।। ললিতা তৃতীয়া ব্ৰত কা মাহাত্ম্য।।
অথ পৃচ্ছামি ভগবন্ ব্রতং দ্বাদশমাসিকম্। ললিতারাধনং নাম মাসমাসক্ৰমেন বা।।১।। শৃণু পান্ডব যত্নেন যথা বৃত্তং পুরাত নম্। শংকরস্য মহাদেব্যাঃ সংবাদং কুরুসত্তম।।২।। কৈলাসশিখরে রম্যে বহুপুষ্পফলোপগে। সহকারদ্রুমচ্ছন্নে চম্পাকাশোকভূষিতে।।৩।। কদম্ববকুলামোদবশীকৃতমধুরতে। ময়ূররবসং ঘুষ্টে রাজহংসপোশোভিতে।।৪।। মুগক্ষৰ্গৰ্জসিংহৈশ্চ শাখামৃগগণাবৃতে। গন্ধবযক্ষদেবর্ষিসিদ্ধকিন্নর পন্নগৈঃ।।৫।। তপস্বিভিমহাভাগৈঃ সেবমানং সমস্ততঃ। সুখাসীনং মহাদেবং ভূতসংঘেঃ সমাবৃতম্।।৬।। অস্পরোভি সরিবৃতমুসা নত্বাব্রবীদিদম্। ভগবদেবদেবেশ শূলপানে বৃষধ্বজ।।৭।। কথয়স্ব মহেশান তৃতীয়াবৃতমুত্তমম্। সৌভাগ্যং লভতে যেন ধন পুত্রান্ পশুন্ সুখম্।।৮।। নারী স্বর্গং শুভং রূপমারোগ্যং শ্রিয়মুত্তমাম্। এবমুক্তো দয়িতয়া ভাৰ্যয়া প্রীতিপূর্বকম্। বিহঙ্গ্য শংকরঃ প্রাহ কিং ব্ৰতেম তব প্রিয়ে।।৯।। যে কামাস্ত্রিষু লোকেষু দিব্যা ভূম্যন্তরিক্ষজাঃ সর্বেপি তেন চায়ত্তা বশ্যস্তেহং ততঃ পতিঃ।।১০। সত্যমেতৎ সুরেশান ত্বয়ি দৃষ্টেন দুর্লভম্। কিঞ্চিৎ ত্রিভুবনাভোগ ভূষণে শশিভূষণে।।১১।। ভক্ত্যা স্ত্রিয়ো হি মাং দেব প্রজপস্তি শুভাশুভম্। বিরূপাঃ সুলভাঃ কাশ্চিদপুত্ৰা বহুপুত্রকাঃ।।১২।। সুশীলাস্তপসা কাশ্চিচ্ছবশ্রুভিঃ পীড়িতা ভূশম্। শৌচাচার সমাযুক্তা ন রোচন্তেথ কস্যচিৎ।।১৩।। এবং বহু বিধৈদুঃখৈঃ পীড়য়মানাস্তু দারুনৈঃ। শরণং মাং প্রপন্নাস্তাঃ কৃপাবিষ্টা ততো হ্যহম্।।১৪।। যেন তাঃ সুখসম্ভোগরূপলাবন্যসম্পদা পুত্রৈঃ সৌভাগ্যবিত্তৌঘৈর্যুক্তাঃ স্যুঃ সুরসত্তম। তন্মে কথয় তত্ত্বেন ব্রতানংমুত্তমং ব্রতম্।।১৫।। মাঘে মাসি সিতে পক্ষেতৃতীয়ায়ং যতব্রতাঃ। মুখং প্রক্ষাল্য হস্তৌ চ পাদৌ চৈব সমাহিতাঃ।।১৬।। উপবাসস্য নিয়মং দত্তধাবনপূর্বকম্। মধ্যাহ্নে তু ততঃ স্নানং বিল্বেরামলকৈঃ শুভৈঃ।।১৭।। স্নাত্বা অর্থজলে শুভ্রে বাসসী পরিধায় চ। সুগন্ধৈঃ সুমনোভিশ্চ প্রভৃতৈঃ কুঙ্কুমাদিভিঃ।।১৮।। অৰ্চয়ন্তি সদা দেবি ত্বাং ভক্ত্যা ভক্তবৎসলে। কর্পূরাদ্যৈস্তথা ধূপৈর্নৈবেদৈঃ শর্করাদিভিঃ।।১৯।। যদৃচ্ছালাভসম্পন্নৈধূপদীপাৰ্চনাদিভিঃ। নাম্নেশানীং গৃহীত্বা তু প্রতীক্ষেদ্ বটিকাং ততঃ।।২০।। পাত্রে তাম্রময়ে শুদ্ধে জলাক্ষতবিমিশ্রিতে। সহিরণ্যং দ্বিজং কৃত্বা মন্ত্ৰপূৰ্বং সমাধিনা।।২১।। শিরসি প্রক্ষিপেত্তোয়ং ধ্যায়ন্তী মনসেস্পিতম্। ব্রহ্মাবর্তাৎ সমায়াতা ব্রহ্মযোনেবিনির্গতা।।২২।। ভদ্রেশ্বরা ততো দেবী ললিতা শংকরপ্রিয়া। গংগাদ্বারাদ্ধরং প্রাপ্তা গংগাজলপবিত্ৰিতা।।২৩।। সৌভাগ্যারোগ্য পুত্রার্থমর্থাথং হরবল্লর্ভে। আয়াতা ঘটিকাং ভদ্রে প্রতীক্ষস্ব নমোনমঃ।।২৪।। দত্ত্বা হিরণ্যং তত্তস্মৈ প্রাশ্মীয়াচ্চকুশোদকম্। আচম্য প্রযতো ভূত্বা ভূমিস্থা ক্ষপপেৎক্ষপাম্।।২৫।। ধ্যায়মানা উমাং দেবীং হরিতে যবসংস্তরে। দ্বিতীয়েহ্নি ততঃ স্নাত্মা তথৈবাভ্যচ পার্বতীম্।।২৬।। যথাশক্তি দ্বিজান্ পূজ্য ততো ভুঞ্জীত বাগ্যতা। এবং তু প্রথমে মাসি পূজনীয়াসি কালিকে।।২৭।। দ্বিতীয়ে পার্বতী নাম তৃতীয়ে শংকরপ্রিয়া। ভবান্যথ চতুর্থে ত্বং স্কন্দমাতাথ পঞ্চমে।।২৮।। দক্ষস্য দুহিতা যষ্ঠে মৈনাকী সপ্তমে স্মৃতা। কাত্যায়ন্যষ্টমে মাসি নবমে তু হিমাদ্রিজা।।২৯।। দশমে মাসি বিখ্যাতা দেবি সৌভাগ্যদায়িনী। উমা ত্বেকাদশে মাসি গৌরীতু দ্বাদশে পরা।।৩০।। কুশোদকং পয়ঃ সÁির্গোমুত্ৰং গোময় ফলম্। নিম্বপত্রং কন্টকারী গবাং শৃংগোদকং দধি।।৩১।। পঞ্চগব্যং তথাশাকঃ প্ৰাশনানি ক্রমাদমী।। মাসি মাসি স্থিতা হ্যেবমুপবাসপরায়ণা।।৩২।। দদাতি শ্রদ্ধয়ৈতানি বাচকে ব্রাহ্মণোত্তমে। কুসুম্ভমাজ্যং লবণং জীরকং গুড়মেব চ।।৩৩। দত্তৈরেভিঃ সূর্যস্থা ত্বং সূর্যস্থা তুষ্যসি প্রিয়ে। মাসি মাসি ভবেন্ মন্ত্রো গকারো দ্বাদশাক্ষরঃ।।৩৪।।
।। ললিতা তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য।।
যুধিষ্ঠির বললেন, হে ভগবান্, এখন আমি বারোমাসে অনুষ্ঠিত ব্রতের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছি। ললিতার আরাধনা কোন্ মাসে হয়? শ্রীকৃষ্ণ বললেন–হে পান্ডব যত্নপূর্বক শ্রবণ করো। হে কুরুশ্রেষ্ঠ, কৈলাসপর্বতের শিখরে মহাপুণ্য ও ফলযুক্ত বৃক্ষ ছিল, সেই শিখর আম্রবৃক্ষে পরিপূর্ণ ছিল। এছাড়া চম্পক ও অশোক বৃক্ষও ছিল। কদম্ব বকুলের গন্ধে সেখানে মধুকর উড়ে বেরাতো। চতুর্দিকে ভ্রমরের গুঞ্জন শোনা যেত। রাজহংস তার শোভাবৃদ্ধি করত। মৃগ-হাতী-সিংহ ও শাখামৃগ সেখানে ছিল। গন্ধর্ব-যক্ষ-দেব-ঋষি-সিদ্ধ- কিন্নর এবং অন্যান্য পন্নগ তথা মহাতপস্বিগণ কৈলাসের চারদিকে বাস করত। ভূতগণ সমাবৃত, অপ্সরা পরিবৃত মহাদেবকে প্রণাম করে পার্বতী একবার তৃতীয়াব্রত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন — হে