2 of 2

নিয়তি পুরুষ – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

নিয়তি পুরুষ – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

রাত প্রায় পৌনে বারোটা। ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে! সেইজন্যেই রাস্তাঘাট এর মধ্যে ফাঁকা হয়ে গেছে। লাস্ট বাস থেকে নামবার সময়ই আমার পা-টা মচকে গেল।

বেশি রাত্রির বাস এমনিতেই ঝড়ের বেগে ছোটে। কোথাও বেশিক্ষণ থামতেই চায় না। যাত্রী খুব কম। টালিগঞ্জ ট্রামডিপোর কাছে আমিই একমাত্র নামব। দরজার কাছে হাতল ধরে দাঁড়ানো মাত্র কন্ডাক্টর গাড়ি ছাড়ার ঘণ্টা দিয়ে দিল। চলন্ত গাড়ি থেকে আমাকে লাফিয়ে নেমে পড়তে হল।

হুমড়ি খেয়ে পড়েই যেতাম। অতিকষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি। কিন্তু বাঁ-পায়ের গোড়ালির কাছে বেশ চোট লেগেছে। একটু হাঁটতে গিয়েই দেখলাম, রীতিমতন ব্যথা।

এইসময় একটা রিকশা পেলে ভালো হত। অন্যদিন অনেক রিকশা থাকে এখানে। আজ বৃষ্টির জন্যে রাস্তা ফাঁকা, তাই রিকশাও নেই। মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। বৃষ্টির মধ্যে এখন খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে যেতে হবে।

দু-একটা রিকশা ফুটপাথের ওপর তুলে রেখে তাদের চালকরা ঘুমোচ্ছে। ডেকে তুললে অনেকসময় ওরা যেতে চায় না। মেজাজ দেখায়। কী করব দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে ভাবছি, এইসময় পেছনে ঠুং-ঠুং শব্দ কানে এল। একটা ফাঁকা রিকশা। বুড়ো মতন একজন লোক সেটা চালাচ্ছে। মাথার ওপরে একটুকরো প্লাস্টিক টুপির মতন পরে আছে। সে নিজেই আমাকে জিগ্যেস করল, বাবু যাবেন?

এ যেন মেঘ না চাইতেই জল! কোনও দরাদরি না করে উঠে বসলাম। মেজাজটা আবার একটু প্রসন্ন হতে একটা সিগারেট ধরালাম।

বড়রাস্তা থেকে আমার বাড়ি মিনিট-সাতেকের পথ। সেখানে পৌঁছোবার পর আমি নেমে পড়ে রিকশাওয়ালাকে একটা টাকা দিলাম।

সে বেশ খুশিই হয়েছে মনে হল। অনেকখানি ঝুঁকে সেলাম করল। তারপর যখন আবার সোজা হল, তার মুখখানা দেখে আমি দারুণ চমকে উঠলাম।

কেন চমকালাম তা নিজেই জানি না। খুব সাধারণ চেহারার একজন বুড়ো। মুখে অল্প-অল্প দাড়ি। খুব একটা খারাপ দেখতেও নয়। তবু চমকে ওঠার কারণ কী! কিছু বুঝতে পারলাম না। শুধু বুকের মধ্যে শিরশির করতে লাগল।

ভেতরে এসে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়েও মনের মধ্যে খচখচানিটা রয়েছে। লোকটার মুখে-চোখে তো অস্বাভাবিক কিছু নেই। তবু হঠাৎ ওকে দেখেই আমার গা-টা কেঁপে উঠেছিল কেন?

জামাকাপড় ছেড়ে, আলো নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ার পর মনে পড়ল। এই রিকশাওয়ালাটার সঙ্গে আর-একটা লোকের দারুণ মিল আছে!

বছর-দেড়েক আগে সমস্তিপুর থেকে ফিরছিলাম একবার। একাই। স্টেশানের হকারদের কাছ থেকে দুটো ডিমসেদ্ধ আর তিনপাতা আলুর দম খেয়েছিলাম। টেন ছাড়ার আধঘণ্টার মধ্যেই আমার অসম্ভব পেটব্যথা শুরু হল। তিনবার বমি করলাম। কিছুতেই পেটব্যথা কমে না। বাথরুমের বাইরে দরজার কাছে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম একবার—মনে হল, আমার কলেরা হয়েছে, আমি এক্ষুনি মরে যাব।

হয়তো মরেই যেতাম। সেইসময় ভিড় ঠেলেঠুলে একজন বিহারি ভদ্রলোক এসে জিগ্যেস করলেন, কী হয়েছে? দেখি, জিভ দেখি আপনার—।

ভদ্রলোক ডাক্তার। সঙ্গে তাঁর ওষুধের বাক্স। তিনি আমাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে শুইয়ে দিলেন এক জায়গায়। তারপর এমন সেবা করতে লাগলেন যে, অনেক নিকট আত্মীয়ও সেরকম পারে না।

তাঁর ওষুধে কিছুক্ষণের মধ্যে আমার পেটব্যথা কমে গেল। আর-একটা ওষুধে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।

কিন্তু সেই ডাক্তার ভদ্রলোককে আমি কৃতজ্ঞতা জানাবার সুযোগ পাইনি। ঘুম ভাঙার পর আর দেখতে পাইনি তাঁকে। অন্য লোকজনের মুখে শুনলাম, তিনি বারাউনি নেমে গেছেন। দারুণ আপশোস হয়েছিল। আমার সেই উপকারী বন্ধুর নামটাও জানতে পারিনি। মুখটা অবশ্য স্পষ্ট মনে আছে। মধ্যবয়স্ক লোক। মুখে অল্প-অল্প দাড়ি। অবিকল আজকের রিকশাওয়ালার মতন। এ কখনও হয়? মানুষে-মানুষে এত মিল থাকে! যমজ ভাই হলে অনেকসময় হতেও পারে। কিন্তু একজন ডাক্তার, আর-একজন রিকশাওয়ালা? সেই ডাক্তারই কোনওরকম ভাগ্য-বিপর্যয়ে রিকশাওয়ালা হয়েছে? তাহলে তো আমার উচিত ব্যাপারটার খোঁজ করা। কিংবা যদি সেই ডাক্তারের ভাই-ও হয়—!

পরদিন পায়ে এমন ব্যথা হল যে, বাড়ি থেকে বেরুতেই পারলাম না। আমার ছোট ভাই-ই ডাক্তার! সে আমার হাঁটাচলা একদম বন্ধ করে দিল। সাতদিন পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েই সেই রিকশাওয়ালার খোঁজ করেছিলাম। পেলাম না। অন্য দু-একজন রিকশাওয়ালাকে তার কথা জিগ্যেস করেও কোনও সন্ধান পাওয়া গেল না। অবশ্য এত সামান্য বর্ণনায় কোনও মানুষকে খুঁজে বের করাও যায় না। মধ্যবয়স্ক এবং মুখে সামান্য দাড়িওয়ালা আরও দু-তিনজন বিহারি রিকশাওয়ালা আছে। কিন্তু কেউই সেই লোকটি নয়। হতে পারে সেই রিকশাওয়ালা অন্য পাড়ার। সেদিনই শুধু এদিকে এসে পড়েছিল।

তবু মনের মধ্যে একটা খটকা রয়ে গেল। আমার দু-দুবার বিপদের সময় ঠিক একইরকম চেহারার দুজন লোক আমাকে সাহায্য করার জন্যে এসে উপস্থিত হয়েছিল! এ কেমন করে হয়!

বন্ধুবান্ধবদের বললাম ঘটনাটা। তারা হেসেই উড়িয়ে দিল। কয়েকজন নানারকম ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করল। মাঝরাত্তিরের অন্ধকারে আমি রিকশাওয়ালার মুখ ভালো করে দেখতে পাইনি। আমার অচেতন মনে নাকি সেই সময়েই ট্রেনের সেই ডাক্তারটির কথা ঘুরছিল। সেইজন্যেই নাকি আমি রিকশাওয়ালার মুখখানা সেই ডাক্তারের মতন কল্পনা করে নিয়েছি! কী জানি, হতেও পারে!

এর ঠিক বছর-দেড়েক বাদে আর-একটা ঘটনা ঘটল। সেদিন আমি যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। আমার সঙ্গে অনেক কাগজপত্র। খুব মন দিয়ে আমি কয়েকটা চিঠিপত্র পড়ছিলাম এবং যেগুলো অপ্রয়োজনীয় সেগুলো ফেলে দিচ্ছিলাম জানলা দিয়ে। একসময় দেখলাম, ঠিক আমার জানলার পাশেই একটা ট্যাক্সি জোরে-জোরে হর্ন দিচ্ছে এবং পেছনের সিট থেকে একজন লোক হাত-পা নেড়ে আমাকে কী যেন বলতে চাইছে। লোকটির মুখে খুব একটা ব্যস্ত ভাব। আমি আমার ট্যাক্সি-ড্রাইভারকে বললাম, রোখকে! রোখকে!

পাশাপাশি দুটো ট্যাক্সিই দাঁড়িয়ে গেল। অন্য ট্যাক্সির একজন বাঙালি ভদ্রলোক আমাকে বললেন, আপনার চিঠিপত্র যে সব উড়ে যাচ্ছে! আমি দুটো কুড়িয়ে এনেছি—।

আমি অবহেলার সঙ্গে বলললাম, ওগুলো তো আমি ফেলে দিয়েছি! কেন মিছিমিছি আপনি তুলতে গেলেন?

পরক্ষণেই মনে হল, যাই হোক, ভদ্রলোক এরকম কষ্ট করেছেন যখন, ওঁকে একটা ধন্যবাদ জানানো উচিত অন্তত!

কিন্তু ধন্যবাদ জানাবার আগেই দুটি ব্যাপারে আমাকে চমকে উঠতে হল। আমার ট্যাক্সিটা থেমে পড়ায় পেছনের গাড়িটা ওভারটেক করে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে একটা মিনিবাসের সঙ্গে প্রচণ্ড ধাক্কা মারল। এত জোর অ্যাকসিডেন্ট যে, আওয়াজে প্রথমে কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো হল এবং সেই মুহূর্তে আমি লক্ষ করলাম, আমার পাশের ট্যাক্সির ভদ্রলোকের মুখখানা অবিকল সেই ট্রেনের ডাক্তার কিংবা মাঝরাত্তিরের রিকশাওয়ালার মতন।

আমি সঙ্গে-সঙ্গে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়লাম। এখন ঠিক বিকেল—এখন তো চোখের ভুল হওয়ার কথা নয়!

সামনের অ্যাকসিডেন্ট দেখতে বহু লোক ছুটে যাচ্ছে। গাড়িটার ক্ষতিই হয়েছে বেশি, পেছনের দুজন যাত্রীর অবস্থা সঙ্গিন। দৃঢ় ধারণা হল, আমার ট্যাক্সিটা যদি হঠাৎ এভাবে না থামত, তাহলে এটা নিশ্চয়ই অ্যাকসিডেন্ট করত এবং এতক্ষণে আমার ছিন্নভিন্ন শরীর পড়ে থাকত রাস্তায়। এই ভদ্রলোকই আমাকে বাঁচিয়েছেন।

আমি অন্য ট্যাক্সির জানলার ধারে গিয়ে বললাম, আপনি আমার আজ যে কী উপকার করলেন, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না! কী বলে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব!

ভদ্রলোক সামনের অ্যাকসিডেন্টটা দেখে একেবারে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। ফিসফিস করে বললেন, ওরেঃ বাবা! কী সাংঘাতিক অ্যাকসিডেন্ট! কেউ মারা গেছে নিশ্চয়ই!

এই সুযোগে আমি ভদ্রলোককে ভালো করে দেখে নিলাম। মধ্যবয়স্ক, মুখে অল্প দাড়ি। খুব লম্বা কিংবা বেঁটে নন। সব কিছু সেই ট্রেনের ডাক্তারটির মতন একরকম।

আমি বললাম, আপনি এখানে একটু নামবেন?

উনি বললেন, আমার বিশেষ জরুরি কাজ ছিল—।

—কিন্তু এখন তো যেতে পারবেন না। রাস্তা জ্যাম হয়ে গেছে।

—তাই তো, কী যে করি!

ট্যাক্সিভাড়া মিটিয়ে দিয়ে উনি নেমে পড়লেন। আমি বললাম, আজ আপনিই আমার প্রাণ বাঁচিয়েছেন।

উনি লজ্জিতভাবে বললেন, না, না, আমি আবার কী করলাম! আপনার চিঠিগুলো উড়ে-উড়ে পড়ছিল। যদি কাজের জিনিস হয়, আপনি হয়তো লক্ষ করেননি।

—কিন্তু আপনি ওইজন্যে আমার ট্যাক্সিটা না থামালে আমিই ওই অ্যাকসিডেন্টে পড়তাম নির্ঘাত।

—কলকাতার রাস্তায় কখন যে কার অ্যাকসিডেন্ট হবে, তা বলা যায় না!

সামনের গাড়ি থেকে তখন একটা মৃতদেহ নামানো হচ্ছে। ভদ্রলোক মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, ইস, এইসব দৃশ্য আমি একদম দেখতে পারি না।

আমি বললাম, চলুন, কোনও দোকানে বসে একটু চা খাই।

উনি বললেন, আমার বড় জরুরি কাজ ছিল—কিন্তু কী আর হবে।

আমার অনুরোধে ভদ্রলোক রাজি হয়ে গেলেন। আমি তখন কৌতূহলে ছটফট করছি। ভদ্রলোককে বাঙালি বলেই মনে হচ্ছে। যদিও অনেক বিহারি পরিষ্কার বাংলা বলতে পারেন।

নিজের নামটা বলে, ওঁকে নাম জিগ্যেস করলাম।

উনি বললেন, আমার নাম কৃষ্ণচন্দ্র হালদার।

খাঁটি বাংলা নাম। তবু চেহারার এত অসম্ভব মিল কী করে হয়? রিকশাওয়ালাকে আমি ভালো করে না দেখলেও ট্রেনের সেই ডাক্তারের চেহারা আমার স্পষ্ট মনে আছে। হুবহু এইরকম।

—আপনি কি ডাক্তার?

—না তো!

—আপনি কি সমস্তিপুরের দিকে কখনও গিয়েছিলেন?

—সমস্তিপুর? না, যাইনি তো কখনও!

ভদ্রলোক রীতিমতন অবাক হয়ে তাকালেন আমার দিকে। তারপর আস্তে-আস্তে বললেন, এ-কথা জিগ্যেস করলেন কেন?

—ঠিক অবিকল আপনার মতন চেহারার একজন লোককে আমি আগে দেখেছি। একজন নয়। দুজন!

কৃষ্ণচন্দ্র হালদার হাসতে আরম্ভ করলেন। হাসতে-হাসতেই বললেন, সে কী মশাই! ঠিক আমার মতন চেহারা? তা হয় নাকি!

—আপনার কোনও ভাই-টাই—।

—আমার তো কোনও ভাই নেই!

কিছুতেই কিছু মিলছে না। অথচ আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস, ঠিক এইরকম চেহারার দুজন লোককে আমি আগে দেখেছি। প্রত্যেকবারই আমার কোনও বিপদের সময়।

কাছাকাছি একটা চায়ের দোকানে ঢুকলাম। টেনের সেই ডাক্তারটিকে আমি কিছুই শোধ দিতে পারিনি। এই ভদ্রলোকও আমাকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন। এঁকে কিছুটা অন্তত খাতির করা উচিত।

—কী খাবেন, বলুন?

ভদ্রলোক কিছুই খেতে চান না। শুধু এককাপ চা। তা হয় না। আমি শেষ পর্যন্ত দু-প্লেট স্যান্ডউইচ আর চায়ের অর্ডার দিলাম।

ভদ্রলোক বললেন, উঃ, এইরকম সাংঘাতিক অ্যাকসিডেন্ট…এখনও আমার শরীরটা কাঁপছে।

—এ-অ্যাকসিডেন্টে আমার মরার কথা ছিল।

—বলবেন না, মশাই, ও-কথা বলবেন না। আমি এইসব দৃশ্য একদম সইতে পারি না।

আমি পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করলাম। তাতে একটি মাত্র সিগারেট।

সেটাই বাড়িয়ে দিলাম ভদ্রলোকের দিকে। তিনি নিতে গিয়েও হাত সরিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলেন, একটা রয়েছে যে! আপনার?

—আবার আনিয়ে নিচ্ছি।

—দাঁড়ান, আমি সিগারেট কিনে আনছি।

—না, না, আপনি বসুন, আমি আনাচ্ছি।

—আমার নিজেরই কেনা দরকার। অনেকক্ষণ ফুরিয়ে গেছে।

—বেয়ারাকে পাঠালেই তো—।

ভদ্রলোক সে-কথা শুনলেন না। নিজেই সিগারেট কিনতে বেরিয়ে গেলেন। আমি আমার হাতের কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে রাখতে লাগলাম। ভাগ্যিস, বাজে চিঠিগুলো জানলা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলাম!

বেয়ারা এসে চা আর স্যান্ডউইচ রেখে গেল। ভদ্রলোক তো সিগারেট কিনে ফিরলেন না! দোকানের পাশেই তো সিগারেটের দোকান! হয়তো টাকার খুচরো পাচ্ছেন না।

আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। ভদ্রলোক এলেন না। এত দেরি হওয়ার তো কোনও কথাই নয়। উঠে গিয়ে দরজার বাইরে উঁকি দিলাম। সিগারেটের দোকানের সামনে সেই ভদ্রলোক নেই।

সেখানে এগিয়ে জিগ্যেস করলাম, মুখে দাড়িওয়ালা একজন লোক এখানে এসেছিলেন একটু আগে?

দোকানদার বলল, না তো!

অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভদ্রলোককে আর পাওয়া গেল না। সেই দু-প্লেট স্যান্ডউইচ আর চা আমাকে একলাই শেষ করতে হল।

ভদ্রলোক চলে গেলেন কেন? হয়তো খুব জরুরি কোনও কাজের কথা মনে পড়ে গেছে। জরুরি কাজের কথা তো বলছিলেনই। কাছেই আর-একটা ট্যাক্সি পেয়ে উঠে পড়েছেন।

কিন্তু আমাকে একবার বলেও গেলেন না?

মনের মধ্যে খটকাটা রয়েই গেল!

ক্রাইম

পুজো সংখ্যা, ১৯৭৫

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *