।। জায়মানৈতিহাসিক বৃত্তান্তবর্ণনম্।।
ভগবন্বিমাখ্যানকালোহয়ং ভবতোদিতঃ। শতদ্বাদশ মর্যাদো দ্বাপরস্য সমো ভূবি।।১।। অস্মিন্ কালে মহাভাগ লীলা ভগবতা কৃতা। তামেতাং কথয়াস্থম্বৈ সর্বজ্ঞোহস্তি ভবানসদা।।২।। নারায়ণং নমস্কৃত্য নরং চৈব নরোত্তমম। দেবীং সরস্বতীং ব্যাসং ততো জয়মুদীরয়েৎ।।৩।। ভবিষ্যাখ্যে মহাকল্পে প্রাপ্তে বৈবস্বতেন্তরে। অষ্টাবিংশদ্বাপরান্তে কুরুক্ষেত্রে রনৌহ ভবৎ।।৪।। পান্ডবৈনির্জিতাঃ সর্বে কৌরবা মুদ্ধদুমদাঃ। অষ্টাদশো চ দিবসে পান্ডবানাং জয়োহ ভবৎ।।৫।। দিনান্তে ভগবান্ কৃষ্ণো জ্ঞাত্বা কালয্য দুর্গতিম্। শিবং তুষ্টাব মনসা যোগরূপং সনাতনম্।।৬।। নম শান্তায় রুদ্রায় ভূতেশায় কপর্দিনে। কালকত্রে জগদকর্মে পাপহর্তে নমোনমঃ।।৭।। পান্ডবন্নক্ষ বগবদ্ ভক্তাভূততীরুকান্। ইতি শ্রুত্বা স্বয়ং রুদ্রো নন্দিয়ানোপরি স্থিতঃ। রক্ষার্থং শিবিরাণাং চ প্রাপ্তবাঞ্ছলহস্তধৃক্।।৮।। তদা নৃপজ্ঞয়া কৃষ্ণঃ স গতে গজসাহ্বয়ম্। পান্ডবাঃ পঞ্চ নির্গত্য সরস্বত্যা স্তচৈহবসন্।।৯।। নিশীথে দ্রৌনিভোজৌ চ কৃপস্তত্র সমাসয়ুঃ। তুষ্টুবুমনসা রুদ্রং তে ভৌ মার্গ শিবোদদাৎ।।১০।। অশ্বস্থামা তু বলবাঞ্ছিবদত্তমসি সদা। গৃহীত্বা স জখনাশু ধৃষ্টদ্যুম্নপুরঃসরান্।।১১।। হত্বা যথেষ্টমগদ্ দ্রৌনি স্তাভ্যাং সমন্বিত্তঃ।।১২।। পাৰ্ষতস্যৈব সূতশ্চ হতশেষো ভয়াতুরঃ। পান্ডবান্ বৰ্ণয়ামাস যথা জাতো জনক্ষয়ঃ।।১৩।। আবিস্কৃতং শিবং জ্ঞাত্বা ভীমাদ্যা ক্রোধমূৰ্চ্ছিতা। সায়ুধৈস্তান্ডয়ামাস দেবদেবং পিনাকিনম্।।১৪।। অস্ত্রশস্ত্রানি তেষাং তু শিবদেহে সমাবিশন্। দৃষ্ট্বা তে বিস্থিতাঃ সর্বে প্রজন্ধুস্তল মুষ্টিভিঃ।।১৫।। তাঙ্কুশাপ তদা রুদ্রো যূয়ং কৃষ্ণ প্রপূজকাঃ। অতোহসসাভী রক্ষিণীয়া ধবয়োগ্যাশ্চ বৈভুবি।।১৬।। পুনর্জন্ম কলৌ প্রাপ্য ভোজ্যতে চাপরাধকম্। ইত্যুক্ত্বান্তর্দধে দেব- পান্ডবা দুঃখিতাস্তদা।।১৭।। হরিং সরণমাজগুরপরাধ নিবৃত্তয়ে। তদা কৃষ্ণমুতাঃ সর্বে পান্ডবা দুঃখিতাস্তদা।।১৮।। তুষ্টুবর্মণ সা রুদ্রং প্রাদুরভূচ্ছিবঃ। বরং বরয়ত প্রাহ কৃষ্ণঃ শ্রুত্বা ব্রবীদিদম্।।১৯।। শস্ত্রণ্যস্ত্রানি যান্যেব ত্বদংগে ক্ষিপতানি বৈ। পান্ডবেভ্যশ্চ দেহি ত্বং সাপস্যানুগ্রহং কুরু।।২০।। ইতি শ্রুত্বা শিবঃ প্রাহ কৃষ্ণদেব নমোহস্তুতে। ( অপরাধো ন স্বামিন্মোহিতোহ হং তবজ্ঞয়া।।২১।। তদ্বশেন ময়া স্বামিন্দত্তঃ শাপো ভয়ংকরঃ। নান্যথা বচনং মে স্যাদংশাবতরণং ভবেৎ।।২২।। বৎস রাজস্য পুত্রত্বং গমিষ্যতি যুধিষ্ঠিরঃ। বলকানিরিতি খ্যাতঃ শিরীযাখ্যপুরাধিপঃ।।২৩।। ভীমো দুর্বচনাহুষ্টো ম্লেচ্ছযোনৌ ভবিষ্যতি। বীরনো নাম বিখ্যাতঃ যবনর সাধিপঃ।।২৪।। অর্জুনাংশশ্চ মবক্তো জনিষ্যতি মহামতিঃ। পুত্রঃ পরিমলস্যৈব ব্রহ্মানন্দ ইতি স্মৃতঃ।।২৫।। কান্যকুব্জে হি নকুলো ভবিষ্যতি মহাবলঃ। রত্ন ভানুসুতো সৌ বৈ লক্ষনো নাম বিশ্রুতঃ।।২৬।। সহদেবস্তু বলবাঞ্জনিষ্যতি মহামতিঃ। ভীষ্মসিংহ সুতো জাতো দেবসিংহ ইতি স্মৃতঃ।।২৭।। ধৃতরাষ্ট্রাংশ এবাসৌ জনিষ্যত্যমেরকে। পৃথিবীরাজ ইতি স দ্রৌপদী তৎসুতা স্মৃতা।।২৮।। বেলা নামা চ বিখ্যাতা তারকঃ কর্ণএব হি। রক্তবীজস্তথা রুদ্রোভবিষ্যতি মহীতলে।।২৯।। কৌরবাশ্চ ভবিষ্যন্তি মহামুদ্ধবিশারদাঃ। পান্ডুপক্ষাসচ তে সর্বে ধর্মিণো বলশালিনঃ।।৩০।। ইতি শ্রুত্বা হরিঃ প্রাহ বিহস্য পরমেশ্বর। ময়া শক্ত্যবতারেণ পক্ষণীয়া হি পান্ডবা।।৩১।। মহাবতী পুরী রম্যা মায়াদেবীবিনির্মিতা। দেশরাজ সুতন্ত্রত্র মমাংশো জনিষ্যতি গুরুমম।।৩২।। হত্বাগ্নিবংশজান্ ভূপাস্যাং পয়িষ্যামি বৈ কলিম্। ইতি শ্রুত্বা শিবো দেবস্তত্রৈবান্তরধীয়ত।।৩৩।
।। জায়মান ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত বর্ণন।।
এই অধ্যায়ে ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে।
শৌনকাদি ঋষি সূতজীকে বললেন–আপনি সেই বিক্রমাখ্যান বলুন যা শতদ্বাদশ মর্যাদা সম্পন্ন দ্বাপরতুল্য।।১।।
হে মহাভাগ, ভগবান, এই সময় কী লীলা করেছেন তা বলুন। সূতজী বললেন, নর, নরোত্তম ও দেবী সরস্বতীকে প্রণাম করে তথা ব্যাসদেবকে প্রণাম করে জয় শব্দ উচ্চারণ করা উচিৎ। ভবিষ্যাস্য মহাকল্পে বৈবস্বত মন্বন্তরে অষ্টবিংশতি দ্বাপরের অন্তে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ হয়েছিল। কৌরবগণ পরাজিত হন, পান্ডবগণ অষ্টাদশ দিনে জয়ী হন। দিনান্তে ভগবান্ কৃষ্ণ কালের দুর্গতি দেখে যোগরূপ সনাতন শিবকে প্রসন্ন করলেন। তিনি বললেন–শান্ত, রুদ্র, ঈশকে প্রণাম। হে ভগবান্ ভূতভীরুক আমার ভক্তপান্ডবগণকে রক্ষা করো। এই স্তব শ্রবণ করে নন্দীপতি শিব ত্রিশূল হস্তে শিবির রক্ষার জন্য সেখানে গেলেন। সেই সময় নৃপোজ্ঞাতে হস্তিনাপুরে কৃষ্ণগমন করলেন। পঞ্চপান্ডব শিবির থেকে বেরিয়ে এসে সরস্বতী নদীতীরে এসে উপস্থিত হল। অর্ধরাত্রে অশ্বত্থামা, জপ ও ভোজ সেখানে এলেন। তারা একাগ্রচিত্তে রুদ্রদেবের স্মরণ করলেন। তাদের শিব পথ দিয়ে দিলেন। অশ্বত্থামা বড় বলবান্ ছিলেন। তিনি শিব প্রদত্ত তরোয়ারী দিয়ে ধৃষ্টদ্যুম্নকে হত্যা করলেন। তারপর তাঁরা তিনজন মিলিত হলেন। পার্যত ভয়াতুর সূত পান্ডবদের সেই কথা শ্রবণ করালেন। শিবের এইরূপ কর্মে ভীমসেন ক্রোধিত হয়ে পিনাকীকে মারতে লাগলেন।।২-১৪।।
