প্রসঙ্গ : প্রেম – ভাস্কর রাহা
সত্যি সুমন, তোমার মতো কালচার্ড আর এডুকেটেড পার্সনের মুখেই এমন কথা শোভা পায়।—কৃষ্ণা মুগ্ধকণ্ঠে বলে ওঠে।
কিন্তু সেই মুগ্ধতার উচ্ছ্বাস কোনও সাড়া জাগায় না সুমনের মনে। সে অত্যন্ত নিরাসক্ত গলায় জবাব দেয়, আমাদের মতো তথাকথিত কালচার্ডদের এটুকুই তো অহঙ্কার। আচরণে না হোক, সংলাপে আমরা পলিশড সবসময়।
না, না, আমি একটুও বাড়িয়ে বলছি না। —কৃষ্ণা যেন একটু আহত হল।—রিয়্যালি, তোমার প্রস্তাবটা অসাধারণ। আমরা তিনজন—আমি, তুমি আর শৈবাল—একসঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করে একটা মীমাংসায় পৌঁছুব, কারও কোনও খেদ থাকবে না মনে, এর চেয়ে পারফেক্ট সাজেশান আর কী হতে পারে!—একটু থেমে, —অবশ্য আমার সিদ্ধান্তের কোনও হেরফের হবে না এতে।
কোনও পরিবর্তন হবে না বলতে কী বোঝাতে চাইছ তুমি?
আমি তোমার সঙ্গে আমার এনগেজমেন্ট ক্যানসেল করব, এ-ব্যাপারে আমি কোয়াইট ডিটারমাইন্ড। তুমি তো তা জানোই।
হ্যাঁ, জানি। এটা তোমার এই মুহূর্তের অভিলাষ। কিন্তু তোমার মনের পরিবর্তন ঘটাতে আমি তো চেষ্টা করতে পারি।
তা তুমি করতে পারো, সেটাই তোমার পক্ষে শোভন। কিন্তু কোনও ফল হবে বলে আমি মনে করি না।—কৃষ্ণার গলায় বিশেষ আবেগ ফোটে,—আমি শৈবালকে ভালোবাসি, তাকে আমি বিয়ে করতে চাই।
তার মানে, আমি ধরে নিতে পারি,—সুমন খুব আস্তে-আস্তে উচ্চারণ করল, তুমি আর আমাকে ভালোবাস না, তাই না?
প্লিজ, ডোন্ট বি অ্যাবসার্ড। তোমাকে আমি এখনও ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। এবং তা তুমিও জানো।—কৃষ্ণা একটু গম্ভীর হল।—তবে এই ভালোবাসায় আমি আর আগের সেই উত্তাপ, সেই আবেগ খুঁজে পাই না। তুমি আমাকে ক্ষমা করো, আই অ্যাম ম্যাডলি অ্যান্ড ডেলিরিয়াসলি অ্যান্ড ইররেসিস্টিবলি ইন লাভ উইথ শৈবাল।
ঠিক এই কথাগুলোই তুমি কতবার, কত জায়গায় আমার কানে-কানে কবিতার মতো আবেগ দিয়ে উচ্চারণ করেছ।—সুমন ম্লান হাসি হাসল।
বিশ্বাস করো, সেইসব মুহূর্তগুলো সেদিন আমার কাছে মিথ্যা ছিল না। অনেক আনন্দ, অনেক সুখ আর স্বপ্নের সেই স্মৃতিগুলো আস্তে-আস্তে কেমন যেন ধূসর হয়ে গেল আমার অজান্তে।—কৃষ্ণার গলার স্বরও কেমন ধরা-ধরা।
সুমন কৃষ্ণার দিকে তাকাল। আর সেইদিকে তাকিয়ে বুকের মধ্যে কেমন একটা অসহায় যন্ত্রণা অনুভব করল সে। কৃষ্ণার মনের দর্পণে তার ছায়া ঝাপসা হয়ে গেলেও সুমনের কাছে কৃষ্ণা আজও সুতীব্র এক আকর্ষণ। তার মনে পড়ল, কত সোনালি সন্ধ্যা ওরা একসঙ্গে দুজনে কাটিয়েছে। হাসি আর কথার জাল বুনে কত দুরন্ত দুপুরে তারা রচনা করেছে স্বপ্ন-কবিতা। সেই আকর্ষণ একটুও ম্লান হয়নি, এখনও তার সাহচর্যে সে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে, হারিয়ে যাওয়া ঘন আশ্লেষের স্মৃতি তাকে উন্মন করে তোলে।
তুমি কি এখন কফি খাবে?—সুমন সহজ হওয়ার চেষ্টা করে।
না, থাক। শৈবাল এলে একসঙ্গে খাব।
কলিংবেলটা বেজে উঠল ঠিক সময়। শৈবাল এসে পড়েছে। কৃষ্ণা দরজার দিকে এগিয়ে যায়। আর এক নিঃসীম শূন্যতা-বোধ নিয়ে সুমন ওর চলার দিকে তাকিয়ে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই কৃষ্ণা ফিরে আসে, সঙ্গে শৈবাল।—তোমাদের দুজনকে ইনট্রোডিউজ করিয়ে দিই।—কৃষ্ণা খুশিতে ঝলমল করে ওঠে,—এই শৈবাল চৌধুরী আর ইনি সুমন্ত সেন।
আপনার সঙ্গে পরিচিত হয়ে খুব খুশি হলাম।—শৈবাল উচ্ছ্বসিতভাবে তার ডানহাতটা এগিয়ে দিল।
প্রসারিত সেই হাতটাকে জড়িয়ে ধরে সুমন অন্তরঙ্গভাবে বলল, আমার আনন্দও আপনার চেয়ে কিছু কম নয়।
প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর তারা সবাই আসন গ্রহণ করল। টেবিলে ততক্ষণে কফি পরিবেশন করে গেছে সুমনের গৃহভৃত্য।
সুমন্তকে আমি সুমন বলেই ডাকি।—কফির পেয়ালায় চিনি মেশাতে-মেশাতে কৃষ্ণা আলোচনার সূত্রপাত করে।
একসময় আমরা কত অন্তরঙ্গ ছিলাম, আপনি ভাবতে পারবেন না।—শৈবালকে উদ্দেশ করে বলল সুমন।
আমি সব শুনেছি। তাই আপনার সামনে কেমন অপ্রস্তুত বোধ করছি।
অপ্রস্তুত বোধ করার কী আছে!—সুমন হাসল,—আসলে এতদিন যাকে নিজের বলে মনে করে এসেছি, আজ আপনি তাকে পেতে চাইছেন—অথচ আমি তাকে ধরে রাখতে চাই। সমস্যার সৃষ্টি সেখানেই।
সমস্যা?—শৈবাল হঠাৎ সজাগ হয়ে উঠল,—আমি কিন্তু এর মধ্যে কোনও সমস্যাই দেখতে পাচ্ছি না।
আমিও না।—কৃষ্ণা শৈবালের কথায় সায় দিল।—মিউচুয়ালি, পারস্পরিক সদিচ্ছা নিয়ে আমি আর সুমন আমাদের এনগেজমেন্ট রিং ফিরিয়ে নেব। তারপর শৈবালের সঙ্গে আমার বিয়ে হতে আর কোনও প্রবলেম থাকবে না।
আমিও তাই মনে করি।—শৈবাল মাথা নাড়ে।
আমি কিন্তু তা মনে করি না।—সুমন সোজা হয়ে বসল,—ভদ্র আর সহানুভূতিশীল হতে আমি সবসময়েই রাজি। কিন্তু ক্লীব আত্মসমর্পণে আমার গভীর বিতৃষ্ণা আছে।
তাহলে কী করতে চান আপনি?—কিছুটা অপ্রসন্নভাবেই জিগ্যেস করে শৈবাল।
আমার একটা বিশেষ প্ল্যান আছে। আপনারা যদি রাজি থাকেন, তাহলে এই বিষয়ের একটা সুচারু মীমাংসা হতে পারে। শুনবেন আমার সেই প্ল্যানটা?
বেশ বলুন, কী বলতে চান আপনি।—শৈবাল রাজি হল।
ধন্যবাদ! আপনারা একটু বসুন, আমি এখুনি আসছি।—সুমন উঠে দাঁড়াল, আস্তে-আস্তে এগিয়ে গেল লিকার ক্যাবিনেটের সামনে। সেখান থেকে লাল রঙের পোর্ট ভরতি তিনটি ছোট্ট বোতল নিয়ে এল। বোতল তিনটে কফি-টেবিলের ওপর পাশাপাশি সাজিয়ে সুমন নিজের চেয়ারে এসে বসল।
ওইগুলো কীসের বোতল?—কৃষ্ণা জিগ্যেস করল।
পোর্ট ওয়াইনের।—সুমন জবাব দিল, আজ সকালে আমি এগুলি তৈরি করে রেখেছি।
কেন? সমস্ত ব্যাপারটাই আমার কাছে রিডিক্যুলাস মনে হচ্ছে।
আমার পরিকল্পনার এটা একটা অংশ বিশেষ।—সুমন বলতে থাকে, সামনের ওই তিনটি বোতলের একটি অপর দুটি থেকে একটু আলাদা। দুটির মধ্যে রয়েছে নির্ভেজাল পোর্ট, আর অন্যটির ভেতরকার পোর্টের মধ্যে মেশানো আছে বিষ। এমন পরিমাণ, যা পান করার সঙ্গে-সঙ্গে মৃত্যুকে আমন্ত্রণ জানাবে। এখন আমার প্রস্তাব হচ্ছে, আমাদের একজন ওই বিষ মেশানো মদ পান করে অন্য দুটি জীবনকে সমস্যামুক্ত করে দেবে।
সুমন!—কৃষ্ণা চিৎকার করে ওঠে, মাঝে-মাঝে আমি তোমার মধ্যে একটা পারভার্টেড সেন্স অফ হিউমার দেখতে পাই। এটা তোমার কাটিয়ে ওঠা উচিত।
আমার কিন্তু মনে হয়, এটাই বর্তমানে একমাত্র যুক্তিসঙ্গত পথ। হয় সব পাওয়ার আনন্দ, নয়তো না-পাওয়ার যন্ত্রণা থেকে চিরমুক্তি। আমাদের মতো সিভিলাইজড সফিস্টিকেটেড মানুষরাই তো পারে এমন উপায় গ্রহণ করতে।
কৃষ্ণা আর শৈবাল তাকাল সুমনের দিকে। দুজনেই কেমন বোবা হয়ে গেছে। অনেকক্ষণ চুপচাপ থেকে শৈবাল মুখ খুলল, দেখুন, আপনি তিনটি বোতল সাজিয়ে রেখেছেন। তার মানে আপনি কি সিরিয়াসলি মনে করেন কৃষ্ণা আপনার এই ফ্যান্টাস্টিক প্ল্যানে অংশ গ্রহণ করবে?
হ্যাঁ। এবং তার প্রয়োজন আছে। আমি যদি বিষ মেশানো মদ পান করি, আপনি কৃষ্ণাকে লাভ করবেন। আপনি যদি পান করেন, আমি আবার ফিরে পাব কৃষ্ণাকে। আর কৃষ্ণা যদি নিজে পান করে, তাহলে তাকে না-পাওয়ার দুঃখ আমাদের দুজনের সমানভাবেই রইল। আমার মনে হয়, কৃষ্ণা এতে রাজি হবে।
আমি রাজি।—অপ্রত্যাশিতভাবে কৃষ্ণা বলে উঠল।
আমি এর মধ্যে নেই। আই অ্যাবসোলিউটলি ফরবিড ইট।—শৈবাল উঠে দাঁড়াল।
উঠলে কেন, বসো।—শৈবালকে কৃষ্ণা শান্ত করে।
দেখুন শৈবালবাবু, আমার ইচ্ছেকে জোর করে কারও ওপর আমি চাপাতে চাই না।—সুমন বলে উঠল, আপনারা স্বেচ্ছায় রাজি না হলে আমার পরিকল্পনার সমাপ্তি এখানেই।
সত্যি শৈবাল, আমার জন্যে তুমি এই সামান্য ঝুঁকিটুকু নিতে পারো না?—কৃষ্ণার স্বরে অভিমান।
সামান্য ঝুঁকির কথা এটা নয়।—শৈবাল বলল, পরের ঘটনাগুলো ভেবে দেখেছ? মনে করো, আমরা সবাই মদ খেলাম এবং আমাদের মধ্যে একজন যথারীতি মারা গেল। তারপর? অন্য দুজনকে নিয়ে পুলিশ যে-কেলেঙ্কারি শুরু করবে, সেটা যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কে জানে।
এটা সত্যি। এই বিপদের কথা আমিও ভেবেছি।—সুমন জানাল,—এখানে বসে আমরা কেউ মদ পান করব না। এক-একটি বোতল নিয়ে যে-যার বাড়ি ফিরে যাব। রাতে শোওয়ার সময় আমরা সেটা পান করব। পরদিন সন্ধ্যায় ‘ব্লু-এঞ্জেল’ রেস্তোঁরার লাউঞ্জে যারা বেঁচে থাকবে, সেই ভাগ্যবান দুজনে মিলিত হবে। ত্রিকোণ প্রেমের ইতিহাসে এটা একটা অভূতপূর্ব নজির হয়ে থাকবে। জানি না, কাল সন্ধ্যায় কোন দুজনের দেখা হবে।
ভগবান করুন,—শৈবাল তিক্ত গলায় বলল, সেই দুজন যেন আমি আর আপনি না হই।
তার মানে আপনি রাজি হলেন?—সুমন জিগ্যেস করল।
হ্যাঁ, রাজি হলাম। কৃষ্ণার ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা আমি হারিয়েছি।
আনন্দের আতিশয্যে কৃষ্ণা শৈবালকে গভীর আবেগে জড়িয়ে ধরল। সেই প্রেমের দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে সুমন বলল, তাহলে আমাদের আলোচনা-সভা এখানেই শেষ হোক।
এক মিনিট।—কৃষ্ণার আলিঙ্গন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে শৈবাল বলল, আপনি কি জানেন, কোন বোতলে বিষ মেশানো আছে?
না। তিনটে বোতলই একরকমের। আমি চোখ বন্ধ করে বিষ মিশিয়েছি। অবশ্য আপনাদের যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকে, তাহলে আপনি আর কৃষ্ণা ঠিক করুন, কোন বোতল দুটো আপনারা নেবেন। বাকি যে-বোতলটা থাকবে সেটা গ্রহণ করব আমি। রাজি?
চমৎকার প্রস্তাব।—কৃষ্ণা উচ্ছ্বসিত হল। কপট ক্রোধের সুরে শৈবালকে ধমকাল, সুমনকে এ-ব্যাপারে সন্দেহ করা তোমার ঠিক হবে না। হি অলওয়েজ বিহেভস লাইক এ সিভিলাইজড বিইং।
বোতল নিয়ে ওরা চলে যাওয়ার পর অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে রইল সুমন। ঘড়ির কাঁটায় যখন রাত দশটা বাজল, সে উঠে আস্তে-আস্তে শোওয়ার ঘরে গিয়ে ডিভানের ওপর বসল। আবার অনেকক্ষণ ভাবল। তারপর, এক চুমুকে বোতলের সবটুকু মদ পান করে শুয়ে পড়ল।
পরের দিন। সন্ধ্যাবেলা ‘ব্লু-এঞ্জেল’ রেস্তোঁরার প্রশস্ত লাউঞ্জের এককোণায় একটা টেবিলে বিয়ারের বোতল সামনে নিয়ে বসে আছে সুমন। এমনসময় কৃষ্ণা এল। অতি ব্যস্ততার দরুণ তার পরিপূর্ণ বুকদুটো কাঁপছিল থরথর করে। মুখে-কপালে চিকচিক করছিল বিন্দু-বিন্দু ঘামের ফোঁটা। সুমনকে দেখতে পেয়ে তার চোখের কোনায় বিস্ময়ের রেখা ফুটল। কোনও কথা না বলে সে সুমনের সামনের চেয়ারটায় বসে পড়ল।
মনে হচ্ছে, আমাকে দেখে তুমি মোটেই খুশি হওনি?—সুমন কৃষ্ণার দিকে তাকিয়ে বলল।
কী করে বুঝলে?—কৃষ্ণা তার বুড়ো আঙুলটা টেবিলে ঘষতে-ঘষতে জিগ্যেস করল।
তোমার চোখ-মুখের ভাষা বুঝতে আমার কষ্ট হয় না।
ওঃ,—কৃষ্ণা সুমনের দিকে না তাকিয়ে টেবিলের ওপর তার বুড়ো আঙুলটা ঘষতে থাকে। রেগে গেলে কৃষ্ণার এটা একটা মুদ্রাদোষ।
সত্যি সুমন,—এতক্ষণে কৃষ্ণা মুখ খুলল,—আমার সঙ্গে এই ছল-চাতুরিটা তুমি না করলেই পারতে। আমি এখন পরিষ্কার বুঝতে পারছি, তুমি দুটো বোতলে বিষ মিশিয়েছিলে। এবং কায়দা করে একটা তুমি নিজে আর অন্যটা আমাকে দিয়েছিল। ভেবেছিলে, এমনি করেই তুমি শৈবালের কাছ থেকে আমাকে চিরদিনের জন্যে দূরে সরিয়ে রাখবে। দেয়ার ইজ সিম্পলি নো লিমিট টু ইয়োর ডুপ্লিসিটি।
তুমি আমার ওপর অবিচার করছ, কৃষ্ণা।—সুমন বলল, এ-কথা সত্যি যে, আমি সবটুকু সত্যি বলিনি। তবে কারও বিরুদ্ধেই আমার কোনও আক্রোশ ছিল না। সবারই একই পরিণতি ঘটাতে চেয়েছিলাম।
তার মানে? পরিষ্কার করে বলো।
আসলে আমি তিনটে বোতলেই বিষ মিশিয়েছিলাম।
তাহলে, তাহলে শৈবাল কোথায়?—কৃষ্ণা চিৎকার করে উঠল।
তাই তো! কোথায় সে?
আমি তাকে কোথাও দেখতে পাইনি।
আমিও না। আমরা দেখতেও পাব না, অন্তত বেশ কিছুদিনের জন্যে তো বটেই।
তার মানে তুমি বলতে চাও, সে পালিয়ে গেছে। স্বীকার করা সত্ত্বেও, সে শেষপর্যন্ত মদ খায়নি।
হ্যাঁ, ঠিক তাই।
এতক্ষণে কৃষ্ণা সুমনের চোখের দিকে তাকাল, সোজাসুজি। টেবিলের ওপর ওর বুড়ো আঙুলের চলাফেরা থেমে গেল আস্তে-আস্তে। আর ওর মুখের আয়নায় সুমন আবার সেই
ভুলতে-না-পারা অনেক দুরন্ত দুপুরের ছবি, অনেক সোনালি-সন্ধ্যার আলো, আর ঘন আশ্লেষের আবেশ খুঁজে পেল।
মাসিক ক্রিমিনাল
পুজো সংখ্যা, ১৯৮৩