মৌর্য – ৩৬

৩৬

সেলুকাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য যে সেনাপতি গিয়েছিলেন, চাণক্যের গোয়েন্দারা তাঁকে আটক করে চাণক্যের সামনে নিয়ে এসেছে। চাণক্য তাঁর পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে বললেন, তোমার উদ্দেশ্য বলো। কী জন্য ওদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছ?

সেনাপতি কোনো কথা বলছেন না।

নির্জলা বলল, তাকে আমি পর্বতরাজের সেনাবাহিনীতে দেখেছি। সেনাপ্রধানের খুব অনুগত ছিলেন।

চাণক্য বললেন, ধরা পড়ে প্রাণ হারাতে পারো, এমন কাজ করতে গেলে কেন?

মিত্র হিসেবে আপনি আমাদের সঙ্গে যথাযথ ব্যবহার করেন নি, তাই

কী ব্যবহার আশা করেছিলে তুমি?

নিশ্চয়ই বিশ্বাসঘাতকতা নয়।

আমরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছি? ইতিহাস মৈত্রিক পক্ষে নয়, বিশ্বাসঘাতকতার পক্ষে। ভালো করেছি।

না, ভালো করেন নি, অন্যায় করেছেন।

তুমিও তো অন্যায় করেছ গ্রিকদের সাহায্য করতে গিয়ে। করো নি?

না, অন্যায় করি নি, সাহায্য চাওয়ার মধ্যে কোনো অন্যায় নেই, যদি তা কোনো বিশ্বাসঘাতককে প্রতিহত করতে গিয়ে চাওয়া হয়।

চাণক্যের সৈন্যরা খেপে উঠেছিল। চাণক্য তাদের থামিয়ে দিলেন, তাকে বলতে দাও। সে ঠিক বলছে। সেলুকাস তোমাকে কী আশ্বাস দিয়েছে?

তা জেনে আপনার লাভ?

লাভ আমার নয়, তোমার। তোমার পেটের কথাটা জানিয়ে গেলে। পৃথিবীতে অনেক কথা থেকে যায় কীর্তি হিসেবে। হয়তো তোমারটাও থাকবে।

আপনার অনেক সুনাম শুনেছি। কূটকৌশলী বলে দুর্নামও আছে। আপনার এই পরিচয়টাই পেলাম।

আমার পরিচয় জেনে তোমার লাভ নেই, দুর্নাম করেও খুব সুবিধে হবে না। তুমি সেলুকাসের গোপন কিছু জানলে বলো। কিছু অবদান রেখে যাও ভারতবর্ষের জন্য।

অবদান রাখার জন্য আপনি আছেন। আমার জন্য আপনার দেওয়া মৃত্যুদণ্ডই বড় অবদান।

তুমি বলবে না?

আমি বিশ্বাসঘাতক নই।

তাঁর কথায় চাণক্য অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন। বললেন, তুমি মৃত্যুকে ভয় পাও না?

তা পেয়ে কী হবে, ভয় পেলে কি মৃত্যু পিছিয়ে যাবে? না আপনি ছেড়ে দেবেন?

সৈনিকেরা সেনাপতিকে বেঁধে নিয়ে এসেছিল। চাণক্য এবার অদ্ভুত এক কাজ করলেন। বললেন, তার বাঁধন খুলে দাও।

সৈন্যরা একটু দ্বিধায় ছিল। কিন্তু বাঁধন খুলে দিল।

চাণক্য বললেন, তুমি কি জানো তোমার প্রধান সেনাপতি পর্বতরাজের জায়গায় রাজা হতে চেয়েছিল?

জানি।

সেটা তো রাজদ্রোহ, নয় কি?

অবশ্যই।

তাহলে তুমি এই রাজদ্রোহীকে সহায়তা করেছ? করো নি?

আমি অধিনায়কের আদেশ শুনতে বাধ্য ছিলাম।

তা নয়, তুমি ভেবেছিলে সে রাজা হলে তুমি প্রধান সেনাপতি হবে।

এ রকম আমি ভাবি নি, আমি বরং…

আমি বরং কী?

না, কিছু না।

তুমি বলবে না?

সেনাপতি চুপ করে রইলেন।

চাণক্য তাঁর দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলেন। হঠাৎ করে বললেন, সবকিছু তোমার বিবেকের ওপর ছেড়ে দিলাম। কারণ, তোমাকে আমার খুব নীতিবান মনে হয়েছে। সৈন্যদের উদ্দেশে বললেন, ওকে যেতে দাও।

প্রচণ্ড দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে এরা সেনাপতিকে ছেড়ে দিল। সেনাপতি অদৃশ্য হয়ে গেলে সুবন্ধু বললেন, আচার্য, আপনি এটা কী করলেন?