শূলপাণে, দেবদেবেশ, ভগবান, বৃষধ্বজ আপনি সৌভাগ্য প্রদানকারী, ধন- পুত্র-সৌভাগ্য-যশ ও সুখলাভকারী এই তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য বলুন। ভগবান্ শংকর বললেন ত্রিলোকের সমস্ত কামনা, দিব্যভূমি, অন্তরীক্ষ সকল কিছুই আপনার অধীন এই ব্রতের আপনার কি প্রয়োজন। উমা বললেন হে সুরেশান, একথা সত্য যে আপনার দর্শন মাত্রেই সবকিছু পাওয়া যায় কারণ আপনি ত্রিভুবনভূষণ তথা শশিভূষণ। কিন্তু স্ত্রীগণের জন্য এই ব্রত মাহাত্ম্য আমার জানা প্রয়োজন। পৃথিবীতে কোনো স্ত্রী বিচারী বিরূপা, কেউবা সুলভা, কেউ পুত্রবতী, কেউ পুত্রহীন, কেউ সুশীল তপযুক্ত, কেউ উৎপীড়িতা। শৌচত্ত আচারযুক্ত আবার কেউ প্রিয় নয়। এই প্রকার বিভিন্ন দুঃখে দারুন পীড্যমান হয়ে আমার শরণ নেয়। তাই তাদের কৃপা করতে আমি বিবশ। হে সুরসত্তম, কিভাবে সুখ-সৌভাগ্য, রূপ, লাবণ্যপ্রাপ্ত হওয়া যায় তা বল। ব্রতের মধ্যে অত্যুত্তম ব্রত আমাকে বলুন। ঈশ্বর বললেন- মাঘমাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়া তিথিতে হস্তপদ প্রক্ষালন দত্তধাবণ পূর্বক নিয়ম মতো উপবাস করবে। পুনরায় মধ্যাহ্নে বিল্ব আমলকের দ্বারা স্নান করে বস্ত্র পরিধান করবে। পরে সুগন্ধি পুষ্প, কুমকুমাদি উপাচার দিয়ে তোমার পূজা করবে। হে দেবী, তুমিতো ভক্তবৎসল। এ ছাড়া কপূরাদি উপাচার, ধূপ, নৈবেদ্য, শর্করা প্রভৃতি গ্রহণ করে পূজা করবে। তারপর ইচ্ছামতো উপাচার গ্রহণ করে ঈশানী নাম গ্রহণ করে এক ঘটিকা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। পরম শুদ্ধ তাম্ৰময় পাত্রে জল এবং অক্ষত মিশিয়ে মন্ত্রপূর্বক সহিরণ্য দ্বিজকে দেবে। মনে নিজ মনোরথ ধ্যান করে মাথায় জলের ছিটা দেবে এবং দেবীকে প্রণাম জানাবে। অতঃপর রাত্রে ভূমিতে শয়ন করবে। দ্বিতীয় দিন ঐরূপে পার্বতীর অর্চনা করবে। তারপর যথাশক্তি ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে, মৌনী হয়ে নিজে ভোজন করবে। এই প্রথম মাসে কালিকা, দ্বিতীয় মাসে পার্বতী, তৃতীয় মাসে শংকর প্রিয়া, চতুর্থ মাসে ভবানী ও পঞ্চম মাসে স্কন্দমাতা নামে পূজন করবে।।১-২৮।।
জঁকার পূর্বকো দেবি নমস্কারান্ত ঈরিতঃ। এভিস্ত্বং পূজিতা মন্ত্রৈস্তষ্যসি ব্ৰততঃ প্রিয়ে।।৩৫।। তুষ্টা ত্বভীস্পিতান্ নামাম্দদাসি প্রীতি পূর্বকম্। সমাপ্তে তু ব্রতে তস্মিন্ ব্রাহ্মণ বেদপারগম্।।৩৬।। সহিতং ভার্যয়াভ্যর্চ্য গন্ধপুষ্পাদিভিঃ শুভৈঃ। দ্বিজং মহেশ্বরং কৃত্বা উমাং ভাৰ্থাং তথৈব চ।।৩৭।। অন্নং সদক্ষিণং দদ্যাত্তথা শুক্লে চ বাসসী। রক্তং বাসোযুগং দদ্যাত্বামুদিশ্য হরপ্রিয়ে।।৩৮।। ব্রাহ্মণে শ্রদ্ধয়া যুক্তসতস্যাং ফলমিদং শৃণু। দশবর্ষসহস্রানি লোকান্ প্রাপ্য পরাপরাণ।।৩৯।। মোদতে ভর্তৃসহিতা যথেন্দ্রেণ শচী তথা। মানুষত্বং পুণঃ প্রাপ্য স্বেন ভর্তা সহৈব সা।। ৪০।। পুন্যেকুলে শ্রিয়া যুক্তা নীরোগা সুখমশুতে। সপ্তজন্মানি মাবচ্চ নবৈধব্যমবাপুয়াৎ।।৪১।। পুত্রান্ ভোগাংস্তথা রূপং সৌভাগ্যারোগ্যমেব চ।। একপত্নী তথা ভর্তুঃ প্রাণেভ্যোহপ্যধিকা ভবেৎ।।৪২।
ষষ্ঠ মাসে দক্ষ দুহিতা, সপ্তম মাসে মৈনাকী, অষ্টম মাসে কাত্যায়ণী, নবম মাসে হিমাদ্রিজা, দশম মাসে সৌভাগ্যদায়িনী, একাদশ মাসে পরাগৌরী নামে ভজন করবে। কুশোদক পয়-ঘৃত-গোমূত্র, গোময়-ফল নিমপত্র, কন্টকারী, গোশৃঙ্গোদক, দধি, পঞ্চগব্য তথা শাক এই ক্রমে প্রাশন করবে। এইভাবে প্রত্যেক মাসে উপবাস করে ব্রত পালন করবে। প্রত্যেক মাসে দ্বাদশাক্ষর গকার মন্ত্র পাঠ করবে। এর পূর্বে ওঁকার ও পরে নমস্কার বলবে। এই মন্ত্রে পূজিত হলে তুমি সন্তুষ্ট হও এবং অভীষ্ট বর প্রদান কর। এছাড়া পূজাকারী বিপ্রকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মহেশ্বরতুল্য মনে করে পূজন করবে। দক্ষিণা ও শুক্লবস্ত্র প্রদান করবে। ব্রাহ্মণকে শ্রদ্ধাযুক্ত দান করলে কি হয় তা শ্রবণ কর। মনুষ্য দশসহস্র বৎসর পরও অপর লোক প্রাপ্ত হয়। এছাড়া নিজ পতির সাথে সুখভোগ করে।।২৯-৪০।।
শৃণুয়াদ বাচ্যমানং তু ভক্ত্যা মা ললিতাব্রতম্। ময়া স্নেহেন কথিতং সাপি তৎফলভাগিনী।। ৪৩।। সংপূজ্য লক্ষললিতাং ললিতাংগযষ্টিং। গন্ধোদকামৃতঘন্টী শিরসি ক্ষিপেদ্যঃ। সা স্বৰ্গমেত্য ললিতাসু ললামভূতা। ভূগাধিপং পতিমবাপ্য ভুবং ভুনক্তি।।৪৪।।
অথবা কোনো পুণ্যকুলে জন্মগ্রহণ করে ও শ্রীযুক্ত হয়ে নীরোগ দেহে সুখ প্রাপ্ত হন। সাতজন্ম পর্যন্ত সে কখনও বৈধব্য দুঃখ ভোগ করে না। পুত্র, রূপ, লাবণ্য, সৌভাগ্য, আরোগ্য প্রাপ্ত হয়। স্বামী বা স্ত্রী পরস্পরের প্রিয় হয়। ভক্তিভাবে ললিতা ব্রতকথা শ্রবণ করলে তার প্রতি স্নেহবশতঃ সে সকল ফল ভোগ করে। যে ললিতাঙ্গ যষ্টি পূজন করে সে স্বর্গে গিয়ে ললিতার ললাম ভূতা হয় এবং রাজার সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুখ লাভ করে।।৪১-৪৪।।