তোমার, আমার, আমাদের । নবারুণ ভট্টাচার্য
তুমি হাতজোড় করে মাফ চাইতে পারো
পায়ের ওপর মাথা ঠুকতে পারো কাঁদতে কাঁদতে
মুচলেকা দিতে পারো যে কখনও সাহস দেখাবে না
অথবা বেছে নিতে পারো হাসপাতালের রোগশয্যা
বা মধ্যদুপুরে রক্তবমি
যা তোমার পছন্দ
কিন্তু একটা ব্যবস্থা দেগে দিয়েছে তোমাকে
তোমার পিঠের ওপর গরম লোহা দিয়ে
আমার পিঠের ওপরেও মৃত্যুর নম্বর লেখা
আমাদের বন্দী শিবিরের মানুষের মতো দেখতে
যদিও খোলাচোখে কাঁটাতার দেখা যাচ্ছে না
নম্বর কেউ পড়েই চলেছে যদিও শোনা যাচ্ছে না
কী করার আছে দরকার ভাববার সকলের
গাছের ডালের ছায়া ক্রুশের মতো দেখতে
ক্রুশ যখন রয়েছে তখন আছে তাতে
ওঠার মানুষ, ওঠাবার মানুষ
মানুষের হাতে পায়ে পেরেক মারার মানুষ
তাই সবটাই যখন অবশ্যম্ভাবী পূর্বনির্ধারিত, অমােঘ
তখন কেন একবার চিৎকার করে উঠব না
একবার চেষ্টা করব না স্বাধীন, মুক্ত, অবাধ হবার
আর কী করার আছে তোমার, আমার, আমাদের
দেশবাসীর?