কেন?

শত্রুকে ছেড়ে দিলেন।

তোমরা ওর পেছনে লোক লাগিয়ে রাখো। এতে তার বাহিনীর অবস্থান জানা সম্ভব হবে। তবে আমার বিশ্বাস, সে তার বাহিনী নিয়ে আমাদের সঙ্গেই যোগ দেবে।

সুবন্ধু কিংবা নির্জলা কেউই চাণক্যের কথা আস্থার মধ্যে আনতে পারল না। তবে প্রতিবাদ কিংবা তাদের প্রতিক্রিয়াও জানাল না।

চাণক্য আগেভাগেই সিন্ধু উপত্যকায় এসেছেন। সঙ্গে এসেছে বিরাট একটা সৈন্যবাহিনী এবং বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা। সম্রাট তাঁর হস্তীবাহিনী নিয়ে ধীরে ধীরে আসছেন। পদাতিক বাহিনীর লোকজন তাঁকে অনুসরণ করছে। ইতিহাসের তথ্যমতে, সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সেনাবলের একটা পরিসংখ্যান দেওয়া যেতে পারে :

পদাতিক বাহিনীর সদস্য ছয় লক্ষ, অশ্বারোহী বাহিনীর সদস্য ত্রিশ হাজার এবং হস্তীবাহিনীর সদস্য নয় হাজার।

অন্যদিকে সেলুকাসের সেলুসিড বাহিনীর সেনাদলে আছে দুই লক্ষ পদাতিক সৈন্য, চল্লিশ হাজার অশ্বারোহী এবং ষাট হাজার সহযোগী সৈন্য।

চাণক্যের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, মৌর্য বাহিনীর বিশাল বহরের আবাসন সংস্থান। কারণ, সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এরা ক্লান্ত হয়ে যাবে। আক্রমণের আগে এদের বিশ্রামের প্রয়োজন। তিনি এত বড় বাহিনীকে এক জায়গায় না রেখে আলাদা আলাদা স্থানে রাখার পরিকল্পনা করলেন। পাহাড়ের ওপর বা মাঝখানে সমতল কিংবা মালভূমিতে সেনাশিবির ও ঘোড়ার আস্তাবল স্থাপন করা হলো। পাহাড়ের ওপর থেকে শত্রুদের গতিবিধির নজর রাখা হবে।

গোয়েন্দারা শত্রুদের অবস্থান সম্পর্কে এরই মধ্যে গোপন সংবাদ জানিয়ে গেছে।

তক্ষশীলায় তিনি দীর্ঘকাল ছিলেন। নিজেকে সবকিছুর জন্য এখানেই প্রস্তুত করেছেন তিনি। আলেকজান্ডারের বাহিনীর তাড়া না খেলে এখানেই হয়তো জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থেকে যেতেন। তাই সিন্ধু নদের উপত্যকা ও অববাহিকা সম্পর্কে তাঁর প্রচুর জ্ঞান রয়েছে। এখানকার প্রকৃতি এখন তাঁকে তেমন উদাস করে না। প্রকৃতির সৌন্দর্যকে এখন তিনি বোধ হয় আর দেখতেও পান না। পাহাড়কে মাটির স্তূপ, নদীকে জলের প্রবাহ, পাহাড়ের ওপর জমে থাকা বরফকে ঠান্ডার সমস্যা ছাড়া আর কিছু মনে হয় না তাঁর কাছে। শীতের পাখিদের মজার ভুনা মাংস ছাড়া তাদের উড়াল, ভালোবাসা তাঁর কাছে এখন অর্থহীন।

তবে তিনি স্মৃতিকাতর মানুষ। তক্ষশীলার যাবতীয় স্মৃতি তাঁকে অস্থির করে তুলেছে। কৈশোর, যৌবন আর জীবনের রঙিন ও সাফলের দিনগুলো তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ছুটে যেতে ইচ্ছা করছে স্মৃতিময় স্থানগুলোয়। ভাবলেন, সেনাশিবিরগুলোর কাজ শেষ হলেই তক্ষশীলায় একবার ঘুরে আসবেন।

