পাথুরিয়াঘাটার দেওয়ান রামলোচন ঘোষের পরিবারবর্গ
রামলোচন ঘোষ থেকেই আমরা এই বংশের সূচনা ধরছি। রামলোচনের এক ভাই কৃপারাম অত্যন্ত ধনী ছিলেন, কিন্তু আজ আর তাঁর বংশের কেউ জীবিত নেই। কায়স্থ বংশীয় রামলোচন ছিলেন লেডি হেস্টিংসের অন্যতম সরকার। ওয়ারেন হেস্টিংসেরও তিনি প্রিয়পাত্র ছিলেন, সাধারণভাবে তাঁকে হেস্টিংসের দেওয়ান বলা হত। দশসালা বন্দোবস্তে এই রামলোচনেরও হাত ছিল। তিনি প্রচুর ধনসম্পদ অর্জন করেন। তাঁর তিন পুত্র : শিবনারায়ণ, দেবনারায়ণ ও আনন্দনারায়ণ– এঁরা প্রত্যেকেই প্রভাবপ্রতিপত্তিশালী জমিদাররূপে খ্যাত ছিলেন। শিবনারায়ণের তিন পুত্র : কালীপ্রসন্ন, দুর্গাপ্রসন্ন, এবং গুরুপ্রসন্ন। ধর্মভীরু, দানশীল, উদার দেবনারায়ণের পুত্রের নাম খেলাৎচন্দ্ৰ– এই খেলাৎচন্দ্র ছিলেন কলকাতার গণ্যমান্য নাগরিকদের অন্যতম। তিনি অনারারী ম্যাজিস্ট্রেট ও জাস্টিস অব দি পীস ছিলেন। মহা ধুমধামের সঙ্গে তিনি তাঁর জন্মদিন পালন করতেন। গোঁড়া হিন্দু খেলাৎচন্দ্র ছিলেন সনাতন ধর্ম-রক্ষণী সভার সভ্য। খেলাৎচন্দ্রের দত্তক পুত্রের নামও আনন্দনারায়ণ; ইনিই ধর্মতলা বাজারের মালিক এবং নিজের নাম অনুসারে বাজারটির নামকরণ করেন ‘আনন্দবাজার’। তাঁর তিন পুত্র : গিরীন্দ্রচন্দ্র, নগেন্দ্রচন্দ্র ও মুনীন্দ্রচন্দ্র। এঁদের মধ্যে নগেন্দ্রচন্দ্র এখন পরলোকগত।
রামলোচনের আর এক ভাই রামপ্রসাদের দুই পুত্র : রামনারায়ণ ও জয়নারায়ণ। রামনারায়ণের দুই পুত্র : রাজবল্লভ ও রামচন্দ্র। রামচন্দ্রের দুই পুত্র : কৈলাসচন্দ্র ও হরিমোহন উভয়েই ছিলেন সঙ্গীতপ্রেমিক। হরিমোহন এখনও জীবিত। কৈলাসচন্দ্রের পুত্র বাবু নবকৃষ্ণ সুশিক্ষিত ভদ্রলোক। জয়নারায়ণের পুত্র বাবু শম্ভুনাথ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কালেক্টর। কথিত আছে, ইনিই বীরভূম জেলায় অ্যারারুট আবিষ্কার করে সেখানে এর চাষ করান। কৃষি-বিজ্ঞানে তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল। তাঁর পুত্র প্রসন্নকুমার বর্ধমান মহারাজের কাউন্সিলের সভ্য!