জারিনা বিবি
পাঠিকা ঠাকুরানি নিজগুণে ক্ষমা করবেন। আপনি ঠিকই ধরেছেন, মাতালের গল্প ছাড়া আমার গতি নেই।
মাতাল যেমন বারবার তার ঠেকে ফিরে যায়, তেমনি আমি ঠেকে গেলেই মাতালের গল্পে ফিরে আসি।
এক মদ্যপ মধ্যরাতে রাস্তায় হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছিল, তার কপাল কেটে যায়। বাড়িতে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কপালের কাটা জায়গায় স্টিকিং প্লাস্টার লাগিয়ে সে শুতে যায়। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তার কপালে কোথাও স্টিকিং প্লাস্টার লাগানো নেই, বিছানাতেও পড়ে নেই। পরে দাড়ি কামাতে গিয়ে সে দেখে ছোট স্টিকিং প্লাস্টার আয়নার সঙ্গে লেগে আছে। তার মানে তার কপালের কাটা জায়গায় প্লাস্টারটা না লাগিয়ে সে সেটা আয়নায় তার ছায়ার কপালে লাগিয়ে দিয়েছিল।
জগৎ সংসারে মাতালের মতো রহস্যময় জীব আর নেই। সে একাধারে সরল ও জটিল, বশংবদ ও মারকুটে, কৃপণ ও উদার, সনাতন ও আধুনিক। প্রকৃত মদ্যপের কথাকার হতে পারেন চেকভ কিংবা শরৎচন্দ্র।
আমার দৌড় ওই আয়না পর্যন্ত। ছায়ার কপালে স্টিকিং প্লাস্টার লাগানো। রক্ত মাংসের মানুষটাকে আমি মোটেই কায়দা করতে পারি না, আয়নার মধ্যের ছায়াই আমার ভরসা।