সুবন্ধুকে নিয়ে তিনি কাজ তদারকি করছিলেন। নির্জলারা ছোটখাটো সংবাদ দিচ্ছে। তদারকির পাশাপাশি তাদের কথাও শুনছেন। অনেক বিষয়ে লক্ষ রাখার তাঁর অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে। পাথর দিয়ে সৈন্যরা পর্যবেক্ষণচৌকি নির্মাণ করছিল। তিনি বললেন, পর্যবেক্ষণ সরাসরি করা যাবে না, তাহলে তিরের আঘাত খেতে হবে। জ্যামিতিক কায়দায় করতে হবে। হাতি ও ঘোড়ার জন্য জল বেশি লাগবে। নদীতীরে এদের রাখতে হবে। হাতি খোলা জায়গায় থাকলেও অশ্বযানসহ ঘোড়াগুলোর ওপর আচ্ছাদন দিতে হবে। অশ্বারোহী ও গজারোহী সৈন্যদের কাছাকাছি অশ্বশালা ও হস্তী নিবাস থাকতে হবে, যাতে খুব দ্রুত এগুলোকে ব্যবহার করা যায়।

সম্রাটের আবাস নির্মাণে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হলো। প্রাকৃতিকভাবে নিরাপদ ও আপৎকালীন সময়ে আত্মরক্ষার সব পথ সামনে রেখে স্থান নির্বাচন এবং যাবতীয় সাজসজ্জার কাজ করা হলো। তাঁর নারী প্রহরীদের জন্য উপযুক্ত অস্থায়ী আবাস নির্মাণ করা হলো কাছাকাছি, যথানিয়মে দূরে পুরুষ রক্ষীদের স্থান নির্ধারণ ও আবাস নির্মাণ সম্পন্ন করা হলো। এসব দেখে চাণক্য বললেন, বুঝলে সুবন্ধু, ভারতের মনীষীরা কিছু মূল্যবান নীতিকথা বলেছেন, অনেকগুলো তুমিও জানো।

চাণক্য কাজ তদারকি করতে করতে, নীতিকথা বলতে বলতে শকুনের চোখে যেন দেখতে পেলেন সেনাপতি সদাচার ভট্ট আসছেন।

তোমাকে কী বলেছিলাম, সুবন্ধু, দেখো কে আসছে।

সুবন্ধু তাকিয়ে অবাক হলেন। প্রহরীরা তাঁকে চাণক্যের কাছে নিয়ে এল।

কী ঠিক করলে তুমি, সেনাপতি?

মহামন্ত্রী, আমি আমার বাহিনী নিয়ে আপনার সঙ্গে যোগ দিতে চাই।

সৈন্য কত?

বারো হাজার।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত?

সবাই নয়।

চলবে। যুদ্ধ ছাড়াও তো কাজ আছে।

তার আগে বলুন, এদের কোনো শাস্তি হবে না।

শাস্তি কেন হবে? এরা এখন আমাদের লোক। তবে কেউ এখানে ভুল করলে নিয়মতান্ত্রিক শাস্তি তাকে পেতে হবে।

এরা কি আমার অধীনে যুদ্ধ করবে?

না, নানা বাহিনীতে ভাগ করে দেওয়া হবে। তোমার সঙ্গেও আমাদের লোকজন থাকবে। তোমার অধীনে কাজ করবে এরা।

সদাচার ভট্ট চলে গেলে চাণক্য বললেন, আমাদের দেশের মৎস্যচাষিরা একটা চমৎকার কাজ করে। নতুন বৃষ্টি হলে কই মাছকে কানে হেঁটে চলে যেতে দেয়, বাধা দেয় না। কেন দেয় না, জানো?

সুবন্ধু বললেন, কেন?

পরের বছর এরা আরও অসংখ্য কই মাছ সঙ্গে নিয়ে পুরোনো জায়গায় ফিরে আসবে বলে। সদাচারকে যেতে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাই। উদ্দেশ্যটা সফল হলো।

এরা সবাই মিলে গোলমাল পাকাবে না তো?

আমার মনে হয় না। ওই সব সৈন্যের আশ্রয় আর আহার্য দরকার। এই নিরাপত্তা পেলে আমাদের পক্ষেই যুদ্ধ করবে। তবে আমি সদাচারের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত নই।

তাহলে?

সময়মতো ব্যবস্থা নেব। এতগুলো শত্রু পেছনে রেখে সামনে এগোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এরা সঙ্গেই থাকুক।

সম্রাট পদাতিক ও হস্তীবাহিনীর বহরে তাঁর দেহরক্ষী নারীদের সঙ্গে এবার মন্দাকিনীকেও নিলেন। মন্দাকিনী আরেক দাসীর হাতে কবুতরসহ খাঁচা তুলে দিলেন। সংবাদ দ্রুত আদান- প্রদানে কবুতরই নিরাপদ। অবশ্য তিরন্দাজ সৈন্যদের ভয় থেকে যায়, পাছে হত্যা করে।

.

পথ দীর্ঘ। তাই স্থানে স্থানে সম্রাটের যাত্রাবিরতি ও রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে সম্রাজ্ঞী দুরধরাও এসেছেন। সম্রাজ্ঞীর অসুস্থতা ও অস্থিরতার কথা চিন্তা করে ভদ্রবাহুর পরামর্শে সম্রাট তাঁকে সঙ্গে নিয়েছেন। সংবাদটি অবশ্য পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানকারী মহামন্ত্রী চাণক্যকে দূত মারফত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্রাজ্ঞী পশ্চিমাঞ্চলের প্রাদেশিক রাজধানী তক্ষশীলায় অবস্থান করবেন। এখানে গান্ধারা রাজ্যের সুন্দর একটি রাজপ্রাসাদ রয়েছে।

পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া সম্রাজ্ঞীকে নিয়ে আসায় মহামন্ত্রী চাণক্য একটু চিন্তিত। কারণ, সব সমস্যা তাঁকেই সামলাতে হয়। সম্রাজ্ঞী অন্তঃসত্ত্বা। তার ওপর কঠিন এক অর্জনের লক্ষ্যে এ যুদ্ধ। সম্রাজ্ঞীর যেকোনো শারীরিক বিপর্যয় সম্রাটের যুদ্ধক্ষেত্রের একাগ্রতা নষ্ট করতে পারে। চাণক্য যুদ্ধের জন্য যে পরিকল্পনা তৈরি করেছেন, তা আবার নতুনভাবে সাজানোর প্রয়োজন দেখা দিল। এ যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সম্রাট স্বয়ং। তাঁর যেকোনো ভুল মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই সর্বাধিনায়কের ছায়া অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে তৈরি করার পরিকল্পনা করলেন তিনি এবং সুবন্ধুকে সম্রাটের সার্বক্ষণিক সহায়তাকারী নিয়োগ দিলেন!

ব্যবস্থাপনা তদারকির কথা চিন্তা করে তিনি সম্রাটের পৌছার আগেই তক্ষশীলায় গেলেন। গান্ধারা রাজপ্রাসাদকে সম্রাট আর সম্রাজ্ঞীর অবস্থানের উপযোগী করে তুললেন। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে পাটালিপুত্রের অনুরূপ রাজকীয় সব ব্যবস্থা সম্পাদন করালেন। সম্রাজ্ঞী আসছেন, স্বাভাবিকভাবে নারী রাজবৈদ্য সঙ্গে থাকার কথা। তারপরও তক্ষশীলার উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বিশেষ করে মহাচিকিৎসক চরকের অনুসারীদের আনিয়ে নিলেন। পাচককে বুঝিয়ে দিলেন কী করে সম্রাটের খাদ্যে ক্রমে ক্রমে বিষের মাত্রা বাড়াতে হবে এবং সম্রাজ্ঞী ও সম্রাটের জন্য আলাদা আহার্যের ব্যবস্থা করতে হবে।

সম্রাজ্ঞীর আগমনের ভালো একটা দিকও দেখলেন তিনি। সম্রাট অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবেন, ভাববেন সম্রাজ্ঞী তাঁর কাছেই আছেন। আর গ্রিক রাজকুমারীকে যদি যুদ্ধ জয় করে অর্জন করা সম্ভব হয়, রাজবন্দী হিসেবে তাঁর সামনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। সম্রাটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্রাজ্ঞী ষড়যন্ত্র করার মতো পাটালিপুত্রের তাঁর অনুগত কাউকে পাবেন না। ব্যাপারটা দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা যাবে।

এখানে সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীর নিরাপত্তার দিকটাও নিশ্চিত করলেন। পাশাপাশি সম্রাজ্ঞীর বিনোদনের ব্যবস্থা করলেন। কারণ, আনন্দঘন সুখময় পরিবেশ সুসন্তান জন্ম দেওয়ায় আনুকূল্য সৃষ্টি করে। যদিও ব্রাহ্মণ্য ধর্ম থেকে তিনি নিজেও সরে এসেছেন, তারপরও শিশু শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি স্থাপন করলেন প্রাসাদের সামনে। সম্রাজ্ঞী তা প্রতিদিন দর্শন করবেন এবং এ রকম শিশু প্রত্যাশা করবেন।

এসব ব্যবস্থা করার পর তিনি নিজেই অবাক হলেন। আসলে সম্রাজ্ঞীর প্রতি কি তিনি এত সহানুভূতিশীল, নাকি মৌর্য সাম্রাজ্যের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীর আগমনকে এতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। এমনটাও হতে পারে, সিন্ধু উপত্যকার উদাস প্রকৃতি তাঁকে কতকটা উদার করে দিয়েছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *