।। মহাবতীর যুদ্ধ বর্ণনম্।।
শ্রাবণে মাসি সংপ্রাপ্তে দেহলী চ মহীপতিঃ। নাগোৎসবায় প্রযযৌ সদৈব কলহপ্রিয়ঃ।।১।। দৃষ্ট্বা নাগোৎসবং তত্র গীতনৃত্যসমন্বিতম্। মহীরাজ্যং নমস্কৃত্য বচনং প্ৰাহ নম্ৰধীঃ।।২।।
।। মহাবতীর যুদ্ধ বর্ণন।।
এই অধ্যায়ে মহাবতী পুরীতে যুদ্ধ বৃত্তান্ত বর্ণন করা হয়েছে। সূতজী বললেন–শ্রাবণ মাস সমুপস্থিত হলে কলহপ্রিয় মহীপতি নাগোৎসব দেখতে দেহলী নগরীতে চলে গেলেন। সেখানে নাগোৎসবের নৃত্য গীত দেখে এবং মহীরাজকে প্রণাম করে নম্রভাবে বললেন–হে রাজন, কীর্তিসাগরের মধ্যে স্থি মহীবতী গ্রামে অত্যন্ত সুন্দর বামনোৎসব হয়। যব্রীহি সমন্বিত হয়ে আপনি সেখানে গিয়ে তা দেখুন, আমার বচন আপনি অবশ্য পালন করুন।। ১-৩।।
রাজন্ মহাবতীগ্রামে কীর্তিসাগরমধ্যগে। বামনোৎসবমত্যং তং মবব্রীহিসমন্বিতঃ।। পশ্যত্বং তত্র গত্বা চ মমৈব বচনং কুরু।।ত।। ইতি শ্রুত্বা মহীরাজো ধুন্ধুকারেণ সংযুতঃ। সপ্তলক্ষবলৈযুক্তশ্চামুন্ডেন সমান্বিতঃ। প্রাপ্ত শিরীষবিপিনে তত্র বাসমকারয়ৎ।।৪।। মহীপতিস্তু নৃপতিং নত্বা বৈ চন্দ্ৰবংশিনম্ উবাচ বচনং দুঃখী ধুর্তা মায়াবিশারদঃ।।৫।। রাজন্ প্রাপ্তো মহীরাজো যুদ্ধার্থী ত্বামুপস্থিতঃ। চন্দ্রাবলীং চ তনয়া ব্রহ্মানন্দং তবাত্মজম্। দিব্যলিংগং স সম্পূজ্য বলাৎকারাদ্ গ্রহীয্যতি।।৬।। তস্মাত্ত্বং স্ববলৈঃ সার্দ্ধং ময়া সহ মহামতে। ছঘনা তং পরাজিত্য নগরেঽস্মিসুখী ভব।।৭।।
সে কতা শ্রবণ করে মহারাজ ধুন্ধুকারের সঙ্গে সাতলক্ষ সেনা সঙ্গে নিয়ে এবং চামুণ্ডাকে নিয়ে শিরীষ বনে চলে গেলেন। সেখানে তিনি নিবাস করতে লাগলেন। সেখানে মহীপতি উপস্থিত হয়ে চন্দ্র বংশীয় রাজাকে প্রণাম করলেন এবং প্রচন্ড দুঃখী, ধূর্ত এবং মায়াবিশারদ সেই মহীপতি তাঁকে বললেন- হে রাজন, মহীরাজ যুদ্ধ করার ইচ্ছাতে তোমার কাছে এসে উপস্থিত হয়েছে। তিনি আপনার চন্দ্রাবলী কন্যা তথা পুত্ৰ ব্ৰহ্মানন্দকে দিব্যলিংগ পূজার জন্য বলাৎকার পূর্বক নিয়ে যাবেন। এই কারণে হে মহাপতি, আপনি আপনার সেনা সহযোগে আমার সাথে ছলপূর্বক তাকে পরাজিত করুন এবং আপনি পরমসুখে এই নগরে বসবাস করুন।। ৪-৭।।
ইতি শ্রুত্বা দেববশো রাজা পরিমলো বলী। চতুলক্ষবলৈঃ সার্দ্ধং নিশীথে চ সমাগতঃ।।৮।। শয়িতান্ ক্ষত্রিয়াঙ্কুরান হত্বা পঞ্চসহস্রকান্। শতঘ্নীং রোষণীং চক্রে বহুশূরবিনাশিণীম্।।৯।। তদোত্থায় মহীরাজঃ কটিমাবধ্য সংভ্রমাৎ। বৈরিণং পরমং মত্বা মহদ্ যুদ্ধম্ অচীকরৎ।।১০।। যুদ্ধয়ন্ত্যোঃ সেনয়াস্তত্র মলতা পুত্র গৃদ্ধিনী। শারদামাদরাদ্ গত্বা পূজয়ামাস ভক্তিতঃ।।১১।। দেবদেবি মহাদেবি সর্বদুঃখবিনাশিনি। হর মে সকলং বাধাং কৃষ্ণাংশং বোধয়াশুচ।।১২।। জপ্তা যুতমিমং মন্ত্রং হুত্বা তর্পনমাজনে। কৃত্বা সুম্বাপ তদ্বে মনস্তদা তুষ্টা স্বয়ং শিবা।।১৩।। মলনে মহতী বাধা ক্ষয়ং যাস্যতি মা শুচঃ।।১৪।।
একথা শ্রবণ করে দেববশীভূত বলী পরিমল রাজা নিজ চারলক্ষ সেনা নিয়ে অর্ধরাত্রে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। সেখানে শয়নকারী পঞ্চসহস্র ক্ষত্রিয়কে তিনি হত্যা করলেন। পুনরায় বহু শত্রুহননকারী শতঘ্নী বাণের তোপ দাগলেন।। তখন মহীরাজ সম্ভ্রমে উত্থান করে কটি বন্ধন করে তাকে পরমশত্রু মনে করে মহাযুদ্ধ করেছিলেন।। ৮-১০।।
সেখানে দুই পক্ষের সেনাদের যুদ্ধের পর মলনা পুত্র গৃদ্ধিনী শারদাদেবীর কাছে গিয়ে প্রভূত সমাদর এবং ভক্তিভাবে পূর্ণ হয়ে তার পূজা করেছিলেন। হে দেবি, হে মহাদেবি, তুমি সবার দুঃখ বিনাশকারী। এই সময় আমার সম্পূর্ণ বাধা হরণ করো এবং শীঘ্র একথা কৃষ্ণাংশকে বলে দাও।। ১১- ১২।।
সে দশহাজার বার মন্ত্রজপ করে পুনরায় হোম করে এবং যথাবিধি তর্পণ করে তথা মার্জনা করলেন এবং রাত্রে তিনি সেখানেই শয়ন করলেন। তথা শিবা প্রসন্ন হয়ে স্বয়ং এসে বললেন। হে মলনে, তোমার মহাবাধা ক্ষয় প্রাপ্ত হবে, তুমি চিন্তা কোরো না।। ১৩ -১৪।।
ইত্যুক্ত্বা শারদা দেবী কৃষ্ণাংশং প্রতি চাগমৎ। পুত্র তে জননী ভূমিমহীরাজেন পীড়িতা। ক্ষয়ং যাস্যতি শীঘ্রং চ তস্মাত্বং তাং সমুদ্বর।।১৫।। ইতি শ্রুত্বা বচো দেব্যাসঃ বীরো বিস্ময়ান্বিতঃ। দেবকীং প্রতি সংপ্রাপ্তঃ কথয়ামাস কারণম্।।১৬।। সাতু শ্রুত্বা বচো ঘোরং স্বর্ণবত্যা সংমন্বিতা। রুরোদ ভূশমুদ্ধিগ্না বিলপ্য বহুধা সতী।।১৭।। কৃষ্ণাংশস্তু তদাদুঃখী দেবসিংহমুবাচ হ। কিং কর্তব্যং ময়াবীর দেহ্যাজ্ঞাং দারুণে ভয়ে।।১৮।। তচ্ছুত্বা তেন সহিতো লক্ষনেন সংমন্বিতঃ। যযৌ ভীমসেনাংশ সেনাপতিরুদারধীঃ। সপ্তলক্ষবলৈঃ সার্দ্ধং বিনাহ্লাদেন সংযযৌ।।২০।
মলনাকে একথা বলে দেবী শারদা কৃষ্ণাংশের কাছে গিয়ে তাকে বললেন, হে পুত্র, তোমার মাতৃভূমি এই সময় মহীরাজের দ্বারা পীড়িতা। শীঘ্র তা যায় প্রাপ্ত হবে, তুমি শীঘ্র তা উদ্ধার কর।। ১৫।।
দেবীর এইরূপ বচন শ্রবণ করে সেই বীর অত্যন্ত বিস্মিত হলেন এবং দেবকীর কাছে গিয়ে সমস্ত কারণ তাকে শোনালেন।। ১৬।।
তিনি এই সব কথা শ্রবণ করে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হলেন এবং স্বর্ণবতীর সঙ্গে অত্যন্ত রোদন করতে লাগলেন এবং বিলাপ করে অত্যন্ত পীড়া লাভ করলেন।। ১৭।।
কৃষ্ণাংশও সেই সময় অত্রন্ত পীড়িত হয়ে দেবসিংহকে বললেন, হে বীর, আমার এই সময় কি করা উচিৎ। আমার প্রচন্ড ভয় উৎপন্ন হচ্ছে, আপনি আমাকে আজ্ঞা করুন। সে কথা শ্রবণ করে কৃষ্ণাংশের সাথে তিনিও লক্ষণ দিগ্বিজয় করতে মহাবতী গেলেন।। ১৮-১৯।।
ভীমসেনাংশ উদারবুদ্ধি তালন সেনাপতি পদে আসীন্ হয়ে সাতলক্ষ সেনা নিয়ে আহ্লাদ বিনা সেখানে গেলেন। কল্প ক্ষেত্রে পৌছে যোগীবেশ ধারণ পূর্বক সেই দারুণ বনে যে সেনা ছিল তাতে নিবেশ করেছিলেন। ২০-২১।।
কল্পক্ষেত্র মুপাগম্য যোগিনস্তে তদাভবন্। সেনাং নিবেশয়ামাস বিপিনে তত্র দারুণে।।২১।। কৃষ্ণাংশস্তালনো দেবো লক্ষনো বলত্তরঃ। গৃহীত্বা লাস্যবস্তুনি যুদ্ধভূমিমুপাগমন্।।২২।। সপ্তাহং চ তয়োযুদ্ধং জাতং মৃত্যুবিবৰ্দ্ধনম্। সপ্তমেহহনি তে বীরাঃ সম্প্রাপ্তা রণমুদ্ধনি।।২৩।। তস্মিন্দিনে মহাভাগঃ মহদযুদ্ধ মবৰ্তত।।২৪।। দষ্টা পরাজিতং সৈন্যং রাজা পরিমলো বলী। রথস্থশ্চাপমাদায় মহীরাজমুপাযযৌ।।২৫।। যাদবশ্চ গজারুঢ়স্তদা চন্দ্রাবলী পতিঃ। ধু:;কারং সমায় ধনুযুদ্ধমচীকরৎ।।২৬।। হরিনাগরমারুহ্য ব্রহ্মানন্দ মহাবলঃ। তারকং শত্রুমাহুয় ধনুর্দ্ধং চকারহ।।২৭।।
কৃষ্ণাংশ তালন-দেবসিংহ এবং বলবান্ লক্ষণ সকলে লাস্য বস্তু গ্রহণ করে যুদ্ধ ভূমিতে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সাতদিন ধরে দুই পক্ষের মহাযুদ্ধ হয়েছিল। সপ্তদিনে সেই বীরগণ রণতুঙ্গে উপস্থিত হল। হে মহাভাগ, সেই দিন মহাযুদ্ধ হয়েছিল।। ২২ -২৪।।
রাজা পরিমল সৈন্যদের পরাজিত দেখে রথস্থিত হয়ে ধনুষ গ্রহণ করে মহীরাজের নিকট গেলেন।। ২৫।।
সেই সময় চন্দ্রাবলী পতি যাদব হস্তীর উপর সংস্থিত ছিলেন। তিনি ধুন্ধুকারের সঙ্গে ধনুযুদ্ধ করেছিলেন। মহাবলবান্ ব্রহ্মানন্দ হরিনগরে স্থিতহয়ে তারক শত্রুকে ডেকে তার সঙ্গে ধনুযুদ্ধ করেছিলেন।। গজপ সংস্থিত রণজিৎ মর্দন রাজপুত্রকে ডেকে তার সাথে ধনুযুদ্ধ করেছিলেন। তিনি নিজ শরের দ্বারা প্রহার করেছিলেন এবং তার পুত্রকে হত্যা করেছিলেন।। ২৬ -২৮।।
মর্দনং রাজপুত্রং চ রণজিদ্ গজসংস্থিতঃ। স্বশরৈস্তাড়য়ামাস সৎসুতং চ জধান হ।।২৮।। রূপনো বৈ সরদনং হয়ারুঢ়ো জগাম হ। আভীরীতনয়ো জাতো মদনো নাম বৈ বলী। নৃহরং রাজপুত্রং চ শংখাংশশ্চ জগামহ।।২৯।। তেষু সংগ্ৰামমেতেষু চা মুন্ডোহযুতসৈন্যপঃ। মহীপতেশ্চ বচনং মত্বা নগরমাযযৌ।।৩০ ।। দদর্শ নগরীং রম্যাং চতুবর্ণসমন্বিতাম্। ধনধান্যযুতাং বীরো দেবভক্তি পরায়নঃ।।৩১।। মহীপতিস্ত বৈ ধূর্তো দুর্গদ্বারি সমাগতঃ। চামুন্ডেন যুতঃ পাপী রাজগেহমুপাযযৌ।।৩২। মলতা ভ্রাতরং দষ্টা বচনং প্ৰাহ দুঃখিতা। ভাদ্রকৃষ্ণাষ্টমী চাদ্য সবত্রী হি গৃহে স্থিতম্।।৩৩।।
রূপণ অশ্বারূঢ় হয়ে সরদনে উপস্থিত হলেন। আভীরী তনয় মদন নাকতম বলী জাত হয়েছিলেন। রাজপুত্র নূহরের কাছে যুদ্ধ করার জন্য শংখাংশ গিয়েছিলেন। এদের সকলকে সংগ্রামে ব্যগ্র রাখার জন্য অযুত সেনার স্বামী চামুন্ডা মহীপতির বচন শুনে নগরে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন।। ২৯ -৩০।।
তিনি চারবর্ণের লোক সমন্বিত ধন্য ধান্য পরিপূর্ণ নগরী দেখলেন। সেখানে দেবী ভক্তি পরায়ণ বীর ছিলেন। ধূর্ত মহীপতি দূর্গ দ্বারে আগত হয়ে চামুন্ডার সঙ্গে পাপী রাজ গৃহে আগত হলেন।। ৩১ -৩২।।
মলনা যখন ভাইকে দেখলেন তখন অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে তাকে বললেন আজ ভাদ্রপদ কৃষ্ণাষ্টমী তিথি এবং যব্রীহি গৃহে আছে। সুপুন্য জলের সংস্থান কীর্তি সাগরও আছে। কিন্তু তিনি তা প্রাপ্ত হননি। মহাপাপী মহারাজ বামনোৎসবে এসে উপস্থিত হয়েছে।। ৩৩-৩৪।।
ন প্রাপ্তং জলসংস্থানে সুপুণ্যে কীর্তিসাগরে। মহীরাজো মহাপাপী বামনোৎসবমাগতঃ।।৩৪।। বিনাহ্লাদং চ কৃষ্ণাংশং মহদ্ দুঃখমুপাগতম্। ইত্যুক্তরসঃ বিহস্যাহ ব্রাহ্মণোহয়ং মহাবলী। কান্যকুব্জাৎসমায়াতঃ কৃষ্ণাংশেন প্রযোজিতঃ।।৩৫।। দেবীদত্তশ্চ নান্মাহয়ং স তে কার্যং করিষ্যতি। শ্রুত্বা চন্দ্রাবলী দেবী সর্বভূষণসংযুতা।।৩৬।। কামাগ্নিপীড়িতং বিপ্রং চামুন্ডং চ দদর্শ হ। মাতরং প্রতি চাগম্য বচনং প্রাহ নির্ভরম্।।৩৭। ধূতোহয়ং ব্রাহ্মণো মাতনিশ্চয়ং মাং হরিষ্যতি। কোহয়ং বীরোণ জানামি কথং যামি পতিব্ৰতা।।৩৮।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্যা লজ্জিতঃ স মহীপতিঃ। চামুন্ডেন যুতঃ প্রাপ্তো যত্রাভূৎ স মহারণঃ।।৩৯।।
আহ্লাদ এবং কৃষ্ণাংশ বিনা তিনি মহাদুঃখে উপস্থিত হয়েছেন। এই কথা বলে তিনি সহাস্যে বললেন–সেই ব্রাহ্মণ মহাবলবান্ এবং কান্য কুঞ্জ থেকে কৃষ্ণাংশ কর্তৃক প্রেরিত হয়েছেন।। তার নাম দেবী দত্ত এবং সে তোমার কার্য করে দেবে। চন্দ্রাবলী দেবী সে কথা শ্রবণ করে সমস্ত ভূষণ সংযুক্ত হয়ে গেলেন।। তিনি দেখলেন বিপ্র চামুন্ডা কামাগ্নির দ্বারা পীড়িত। তিনি নিজমাতাকে বললেন, সেই ব্রাহ্মণ প্রভূত ধূর্ত এবং নিশ্চয়ই সে আমাকে হরণ করবে। তিনি বাস্তবে কোনো বীর কিনা সেকথা আমি জানি না। আমি পতিব্রতা নারী আমি কিভাবে তার সঙ্গে যাব।। ৩৫- ৩৮।।
তার কথা শ্রবণ করে মহীপতি অত্যন্ত লজ্জিত হলেন এবং তিনি চামুন্ডার সাথে সেখানে এসে উপস্থিত হলে, সেখানে মহারণ হয়েছিল।। ৩৯।।
এতস্মিন্ অনন্তরে তে বৈ ব্রহ্মাদ্যাস্তেঃ পরাজিতাঃ। ত্যক্ত্বা যুদ্ধং গৃহং প্রাপ্তাস্তিলক্ষবলসংযুতাঃ।।৪০ । কপাটং সুদৃঢ়ং কৃত্বা মহাচিন্তামুপাযযুঃ। মহীরাজস্তু বলবান্ মহীপত্যনুমোদিতঃ।।৪১। প্রমদাবনমাগত্য ষষ্টিলক্ষবলান্বিতঃ। জুপোপ তত্র বলবান্ মাননোৎসবগোহেতবে।।৪২।। তালনাদ্যাশ্চ চত্বারঃ শিরীষাখ্যপুরং যযুঃ। স্থলীভূতং চ তং গ্রামং দৃষ্ট্বাতে বিস্ময়ান্বিতাঃ। প্রযযুস্তে সুখভ্রষ্টা দৃদৃশুহিমদং মুনিম্।।৪৩।। প্রণম্যোচুঃ শুচাবিষ্টা বলখানি মুণে বলী। ক্ব গতঃ সমরশ্লাঘী স চ কুনাগরৈ যুতঃ।।৪৪।। শ্ৰুত্বাহ হিমদো যোগী মহীরাজেন নাশিতঃ। ছঘনা বলখানিশ্চ তস্যেয়ং সুন্দরী চিতা।।৪৫।।
ইতি মধ্যে তার দ্বারা পরাজিত ব্রহ্মাদি যুদ্ধ ত্যাগ পূর্বক তিনলক্ষ সেনা সংযুক্ত হয়ে গৃহে ফিরে গেলেন।। ৪০।।
অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে দরজা বন্ধ করে তারা সকলে মহাচিন্তাতে মগ্ন হলেন। মহীপতির অনুমোদন ক্রমে বলবান্ মহীরাজ প্রমদা বনে এসে সাতলক্ষ সেনা নিয়ে সেখানে বামনোৎসব হেতু রক্ষা করতে লাগলেন। ৪১-৪২।।
তালনাদি চারবীর শিরীষাখ্যপুরে চলে গেলেন। সেই গ্রামকে স্থলীভূত দেখে তারা সকলে অধিক বিষময় প্রাপ্ত হলেন। তারা সকলে সুখ ভ্রষ্ট হয়ে চলে গেলেন এবং তারা হিমদ মুণির দর্শন পেলেন।। ৪৩।।
শোকাবিষ্ঠ তারা প্রণাম করে তাকে বললেন, হে মুনে, বলী বলখানি, যিনি সমরশাঘী ছিলেন, তিনি কোথায় চলে গেলেন? কেননা তিনি কুনাগরকের সঙ্গে ছিলেন।। ৪৪।।
সে কথা শ্রবণ করে হিমদ যোগী বললেন, বলখানিকে মহারাজ ছলের দ্বারা সেখানে প্রভূত বিলাপ করতে লাগলেন, হাবন্ধো, হে ধর্মঅংশজ তুমি বিনা এই ভূতলে বাস গামার পক্ষে ভয়ংকর। তুমি আমাকে শীঘ্র দর্শন দাও। অন্যথা আমি নিজ প্রাণ বিসর্জন দেবো।। ৪৬-৪৮।।
ইতি শ্রুত্বা বচো ঘোরাং কৃষ্ণাংশ শোকতৎপরঃ।।৪৬। বিললাপ ভূশং তত্ৰ হা বন্ধোধর্মজান্তক। ত্বদৃতে ভূতলে বাসো মমাতীব ভয়ং করঃ।।৪৭।। দর্শনং দেহিমে ক্ষিপ্রত্তো চেৎপ্রাণাং স্ত্যজামহম্।।৪৮।। ইত্যুক্তঃ স তু তদভ্রাতা বলখানি পিশাচগঃ সপত্নীকঃসমায়াতো রোদনং কৃতবান্ বহু। কথিত্বা সর্ববৃত্তান্তং যথাজাতং স্ববৈশসম্।।৪৯।। দিব্যং বিমানমারুহ্য গতো নাকং মনোরমম্। যুধিষ্ঠিরে তস্য কলা বলাখানেলয়ং গতা।।৫০।। তদা দুঃখীহকৃষ্ণাংশ কৃত্বা ভ্রাতুস্তিলাং জলিম্। মহাবতীং সমাগত্য রাজগেহমুপাযযৌ।।৫১।। বেণুশব্দেন কৃষ্ণাংশো ননর্ত জনমোহনঃ। বীণাপ্রবাদ্যং চ জগৌ তালনো যোগিরূপধৃক্।।৫২।।
একথা বলার পর তার ভ্রাতা বলখানি পিশাচরূপী পত্নীর সংগে সেখানে আগত হয়ে অত্যন্ত রোদন করলেন। তিনি নিজের সমস্ত বৃত্তান্ত বললেন যেভাবে তিনি নিজের বৈশস প্রাপ্ত হয়েছিলেন।। ৪৯।।
তিনি দিব্য বিমানে আরূঢ় হয়ে মনোরম স্বর্গে গিয়েছিলেন এবং তিনি যুধিষ্ঠির কলাতে লয়প্রাপ্ত হয়েছিলেন।। ৫০।।
সেই সময় দুঃখিত কৃষ্ণাংশ নিজ ভ্রাতাকে তিলাঞ্জলি দিয়েছিলেন। পুনরায় মহাবতীতে ফিরে গিয়ে রাজগৃহে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সেখানে কৃষ্ণাংশ বেণু শব্দের সাথে নাচতে লাগলেন, যাতে সমস্ত জগৎ মোহিত হয়েগেল। বেণু প্রবাদ্যে তালন যোগীরূপ ধারণ পূর্বক গান করতে লাগলেন।। ৫১ -৫২।।
মৃদংগধ্বনিনা দেবীলক্ষণ কাংস্যবাদ্যকঃ। সুস্বরং চ জগৌ তত্র শ্রুত্বা রাজা বিমোহিতঃ।।৫৩।। তদা তু মলতা রাজ্ঞী দৃষ্ট্বা তদ্বাসনোত্সবম্। রুদিত্বা বচনং প্রাহ ক্ব গতো মে প্রিয়ংকরঃ।।৫৪।। কৃষ্ণাংসো বন্ধুসহিতসত্যত্ত্বা মাং মন্দভাগিনীম্। ত্বয়া বিরহিতো দেশো মহীরাজেন লুন্ঠিতঃ।।৫৫।। ইত্যুক্তাং মলতাং দৃষ্ট্বা কৃষ্ণাংশ স্নেহ কাতরঃ। বচনং প্রাহ নম্রাত্মা দেহিত্বং বচনং কুরু।।৫৬।। যোগিনশ্চ বয়ং রাজ্ঞি সর্বযুদ্ধ বিশারদাঃ। তবেদং সকলং কার্যং কৃত্বা যামো হি নৈমিযম্।।৫৭।। যে সবব্ৰীহয়শ্চৈব তব সখনি সংস্থিতাঃ। গৃহীত্বা ঘোষিতঃ সর্বা গচ্ছন্তু সাগরান্তিকম্। বয়ং তু যোগসৈন্যেন তব রক্ষাং চ কুর্মহে।।৫৮।।
দেবসিংহ মৃদঙ্গধ্বনি এবং লক্ষণ কাংস্য বাদ্য বাজাতে লাগলেন। এই প্রকারে সেখানে সুস্বরধ্বনিতে গান শ্রবণ করে রাজা বিমোহিত হয়েগেলেন সেই সময় রানী মলনা সেই বামনোৎসব দেখে রোদন করতে করতে বললেন–আমার প্রিয়ংকর কোথায় চলে গেলেন। সেই কৃষ্ণাংশ নিজ ভ্রাতার সঙ্গে আমার মত মন্দ ভাগিনীকে ত্যাগ করে কোথায় চলে গেলেন। হে পুত্ৰ, আজ তোমাবিনা এই দেশ মহীরাজ লুন্ঠন করে চলেগেলেন। এই প্রকার বিলাপকারী মলনাকে দেখে কৃষ্ণাংশ অত্যন্ত স্নেহ কাতর হয়ে উঠলেন এবং নম্রভাবে বললেন–হে দেবি, আপনি আমাদের আদেশ দিন। হে রাজ্ঞি, যদ্যপি আমরা সকলে যোগী কিন্তু যুদ্ধ বিদ্যায় আমরা মহাপন্ডিত। তোমার এই সমস্ত কার্য পালন করে আমরা নৈমিষারণ্যে চলে যাব। তোমার ঘরে সংস্থিত এই যব্রীহি সমস্ত স্ত্রীগণ গ্রহণ করে সাগর সমীপে যান। আমরা যোগসেনা দ্বারা তোমাদের রক্ষা করব। এই প্রকার বচন শ্রবণ করে পতিব্রতা পুত্রী তার মাকে বললেন–ঐ নর্তক কৃষ্ণাংশ তার পুন্ডরীক সদৃশ নেত্র এবং শ্যামাঙ্গ অত্যন্ত সুন্দর দেখাচ্ছে। হে মাতা কৃষ্ণাংশ বিনা এই ভূমন্ডলে রক্ষা কার্যে সমর্থ আর কে আছে। কৃষ্ণাংশ দ্বারা বিনির্জিত মহীরাজ দুর্জয়।। ৫৩-৬০।।
ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য তৎসুতা চ পতিব্রতা। মাতরং বচনং প্রাহ কৃষ্ণাংশোহয়ং ন নর্তকঃ।।৫৯।। পুন্ডরীকনিভে নেত্রে শ্যামাংগং তস্য সুন্দরম্। কৃষ্ণাংশেন বিনা মাতঃ কো রক্ষার্থং ক্ষমো ভূবি। দুজয়শ্চ মহীরাজঃ কৃষ্ণাংশেন বিনির্জিতঃ।।৬০।। ইতি তদ্বচনং শ্রুত্বা মলনা প্রেমহুলা। যবব্রীহয়ো নিষ্কাস্য যোষিতাং স্থাপিতাঃ করে।।৬১।। জগুস্তা যোষিতঃ সর্বাঃ কৃষ্ণাংশচারিতং শুভম্। লক্ষণঃ শীঘ্রমাগম্য যোনিবেষান স্বসৈনিকান্। সজ্জীকৃত্য স্থিতস্তত্র তালনাদ্যৈঃ সুরক্ষিতঃ।।৬২।। কীর্তিসাগরমাগম্য তে বীরা বলদজপির্তাঃ। রুরুধুঃ সর্বতো নারীদোলাযুতমিতস্থিতাঃ।।৬৩।। মহীপতিস্তুকুলহা জ্ঞাত্বা কৃষ্ণাংশমাগতম্। চন্দ্রবংশিনমাগত্ম্য সুপুত্রশ্চ রুরোদহ।।৬৪।।
কন্যার এই কথা শ্রবণ করে মলনা প্রেম বিহ্বল হয়ে গেলেন। তিনি যব্রীহি নিষ্কাশন করে যোষিতগণের হাতে স্থাপিত করলেন। সেই সকল স্ত্রীগণ কৃষ্ণাংশের শুভ চরিত্রের গান করতে লাগলেন। লক্ষণ শীঘ্র সুরক্ষিত হয়ে সেখানে স্থিত হলেন। সেই সমস্ত বীর বলদর্পিত হয়ে কীর্তি সাগরে আগত হয়ে স্থিত হলেন এবং তারা দোলাযুত মিত স্থিত হয়ে সকল নারীকে অবরুদ্ধ করলেন।। ৬১- ৬৩।।
কুলঘাতী মহীপতি কৃষ্ণাংশের আগমন বার্তা জ্ঞাত হয়ে চন্দ্রাবংশীর কাছে এসে পুত্রের সঙ্গে রোদন করতে লাগলেন।। ৬৪।। যোগভিস্তৈমহারাজ লুণ্ঠিতাঃ সৰ্বঘোষিতঃ। মলতা সংহৃতাঃ তত্র তথা চন্দ্ৰাবলী সুতা।।৬৫।। মহীরাজস্য তে সৈন্যা যোগিবেষাঃ সমাগতাঃ তারকায় সুতাং প্রাদান্ মহীরাজায় মৎস্বসাম্।।৬৬।। ইতি শ্রুত্বা বচো ঘোরং ব্রহ্মানন্দো মহাবলঃ। লক্ষসৈন্যান্বিতস্তত্র যযৌ রোষসমন্বিতঃ।।৬৭।। মহীরাজস্তু কলহী সৈন্যা যুতমহাত্মজঃ। রক্ষিতঃ কামসেনেন তথা রণজিতা যযৌ।।৬৮।। তয়োশ্চাসীন্ মহদ যুদ্ধং সেনয়োরু ভয়োভূবি। তালনো যোগিবেষশ্চ ব্রহ্মানন্দমুপাযযৌ।।৬৯।। লক্ষণাশ্চাভয়ং শূরং দেবসিংহো মহীপতিম্। জিত্বা বা চ মুদিতৌ কামসেনঃ সমাগতঃ।।৭০।। লক্ষণঃ কামসেনং চ দেবো রণজিতং তদা। বদ্ধা তত্র স্থিতৌ বীরো শত্রুসৈন্যক্ষয়ং করৌ।।৭১।।
হে মহারাজ, ঐ যোগিগণ সমস্ত স্ত্রীগণকে লুণ্ঠন করেছে। তার মধ্যে মলনা এবং তার পুত্রী চন্দ্রাবলীও রয়েছে। তারা সকলে মহীরাজের সৈনিক যারা যোগীবেশ ধারণ করে রয়েছে। তারকের জন্য সুতাকে এবং আমার ভগিনীকে মহীরাজের জন্য প্রদান করা হয়েছে।। ৬৫ -৬৬।।
এই প্রকার ঘোর বচন শ্রবণ করে মহাবলবান্ ব্রহ্মানন্দ একলক্ষ সেনা নিয়ে ক্রোধোন্মত্ত হয়ে সেখানে এলেন। মহীরাজ কলহপরায়ণ ছিলেন। তিনি কামসেনের দ্বারা রক্ষিত এক অযুত রণজয়ী সেনা উপস্থিত হলেন। যুদ্ধভূমিতে দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে মহাযুদ্ধ হয়েছিল। যোগীবেশী তালন ব্রহ্মানন্দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আগত হলেন।। ৬৭ -৬৯।।
লক্ষণ অভয় শূরের সঙ্গে এবং দেবসিংহ মহীপতির সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের জয় করে তথা বন্ধন করে আনন্দিত হলেন। পুনরায় কামসেন আগত হলেন। লক্ষণ কামসেনকে এবং দেবরণজিতকে বন্ধন করে শত্রু সেনাক্ষয়কারী সেই দুই বীর সেখানে স্থিত হলেন। ইতি মধ্যে বলী ব্ৰহ্মা তালনকে বদ্ধ করে লক্ষণের কাছে এসে ধর্মযুদ্ধ করেছিলেন। মহাবলবান্ ধুনুষ কেটে লক্ষণকে বেঁধে ফেললেন। পুনরায় দেবসিংহের কাছে এসে তাকে মূর্ছিত করে দিয়েছিলেন।। ৭০ -৭৩।।
এতস্মিন্নন্তরে ব্রহ্মা বদ্ধা বৈ তালনং বলী। লক্ষণান্তমুপাগম্য ধনুযুদ্ধমচীকরৎ।।৭২।। লক্ষণং ছিন্নদান্বানং পুনর্বদ্ধা মহাবলঃ। দেবসিংহ মুপাগম্য মূর্ছিতং তং চকার হ।।৭৩।। হাহাভূতে যোগি সৈন্যে প্রদ্রুতে সর্বতো দিশাম্। কৃষ্ণাংশো যোষিতঃ সর্বা বচনং প্ৰাহ নম্ৰধীঃ।।৭৪।। ব্রহ্মানন্দোহয়মায়াতো মম সৈন্য ক্ষয়ংকরঃ। তস্মাদ্য়ং ময়া সার্দ্ধং গচ্ছতাশু চ তং প্রতি।।৭৫।। ইত্যুক্ত্বা তাসঃ সমাদায় ব্রহ্মানন্দমুপাযযৌ। তয়োশ্চাসীন্ মহদ্ যুদ্ধং নর নারায়ণাংশয়োঃ।।৭৬।। কৃষ্ণাংশস্তত্র বলবান্নমোমার্গেন তং প্রতি। রথস্থং চ সমাগম্য মোহয়ামাস ঘোহসিনা।।৭৭।।
সেই যোগী সেনাদের মধ্যে সকলদিকেই হাহাকার শব্দ উঠেছিল। নম্রধী কৃষ্ণাংশ তখন সমস্ত নারীগণকে বললেন, আমার সেনাক্ষয়কারী ব্রক্ষ্মানন্দ এসে উপস্থিত হয়েছে, এই কারণে আপনারা শীঘ্র আমার সাথে তার কাছে চলো।। ৭৪ -৭৫।।
একথা তাদের সকলকে নিয়ে ব্রহ্মানন্দের কাছে চলে গেল। তার প সেই দুই নর ও নারায়ণাংশের মহাযুদ্ধ হয়েছিল।। ৭৬।।
সেখানে বলবান্ কৃষ্ণাংশকে নভোমার্গ থেকে রথোপরিস্থিত ব্রহ্মানন্দ অসি দ্বারা মোহিত করলেন। তিনি মূর্ছিত হলে প্রসন্নতা বশতঃ তাকে ছেড়ে দিয়ে সেই যোগী যুদ্ধস্থল থেকে পলায়ন করলেন।। যোগি সৈন্য পরাজিত হলে মহাবলী ব্রহ্মানন্দ সেই নারীগণকে নিয়ে নিজ গৃহের প্রতি গমন করলেন।। ৭৭-৭৮।।
তদা তু মুছিতে তস্মিন্ মোচয়িত্বা চ তা মুদা। যোগী সৈন্যান্বতো যুদ্ধাৎপলায়ন পরোহভবৎ।।৭৮।। পরাজিতে যোগিসৈন্যে ব্রহ্মানন্দো মহাবলঃ যোষিতস্তাঃ সমাদায় স্বগেহায় দধৌ মনঃ।।৭৯।। মহীরাজস্তু সংপ্রাপ্তো মহীমত্যনুমোদিতঃ। রুরোধ সর্বতো নারীঃ শিবদত্তবরো বলী।।৮০।। নৃহরশ্চাভয়ং শূরং মর্দনশ্চৈব ব রূপণাম্। মদনং বৈ সরদনো ব্রহ্মানন্দং চ তারকঃ।।৮১।। চামুন্ডঃ কামসেনং চ ধনুযুদ্ধমচীকরৎ। তদাভয়ো মহীবীরো ধুন্বন্তং নহরং রিপুম্।।৮২।। ছিত্বা ধনুস্তমাগত্য খংগযুদ্ধমচীকরৎ। নৃহরঃ খংগরহিতোহভবদ যুদ্ধ পরাভমুখঃ। তমাহ বচনং ক্রুদ্ধোহভয়ো যুদ্ধার্থমুদ্যতঃ।।৮৩।। ভবান্ বৈ মাতৃস্বস্ত্রীয়ো মহীরজাস্য চাতুজঃ।।৮৪।।
মহীমতির অনুমোদন পেয়ে মহীরাজ সেখানে এলেন এবং তিনি সকল স্ত্রীগণকে ঘিরে ফেললেন কারণ সেই বলী ভগবান্ শিবের দত্তবরদানী ছিলেন।। ৭৯ -৮০।।
নূহর অভয়কে, মর্দন শূররূপণকে সরদন মদনকে এবং তারক ব্রহ্মানন্দকে তথা চামুন্ডা কামসেনকে রোধ করে সেখানে ধর্মযুদ্ধ করেছিলেন সেই সময় মহাবীর অভয় ধনুর্ধারী নৃহর শত্রুকে রোধ করে তার ধনু কর্তন করলেন এবং তাঁর সঙ্গে খড়্গযুদ্ধ করেছিলেন। নৃহর খড়্গ রহিত হয়ে যুদ্ধে পরাঙ্মুখ হলেন। তখন যুদ্ধের জন্য উদ্যত অভয় ক্রদ্ধ হয়ে তাকে বললেন–আপনি আমার মাতৃস্বসার পুত্র এবং মহারাজ আত্মজ। ক্ষত্রিয়ের পরমধর্ম হল সম্মুখ সমরে প্রবৃত্ত হওয়া। আপনি কি চান? একথা শ্রবণ করে নূহর ক্রোধবশতঃ পরিঘ গ্রহণ করলেন এবং তিনি তাঁর মস্তকে প্রহার করলেন, যাতে করে নিহত হয়ে তিনি স্বর্গে চলে গেলেন। তিনি কৃতবর্মার অবতার ছিলেন সুতরাং কৃতবর্মাতে তিনি বিলীন হলেন।। গোপ থেকে উৎপন্ন মদনকে নলী সরদন হত্যা করলেন এবং রিপুবলকে হত্যা করে উচ্চ শব্দে জয় করলেন। তিনি উত্তরাংশ ছিলেন এই জন্য তিনি উত্তরাংশে বিলীন হয়ে গেলেন।। ৮১-৮৭।।
ক্ষত্রিয়াণাং পরং ধর্মং কথং সংহতুমিচ্ছতি। ইতি শ্রুত্বা তু নৃহরো গৃহীত্বা পরিঘং রুষা।।৮৫।। জঘান তং চ শিরসি স হত স্বর্গমাষ্ময়ৌ। স চ বৈ কৃতবর্মাংশো বিলীনঃ কৃতবর্মণি।।৮৬।। মদনং গোপজাতং চ হত্বা সরদনো বলী জয়শব্দং চকারোচ্চৈ পুর্নহত্বা রিপোবলম্ উত্তরাংশশ্চ স জ্ঞেয়ো মদনশ্চোত্তরে লয়ঃ।।৮৭।। রূপণশ্চ সমাগত্য মূৰ্চ্ছয়িত্বা চ মদনম্। পুনঃ সরদনং প্রাপ্য খংগযুদ্ধং চকার হ।।৮৮।। ব্রহ্মানন্দশ্চ বলবান্ স বদ্ধা তারকং রুষা। মহীরাজাত্তমাগম্য ধনুযুদ্ধং চকার হ।।৮৯।। নৃহরং রণজিৎ প্রাপ্য স্বভল্লেন তদা রুষা। জঘান সমরশ্লাঘী মহীরাজসুতং শুভম্।।৯০। স বৈদুঃশাস্নাংশশ্চ মৃতস্তস্মিন্ সমাগতঃ।।৯১।।
রূপণ এসে মর্দনকে মূর্ছিত করে পুনরায় সরদনের কাছে গিয়ে তার সঙ্গে খড়্গ যুদ্ধ করেছিলেন।। ৮৮।।
বলবান্ ব্রহ্মানন্দ তারককে ক্রোধবশতঃ বেঁধে মহীরাজের সঙ্গে ধনুযুদ্ধ করেছিলেন। রণজিৎ নৃহরের কাছে গিয়ে ক্রোধবশতঃ ভল্লের দ্বারা সেই সমরঘাতী মহীরাজের শুভ পুত্রকে হনন করলেন।। তিনি দুঃশাসনের অংশ ছিলেন, তাই মৃত্যুর পর তিনি তাতেই সমাগত হলেন।। ৯০- ৯১।।
নিহতে নৃপুরে বন্ধৌ মদনঃ ক্রোধতৎপরঃ। স্বশরৈঃশস্তাড়য়মাস সাত্যকেরংশুমুত্তমম্।।৯২।। ছিত্ত্বা তাত্রমাজিচ্ছুরঃস বৈ পরিমলোদ্ভবঃ। স্বভল্লেন শিরঃ কায়ান্ মর্দনস্য স চাহরৎ।।৯৩।। মৃতেহস্মিন মর্দনে বীরে তদা সরদনো বলী। তাড়য়ামাস তং বীরং স্বভল্লেনৈব বক্ষসি।।৯৪।। মহৎ কষ্টমুপাগম্য রণজিন্ মলনোদ্ভবঃ। স্বখংঙ্গেন শিরঃ কায়াদপাহরত বৈরিণঃ।।৯৫।। ত্রিবন্ধৌ নিহতে যুদ্ধে তারকঃ ক্রোধমূর্ছিতঃ। রথস্থশ্চ রথস্থং চ তাড়য়ামাস বৈ শরৈঃ।।৯৬।। ছিত্তা বাণং চ রণজিত্তথৈব চ রিপোর্দ্ধনুঃ। ত্রিশরৈস্তাড়য়ামাস কর্ণাংশং তারকং হৃদি।।৯৭।। অমর্যবশমাপন্নো যথাদন্ডৈভূজংগমঃ। ধ্যাত্বা চ শংকরং দেবং বিষধোতং শরংপুনঃ।।৯৮।।
