দ্বিতীয় খন্ড
উত্তরপর্ব
2 of 3

পৃথ্বীরাজ দ্বারা গুর্জর রাজ্য গ্রহণ

।। পৃথ্বীরাজ দ্বারা গুর্জর রাজ্য গ্রহণ।।

কস্মিন্ মাস্যভবদ্যুদ্ধং তয়োঃ কতিদিনানি চ। তৎপশ্চাৎস্বপুরীং প্রাপ্য তদা কিমভবন্মুনে।।১।। পৌষমাস্যভবদ্যুদ্ধং তয়ো শতদিনানি চ। জ্যেষ্ঠে মাসি গৃহং প্রাপ্তা দপ্পুৰ্বাদ্যান্যনেকশঃ।।২।। শ্রুত্বা পরিমলো রাজা স্বসুতাজ্ঞয়িনো বলীন্। দদৌ দানানি বিপ্রেভ্যঃ সুখং জাতং গৃহে গৃহে।।৩।।

ভবিষ্য পুরাণ (দ্বিতীয় খন্ড)

।। পৃথ্বীরাজ দ্বারা গুর্জর রাজ্য গ্রহণ।।

এই অধ্যায়ে পৃথ্বীরাজের দ্বারা বলখানির কাছ থেকে গুর্জর রাজ্য গ্রহণ বৃত্তান্ত বর্ণনা করা হয়েছে।

ঋষিগণ বললেন, পৃথ্বীরাজ এবং বলখানির যুদ্ধ কোন্ মাসে শুরু হয় এবং তা কতদিন পর্যন্ত চলে, তৎপশ্চাৎ নিজ পুরী প্রাপ্ত হয়ে কি হয়েছিল হে মুণি, তা বলুন।।১।।

সূতজী বললেন, তাদের যুদ্ধ পৌষমাসে শুরু হয় এবং তা একশ দিন পর্যন্ত চলে ছিল। জ্যৈষ্ঠ মাসে তার নিজ গৃহ ফিরে যান, সেখানে তখন অনেক প্রকার বাদ্য বেজেছিল।।২।।

রাজা পরিমল নিজ বলবান্ পুত্রের জয় শ্রবণ করে ব্রাহ্মণগণকে অনেক প্রকার দান করেছিলেন এবং সেই সময় প্রত্যক ঘরে মহাসুখ উৎপন্ন হয়েছিল।।৩।।

ইতি শ্রুত্বা মহীরাজো বলখানিং মহাবলম্। তত্রাগত্য নমস্কৃত্য বচনং প্ৰাহ নম্ৰধীঃ।।৪।। অর্দ্ধকোটিমিতং দ্রব্যং মত্তঃ প্রাপ্ত সুখী ভব। মাহিষ্মত্যাশ্চ রাষ্ট্রং মে দেহি বীরনমোস্ত তে।।৫।। বর্ষে বর্ষে চ তদদ্রব্যং গৃহাণ বলব প্রভো। ইতি শ্রুত্বা তথা মত্বা বলখানি গৃহং যযৌ।।৬।। বয়স্ত্রয়োদশব্দে চ কৃষ্ণাংশে বলত্তরে। যথা জাতা হরেলীলা ভৃগুশ্রেষ্ঠ তথা শৃণু।।৭।। ভাদ্রে শুক্লে এয়োদশ্যাং চাহ্লাদঃ সানুজো যযৌ। গয়ার্থে ধনমাদায় হস্ত্যশ্বরথ সংকুলম্।।৮।। কৃষ্ণাংশো বিন্দুলারুঢ়ো বৎসজো হরিনীস্থিতঃ। দেবঃ পপীহকারুঢ় সুখখানিঃ করালকে।।৯।। চত্বারো দ্বিদিনান্তে চ গয়াক্ষেত্রং সমাযযু। পূর্ণিমান্তে পুরস্কৃত্য ষোড়শ শ্রাদ্ধকারিণঃ।।১০।।

একথা শ্রবণ করে মহীরাজ মহাবলবান্ বলখানির কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে প্রণাম করে নম্রবুদ্ধি হয়ে তাঁকে বললেন–অর্ধ কোটি ধন গ্রহণ করে আপনি খুশি হয়ে আমাকে মাহীষ্মতী রাষ্ট্র প্রদান করুন।।৪-৫।।

হে প্রভু, আপনি প্রত্যেক বর্ষে আমার থেকে কর গ্রহণ করবেন। একথা শ্রবণ করে এবং বলখানি প্রস্তাব মেনে নিয়ে স্বগৃহে ফিরে আসেন।।৬।।

হে ভৃগু শ্রেষ্ঠ বলবান্ কৃষ্ণাংশ ত্রয়োদশবর্ষ আয়ুযুক্ত হলে ভগবান্ হরির যেরূপ লীলা হয়েছিল তা শ্রবণ কর।।৭।।

ভাদ্রপদ মাসের ত্রয়োদশী তিথির দিন আহ্লাদ নিজের ছোট ভাই-এর সাথে হাতী রথ এবং অশ্বে সংকুল ধন ধনসম্পদ নিয়ে গয়াপথে যান।।৮।।

কৃষ্ণাংশ নিন্দুলে আরূঢ় হন, বৎসজ হরিণীতে সমারোহন করেন, দেব পাপী হকের উপর আরোহণ করেন এবং সুখখানি করালকের উপর সমারূঢ় ছিলেন। তারা চারজন দুইদিনে গয়া ক্ষেত্রে পৌঁছে যায়। পূর্ণিমান্তে পুরস্কৃত করে ষোড়শ শ্রাদ্ধ করেন।।৯-১০।।

শতং শতং গজাং শ্চৈব ভূষিতাংশ্চ রথাং স্তথা। দদুর্হয়ান্ সহস্ৰং চ হেমমালা বিভূষিতান্।।১১।। ধেহিরণ্যরত্নানি বাসাংসি বিবিধানি চ। দত্তা তে সুফলীভূয় স্বৰ্গ হায় দধুমনঃ।।১২।। লক্ষাবর্তিস্তু যা বেশ্যা যযৌ বদরিকাশ্রমম্। প্রামাংস্তত্র পরিত্যজ্য সাপ্সরস্বভূপাগতা।।১৩।। রাকাং চন্দ্রে তু সম্প্রাপ্তে রাহুগ্রস্থে তমোময়ে কাশ্যাং সমাগতা ভূপা নানাদেশ্যাঃ কুলৈঃ সহ।।১৪।। হিমালয়গিরৌ রম্যে নানা ধাতুবিচিত্রিতে। তত্র সার্দূলবংশীয়োনেত্ৰসিংহো মহীপতিঃ।।১৫।। রত্নভানৌ হতে শূরে নেত্র সিংহো ভয়াতুরঃ। নবতুংগে সমাসাদ্য তোষয়ামাস বাসবম্।।১৬।। দ্বাদশাব্দান্তরে দেবো দদৌ ঢক্কামৃতং মুদা। পার্বত্যা নির্মিতং যত্ত্ব বাসবায় স্বসেবিনে।।১৭।।

শত শত হাতী সমলংকৃত রথ, সহস্র হেমমালা শোভিত অশ্ব, প্রচুর ধেনু, সুবর্ণ, রত্ন, বস্ত্র ইত্যাদি অনেক প্রকার দান করেছিলেন, স্বর্গলাভের সুফল পেতে তারা মনে মনে ইচ্ছা করেছিলেন।। ১১-১২।।

লাক্ষাবর্তি নামক ধারিণী বেশ্যা বদরিকাশ্রমে চলে গিয়ে প্রাণত্যাগ করেন এবং অপ্সরাত্ব প্রাপ্ত হন।।১৩।।

চন্দ্রমার রাকা তিথিতে রাহু দ্বারা গ্রস্ত হলে অনেক দেশের রাজা নিজ কুলের সঙ্গে কাশীতে এসেছিলেন।।১৪।।

হিমালয় পর্বতে পরম রমণীয় এবং অনেক প্রকার ধাতু দ্বারা চিত্রিত স্থানে শার্দূল বংশের নেত্র সিংহ রাজা ছিলেন।।১৫।।

রত্ন ভানু শূদ্রবীরের মৃত্যু হলে নেত্রসিংহ ভয়াতুর হয়ে পড়েছিলেন। তিনি নবতুঙ্গ স্থানে গিয়ে সেখানে ইন্দ্রদেবকে সন্তুষ্ট করেছিলেন। দ্বাদশবর্ষ পর ইন্দ্রদেব সন্তুষ্ট হয়ে প্রসন্নতাপূর্বক ঢক্কামৃত দিয়েছিলেন, সেটি দেবী পার্বতী নিজ সেবাকারী বাসবকে দিয়েছিলেন।।১৬-১৭।।

দদৌ ঢক্কামৃতং রাজ্ঞে পুনঃ প্রাহ শুভং বচঃ। অস্য শব্দেন ভূপালং ত্বং সৈন্যং জীবয়িষ্যসি।। ১৮।। ক্ষয়ং শীঘ্রং গমিষ্যন্তি শত্রবস্তে মহাভটাঃ। প্রাপ্তে ঢক্কামৃতং তস্মিন্নেত্ৰসিংহো মহাবলঃ।।১৯। নগরং কারয়ামাস তত্র সর্বজনৈতম্। যোজনান্তং চতুদ্বরিং দুরাধং পরৈঃ সদা।।২০।। নেত্ৰ সিংহগঢ়ং নান্না বিখ্যাতং ভারতে ভূবি। কাশ্মীরান্তে কৃতং রাজ্যে তেন শৃংগসমং ততঃ।।২১।। পালিতং নেত্রসিংহেন তৎপুরং পুত্রবনমুনে নেত্রপাল ইতি খ্যাতো গ্রামহসৌ দুর্গমঃ পরৈ।।২২।। সোহপি রাজা সমায়তো নেত্রসিংহো মহাবলঃ। কন্যা স্বর্ণবতী তস্য রেবত্যংশ সমান্বিতা। কামাক্ষ্যা বরদানেন সর্বমায়াবিশারদা।।২৩।।

ইন্দ্র রাজা নেত্রসিংহকে ঢক্কামৃত দিয়ে শুভবচনে বলেছিলেন–হে ভূপাল, এই ঢক্কামৃতের দ্বারা তুমি মৃতসেনা জীবিত করতে পারবে।।১৮।।

মহান্ ভটও যদি তোমার কোনো শত্রু হয় তাহলেও সে শীঘ্র ক্ষয় প্রাপ্ত হবে। মহাবলবান্ নেত্রসিংহ সেই ঢক্কামৃত প্রাপ্ত হয়ে সেখানে সমস্ত জনযুক্ত হয়ে একটি নগর নির্মাণ করেছিলেন, যেটি এক যোজন বিস্তৃত ছিল এবং সেখানে চারটি বড় দরজা ছিল এবং সর্বদা শত্রুর দ্বারা দুর্ভেদ্য ছিল।।১৯-২০।।

ভারত তথা পৃথিবীতে যেটি নেত্ৰসিংহ গড়–এই নামে প্রসিদ্ধ ছিল। রাজা নেত্রসিংহ পুনরায় শৃঙ্গ সমান কাশ্মীরে রাজ্য শাসন করেছিলেন।।২১।। হে মহামুণি, সেই পুরকে নেত্র সিংহ রাজা একপুত্রবৎ পালন করেছিলেন। সেটি শত্রু পক্ষে দুর্গম ছিল, সেই জন্য নেত্রপাল নামে প্রসিদ্ধ ছিল।।২২।।

মহাবলী রাজা নেত্রপাল সেখানে এসেছিলেন। তাঁর কন্যা রেবতীর অংশভূত স্বর্ণবতীও সেখানে ছিলেন। তিনি কামাক্ষী দেবীর বরদানে মায়া বিদ্যায় মহাপন্ডিত।।২৩।।

দৃষ্ট্বা তাং চ সুন্দরীং কন্যাং বালেন্দুসদৃশাননাম্। মূৰ্চ্ছিতাশ্বাভবভূপা রূপযৌবন মোহিতাঃ।।২৪।। দৃষ্ট্বা তাং চ তথাহ্লাদঃ সর্বরত্নবিভূষিতাম্। ষোড়শাব্দবয়োযুক্তাং কামিনীং রতিরূপিনীম্। মূর্ছিতশ্বাপতদভূমৌ সা তং দৃষ্ট্বা মুমোহ বৈ।।২৫।। দোলামারুহ্য তৎসখৌ নৃপান্তিক মুপাযযু। আহ্লাদস্তু সমুখায় মহামোহত্বমাগতঃ।।২৬।। দৃষ্ট্বা তথাবিধং বন্ধুং কৃষ্ণাংশ প্রাহ দুখিতঃ। কিমর্থং মোহমায়াতো ভবাংস্তত্ববিশারদঃ।।২৭।। রজো রাগাত্মকং বিদ্ধি প্রমাদং মোহজং তথা। জ্ঞানাসিনা শিরস্তস্য ছিন্ধি ত্বমজিতঃ সদা। ২৮।। ইতি শ্রুত্বা বচো ভ্রাতুস্ত্যক্ত্বা মোহং যযৌ গৃহম্ জোজয়িত্বা দ্বিজশ্রেষ্ঠান সহস্রং বেদতৎপরান।।২৯।। দুর্গামারাধয়ামাস জপ্তা মধ্যচরিত্রকম্। মাসান্তে চ তদা দেবী দত্ত্বাভীষ্টং হৃদিস্থিতম্।।৩০ ।।

বালচন্দ্র সদৃশ মুখমন্ডলযুক্ত এবং রূপযৌবনা সম্পন্না সেই কন্যাকে দেখে মোহিত হয়ে রাজগণ মূৰ্চ্ছিত হন।।২৪।।

তাঁর দুই সখী তাঁকে দোলায় চড়িয়ে রাজার সমীপে নিয়ে গেলেন। আহ্লাদ সমুখিত হয়ে মোহাবিষ্ট হয়ে গেলেন।।২৬।।

নিজ ভ্রাতাকে ঐরূপ অবস্থায় দেখে কৃষ্ণাংশ দুঃখিত হয়ে বললেন আপনি তো তত্ত্বজ্ঞানী মহাপন্ডিত, আপনার এরূপ মোহ প্রাপ্তি কি হেতু? এই মোহ রাগাত্মক রজোগুণ, মোহ থেকে উৎপন্নকে প্রসাদ বলে জান। জ্ঞানরূপ খড়গ দ্বারা মোহের শিরচ্ছেদ কর এবং নিজে সর্বদা অজিত থাক।।২৭-২৮।।

মোহয়ামাস তাং কন্যাং বিবাহার্থমনিন্দিতা। স্বপ্নে দদর্শ সা বালা রামাংশং দেবকী সুতম্।।৩১। প্রাতবুদ্ধা তু সংচিন্ত্য মহামোহমুপাযযৌ। তদা ধ্বাত্বা চ কামাক্ষীং সর্বাভীষ্ট প্রদায়িনীম্।।৩২।। পৌষমসে তু সংপ্রাপ্তে শুককন্ঠে সুপত্রিকাম্। বদ্ধাতং প্রেষয়ামাস শুকং পত্রস্থিতং প্রিয়ম্।।৩৩।। স গত্বা পুষ্পবিপিনং মহাবতিপুরীস্থিতম্। নর শব্দেন বচনং কৃষ্ণাংশায় শুকোব্রবীৎ।।৩৪।। বীর তেহবরজো বন্ধুর্ণাস্নাহ্লাদো মহাবলঃ। তস্থৈ হি প্ৰেমিতা পত্রী স্বর্ণবত্যা হিতপ্রদা।।৩৫।। তাং জ্ঞাত্বা চ পুনস্তস্যা উত্তরং দেহি মৎপ্রিয়ম্। অথ বা পত্রমালিখ্য তত্ত্বং মে কুরু কণ্ঠকে।।৩৬।। ইতি শ্রুত্বোদয়ো বীরো গৃহীত্বা পত্রমুত্তমম্। জ্ঞাতবাংস্তত্র বৃত্তাত্তমাহালাদায় পুনৰ্দদৌ।।৩৭।।

ভ্রাতা কৃষ্ণাংশের ঐরূপ বচন শ্রবণ করে তিনি সেই মোহ ত্যাগ করলেন এবং পুনরায় গৃহে ফিরে এলেন। বেদ তৎপর একসহস্র ব্রাহ্মণকে ভোজন করিয়ে মধ্যম চরিত্র জপ করে তিনি দুর্গাদেবীর আরাধনা করলেন। একমাস পরে দেবী দুর্গা আহ্লাদের হৃদয়স্থিত অভীষ্ট প্রদান করে অনিন্দিত কন্যা স্বর্ণবতীকে বিবাহেক জন্য মোহিত করলেন। সেই কন্যা স্বপ্নে রামাংশ দেবকী পুত্রকে স্বপ্নে দেখলেন।।২৯-৩১।।

প্রাতঃকালে জাগরিত হয়ে চিন্তন করে প্রচন্ড মোহাবিষ্ট হয়ে গেলেন। তখন সর্বভীষ্ট প্রদানকারী কামাক্ষী দেবীর ধ্যান করলেন এবং পৌষমাস আগত হলে এক তোতাপাখীর গলায় পত্রিকা বেঁধে প্রিয় শুকপক্ষীর মাধ্যমে পত্র প্রেরণ করলেন।।৩২-৩৩।।

সেই শুকপক্ষী মহাবতী পুরীস্থিত এক পুষ্প কাননে গিয়ে মনুষ্য কণ্ঠে কৃষ্ণাংশকে বললেন–হে বীর, তোমার অনুজ বলবান্ আহ্লাদের জন্য আমার সখী স্বর্ণবতী এই পত্রিকা প্রেরণ করেছেন। সুতরাং আপনি বিচার করে আমার প্রিয়সখীর জন্য উত্তর আমাকে দিন। আপনি একটি পত্র লিখে আমার গলায় বেঁধে দিন।।৩৪-৩৬।।

একথা শ্রবণ করে উদয়বীর সেই পরম পত্র গ্রহণ করে তাতে যা বৃত্তান্ত লেখা ছিল জেনে নিয়ে, আহ্লাদকে দিয়ে দিলেন। ৩৭।।

জম্বুকশ্চ নৃপো বীরো রদ্রদত্তবরো বলী। অজেয়োন্যনৃপৈবীর ত্বয়া সুধি নিপাতিতঃ।।৩৮।। তথাবিধং মৎরিতরমিন্দ্রদত্তবরং রিপুম্। তমেবং জহি সংগ্রামে মম পাণিগ্রহং কুরু।।৩৯।। ইতি জ্ঞাত্বা স আহ্লাদস্তামা শ্বাস্য হৃদি স্থিতম্। শুক কন্ঠে ববন্ধাশু লিখিত্বা পত্রমুত্তমম্।।৪০। স শুকঃ পন্নগঃ পূর্বং পুন্ডরীকেন শাপিতঃ। রেবত্যংশস্যকার্যং চ কৃত্বা মোক্ষত্বমাগতঃ।।৪১।। মৃতে তস্মিঞ্জুকে রম্যে দেবী স্বর্ণবতী তদা। দাহয়িত্বা দদৌদানং বিপ্রেভ্যস্তস্য তৃপ্তয়ে।।৪২।। মাঘমাসি চ সংপ্রাপ্তে পঞ্চম্যাং কৃষ্ণপক্ষকে। আহ্লাদঃ সপ্তলক্ষৈশ্চ সৈন্যৈঃ সার্দ্ধং যযৌ মুদা।। ৪৩।। তালানাদ্যশ্চ তে শুরা স্বং স্বং বাহনাশ্রিতাঃ। আহ্লাদং রক্ষযত্নস্তে যযুঃ পঞ্চদশাহবম্।।৪৪।।

সেই পত্রে লেখা ছিল রাজা জম্বুক বীর এবং বলবান্ ছিলেন, এবং অন্য নৃপগণের দ্বারা অজেয় ছিলেন। আপনি তাঁকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন। সেইরূপ আপনার শত্রু ইন্দ্রের বরে বলীয়ান্ আমার পিতাকে সংগ্রামে হত্যা করে আমার পাণি গ্রহণ করুন।।৩৮-৩৯।।

একথা জ্ঞাত হয়ে হৃদয়স্থিত স্বর্ণবতীকে আশ্বাসন দিয়ে একটি উত্তম পত্র লিখে শীঘ্র শুককণ্ঠে বেঁধে দিলেন।।৪০।

সেই শুকপক্ষী পূর্বে পন্নগ ছিলেন যিনি পুন্ডরীকের দ্বারা শাপিত হয়েছিলেন। এখন রেবত্যংশের কার্য করে মোক্ষত্ব প্রাপ্ত হলেন। সেই রম্য শুকপক্ষীর মৃত্যুর পর দেবী স্বর্ণবতী তার দাহ করে তার তৃপ্তি বিধানের জন্য ব্রাহ্মণগণকে দান দিলেন।।৪১-৪২।।

বংগদেশং সমুল্লংঘ্য শীঘ্রং প্রাপ্তা হিমালয়ম্। রূপনং পত্রকর্তারং বলখানিরুবাচ তম্।।৪৫।। গচ্ছত্বং বীর কবচী করালাশ্চং সমাস্থিতঃ। পঞ্চশাস্ত্র সমাযুক্তো রাজানং শীঘ্রমাবহ।।৪৬।। যুদ্ধচিহ্নং তনৌ কৃত্বা মামাগচ্ছ ত্বরান্বিতঃ। তথা মত্বা শিখন্ড্যংশো যযৌশীঘ্রং সরূপনঃ।। ৪৭।। স দদর্শা সভাং রাজ্ঞোবহুশুর সমন্বিতাম্। পার্বতীয়ৈনৃপেঃ সার্দ্ধং সহস্রৈবলবত্তরেঃ।।৪৮।। স উবাচ নৃপশ্রেষ্ঠং নেত্ৰসিংহং মহাবলম্। ত্বৎসুতায়া বিবাহায় বলখানির্মহাবলঃ। সপ্তলক্ষবলৈগুপ্তঃ সংপ্রাপ্তস্তব রাষ্ট্রকে।।৪৯।। তস্মাত্ত্বং স্বমুতাং শ্রীঘ্রমাহালাদায় সমর্পয়। শুল্কং মে দেহি নৃপতে যুদ্ধরূপং সুদারুণম্।।৫০।।

ইত্যবসরে মাঘমাস আগত হলে কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আহ্লাদ সাতলক্ষ সেনার সঙ্গে মহানন্দে যুদ্ধ করতে গেলেন। তালনাদিবীর নিজ নিজ বাহনে আরোহণ করে পনেরদিনের মধ্যে আহ্লাদকে রক্ষা করতে সেখানে গেলেন।।৪৩-৪৪।।

বংগদেশ লংঘন করে তারা শীঘ্র হিমালয়ে পৌঁছে গেলেন। সেখানে পত্রবার্তা রূপণকে পত্র দিয়ে বলখানি বললেন–হে বীর, তুমি কবচধারী করাল অশ্বে সমারূঢ় হয়ে পঞ্চশস্ত্র সমাযুক্ত হয়ে রাজাকে শীঘ্র আহ্বান কর। শরীরে যুদ্ধচিহ্ন করে শীঘ্র আমার কাছে এস। একথা স্বীকার করে শিখন্ডীর অংশে জাত রূপণ শীঘ্র চলে গেলেন।।৪৫-৪৭।।

তিনি অনেক শূরবীর যুক্ত রাজসভাতে পর্বতের থেকের অধিক বলবান্ সহস্র রাজমুক্ত রাজাকে সভাস্থিত দেখলেন।।৪৮।।

সেখানে পৌঁছে তিনি মহাবলবান্ নেত্রসিংহ রাজাকে বললেন– তোমার পুত্রীকে বিবাহ করার জন্য মহান্ বলখানি সাতলক্ষ সেনা সঙ্গে নিয়ে তোমার রাজ্যে এসে উপস্থিত হয়েছে! এই জন্য তুমি শীঘ্র নিজপুত্রীকে আহ্লাদের কাছে সমর্পণ কর। হে নৃপতি, যুদ্ধরূপ সুদারুণ শুল্ক আমাকে দিয়ে দাও।।৪৯-৫০।।

ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য স রাজা ক্রোধমূর্ছিতঃ। পট্রনাধিপমাজায় ভূপং পূর্ণবলং রুষা। অরুধৎ স কপাটং চ তস্য বন্ধনহেতবে।।৫১।। পাশহস্তাঞ্ছরশতং পট্রনাধিপরক্ষিতাম্। দৃষ্ট্বা স রুপনো বীরঃ খংগযুদ্ধমচীকরৎ।।৫২।। হত্বা তমুকুটং রাজ্ঞো গৃহীত্বাকাশগোবলী। বলখানিং তু সম্প্ৰাপ্য চিহ্নং তস্থৈন্যবেদয়ৎ।।৫৩।। ইতি শ্রুত্বা প্রসন্নত্মা সপ্ত লক্ষদলৈৰ্যতঃ। অরুধন গরীং সর্বাং নেত্রসিংহেন রক্ষিতাম্।।৫৪।। নেত্রসিংহস্ত বলবান পার্বতীয়ৈনৃপেঃ সহ। হিমতুংগতলং প্রাপ্য যুদ্ধাৰ্থীতাসমাহুয়ৎ।।৫৫।। সহস্রাং চ গজাস্তস্য হয়া লক্ষং মহাবলাঃ। সহস্রং চ নৃপাঃ শূরাশ্চতুর্লক্ষ পদাতিভিঃ।।৫৬।।

তার এইরূপ বচন শ্রবণ করে রাজা ক্রোধে মূর্ছিত হয়ে গেলেন এবং তাকে বন্ধন করার জন্য পট্টনাধিপকে আজ্ঞা দিলেন।।৫১।

পাশহস্ত পট্টনাধিপ দ্বারা রক্ষিত একসহস্র শূরগণকে দেখে বীর রূপণ খড়্গের দ্বারা যুদ্ধ করেছিলেন এবং রাজমুকুট হনন করে তা গ্রহণ করে সেই মহাবলী আকাশগামী হয়ে বলখানির কাছে পৌঁছে গেলেন ও সেই মুকুট (যুদ্ধচিহ্ন) তাঁকে দিয়ে দিলেন।।৫২-৫৩।।

একথা শ্রবণ করে পরমপ্রসন্ন চিত্ত হয়ে একলক্ষ দল দ্বারা নেত্রসিংহের দ্বারা রক্ষিত সমস্ত নগরী ঘিরে ফেললেন।। ৫৪।।

বলবান্ নেত্রসিংহও পর্বতীয় নৃপতিগণের সাথে হিমতুঙ্গতলে গিয়ে বলখানিকে যুদ্ধে আহ্বান করলেন।।৫৫।।

রাজা নেত্রসিংহের সাথে একসহস্ৰ হাতী, একলক্ষ মহাবলী অশ্ব, একসহস্র বীর নৃপ এবং চারলক্ষ পদাতিক সৈন্য ছিল।।৫৬।।

যোগসিংহ গর্জেঃ সার্দ্ধং বলখানিং সমাহুয়ৎ। ভোগসিংহো হয়ে সার্দ্ধাং কৃষ্ণাংশং চ সমাহুয়ৎ।।৫৭। বিজয়ো নৃপ পুত্রশ্চ স্বভূপতিভিঃ সহ। দেবসিংহস্তথা ম্লেচ্ছৈ রূপণং চ সমাহুয়ৎ।।৫৮।। তয়োশ্চাসীন্ মহাদ্যুদ্ধং সেনয়োন্তত্র দারুণম্। নির্ভয়াশ্চৈব তে শূরা পাৰ্বতীয়াঃ সমংততঃ।। জম্বুস্তে শাত্রবীং সেনাং দ্বিলক্ষাং বীরপালিতাম্।।৫৯। প্রভগ্নং স্ববলং দৃষ্ট্বা চত্বারো মদমত্তকাঃ। দিব্যানশ্বান্ সমারুহ্য চক্রঃ শত্রোমহাবর্ধম্।।৬০।। যুদ্ধায় সম্মুখং প্রাপ ভৃগুশ্রেষ্ঠ পুনঃ পুনঃ। অহোরাত্রং রণশ্বাসীত্তেষাং তত্রৈব দারুনঃ।।৬১।। এবং সপ্তাহ্নি সজ্ঞাতে যুদ্ধে ভীরুভয়ংকরে। উপায়ৈ বহুভিবীরাশ্চক্রুশ্চৈব রণং বহুম্।।৬২।।

যোগসিংহ গজারূঢ় হয়ে বলখানিকে যুদ্ধে আহ্বান করলেন, ভোগসিংহ অশ্বারূঢ় হয়ে কৃষ্ণাংশকে আহ্বান করলেন। বিজয় এবং নৃপপুত্ৰ সমস্ত ভূপতিগণের সাথে ছিন। দেবসিংহ ম্লেচ্ছগণের সাথে রূপণকে যুদ্ধের জন্য আহ্বান করলেন। দুইপক্ষের সেনার মধ্যে সেখানে ভীষণ যুদ্ধ হল। সেই পর্বতীয় শূরগণ প্রচন্ড নির্ভয় ছিলেন। তারা শত্রুপক্ষের দুইলক্ষ বীর সেনাকে হত্যা করলেন। নিজ সেনাগণকে প্রভগ্ন দেখে চার মদমত্ত নিজ দিব্য অশ্বে সমারূঢ় হয়ে শত্রুগণকে মহাবধ করতে লাগলেন। কিন্তু তারা ঢক্কামৃত ধ্বনির দ্বারা পুনর্জীবন লাভ করতে লাগলেন।।৫৭-৬০।।

হে ভৃগুশ্রেষ্ঠ, রাজা নেত্রসিংহের বল বারংবার যুদ্ধ করার জন্য সম্মুখে আসতে লাগলেন। এইভাবে তাদের এক অহোরাত্র ভয়ংকর যুদ্ধ হয়েছিল এই প্রকারে সাতদিন ভীরু ভয়ংকর যুদ্ধ হওয়ার পর বীরগণ প্রভৃত উপায়ের দ্বারা অনেক প্রকার যুদ্ধ করেছিলেন।।৬১-৬২।।

পুনস্তে জীবমাপন্না জঘুস্তান্নি পুমৈন্যপান্। তালনাদ্যাস্ত তে শূরা দুঃখিতাস্তত্র চা ভবন্। নিরাশাং বিজয়ে প্রাপ্য কৃষ্ণাংশং শরণং যযুঃ।।৬৩।। তানাশ্বাস স কৃষ্ণাং শস্তস্ত্র দিব্যহয়ে স্থিতঃ। নভোমার্গেন বলবান স্বর্ণবত্যতিকং যযৌ।।৬৪।।। হর্মোপরি স্থিতাং দেবীং সর্বশোভাসসন্বিতাম্। নত্বোবাচ বচঃ শ্লক্ষনং কিংকরোহমিহোদয়ঃ। শরণ্যাং ত্বামুপাগচ্ছং কামাক্ষীমিব ভামিনি। ৬৫।। বৃত্তান্তং কথয়ামাস যথাসীচ্চ মহারণঃ। ক্ষমেন কর্শিতা বীরা নিরাশং জীবনেহ গমন্।।৬৬।। সাহ চোদয়সিংহ ত্বং কামাক্ষ্যা মন্দিরং ব্রজ। অহং চ স্বালিভিঃ সার্ধং নবম্যাং পূজনেরতা।।৬৭।।

শত্রুর যে সেনাদেরকে তারা মেরে দিত তারা পুনর্জীবিত হয়ে যেত। এরজন্য তালনাদি মহাশূরগণ প্রভূত দুঃখিত হতেন। যুদ্ধে নিরাশ হয়ে তারা সকলে কৃষ্ণাংশের স্মরণে যান। কৃষ্ণাংশ সকলকে আশ্বাস দিয়ে নিজ দিব্য অশ্বে সমাস্থিত হয়ে নভঃমার্গে সেই বলবান্ স্বর্ণবতীর সমীপে যান।।৬৩-৬৪।।

সকল প্রকার শোভা সমন্বিত নিজ মহলাস্থিত সেই দেবী স্বর্ণবতীকে প্রণাম করে “আমি উদয় নামক কিংকর” এই রূপ শ্লক্ষ বচনে তাঁকে কৃষ্ণাংশ বলেছিলেন যে, হে ভামিনি, কামাক্ষী দেবীর ন্যায় শরণ্যা আপনার কাছে এসেছি। তিনি যুদ্ধবৃত্তান্ত সমস্ত স্বর্ণবতীকে শুনিয়েছিলেন। শ্রমকশিত বীরসেনাদের নিরাশার কথাও বলেছিলেন।।৬৫-৬৬।।

ঢক্কামৃতস্য বাদ্যেন পূজয়ে সর্বকামদাম্। ইতি শ্রুত্বা স বলবান্ স্বসৈন্যং প্রতি চা গমৎ।।৬৮।। অর্ধশেষাং রণাৎসেনা পরাজাপ্য চ দুদ্রুবুঃ। পট্রনাখ্যপুহের প্রাপ্তা জয়ং প্রাপ্য মহাবলাঃ।।৬৯।। পরাজিতে রিপৌ তস্মিন্নেত্ৰসিংহ সুতৈঃ সহ। গৃহমাগত্য বলবান্ বিপ্রোভ্যো গোধনং দদৌ।।৭০।। নবম্যাং পিতরং প্রাহ দেবী স্বর্ণবতী তদা। কামাক্ষীসেবনেনাশু কুরু যাগোৎসবং মম।।৭১।। ইতি শ্রুত্বা পিতা প্রাহ স্বপ্নো দৃষ্টস্তযা ময়া। পূজনাম্ মংগলং রাজ্ঞাং নো চেদ্বিঘ্নো হি শোভনে।।৭২।। পিত্রোক্তৈবং নিশায়াং তুসা সুতা পিতুরাজ্ঞয়া। ঢক্কামৃতস্য বাদ্যেন কামাক্ষী মন্দিরং যযৌ।।৭৩।।

তখন দেবী স্বর্ণবতী বলেছিলেন, হে উদয়সিংহ তুমি কামাক্ষী দেবীর মন্দিরে চলে যাও আর আমিও সখীদের সাথে কামাক্ষী দেবীর মন্দিরে নবমী তিথিতে চলে যাব। সেখানে পূজনে রত হয়ে ঢক্কামৃত বাদ্য দ্বারা ঢক্কামৃত দ্বারা সমস্ত কামনা প্রদানকারী কামাক্ষী দেবীর পূজন করব। একথা শ্রবণ করে কৃষ্ণাংশ নিজ সেনাদলে ফিরে এলেন।।৬৭-৬৮।।

যুদ্ধে অর্ধশেষ সেনা নিয়ে পরাজিত হয়ে তিনি পলায়ন করলেন এবং পট্টনাখ্যপুরে মহাবলবান্ জয় প্রাপ্ত হন। নেত্রসিংহ পুত্রের সাথে শত্রুগণকে পরাজিত করে গৃহে ফিরে আসেন এবং ব্রাহ্মণগণকে গো এবং ধনসম্পদ দান করলেন।।৬৯-৭০।।

নবমী তিথিতে স্বর্ণবর্তী পিতাকে বললেন, কামাক্ষী দেবীর সেবা দ্বারা শীঘ্র আমার যাগোৎসব করুন। কারণ তাঁর প্রসাদেই আপনি দুর্জয় জয় লাভ করেছেন। একথা শ্রবণ করে তাঁর পিতা বললেন, আজ আমি এই প্রকার স্বপ্ন দেখেছি যে, দেবীর পূজনের দ্বারা রাজগণের মঙ্গল হবে এবং কোনো প্রকার শোভন কার্যে বিঘ্ন হবে না, যদি এরূপ করা না হয় তাহলে অবশ্যই বিঘ্ন হবে।।৭১-৭২।।

পিতার এই রূপ বচন শ্রবণ করে স্বর্ণবর্তী রাত্রে পিতার আজ্ঞাতে ঢক্কামৃত বাদ্য গ্রহণ করে কামাক্ষী মন্দিরে যান।।৭৩।।

কৃষ্ণাংশো মাল্যকারস্য বধূর্ভূত্বা সমাগতঃ। ঢক্কামৃতং চ নারীভ্যো গৃহীত্বা ত্বরিতো যযৌ।।৭৪।। এতস্মিন্নস্তরে বীরাঃ ষষ্ঠিবাহনসং যুতাঃ। ঢক্কার্থং প্রযযুঃ শীঘ্রং স্বশস্ত্রৈ সমুদ্যতাঃ।।৭৫।। তানাগতান্ স বলবান্ দৃষ্ট্বা খংগং গৃহীতবান্। পঞ্চ পঞ্চাশতঃ শূরাননয় যদ্যমসাদনম্।।৭৬।। কৃষ্ণাংশ স্বরিতো গত্বা রুপানো যত্র তিষ্ঠতি। ঢক্কামৃতং চ সংপ্রাপ্য হয়ারুঢ়ো যযৌ সভাম্।।৭৭।। হতে ঢক্কামৃতে দিব্যে নেত্রসিংহো ভয়াতুরঃ। ঐন্দ্রং যজ্ঞং তথা কৃত্বা হবনায় পরোহ ভবৎ।।৭৮।। প্রভাত সমনুপ্রাপ্তে তে বীরাঃ স্ববলৈঃ সহ। তরসা প্রযযুঃ সর্বৈ গজোষ্ট্রহয় সংস্থিতাঃ। দিনান্তে প্রাপ্তবন্তশ্চ যত্রাভূৎ সমহারণঃ।।৭৯।। কৃষ্ণাংশঃ পূজয়িত্বা তং দঋৌ ঢক্কামৃতং বলী। তচ্ছদ্বেন মৃতা বীরাঃ পুনরুজ্জীবিতাস্তদা।।৮০।।

সেখানে কৃষ্ণাংশ মালাকার বধূর ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। তিনি স্ত্রীগণের থেকে সেই ঢক্কামৃত বাদ্য গ্রহণ করে শীঘ্র চলে যান।।৭৪।।

ইতিমধ্যে সেই ঢক্কামৃত বাদ্য গ্রহণ করতে ষাটবীর বাহন সংযুক্ত হয়ে এবং শস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। এঁদের দেখে কৃষ্ণাংশ খড়ের দ্বারা পঞ্চাশজন বীরকে যমলোকে পাঠিয়ে দেন এবং শীঘ্র রূপণের কাছে পৌঁছে যান। এরপর সেই ঢক্কামৃত বাদ্য নিয়ে অশ্বারূঢ় হয়ে রাজা নেত্রসিংহের সভায় পৌঁছান।।৭৫-৭৭।।

প্রভাত হলে সকল বীর নিজ নিজ সেনাগণের সাথে হাতী, উট, অশ্বে সওয়ার হয়ে প্রচন্ড বেগে দিনান্তে রণস্থলে পৌঁছে যান। মহাবলী কৃষ্ণাংশ সেই ঢক্কামৃত পূজন করে সেটি বাজিয়ে যুদ্ধে মৃত সৈনিকগণকে পুনর্জীবিত করলেন।।৭৯-৮০।।

সপ্তলক্ষবলং তস্য পুনঃ প্রাপ্তং মদাতুরম্। রুরোধ নগরীং সর্বাং দঋৌ বাদ্যান্যনেকশঃ।।৮১।। রুদ্ধে তু নগরে তস্মিন্নেত্রসিংহো ভয়াতুরঃ। স্বাত্মানমপয়ামাস বহ্নৌ শক্রায় ধীমতে।।৮২।। তদা প্রসন্নো ভগবানুবাচ নৃপতিং প্রতি রামাংশোয়ং কৃষ্ণাংশো ভূবি জাতৌ কলৈকয়া।।৮৩।। তস্মৈ যোগ্যায় সা কন্যা রামাংশায় যশস্বিনে। যোগিনীয়ং স্বর্ণবতী রেবত্যংশাবতারিনী।।৮৪।। ইত্যুক্ত্বা চ স্বয়ং দেবী ঢক্কামৃত মুমাপ্রিয়ম্। হৃত্বা বহ্নৌ সমাক্ষিপ্য দুর্গায়ৈ সংন্যবেদয়ৎ।।৮৫।। গতে তস্মিন্ সুরপতৌ স রাজা ব্রাহ্মণৈঃ সহ। মহীপতি প্ৰতি যযৌ মেলনার্থং সমুদ্ধতঃ।।৮৬।। তথাগতং নৃপং দৃষ্ট্বা কৃষ্ণাংশাশ্চ মহীপতিঃ। আহ্লাদমাতুলঃ প্রাহ মান্য সর্ববলৈঃ সদা।।৮৭।।

এইভাবে তাঁর সাতলক্ষ সেনা পুনরায় সদাতুর প্রাপ্ত হলেন। তিনি সমস্ত নগরী পুনরায় ঘিরে ফেললেন এবং অনেকপ্রকার রণবাদ্য বাজালেন। নগর রূদ্ধ হলে নেত্র সিংহ অত্যন্ত ভয়াতুর হন। তিনি নিজেকে ধীমান অগ্নিতে ইন্দ্রের উদ্দেশ্যে অর্পিত করলেন। তখন ভগবান্ প্রসন্ন হয়ে রাজাকে বললেন যে, কৃষ্ণাংশ এবং রামাংশ এককলা থেকে ভূমন্ডলে উৎপন্ন হয়েছেন। সেই পরম যোগ্য যশস্বী রামাংশকে রেবতীর অংশ সম্ভূত স্বর্ণবতীকে প্রদান কর।।৮১-৮৪।।

একথা বলে ইন্দ্রদেব স্বয়ং দেবী উমার পরমপ্রিয় ঢক্কামৃত হরণ করে বহ্নিতে নিক্ষেপ করলেন।।৮৫।।

সুরস্বামী ইন্দ্র চলে যাওয়ার পর রাজা নেত্র সিংহ ব্রাহ্মণগণকে সঙ্গে নিয়ে মহীপতির কাছে গমন করলেন।।৮৬।।

রাজত্রয়ং স বলবানাহ্লাদঃ সানুজৈ সহ। মৎসংক্তৌ ন স্থিতো বীরঃ কুলে হীনত্বামাগতঃ।।৮৮।। আর্যাভীরী স্মৃতা তেষাং কিংত্বয়া বিদিতং ন হি। যদি দেয়া ত্বয়া কন্যা তৰ্হি ত্বং হীনতাং ব্রজ।।৮৯।। অতস্ত্বং বচনং চেদং কুলোযোগ্যং শৃণুম্ব ভোঃ চতুরো বালকান্নীচাং স্তালনে সমন্বিতান্।।৯০।। বঞ্চয়িত্বা বিবাহার্থে শিরাংস্যেষাং সমাহর। মন্ডপান্ডে মখ কৃত্বা চামুন্ডায়ৈ সমপৰ্য।।৯১। ত্বকন্যয়া সমাহৃতা বীরা বৈ রেবতী হি সা। পঞ্চাৎকন্যাং স্বয়ং হত্বা কুলকল্যানমাবহ।।৯২।। নো চেদ্ ভবাণ ক্ষয়ং যাযাসকুলো জম্বুকো যথা। ইত্যুক্ত্বা স যযৌ সার্দ্ধং যত্রাহ্লাদস্যবান্ধবঃ।।৯৩।।

রাজাকে আসতে দেখে কৃষ্ণাংশ এবং মহীপতি আহ্লাদকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করতে নির্দেশ দিলেন। রাজা নেত্র সিংহ সেখানে উপস্থিত হলে তাঁকে বললেন, হে রাজন, পরম বলবান্ আহ্লাদ নিজ অনুজগণের সঙ্গে নীচতাপ্রাপ্ত হয়েছে। সে এখন আমার সঙ্গে একই পংক্তিতে বসবাসের যোগ্য নয়। তার আর্যা আভীরী কুলজাত একথা আপনার অবিদিত নয়। যদি আপনি তাকে কন্যাদান করেন তাহলে আপনিও নীচতা প্রাপ্ত হবেন। সুতরাং আপনি শ্রবণ করুন, চার নীচ বালককে তালনের দ্বারা বঞ্চিত করে বিবাহের জন্য তাদের শিরগ্রহণ করে বিবাহের জন্য তাদের শিরগ্রহণ করে বিবাহের মন্ডপের অন্তে যজ্ঞ করে চামুন্ডা দেবীর উদ্দেশ্যে সমর্পিত করুন।।৮৭-৯১।।

তোমার কন্যা রেবতীর অংশ সম্ভূত এবং বীরের দ্বারা সমাহূত। অতঃপর নিজ কন্যাকে বধ করে নিজ কুলের কল্যাণ প্রাপ্ত কর। তা না হলে আপনি রাজা জম্বুকের ন্যায় সকল ক্ষয়কারী হবেন। এ কথা বলে তিনি আহ্লাদের সাথে তার বন্ধুদের কাছে চলে গেলেন।।৯২-৯৩।।

ইতি শ্রত্বা স শল্যাংশ সুযোধনমুখেরিতম্। তথেত্যুত্ত্বোৎসবং কৃত্বামন্ডপান্তে বিধানতঃ। আহ্লাদস্য সমীপং স গত্বৈদ্ধতচনায় হি। তমাহ দন্ডবৎপাদৌ গৃহীত্বা নৃপতিঃ স্বয়ম্।।৯৪।। ভবন্তোং শাবতারাশ্চ ময়া জ্ঞাতা সুরোত্তমাৎ। নিরস্ত্রাণ পঞ্চ যুষ্মাংশ্চ পূজয়িত্বা যথাবিধি। রামাংশায় স্বকন্যাং চদাস্যামি কুলরীতিতঃ।।৯৫।। ইত্যাহ্লাদং সমাদিশ্য স নৃপশ্ছলমাশ্রিতঃ। দুর্গোৎসবে যযৌ গেহং তদ্বধায় সমুদ্যতঃ।।৯৬।। সহস্রং মন্ডপে ভূপাসংস্থাপ্য স্ববলৈঃ সহ। তালনাদ্যাংশ্চ ষট্ শূরামন্ডপান্তে সমাহুয়ৎ।।৯৭।। বিবাহপ্রথমাবর্তৈ যোগসিংহো হসিমুত্তমম্। বরমাহত্য শিরসি জগর্জ বলবান রুষা।।৯৮।।

‘এইরূপ হবে’ — একথা বলে সেই শল্যাংশ সুযোধনের বচন অনুসারে মন্ডপান্তে উৎসব করার কথা জানাতে আহ্লাদের কাছে গেলেন এবং রাজা স্বয়ং তার চরণে দণ্ডবৎ হয়ে বললেন আপনারা সকলের অংশাবতার একথা আমি সুরোত্তমের দ্বারা জ্ঞাত হয়েছি। এই জন্য আপনারা নিরস্ত্র হয়ে গেলে আমি কুলবিধি অনুসারে যথাবিধি পূজনপূর্বক নিজকুল রীতি অনুসারে রামাংশকে নিজ কন্যা দান করব।।৯৪-৯৫।।

রাজা নেত্রসিংহ ছলের আশ্রয় নিয়ে আহ্লাদ প্রভৃতিকে আদেশ দিয়ে তাকে বধ করতে সমুদ্যত হয়ে গৃহে চলে গেলেন।।৯৬।।

এরপর রাজা নেত্রসিংহ একসহস্র নৃপতিকে মন্ডপে বসিয়ে তালনাদিকে আহ্বান করলেন।।৯৭।।

বিবাহ প্রথমাবর্তে যোগ সিংহ নিজ উত্তম খড়গ গ্রহণ করে বরের মস্তকে প্রহার করে ক্রোধে গর্জন করলেন।।৯৮।।

তমাহ তালনো ধীমান্ন যোগ্যং ভবতা কৃতম্। শ্ৰুত্বাহ নেত্রসিংহস্তং কুলরীতিয়ং বলিন্। নিরায়ুধৈ পরৈ সার্দ্ধং শাস্ত্রিনাং সংগরোহিনঃ।।৯৯।। ইতি শ্রুত্বা যোগসিংহ কৃষ্ণশস্তং সমারুধৎ। ভোগসিংহ তথাকৃষ্য বলখানি গৃহীতবান্।।১০০ । বিজয়ং তৃতীয়াবর্তে সুখ খানিন্যরুংদ্ধ বৈ। চতুর্থাবর্তকে গৃহীত্বাশু যুযুধে তদ্বলৈঃ সহ।।১০১।। পঞ্চমে বহুরাজানং তালনশ্চ সমারুধৎ। ষষ্ঠাবর্তে নেত্রসিংহং তথাহ্লাদো গৃহীতবান্।।১০২।। সংপ্রাপ্তে তুমুলে যুদ্ধে বহুশূরাঃ ক্ষয়ং গতাঃ। নিরায়ুধাঃ ষড়বলিনঃ সংক্ষম্য ব্রনমুত্তমম্। নিরায়ুধান্নিপুন্ স্বান্ স্বাংশ্চক্রঃ শক্তিপ্রপূজকাঃ।।১০৩।

সেই সময় ধীমান তালন বললেন, আপনি এটা সঠিক কাজ করলেন না। একথা শ্রবণ করে নেত্রসিংহ তাঁকে বললেন, হে বলি, আমাদের কুলরীতি অনুসারে নিরায়ুধ বরের সঙ্গে শস্ত্রধারীদের যুদ্ধ হয়। একথা শ্রবণ করে কৃষ্ণাংশ যোগসিংহকে সমারূদ্ধ করলেন। এইভাবে বলখানি ভোগসিংহকে আকর্ষণ করে গ্রহণ করলেন। তৃতীয়াবর্তে সুখখানি বিজয়কে নিরূদ্ধ করলেন। চতুর্থাবর্তে পূর্ণবল শত্রুনৃপগণকে রূপন গ্রহণ করলেন। পঞ্চমাবর্তে বহুরাজাকে তালন সমারূদ্ধ করলেন। ষষ্ঠআবর্তে রাজা নেত্রসিংহকে আহ্লাদ গ্রহণকরলেন। সেই সময় তুমুল সংগ্রাম আরম্ভ হলে প্রচুর শূরবীর ক্ষয় হল। বিনা আয়ুধ এই ছয় বলবান্ ক্ষতসহনকারী শক্তির প্রপূজক নিজ নিজ শত্রগণকে বিনায়ুধ করে দিলেন।।৯৯-১০৩।।

এতস্মিন্নন্তরে দেবঃ কালদর্শী সমাগতঃ। নভোমার্গেন তান্ শ্বাংস্তেভ্য আগত্য সংদদৌ।।১০৪।। বিন্দুলং চৈব কৃষ্ণাংশো দেবস্তস্ত্র মনোরথম্ রূপণশ্চ করালাশ্বং চাহ্লাদস্তু পপীহকম্।।১০৫।। হরিণীং বলখানিশ্চ তভ্রাতা হরিণাগরম্। সিংহিনীং তালনঃ শূরঃ সমারুহ্য রনোদ্যতঃ।।১০৬।। রাত্রৌ তনৃপতেঃ সেনাং হত্বা বদধ্বা চ তৎপতিম। দোলাং গেহাচ্চ নিষ্কাশ্য সপ্তভ্রমরকারিতাম্।।১০৭।। স্বসৈন্যং তে সমাজগুনির্ভয়া বলবত্তরাঃ। তান্ সর্বান্ নেত্রসিংহাদীন্ দৃষ্ট্বা পাহীতি জপ্লিতঃ।।১০৮।। নিগড়েরেকতঃ কৃত্বা পঞ্চ ভূপান্ হি বঞ্চকান্। কারাগারে মহাঘোরে তত্র তান্ সংন্যবাসয়ন্।।১০৯।।

ইতিমধ্যে কালদর্শী দেব সেখানে আগত হলেন। নভোমার্গে তিনি এসে কৃষ্ণাংশ প্রভৃতিকে অশ্ব প্রদান করলেন এবং আহ্লাদ পপীহক নামক অশ্ব প্রাপ্ত হলেন।।১০৪-১০৫।।

বলখানি হরিণি এবং তার ভাই হরিনাগর তালন সিংহনী নামক অশ্ব প্ৰাপ্ত হলেন। এই সকল শূরগণ সেই সেই অশ্বে সমারূঢ হয়ে রণে উদ্যত হলেন।।১০৬।।

রাত্রে রাজা নেত্রসিংহের সেনাদের হনন করে রাজাদেরকে বেঁধে নিয়ে এবং দোলাকে ঘর থেকে বার করে সেই বলবাগণ নির্ভয়ে নিজ সেনাদলে ফিরে এলেন। তারা সকলে নেত্রসিংহাদিকে দেখে “রক্ষা করো”–একথা বলতে লাগলেন।।১০৭-১০৮।।

সেই পাঁচবঞ্চক ভূপতিকে নিগড়ে একত্রিত করে মহাঘোর কারাগারে বন্ধ রাখা হল।। ১০৯।।

নেত্রসিংহো বরো ভ্রাতা সুন্দরারণ্য ভূমিপঃ। হেতুং জ্ঞাত্বাযযৌ শীঘ্রং মায়াবী লক্ষসৈন্যকঃ।।১১০। তত্রাগত্য হরানন্দো নান্মা তানযুদ্ধদ্বলী। নেত্ৰসিংহস্য সৈন্যং চ চতুর্লক্ষং তদাগমৎ।।১১১।। পঞ্চলক্ষৈ রণো ঘোরঃ সপ্তলক্ষযুতৈরভূৎ। পঞ্চাহোরাত্রমাত্রং চ তয়োশ্চাসীৎ স সংকুলঃ। অর্দ্ধসৈন্য রিপোস্তত্র হত শোষমদুদ্রুবৎ।।১১২।। বিস্মিতঃ স হরানন্দো রুদ্রমায়া বিশারদঃ। বলাধিক্যযুতাজ্ঞাত্বা শিবধ্যান পরোহ ভবৎ।। ১১৩।। রুচিত্বা শাবরীং মায়াং নানারূপবিধারিনীম্‌। পাষানভূতান্ সকলান্ কৃত্বা ভূপান্ সমাযযৌ।। ১১৪।। সসুতং ভ্রাতরং জ্যেষ্ঠং নৃপং পূর্ণবলং ততঃ। মোচয়িত্বা যযৌ গেহং কৃতকৃত্যো মহাবলী।।১১৫।।

নেত্রসিংহের বড়-ভ্রাতা ছিলেন সুন্দর অরণ্যভূমির অধিপতি। তিনি এই বন্ধনের কারণ জেনে মায়াবী একলক্ষ সেনা নিয়ে শীঘ্র সেখানে এসে উপস্থিত হন।।১১০।।

হরানন্দ নামধারী সেই নৃপতি নেত্রসিংহের চারলক্ষ সেনা নিয়ে যুদ্ধ করলেন।।১১১।।

কৃষ্ণাংশের সাতলক্ষ সেনার সঙ্গে সেই পাঁচলক্ষ সেনার ঘোর যুদ্ধ হয়েছিল। পাঁচ অহোরাত্র পর্যন্ত দুজনের মহাযুদ্ধ সেখানে হয়েছিল। সেখানে শত্রুপক্ষের হতশেষ অর্ধসেনা পলায়ন করল।।১১২।

রুদ্র মায়া বিশারদ হরানন্দ এই দেখে প্রচন্ড বিস্মিত হন। তিনি অধিক বলপ্রাপ্তির জন্য শিবের ধ্যানে রত হলেন। সেখানে নানারূপ ধারণকারী শাবরী মায়া রচনা করে সমস্ত নৃপতিকে পাষাণভূত করে দিলেন।।১১৩-১১৪।।

এরপর তিনি পুত্রের সঙ্গে রাজা, জ্যেষ্ঠভ্রাতা এবং পূর্ণবলের বন্ধন মোচন করে কৃতাকৃত্য হয়ে নিজ গৃহে চলে গেলেন।। ১১৫।।

আহ্লাদং নিগড়েবদ্ধা মায়য়া জড়তাং গতম্। নেত্ৰসিংহ স বলবান্যযৌ স্বং দুর্গ মুদ্যতঃ। তং প্রশংস্যানুজং বীরো বিপ্রেভ্যশ্চদদৌ ধনম্।।১১৬।। তদা স্বর্ণবতী দীনা বদ্ধং জ্ঞাত্বা পতি নিজম্। কৃষ্ণাংশাদ্যান্ মোহিতাংশ্চ শম্ভুমায়াবশানুগান্।।১১৭ রুরোদোচ্চেস্তদা দেবীং ধ্যায়ন্তী কামরুপিনীম্‌। তদা তুষ্টা জগদ্ধাত্রী মূৰ্চ্ছিতাং স্তানবোধয়ৎ।।১১৮।। তে সর্বে চেতনাং প্রাপ্তাঃ প্রাহুঃ স্বর্ণবতীং মুদা। ক্বাস্থিতে বন্ধুরাহ্লাদো দেবিত্বং কারণং বদ।। ১১৯।। তে সর্বে চেতনাং প্রাপ্তঃ প্রাহু স্বর্ণবতীং মুদা। কাস্থিতো বন্ধুরাহ্লাদো দেবিত্বং কারণং বদ।।১১৯।। যথা বদ্ধঃ স্বয়ং স্বামী কথয়মাস সা তথা। অহং শুকী ভবাম্যদ্য ভবান্ বিন্দুলসং স্থিতঃ।।১২০।। ইত্যুক্ত্বা সা শুকীভূত্বা কৃষ্ণাংশেন সমন্বিতা। যত্রাস্তে তৎপতিবদ্ধস্তত্রসা কামিনী যযৌ।।১২১।।

মায়ার দ্বারা জড়তা প্রাপ্ত হয়ে আহ্লাদকে নিগড়ে বন্ধন করে বলবান্ নেত্রসিংহ নিজ দুর্গে ফিরে গেলেন এবং ভ্রাতার প্রশংসা করে বিপ্রগণকে প্রচুর ধনদান করলেন।।১১৬।।

দীন স্বর্ণবতী নিজস্বামীকে বদ্ধ জেনে এবং কৃষ্ণাংশাদিকে শিবমায়ার বশীভূত জেনে কামরূপিণী দেবীর ধ্যানে মগ্ন হলেন এবং উচ্চৈস্বরে রোদন করতে লাগলেন। সেই সময় জগদ্ধাত্রী দেবী কৃপাপূর্বক সব মূৰ্চ্ছিতগণকে বোধিত করলেন। তাঁরা সকলে চেতনা প্রাপ্ত হয়ে প্রসন্নতাপূর্বক স্বর্ণবতীকে বললেন, বন্ধু আহ্লাদ কোথায় আছেন। হে দেবী, তুমি তা বল।।১১৭-১১৯।।

আহ্লাদ যে রকমভাবে স্বয়ং বদ্ধ হন, তিনি সব বৃত্তান্ত তাঁকে বললেন। সকল বৃত্তান্ত বলে দেবী স্বর্ণবর্তী বললেন, আমি আজশুকী, আপনি বিন্দুলেপরি সংস্থিত হোন। এরপর তিনি ও কৃষ্ণাংশ আহ্লাদের বদ্ধস্থানে চলে গেলেন।।১২০-১২১।।

কৃষ্ণাংশোহপি হয়ারুঢ়ো নভোমার্গেন চাপ্তবান্। অভীরীং মূর্তিমাসাদ্য স্বামিনং প্রতি সা যযৌ।।১২২।। আশ্বাস্য তং যথাযোগ্যং কৃষ্ণাংশং প্রত্যবর্ণয়ৎ। কৃষ্ণাংশস্তত্র বলবাহ্নত্বা দুর্গ নিবাসিনঃ।।১২৩।। রক্ষকাঞ্ছতসাহস্রান্ হত্বা ভ্রাতর মায়য়ৌ। পৌর্ণিমাং মধুযুক্তাং চ জ্ঞাত্বা সর্বে ত্বরান্বিতাঃ।। ১২৪ অযোধ্যাং শীঘ্রমাগম্য স্নাত্মা বৈ সরযুং নদীম্। হোলিকাদাহ সময়ে শীঘ্রং বৈন্যাং সমাগতাঃ।।১২৫।। স্নান ধ্যানাদিকা নিষ্ঠা কৃত্বা গেহমুপাযযুঃ। সাগরস্য তটং প্রাপ্য কৃত্বা তে চ মহোৎসবম্। চৈত্রস্য কৃষ্ণপঞ্চম্যাং স্বগেহং পুনরাযঃ।।১২৬।। দূতা উষ্ট্রসমারুঢ়াস্তৎ ক্ষেমকরণোৎ সুকাঃ। বৈশাখে শুক্লপঞ্চম্যাং স্বগেহং পুনরাযযু।। ১২৭।। মলনা ভূপতিশ্চৈব গেহে গেহে মহোৎসবম্ কারয়িত্বা বিধানেন ব্রাহ্মাণেভ্যো দদৌ ধনম্।।১২৮।।

কৃষ্ণাংশ অশ্বারূঢ় হয়ে আহ্লাদের কাছে পৌঁছালেন এবং স্বর্ণবতীও আভীরী মূর্তি গ্রহণ করে স্বামীর কাছে চলে গেলেন।।১২২।।

সেখানের অবস্থার কথা স্বর্ণবতী যথোচিতরূপে কৃষ্ণাংশের কাছে বর্ণনা করলেন। কৃষ্ণাংশও দুর্গস্থিত শতসহস্র রক্ষককে হত্যা করে নিজ ভ্ৰাতাকে উদ্ধার করলেন। এরপর মধুযুক্তপূর্ণিমার বৈশাখমাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে তারা পুনরায় স্বগৃহে ফিরে এলেন এবং প্রত্যেক গ্যূহ মহোৎসব হতে লাগল। এইভাবে তারা উৎসব করে ব্রাহ্মণঘণকে ধনদান করলেন।।১২৬-১২৮।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *