসহস্র সেনা তথা কবিশ্ৰেষ্ঠ কালিদাসকে সঙ্গে নিয়ে অন্য ব্রাহ্মণের সঙ্গে সিন্ধু তীরে চলে গেলেন। তিনি গান্ধার, ম্লেচ্ছ, কাশ্মীর ইত্যাদি জয় করে প্রভূত কোশ প্রাপ্ত করলেন। ইতিমধ্যে আচার্য সমন্বিত ম্লেচ্ছ মহামদ মহাদেবকে পূজার্চনা দ্বারা তুষ্ট করলেন।।১-৬।।
নমস্তে গিরিজানাথ মরুস্থলনিবাসিনে। ত্রিপুরাসুরনাশোয় বহুমায়া প্ৰবৰ্তিনে।।৭।। ম্লেচ্ছগুপ্তায় শুদ্ধায় সচ্চিদানন্দরূপিনে। ত্বং মাং হী কিং করং বিদ্বিশরণার্থমুপাগতম্।।৮।। ইতি শ্রুত্বা স্তবং দেবঃ শব্দমাহ নৃপায়তম্। গন্তব্যম্ ভোজরাজেন মহাকালেশ্বর স্থলে।।৯ ম্লেচ্ছঃ সুদূষিতা ভূমির্বাহীকা নাম বিশ্রুতা। আৰ্য্যধর্মো হি নৈবাত্র বাহীকে দেশ দারুণে।। ১০।। বহুবাত্র মহামায়ী যোহসৌ দন্ধৌ ময়া পুরা। ত্রিপুরো বলিদৈত্যেন প্রেযিতঃ পুনরাগতঃ।।১১।। অযোনি স বরো মত্তঃ প্রাপ্তবান্দৈত্য বৰ্দ্ধণঃ। মহামদ ইতি খ্যাতঃ পৈশাচকৃতিৎপরঃ।।১২। নাগন্তব্যং ত্বয়া ভূপ পৈশাচে দেশধূর্তকে। মৎপ্রসাদেন ভূপাল তবশুদ্ধি প্ৰজায়তে।।১৩।। ইতি ভূ ত্বাননৃপশ্চৈব স্বদেশান পুনরাগমৎ। মহামদশ্চ তৈঃ সার্দ্ধং সিন্ধুতীর মুপাযয়ৌ।।১৪।।
ভোজরাজ বললেন হে গিরিজানাথ, মায়াময়, কুরুস্থল নিবাসী, সচ্চিদানন্দরূপী তোমাকে প্রণাম। আমি আপনার দাস। তাঁর এই স্তুতি শ্রবণ করে দেবাদিদেব বললেন, তুমি কালেশ্বর স্থানে যাও সেখানে বাহিক নামক ভূমি ম্লেচ্ছ দ্বারা দূষিত। সেখানে আর্যধর্ম নেই। সেই মহাযায়ী উপস্থিত হয়েছে, পূর্বে আমি তা দগ্ধ করেছি। সেই ত্রিপুর দৈত্য পুনরায় সেখানে উপস্থিত হয়েছে। মহামদ নামক সেই দৈত্য আমার বর পেয়ে সে প্রসিদ্ধ হয়েছে। তোমার সেখানে যাওয়া উচিৎ নয়। সেকথা শুনে রাজা ফিরে এলেন। তার সাথে মহামদও সিন্ধুতীরে ফিরে এলেন।।৭-১৪।।
উবাচ ভূপতি প্রেন্না মায়ামদ বিশারদঃ।। তব দেবৌ মহারাজ মমদাসত্বমাগতঃ।।১৫।। মমোচ্ছিষ্টং সম্ভুজীয়াদ্যাথা তৎপশ্য ভো নৃপ। ইতি শ্রুত্বা তথা দৃষ্ট্বা পরং বিস্ময়মাগতঃ।।১৬।। ম্লেচ্ছধর্মে মতিশ্চাসীত্তস্য নৃপস্য দারুণে।।১৭।। তচ্ছ্বত্বা কালিদাসস্ত রূষা প্রাহ মহা সদম্। মায়া তে নির্মিতা ধূর্তে নৃপমোহনহে তবে।।১৮।। হনিষ্যামি দুরাচারং বাহীকং পুরুষাধমম্। ইত্যুক্ত্বা স দ্বিজঃ শ্রীমান্নবাণ জপতৎ পরঃ।।১৯।। জপ্তা দশসহস্রং তদ্দশাংশং জুহাব সঃ। ভস্ম ভূত্বা স মায়াবী ম্লেচ্ছ দেবত্বমাগতঃ।।২০।। ভয়ভীতাস্তু তচ্ছিষ্যা দেশং বাহিকমাময়ঃ। গৃহীত্বা স্বগুরোভস্ম মদহীনত্বসাগতম্।।২১।। স্থাপিতং তৈশ্চ ভূমধ্যে তত্রোযুর্মদতৎপরাঃ। মদহীনং পুরং জাতং তৈষাং তীৰ্থং সমংসমৃতম্।।২২।।
মহামদ প্রেমপূর্বক রাজাকে বললেন–তোমার প্রভু আমার দাসত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন। আমার উচ্ছিষ্ট তিনি গ্রহণ করেন তা তুমি দেখ। রাজা ভোজ তা দেখে বিস্মিত হলেন। সেখানে ম্লেচ্ছধর্ম অতি বিস্তৃত হয়েছে তা দেখলেন। একথা শ্রবণ করে কালিদাস ক্রোধিত হলেন। তিনি বললেন–রে রাজন্, আমি সেই দুরাচারী অধম বাহীককে হত্যা করব। তারপর তিনি নবাৰ্য মন্ত্ৰ জপ করতে লাগলেন। দশসহস্র জপ করে দশাংশ ভাগ হবন করলেন। সেই মায়াবী ম্লেচ্ছ ভষ্ম হয়ে দেবত্ব প্রাপ্ত হলেন।।১৫-২১।। রাত্রৌ স দেবরূপশ্চ বহুমায়াবিশাপদঃ। পৈশাচং দেহসাস্থায় ভোজরাজং হি সোব্রবীৎ।।২৩।। আর্যধর্মো হি তে রাজন্ সর্বধর্মোত্তমঃ স্মৃতঃ। ঈশাজ্ঞয়া করিষ্যামি পৈশাচং ধর্মদারুণম্।।২৪।। লিঙ্গচ্ছেদী শিখাহীনঃ শ্মশ্রুধারী স দূষকঃ। উচ্চালাপী সর্বভক্ষী ভবিষ্যতি জনো মম।।২৫।। বিনা কৌলং চ পশবস্তেষাং ভক্ষ্যা মত্তা মম। মুসলেনৈব সংস্কারঃ কুশৈরির ভবিষ্যতি।।২৬।। তস্মান্মুসলবন্ডো হি জাতয়ো ধর্মদূষকাঃ। ইতি পৈশাচধর্মশ্চ ভবিষ্যতি ময়াকৃতঃ।।২৭।। ইত্যুক্তা প্রমযৌ দেবঃ স রাজা গেহমায়য়ৌ। ত্রিবর্ণে স্থাপিতা বাণী সাংস্কৃতী স্বৰ্গদায়িনা।।২৮।। শূদ্রেষু প্রাকৃতীভাষা স্থাপিতাতেন ধীমতা পঞ্চাশদব্দকালম তু রাজ্যং কৃত্বা দিবং গতঃ।।২৯।। স্থাপিতা তেন মর্যাদা সর্বদেবোপমানিনী। আর্যাবর্তঃ পুণ্যভূমিমধ্যং বিন্ধ হিমালয়োঃ।।৩০॥ আর্যাবর্ণাঃ স্থিতাস্তত্র বিন্ধ্যান্তে বর্ণসংকরাঃ। নরা মুসলবস্তুশ্চ স্থাপিতাঃ সিন্ধু পাবজাঃ।।৩১।। বর্বরে তুষদেশে চ দ্বাপো নানাবিধে তথা। ঈশামসীহ ধর্মাশ্চ সুবৈঃ রাজ্ঞৈব সংস্থিতাঃ।।৩২।।
ভূমধ্যে তারা সেই ভষ্ম স্থাপিত করে বাস করতে লাগলেন। সেই মায়াবী পন্ডিত দেবদেহ প্রাপ্ত হয়ে রাত্রে পৈশাচিক দেহ ধারণ করে ভোজরাজকে বললে,–হে রাজন্ তোমার আর্যধর্ম অত্যুত্তম। আমি ভগবৎ আজ্ঞাতে পৈশাচ ধর্ম পালন করব। মনুষ্য লিঙ্গ ছেদন, শিখা ছেদন, শ্মশ্রুশোভিত, দূষক, উচ্চৈস্বরে আলাপ কর্ম তথা সকল কিছু ভক্ষণ করব। কৌল ব্যতীত সমস্ত পশু (প্রাণী) মুষলের দ্বারা কুশের ন্যায় সংস্কার করব। তা থেকে মুষল জাতির উদ্ভব হবে। একথা বলে সে চলে গেল। রাজাও নিজ দেশে ফিরে এসে তিন বর্ণের সংস্কারকারী সংস্কৃত ভাষা ব্যবহার করলেন।।২২-২৮।।
তিনি শূদ্রদের জন্য প্রাকৃত ভাষার প্রয়োগ করালেন। তারপর পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করেন। অনন্তর দেবগণে নিজ নিজ মর্যাদায় স্থাপিত করে বিন্ধ্য ও হিমাচলের মধ্যে আর্যাবর্ত পরমপুণ্য ভূমিতে পরিণত করলেন। বিন্ধ্য পর্বতের পশ্চাতে বর্ণসংকর উৎপন্ন হল। মুসলমান ব্যক্তি সিন্ধু পারে স্থাপিত হল। নানা প্রকার দ্বীপে রাজা দৈবাজ্ঞায় ইসামসীয় ধর্ম স্থাপন করলেন।।২৯-৩২।।