যযাতির কন্যা। বিশ্বামিত্রের তাঁর শিষ্য গালবের কাছ থেকে গুরুদক্ষিণা হিসেবে আটশত অশ্ব চেয়েছিলেন যাদের কান্তি হবে চন্দ্র-শুভ্র আর একটি কর্ণ হবে শ্যামবর্ণ। সেই গুরু দক্ষিণা সংগ্রহের জন্য গালব যখন রাজা যযাতির কাছে গেলেন, তখন যযাতি গালবকে বললেন ওঁর কন্যা মাধবীকে নিয়ে অন্য রাজাদের কাছে যেতে। মাধবীর শুল্কস্বরূপ রাজারা নিশ্চয় গালবকে তাঁর অভিষ্ট আটশত অশ্ব দেবেন। গালব মাধবীকে নিয়ে অযোধ্যার রাজা হর্যশ্বের কাছে যেতে তিনি বললেন ওঁর কাছে মাত্র দুই শত ঐ জাতীয় অশ্ব আছে। গালব যদি ওঁকে এই শুভলক্ষণা কন্যার গর্ভে একটি পুত্র উৎপাদন করতে দেন,তাহলে সেই দুই শত অশ্ব উনি গালবকে শুল্কস্বরূপ দেবেন। সেই শুনে মাধবী গালবকে বললেন যে, তিনি ওঁকে দান করতে পারেন। কারণ এক ব্রহ্মবাদী মুনির বরে মাধবী প্রসবের পরেই আবার কুমারী-রূপ পাবেন। অতএব এই ভাবে গালব যদি ওঁকে আরও তিন জন রাজাকে দান করতে পারেন, তাহলেই গালব তাঁর আট শত অশ্ব পেয়ে যাবেন। গালব মাধবীর কথা শুনলেন। যথাসময়ে মাধবী বসুমনা নামে হর্যশ্বের একটি পুত্রের জন্ম দিলেন। পুত্রের জন্ম হলে প্রতিশ্রুতি অনুসারে হর্যশ্ব মাধবীকে গালবের হাতে প্রত্যর্পণ করলেন। গালব এরপর মাধবীকে নিয়ে প্রথমে কাশীরাজ দিবোদাস এবং পরে ভোজরাজ উশীনরের কাছে গেলেন। দুজনেই দুই শত অশ্ব কন্যাশুল্ক দিয়ে মাধবীর গর্ভে পুত্র উৎপাদন করলেন। দিবোদাসের পুত্রের নাম হল প্রতর্দন আর উশীনরের পুত্রের নাম শিবি। আর কারোর কাছে ঐ রূপ অশ্ব না পেয়ে গালব বিশ্বামিত্রকে গুরুদক্ষিণাশ্বরূপ ছয় শত অশ্ব দিয়ে বললেন যে, অবশিষ্ট দুই শত অশ্বের পরিবর্তে বিশ্বামিত্র যেন এই কন্যাকে গ্রহণ করেন। বিশ্বামিত্রের সঙ্গে থাকালীন মাধবীর অষ্টক নামে একটি পুত্র হল। মাধবীকে গালবের হাতে দিয়ে বিশ্বামিত্র বিদায় নিলে, গালব মাধবীকে যাযাতির হস্তে প্রত্যর্পণ করেন। এর কিছুদিন পরে যযাতী মাধবীর স্বয়ংবরের আয়োজন করেন, কিন্তু মাধবী কাউকেই বরমাল্য না দিয়ে তপস্বিনী হয়ে যান। যযাতি যখন স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে অন্তরীক্ষে এসেছিলেন, তখন মাধবীর এই চারপুত্র যযাতির সঙ্গে ধর্মালোচনা করেন। মাধবীও সেখানে এসেছিলেন এবং হঠাৎ গালবও সেখানে উপস্থিত হন। ওঁরা সকলে ওঁদের তপস্যার কিছু ফল দান করায় যযাতি আবার স্বর্গে ফিরে যেতে পারেন।