তাদের অস্ত্রশস্ত্র শিবের দেহে প্রবেশ করল। তারা এইসব দেখে পরম বিস্মিত হলেন আর মুষ্টি দ্বারা হনন করতে লাগলেন। তখন রুদ্রদেব তাদের অভিশাপ দিলেন। তিনি বললেন, তোমরা কৃষ্ণের প্রপূজক এবং আমার দ্বারা বধ্য। তোমরা কলিযুগে পুনরায় জন্ম গ্রহণ করে অপরাধ ভোগ করবে। একথা বলে তিনি অন্তর্হিত হলেন। এরপর পান্ডবগণ দুঃখিত চিত্তে অপরাধ নিবৃত্তির জন্য হরিশরণ নিলেন। তখন কৃষ্ণ শস্ত্র রহিত হয়ে মন দিয়ে পান্ডবগণকে সঙ্গে নিয়ে রুদ্র স্তুতি করতে লাগলেন। ভগবান্ রুদ্র তুষ্ট হয়ে বরদান দিতে চাইলেন। তখন কৃষ্ণ বললেন, আপনার দেহে ক্ষোপিত অস্ত্রসমূহ আপনি ফিরিয়ে দিন এবং পান্ডবদের শাপমুক্ত করুন। একথা শ্রবণ করে মহাদেব বললেন হে কৃষ্ণ আপনাকে প্রণাম। আপনার মায়াতে মোহিত হয়ে আমি এরূপ কর্ম করেছি। হে স্বামিন, মোহাবিষ্ট হয়ে আমি এরূপ ভয়ংকর শাপ দিয়েছি। কিন্তু আমার বচনের তো অন্যথা হবে না কিন্তু তার অংশাবতরণ হতে পারে। যুধিষ্ঠির বৎসরাজের পুত্র বলখানি নামে প্রসিদ্ধ হবে। ভীম দুর্বচনের জন্য বীরণ নামে ম্লেচ্ছ বংশে জাত হবে এবং বনরম অধিপ হবে। অর্জুনের অংশে ব্রহ্মানন্দ নামে পরিমল পুত্ররূপে জাত হবে এবং শিবভক্ত হবে। কান্যকুব্জে রত্নভানুর পুত্র লক্ষণ নামে মহাবল নকুল জন্মগ্রহণ করবে। ভীষণসিংহ পুত্র দেবসিংহরূপে সহদেব জন্মগ্রহণ করবে। ধৃতরাষ্ট্র পৃথ্বীরাজ নামে আজমীরে জাত হবেন এবং দ্রৌপদী তাঁর কন্যা রূপে বেলা নামে বিখ্যাত হবেন। তারক কর্ণরূপে তথা রক্তবীজ রুদ্র মহীতলে জাত হবেন। কৌরবগণ যুদ্ধে অতিদক্ষ হবেন এবং পান্ডুপক্ষে ধর্মী ও বলশালীগণ থাকবেন।।১৫-৩০।।
সূতজী বললেন–একথা শ্রবণ করে শ্রীহরি সহাস্যে বললেন, আমার শক্তির অবতার পান্ডবগণকে রক্ষা করবে। মায়াদেবী দ্বারা নির্মিত মহাবতী নামক পরম রম্যপুরীতে দেবরাজপুত্র দেবকীর গর্ভজাত আমার অংশাবতার উদয়সিংহ নামে জাত হবেন। আমার ধামের অংশ আহ্লাদ আমার গুরুরূপে জাত হবেন। অগ্নি বংশের পর ভূপগণকে কলিতে স্থাপিত করব। একথা বলে বলে ভগবান্ শিব অন্তর্হিত হলেন।।৩১-৩৩।।