মা এসে কোথায় পা রাখবেন
আমি যে বয়সে দাঁড়িয়ে আছি সেই বয়েসটা হল বীতশ্রদ্ধ হওয়ার, সন্ধিগ্ধ হওয়ার। এই বয়সের মানুষের যা হওয়া উচিত, সব কথাই নেগেটিভ, পজেটিভ কথাবার্তা নেই বললেই চলে। এসবই হল শারীরিক আর মানসিক দুর্বলতার লক্ষণ। মুফতে বেঁচে থাকার বাসনা। সংগ্রামের মানসিকতা চলে গেলেই মানুষ ‘সিনিক’ হবে। ‘সিনিক’ শব্দটার এক কথায় কোনও বাংলা নেই। মনের ভ্যাটভ্যাটে অবস্থা। মনের কোষ্ঠকাঠিন্য। মৃত্যুর ছায়ায় বসে জীবনের উচ্ছ্বাস-উৎসব দেখলে হাড়পিত্তি জ্বলে যেতে বাধ্য। ভুরুর ভাঁজে সদাই যেন ঝুলে আছে অলিখিত বিরক্তি, ‘এসব কী-ই হচ্ছে!’ আলোচক থেকে সমালোচক উত্তীর্ণ হওয়ার পদ্ধতিটা এমনই অপ্রতিরোধ্য স্বয়ংক্রিয় যে আমরা বাধা দিতে পারি না। অনেকটা ‘কলেস্টোরাল’ বা ‘সুগার’ বেড়ে যাওয়ার মতো। এতখানি জীবন খরচ করে যা পাওয়া গেল, তা হল ঈর্ষা আর উন্নাসিকতা। প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মধ্যে এই ব্যাপারে বিশেষ কোনও তফাত নেই। পাশ্চাত্য-জীবনে আছে সর্বগ্রাসী হতাশা। হেমিংওয়ে কোয়েসলারের মতো লেখকরা আত্মহত্যা করেন। সিলভিয়া প্লাথের মতো কবি গ্যাস-স্টোভের মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দেন।
সেকাল শব্দটা বৃদ্ধদের এলাকাতেই ঘোরাফেরা করে। একালে সেকাল এসে ঢোকে বৃদ্ধদের ঘাড়ে চেপে। সেকালের বেড়াল আরও সুন্দরী ও বাধ্য ছিল।
সেকালের পাখি আরও ভালো গান গাইত। কাকের ডাক সেকালে এত কর্কশ ছিল না। মায়েরা ছিলেন, যশোদা, মেয়েরা সব রাধিকা। শ্রীমতীর মতো সব প্রেমের পুরিয়া। সেকালের সন্দেশ শালপাতায় বসে বসেই ঘি ছাড়ত। গব্যঘৃতে এতই গব্য, টানা এক মাস সেবন করলে চিতায় আর ঘি ঢালার প্রয়োজন হত না। পাড়ার ঝুলবারান্দার দিকে তাকালেই দেখা যেত জোড়া জোড়া হরগৌরী ঝুলছেন। হর দেশলাই কাঠি দিয়ে দাঁত খুঁচছেন, গৌরী চ্যাকোর চ্যাকোর করে জরদা পান চিবোচ্ছেন। মাঠে ময়দানে কামধেনুর শীর্ণ সংস্করণ চরছে। দুধের পরিমাণ যৎসামান্য হলে কী হয় একেবারে ফোঁটা ফোঁটা ক্ষীর। কত্তা বৈশাখে দুধ খেয়েছিলেন, আষাঢ়ের শেষেও চিরুনি গোঁফের ডগায় ডগায় ঘি ব্যাড়ব্যাড় করছে।
সেকালে আর একালের যে মস্ত তফাত, সেটা হল, সেকালটা ছিল মানুষের, একালটা হল মন্ত্রের। যে কারণে একালের যেকোনও করিৎকর্মা মানুষকে আড়ালে বলা হয়, একটি ‘মন্তর’। পঞ্চাশ, ষাট বছর আগে আমাদের এই কম আলোর এলাকায় কত জায়গা ছিল, মাঠ, পুকুর, সরোবর, দিঘি, প্রবাহিত গঙ্গা, কম মানুষ, বড় বড় জমিদারদের দুর্ভেদ্য বাগান বাড়ি, দেবালয়, বিশাল গাছ, আম্র কানন। তীব্র দেবালোক, শীতল ছায়া, উৎকন্ঠাশূন্য অসন্দিগ্ধ পক্ষীকুল। মানুষের শ্রম আর বিশ্রামের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত একটা সাম্য ছিল। এক জায়গায় বসে দুদণ্ড গল্পসল্প করার সময় ছিল। সকলেই সকলকে চিনত। দু:খে দু:খী, সুখে সুখী হত। গোটা গ্রামটাই ছিল বৃহৎ একটা পরিবারের মতো। কোনও পরিবারে কারও বেহাল দেখলে যাঁরা গ্রামের মুরুব্বি তাঁরা সমবেত হয়ে বোঝাবার, ফেরাবার চেষ্টা করতেন। বিরোধের অবসান ঘটিয়ে বিবাদমান দুই পক্ষকে মিলিয়ে দিতেন। রাগীকে শান্ত করতেন, নির্বোধে বোধ আনতেন। অলসকে কর্মমুখী করতেন। মদ্যপকে তিরস্কার করতেন। সকলেই সকলকে নজরে রাখতেন বলে আমাদের শৈশবটা ছিল স্বপ্নের মতো। স্বপ্নের গ্রামে, স্বপ্নের সবুজ মাঠে, স্বপ্নের জলাশয়ের ধারে আমরা একদল শ্রীদাম, সুদাম, বলরাম। আমাদের শৈশবে অরণ্যদেব, স্পাইডারম্যান, ম্যানড্রেক তখনও জন্মায়নি। আমাদের অরণ্যের একমাত্র অরণ্যচারী ছিলেন শিশুদের চিরসখা মধুসূদন দাদা। আফ্রিকার অরণ্যে ছিলেন টারজান। বহুকালের গুজব, বড় বড় ব্রিজ তৈরির সময় প্রতিটি পিলারের ভিতে নরবলি দিতে হয়, তা না হলে ভেঙে পড়ে যায়। কিছুতেই গাঁথা যায় না। বড় বড় ‘নর’ কন্ট্রাক্টররা পাবে কোথায়, তাই ভুলিয়ে ভালিয়ে নর শিশু নিয়ে গিয়ে বলি দিত। বালির ব্রিজ তৈরির সময় আমাদের গ্রামের অনেক শিশু নাকি হারিয়ে গিয়েছিল। রটনা অবশ্যই। ভয়ংকর ভাবনার মধ্যে নির্বোধ আতঙ্কের একটা আনন্দ থাকে। সেকালের সঙ্গে একালের সেতু তৈরিতে একালের প্রায় সব শিশুকেই কেরিয়ারের হাড়িকাঠে বলি দেওয়া হয়েছে। একালের মানব শিশুর শৈশব নেই।
আমাদের গ্রাম দেশবিভাগের পর জনঅরণ্যে পরিণত হল। হারিয়ে গেল মাঠময়দান। টলটলে পদ্মভাসা জলাশয় হয়ে গেল নিরেট ভূখণ্ড। চতুদির্কে ‘বড়ির মতো বাড়ি। কাটা পড়ল আমবাগান, কুলবাগান। অলস এবং বেকার জমিদার পুত্ররা দেহজ্বালা জুড়াতে ডবল ‘ম’-এ ডবল ভোজে ধার করা টাকা ঢেলে বিশাল বিপুল বাগান বাড়িতে একালের বেওসায়ী ঘুঘু চড়িয়ে দিলেন। কড়িকাঠ আর হাতদশেক লাকলাইন দড়ির কল্যাণে নিজেরা শহিদ হয়ে স্বর্গারোহন করলেন।
বেওসায়ীরা ঘাস বোঝে না কাঠা আর বিঘে বোঝে। আকাশ বোঝে না ছাত বোঝে। চাঁদ বোঝে না বোঝে চাঁদি। অমন সুন্দর ছবির মতো জনপদ একটা ‘ঘেটোয়’ পরিণত হল। নতুন নতুন মানুষ এসে নতুন মুল্যবোধের চর্চা শুরু করল, যার মূল নীতি হল, ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম।’ চতুর্দিকে ভুরু কোঁচকানো সন্দেহ প্রবণ মানুষ। কথা মানেই কলহ। স্পর্শ মানেই প্রহার।
শরৎ এসে কোথায় পা রাখবে! শিশির ঝরবে কোন ঘাসের ডগায়! কোন শিশু কচিকচি হাতে অঞ্জলি অঞ্জলি শিউলি তুলে নেবে! ঘাসে ঢাকা সবুজ সেই মাঠ এখন স্মৃতি। ভোরবেলা যে মাঠে দাঁড়িয়ে পুজো আসার পনেরো দিন আগেই আমরা শুনতে পেতুম, দূরে বহু দূরে মেঘলোকে কোথাও ঢাক বাজছে, মা আসছেন, মা আসছেন মেঘের ভেলায় চড়ে। রাজহাঁসে চড়ে আমাদের প্রিয় দেবী মা সরস্বতী। আমরা নির্ভেজাল খাঁটি বাংলা স্কুলে পড়েছি। ত্যাগী এবং অতিশয় রাগি রাগি শিক্ষক মহাশয়েরা অতি সামান্য দক্ষিণায় সন্তানবৎ আমাদের মানুষ করার অক্লান্ত চেষ্টা করতেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর রাখতুম না। আমাদের স্কুল, আমাদের শিক্ষকমশাইরাই ছিলেন আমাদের আপনজন। আমাদের সেকেলের নাম সব এমন ছিল, যা সহজেই বিকৃত করা যায়। নেলো, ন্যাপলা, হেবো, শিবে। মাস্টারমশাইরা এই নামেই ডাকতেন। কন্ঠস্বরের পরিবর্তনেই বোঝা যেত শাসন না স্নেহ! সেই সরল পবিত্র, সেকেলে শিক্ষকরা আমাদের মানুষ হওয়ার মন্ত্র দিতেন। শিক্ষা মানে জীবন। মানুস দ্বিপদ, শিক্ষা চতুষ্পদ, জ্ঞান, চরিত্র, স্বাধীনতা, উদারতা। আমাদের বিদ্যালয় ঘিরে বিরাজ করত পবিত্র একটা গন্ধ। সেই পবিত্রতায় মা সরস্বতী এসে যখন আসন বিছাতেন তখন আমাদের অবস্থা হত, ঘরেই থাকা দায়। একালে স্কুলের পুজোয় কেউ যায় না। লুচি আলুরদম, বোঁদের স্ট্যাটাস নেই। পেটেও সহ্য হয় না। প্যাস্ট্রি, প্যাটিস পিৎজা, রোলের যুগ।
সেই মাঠে দাঁড়িয়ে আমরা অনুভব করতুম, মা আসছেন সপরিবারে। বড়রা বলতেন, দ্যাখ দ্যাখ কেমন পুজো পুজো রোদ, এই যে আকাশে বাতাসে তাঁর আগমনী এই বোধটা একালের মন থেকে হারিয়ে গেছে। একমাস আগেই মাঠে বাঁশ পড়ে গেল। মায়ের মণ্ডপ তৈরি হবে। বাঁশ তেমন ভালো জিনিস নয়, বড় হয়ে হাড়ে হাড়ে বুঝেছি। সেই কিশোর বয়সে বাঁশ দেখেই কী আনন্দ! মায়ের বাঁশ এসেছে। ধীরে ধীরে বাঁশের পাকাপোক্ত গঠনটি যেই খাড়া হল, আমাদের আর পায় কে! বাঁশ বেয়ে বানরের দল উঠে পড়ল টঙে। বাঁশ থেকে বাঁশে চোর পুলিশ খেলা। নীচে বড়রা এসে হাঁ করে ওপর দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁদের বাড়ির দুরন্ত শাবকটি টঙে ঝুলছে বিপজ্জনকভাবে। তিনি চিৎকার করছেন, নেমে আয় বাঁদর। যে ঝুলছে সে জানে নামলেই বিপদ। পালের গোদা পটলা আরও ওপরে। সবাই বলছেন, ‘ওটা বাঁদরেরও বাঁদর। ওইটার জন্যে সবক’টা বাঁদর বখে গেল। তা না হলে এরা তো এত বাঁদর ছিল না।’
ওপরে ঝুলতে ঝুলতেই শুনতে পেতুম উদারপন্থী কেউ একজন, তিনি হলেন আমাদের সকলের সত্যেনকাকু, ব্যায়ামবীর সাঁতরে গঙ্গা পারাপার করেন, বলছেন, ‘বলাই! ভুলে গেছিস, আমরা আমাদের ছেলেবেলায় কী করেছি! মা আসার আগে রামচন্দ্রের বাহনদের পাঠিয়ে দেন! ছেলেবেলায় এই ধারাবাহিকতা হঠাৎ হারিয়ে গেল। এখন আর কেউ বাঁদর থেকে মানুষ হয় না। মানুষ থেকে বাঁদর হয়।
পর্যায়ক্রমে কানমলা ও ভারায় ওঠার মধ্যেই তেরপল চেপে যেত, যেন সার্কাসের তাঁবু। ঝুলে থাকা নারকোল দড়ি মাথা উঁচিয়ে থাকা বাঁকাচোরা ছ’ইঞ্চি পেরেক। তেরপলের ফুটোয় ফুটোয় শরতের নীল আকাশের উঁকি। চেঁদো মাটিতে একটা বাটি পুঁতে দিয়ে বলত, ‘যা, বৃষ্টির পথ বন্ধ করে দিলুম। এই কায়দাটা আমি পঞ্চা গুণীনের কাছে জেনেছি।’ একজন সন্দেহ প্রকাশ করলে ‘ব্যাং না বাটি!’ লেগে গেল ধন্ধুমার। গুণীন ইহলোকে নেই। তখন পেল্লায় পেল্লায় মানকচু গাছের ঝোপের তলা থেকে শেতলা একটা ব্যাং ধরে নিয়ে এল। জলজ্যান্ত একটা ব্যাংকে কবর দিলে, সে তো মরেই যাবে। আবার গবেষণা! সিদ্ধান্ত হল বাটি। ব্যাংটাকে ছাড়া মাত্রই লাফ। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য পিচ করে আমাদের গায়ে হিসি। গণেশ বললে, ‘দেখলি, তো, মানুষের কোনওদিন উপকার করতে নেই!’
চতুর্থীর মধ্যরাতে মা এলেন প্যান্ডেলে। ঘরে ঘরে আমাদের মায়েরা জাগিয়ে দিলেন, ‘ওঠ ওঠ মা এসে গেছেন।’ ছোট ছোট। ঘুম ভাঙা চোখে আমরা হাঁ করে তাকিয়ে আছি। দেবদেবীরা সামনে। তখনও গয়নাগাঁটি পরেননি। হাতের মুঠো আছে অস্ত্র নেই। এতেই যা রূপ খুলেছে। আর কিছুর দরকার নেই!
প্রত্যেকবার যা হয়, এবারেও তাই। মা লক্ষ্মী আর মা সরস্বতী পোজিশন! কে বাঁদিকে, কে ডানদিকে! ‘ডাক তারাদাকে। একবার বসে গেলে আর নাড়ানো যাবে না!’ শ্যামলকাকু বললেন, ‘আরে আবি বলছি….’
‘চুপ, তুমি একটা কথাও বলবে না, তোমার জন্যেই আমাদের এই সন্দেহ। সন্দেহটা তুমিই তৈরি করেছ! গতবার সন্ধি পুজার সময় ধরা পড়ল, লক্ষ্মী, সরস্বতী, প্লেস চেঞ্জ করেছেন!’
‘কিন্তু কীরকম ম্যানেজ দিলুম বল! সরস্বতীর বীণাটা খুলে এনে লক্ষ্মীর হাতে, আর লক্ষ্মীর ঘটটা সরস্বতীর হাতে। প্যাঁচাটাকে স্রেফ এদিক থেকে ওদিকে, আর রাজহাঁসটাকে ওদিক থেকে এদিকে।’
একালে তো তাই হল। বিদ্যা আর বিনয় দেয় না দুর্বিনীত করে। যে বিদ্যা শুধু জ্ঞান দেয় সে বিদ্যা বিদ্যাই নয়। বিদ্যা হবে অর্থকরী! স্মৃতি, শ্রুতি, ন্যায় কে তোমারে চায়! বাদ্যযন্ত্র, সরোদ, সেতার আমেরিকায় ডলারে বাজে। ছেলেবেলায় অসুরকেই ভীষণ ভালো লাগত। কারণ, অসুর একেবারে আমাদের চোখের সামনে। গোলাগুলি ফুলিয়ে বুক চিতিয়ে বাস্তবভূমিতে। সিংহটা যেন তার পোষা কুকুর! আর মা দুর্গা সেই কোন ওপরে নাচের ভঙ্গিতে টাল খাচ্ছেন। অনেকটা পিছিয়ে না গেলে মুখ দেখা যায় না। আমরা বলাবলি করতুম, ‘মায়ের খুব রিস্ক। ওইভাবে কেউ যুদ্ধ করে!’ হারু যোগ করত, ‘সিলিপ খেয়ে পড়ে গেলে মহা কেলো।’
সেকালের পুজো একালে মহাপুজোর রূপ নিয়েছে। ভক্তি, কল্পনা টাকা চাপা পড়ে গেছে। মহাজলুস। প্রমোটাররা পুজো প্রমোট করছেন। ঘটের চেয়ে ঘটা বড়। প্রতিমার চেয়ে প্যান্ডেলের আকর্ষণই বড়। মা কখনও হোয়াইট হাউসে, না হয় ভিক্টোরিয়ায়। পুজো এখন মার্কেট আর মার্কেটিং। ঢাক বাজলে একালের শিশুদের বুক নেচে উঠে না। ইন্টারনেটে পুজো দেখা।
তাঁতের লাল ডুরে খড়খড়ে শাড়ি পরা মায়েরা কাঁখে তাঁর শিশুটিকে নিয়ে বেড়ার ধারে দাঁড়িয়ে আছেন। শিশুটির একটি পা পেছনে দুলছে। কাজল চটকানো মুখ। মুখে বুড়ো আঙুল। পৃথিবীর মা অনিমেষে জগতের মাকে দেখছেন। একালে মা যাদের কাছে পাহাড় ছেড়ে আসেন তারাই সব পাহাড়ে পালায়। একালের কেউ কাঁদতে কাঁদতে বলে না—’মা আবার এসো!’