বন্ধু নৃহরের মৃত্যুর পর মর্দন ক্রোধবশতঃ সাত্যকির সেই উত্তম অংশকে নিজ বাণের দ্বারা তাড়ন করলেন। পরিমলের পুত্র শূর রণজিৎ সকল শর ছেদন করে পুনরায় নিজ ভল্লের দ্বারা মর্দনের শরীর থেকে মস্ত ক আলাদা করে দিলেন। সেই মর্দন বীর মারা গেলে সেই সময় বলী সরদন সেই বীরের বক্ষস্থলে নিজ ভল্লের দ্বারা প্রহার করলেন। মলনা পুত্ৰ রণজিৎ প্রচন্ড কষ্টে নিজ খড়্গা দ্বারা সেই শত্রুর মস্তক শরীর থেকে আলাদ করে দিলেন।। ৯২-৯৫।।
তিনজন বন্ধু যুদ্ধে মারা গেলে তারক ক্রোধান্বিত হয়ে রথস্থিত হয়ে রথারোহীদের সঙ্গে ধনুযুদ্ধ করেছিলেন।। রণজিৎ তার ধনুষ এবং বাণ ছেদন করে তিনটি শরের দ্বারা কর্ণাংশ তারকের হৃদয়ে প্রহার করলেন।। সর্প দন্ডের দ্বারা যেরূপ নম্রতা প্রাপ্ত হয়, তিনি সেরূপ হয়ে গেলেন। তিনি শংকরদেবের ধ্যান করে বিষ ধৌত শর পুনরায় সংযোজন করে শত্রুকে কষ্ট প্রদান করে হত্যা করলেন। রণজিৎও শরীর ত্যাগ পূর্বক দিবঙ্গত প্রাপ্ত হলেন।। ৯৭-৯৯।।
সংধায় তর্জয়িত্বা চ শত্রুকণ্ঠমতাড়য়ৎ। তেন বানেন রণজিত্ত্যক্ত্বা দেহং দিবংগতঃ।।৯৯।। হতে তস্মিন্ মহাবীর্যে ব্রহ্মানন্দশ্চ দুঃখিতঃ। মহীরাজভয়াদ ব্রহ্মপুরস্কৃত্য চ যোষিতঃ। সন্ধ্যাকালে তু সংপ্রাপ্তে ভাদ্রকৃষ্ণাষ্টমীদিনে।।১০০।। কপাটং সুদৃঢ়ং কৃত্বা সৈন্যৈঃ ষষ্টিসহস্ৰকৈঃ। সার্দ্ধাং গেহমুপাগম্য শারদাং শরণং যযৌ। মহীরাজস্তু বলবান্ পুত্রশোকেন দুঃখিতঃ। সংকল্পং কৃতবান্ধোরং শৃণ্বতাং সর্বভূভৃতাম্।।১০২।। শিরীষাখ্যপুরং রম্যং যথা শূন্যং ময়াকৃতম্। তথামহাবতী সর্বা ব্রহ্মানন্দাদিভিঃ সহ। ক্ষয়ং যাস্যস্তি মদ্ধানৈঃ সর্বে তে চন্দ্ৰবংশিনঃ।।১০৩।।
সেই মহাবীর হত হলে ব্রহ্মানন্দ অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। মহীরাজের ভয়ে তিনি স্ত্রীগণকে সামনে রেখে ভাদ্র কৃষ্ণাষ্টমীর দিন সন্ধ্যাকালে গৃহে আগত হয়ে সুদৃঢ় কপাট দ্বারা আবদ্ধ হয়ে ষাট সহস্র সেনাকে প্রহরায় নিযুক্ত রেখে শারদা শরণে নিয়ত হলেন। বলবান্ মহারািজ পুত্র শোকে অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে তিনি সমস্ত রাজগণের সমক্ষে ঘোর সংকল্প করলেন।। রম্য শিরীসাখ্যপুর যেমন আমি শূন্য করে দিয়েছিলাম, তেমন ব্রক্ষান্ডাদি সঙ্গে সমস্ত মহাবতী এবং চন্দ্রবংশজ সমস্ত লোক আমার বাণের দ্বারা ক্ষয় প্রাপ্ত হবে।। ১০০-১০৩।।
ইত্যুক্ত্বা ধুন্ধুকারং বৈ চাহুয়ামাস ভূপতিঃ। পঞ্চলক্ষবলৈঃ সার্দ্ধং শীঘ্রমাগম্যতাং প্রিয়।।১০৪।। ইতি শ্রুত্বা ধুন্ধুকারো গত্বা শীঘ্রং চ দেহলীম্। ঊষিত্বা সপ্ত দিবসান যুদ্ধভূমিমুপাগমৎ।।১০৫।। তদাষ্টলক্ষণসহিতো মহীরাজো মহাবলঃ। তারকেন চ সংযুক্তো যুদ্ধায় সমুপাযযৌ।।১০৬।।
একথা বলে সেই রাজা ধুন্ধকারকে ডাকলেন এবং বললেন, হে প্রিয়, পাঁচ লক্ষ সেনা নিয়ে তুমি শীঘ্র এসো। একথা শ্রবণ করে ধুন্ধুকার শীঘ্র দেহলীতে চলে এলেন এবং সাতদিন অপেক্ষা করে পুনরায় যুদ্ধস্থলে উপস্থিত হলেন। সেই সময় অষ্ট লক্ষণের সঙ্গে মহান্ বলবান্ মহীরাজ তারকের সঙ্গে যুদ্ধকরতে সেখানে এলেন।। ১০৪–১০৬।।