মৎস্যদেশের রাজা। বিরাটের ভার্যার নাম সুদেষ্ণা। ওঁদের তিন পুত্র – শঙ্খ, উত্তর (ভূমিঞ্জয়) ও শ্বেত। কন্যার নাম উত্তরা (অর্জুন-তনয় অভিমন্যুর পত্নী)। পণ-দ্যূতে পরাজিত হয়ে পাণ্ডবরা এই বিরাটরাজের প্রাসাদে এসেই পণানুসারে তাঁদের অজ্ঞাতবাস করেছিলেন। পাণ্ডব আর কৌরব পক্ষের শক্তি বিচারের সময়ে যদিও ভীষ্ম অক্ষ-ক্রীড়াশক্ত বিরাটকে মহারথ (উচ্চস্তরের যোদ্ধা) হিসেবে গণ্য করেছেন, কিন্তু বিরাটের শৌর্য-বীর্যের খুব একটা পরিচয় কোথাও পাওয়া যায় না। তিনি ত্রিগর্তাধিপতি সুশর্মার কাছে পরাজিত হয়েছেন। পুত্র শঙ্খ দ্রোণের বাণে নিহত হলে, যুদ্ধ না করে রণক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেছেন। এমন কি নিজের রাজ্যেও তিনি তাঁর শ্যালক কীচক (যিনি ওঁর সেনাপতিও ছিলেন) ও কীচকের আত্মীয়দের ভয় করে চলতেন। পাণ্ডবদের অজ্ঞাতবাসের সময়ে কীচক যখন ওঁর সন্মুখেই সৈরিন্ধ্রী-বেশী দ্রৌপদীর কেশ আকর্ষণ করে ভূপাতিত করে লাথি মারলেন, তখন দ্রৌপদীর কাতর আবেদনে বিরাট সাড়া দেন নি। এমন কি কীচকবধের পর কীচকের আত্মীয়রা যখন সৈরিন্ধ্রীকে কীচকের সঙ্গে দাহ করতে মনস্থ করে, তাতেও তিনি বাধা দেন নি। পাণ্ডবদের পরিচয় জানার পর, শক্তিশালী পাণ্ডবদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য অর্জুনের ইচ্ছায় তিনি মহানন্দে কন্যা উত্তরার সঙ্গে অর্জুনে-পুত্র অভিমন্যুর বিবাহ দিয়েছেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পঞ্চদশ দিবসে দ্রোণের ভল্লের আঘাতে ওঁর মৃত্যু হয়।