ধৃতরাষ্ট্র

ধৃতরাষ্ট্র

বিচিত্রবীর্য ও অম্বিকার ক্ষেত্রজ জন্মান্ধ সন্তান। বিচিত্রবীর্যের মৃত্যু হলে বংশ রক্ষার্থে তাঁর মাতা সত্যবতী ওঁর কুমারী অবস্থায় গর্ভজাত পরাশর মুনির পুত্র ব্যাসদেবকে ডাকেন। সত্যবতীর ইচ্ছায় ব্যাসদেব অম্বিকার সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁকে গর্ভবতী করেন। মিলনের সময়ে ব্যাসদেবের কুৎসিত মুর্তি দর্শন করে অম্বিকা ভয়ে চোখ বন্ধ করায় তাঁর পুত্র জন্মান্ধ হন। জ্যেষ্ঠ পুত্র হওয়া সত্বেও জন্মান্ধতার জন্য তাঁর বৈমাত্রেয় ছোট ভাই পাণ্ডু রাজা হন। গান্ধাররাজ সুবলের কন্যার সঙ্গে (যিনি গান্ধারী বলে পরিচিত) ওঁর বিবাহ হয়। ধৃতরাষ্ট্রের ও তাঁর স্ত্রী গান্ধারীর দুর্যোধন, দুঃশাসন, ইত্যাদি একশত পুত্র ও একটি কন্যা ছিল। এছাড়া এক বৈশ্য দাসীর গর্ভে যুযুৎসু নামে ধৃতরাষ্ট্রের এক পুত্র হয়। উনি ছিলেন ঈর্ষাকাতর স্নেহান্ধ। পাণ্ডবদের প্রতি ঈর্ষা বশত ধৃতরাষ্ট্র নিজের সন্তানদের বহু অধর্ম কর্মে সায় দিয়েছেন। মাঝেমধ্যে বিবেক দংশন ঘটলেও, পুত্রদের ধর্মপথে চালনা করার বিশেষ কোনও চেষ্টা তিনি করেন নি। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যুযুৎসু ব্যতীত অন্য সব পুত্রগণ নিহত হওয়ার পর ধৃতরাষ্ট্র অনুতপ্ত হয়ে স্বীকার করেন যে, ওঁর দোষেই কৌরবগণ দুষ্কার্যে লিপ্ত হয়েছিলেন। যুধিষ্ঠির রাজা হলে, কিছুদিন তাঁর আশ্রয়ে থেকে ধৃতরাষ্ট্র গান্ধারী ও কুন্তিকে নিয়ে অরণ্যযাত্রায় যান। হরিদ্বারের নিকট এক গভীর অরণ্যে প্রজ্বলিত দাবাগ্নির মধ্যে তপস্যারত অবস্থায় তিনজন প্রাণত্যাগ করেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *