যদুবংশীয় বসুদেব ও তাঁর পত্নী রোহিণীর পুত্র, কৃষ্ণের বৈমাত্রেয় ভ্রাতা। ওঁর পত্নীর নাম ছিল রেবতী। স্বয়ং নারায়ণ একটি শুক্ল কেশ রোহিণীর গর্ভে ও একটি কৃষ্ণ কেশ দেবকীর গর্ভে স্থাপন করার ফলে বলরাম ও কৃষ্ণ জন্ম লাভ করেন। আদিশেষ সহস্রনাগ, যাঁর ওপরে ভগবান বিষনু বৈকুণ্ঠতে শুয়ে ছিলেন – তিনিই পুনর্জন্ম নিয়ে বলরাম হয়েছিলেন। শুভ্র গাত্রবর্ণ ও অমিত শক্তির অধিকারী বলরামের প্রিয় অস্ত্র ছিল হল বা লাঙ্গল। সেইজন্য তিনি হলায়ুধ বলেও পরিচিত। মদ্যাসক্ত বলরাম ছিলেন সরল স্বভাবের পুরুষ। কৃষ্ণের প্রতি তাঁর অপার বিশ্বাস ও ভালোবাসা ছিল বলে, কৃষ্ণের কথার অন্যথা করতে পারতেন না। সহোদরা সুভদ্রাকে অর্জুন হরণ করার সময়ে তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে অর্জুনকে আক্রমণ করতে উদ্যত হলে, কৃষ্ণের কথায় তাঁর ক্রোধ শান্ত হয়। দুই শিষ্যের গদাযুদ্ধ দেখতে এসে যখন দেখলেন ভীম অন্যায়ভাবে দুর্যোধনের উরুভঙ্গ করেছেন, তখন লাঙ্গল তুলে তিনি ভীমকে আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন। কৃষ্ণের কথায় ভীম রক্ষা পান। কিন্তু বিরক্ত হয়ে তিনি বলেছিলেন যে, দুর্যোধন স্বর্গে যাবেন, কিন্তু ভীমের এই কলঙ্ক চিরদিনই থাকবে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে তিনি কারোরই পক্ষ নেন নি। কৃষ্ণকেও তিনি নিরপেক্ষ থাকতে বলেছিলেন,কিন্তু ফল হয় নি। মহাযুদ্ধের পঁয়ত্রিশ বছর পরে যখন আসব পান করে যদুবংশীয়রা নিজেদের মধ্যে মুষল দিয়ে হানাহানি করছে,তখন বলরাম একটি বৃক্ষে আরোহণ করে যোগাবস্থায় দেহ রাখেন।