দ্বিতীয় খন্ড
উত্তরপর্ব
2 of 3

চৈতন্য এবং শংকরাচার্য্য উৎপত্তি

।। চৈতন্য এ শংকরাচার্য্য উৎপত্তি।।

বিষ্ণুশর্মা পুরা কশ্চিদ্ বিপ্রো ভূদ্বেদপারগঃ। সর্বদেবময়ং বিষ্ণু পূজয়িত্বা প্ৰসন্নধী।।১।। অন্যৈঃ সুরৈশ্চ সংপূজ্যো বভূব হরিপূজনাৎ। ভিক্ষা বৃত্তিপরো নিত্যং পত্নীমান্ পুত্রবর্জিতঃ।।২।। কদাচিত্তস্য গেহে বৈ ব্ৰতী কশ্চিৎ সমাগতঃ। দ্বিজপত্নীং তদৈবকীং ভক্তিনম্রাং দরিদ্রিনীম্।। দৃষ্ট্বোবাচ মহাভাগ স স্পর্শাঢ্যো দয়াপরঃ।।৩।। অনেন স্পর্শমণিনা লৌহধাতুশ্চ কাঞ্চনম্।। ভবেত্তস্মান্ মহাসাধ্বি ত্রিদিনান্তং গৃহান্ তম্।।৪।। স্নাত্মা তাবৎ সরস্বাং চায়াস্যামি তৈন্তিকং মুদা। ইত্যুক্ত্বা স যযৌ বিপ্রো ব্রহ্মানী বহু কাঞ্চনম্। কৃত্বা লক্ষ্মীং সমাপ্যাসীদ্বিষ্ণুশর্মা তদাগমৎ।।৫।। বহুনযুতাং পত্নীং দৃষ্টোবাচ হরিপ্রিয়ঃ। গচ্ছ নারি মদাঘূর্ন যত্র বৈ রসিকো জনঃ।।৬।। অহং বিষ্ণুপরো দীনশ্চৌরভীতঃ সদৈব হি। মধুমত্তাং কথং ত্বাং বৈ গৃহীতুং ভুবি চ ক্ষমঃ।।৭।।

।। চৈতন্য এবং শংকরাচার্য উৎপত্তি।।

এই অধ্যায়ে চৈতন্য ভগবানের উৎপত্তি বৃত্তন্ত বর্ণন ততা শংকরাচার্যের উৎপত্তি বৃত্তান্ত বর্ণন করা হয়েছে।

জীব বললেন–পূর্বে সমস্ত বেদপাঙ্গম বিষ্ণুশর্মা নামক ব্ৰাহ্মণ সমস্ত দেবপরিপূর্ণ ভগবান্ বিষ্ণু পূজন করে প্রসন্ন বুদ্ধি হয়েছিলেন।। ১।।

ভগবান্ হরি করার প্রভাবে অন্য সুরগণের দ্বারাও তিনি পূজ্যহয়েছিলেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তিতে নিত্য তৎপর ছিলেন তিনি স্বপত্নীক কিন্তু পুত্র রহিত ছিলেন। কোনো একসময় তার গৃহে কোনো ব্রতী এসেছিল। তিনি সেই সময় তার পত্নীকে ভক্তিভাবে পরম বিনম্র এবং দরিদ্রা দেখিয়েছিলেন। এই রকম দেখে সেই দয়াপরায়ন মহাভাগ সেই দ্বিজ পত্নীকে একটি স্পর্শমনি দিয়ে বলেছিলেন -এই স্পর্শ মণি স্পর্শ করালে লোহা সুবর্ণ হয়ে যাবে। এই কারণে হে মহাসাধ্বি, তুমি একে তিনদিনের জন্য নিজের কাছে রেখে দাও। আমি ততদিন পর্যন্ত মরয়ূ নদীতে স্নান করে তোমার কাছে সানন্দে আসব। একথা বলে বিপ্র চলে গেলেন। সেই ব্রাহ্মনী প্রচুর সুবর্ণ তৈরী করে লক্ষী সমাপ্ত করে বসেছিলেন তখন বিষ্ণু শর্মা গৃহে এলেন। সেই হরি প্রিয় প্রভূত সুবর্ণ যুক্তা পত্নীকে দেখে তাকে বললেন, হে মহাপূর্ণনারী তুমি সেই রসিক ব্যক্তির কাছে বলে যাও। আমি তোত বিষ্ণু পরায়ন দীন এবং সর্বদা চোরের ভয়ে ভীত থাকি। তোমার মতো মধুসত্তাকে আমি কিরূপে এই ভূমিতে গ্রহণ করব।। ২-৭।।

ইতি শ্রুত্বা বচো ঘোরং পরভীতা পতিব্রতা। সস্বর্ণং স্পর্শকং তস্মৈ দত্ত্বা সেনাপরা ভব।৮।। দ্বিজোঽপি ঘর্ঘরামধ্যে তদদ্রব্যং বলতোহক্ষিপৎ। ত্রিদিনান্তে চ স যতিস্তত্রাগত্য মুদান্বিতঃ। উবাচ ব্রাহ্মনীং দীনাং স্বর্ণং কিং ন কৃতং ত্বয়া।।৯।। সাহ ভো মৎপতিঃ শুদ্ধো গৃহীত্বা স্পর্শকং রুষা ঘর্ঘরে চ নিচিক্ষেপ ততোহং বহ্নিপাকনী। নিলোহো বর্ততে বিপ্ৰস্ততঃ প্রভৃতি হে পুরো।।১০।। ইতি শ্রুত্বা তু বচনং স যতি বিস্ময়ান্বিতঃ। স্থিত্বা দিনান্তে তং বিপ্রমুবাচ বহু ভর্ৎসয়ন্।।১১।। দরিদ্র ভিক্ষুকশ্চাস্তি ভবান্‌দৈবেন মোহিতঃ। দেহিসে স্পর্শকং শীঘ্রং নো চেৎ প্রাণাংস্ত্যজম্যহম্। ১২

পতিভক্ত সেই পতিব্রতা পতির ভয়ে ভীত যখন এ ঘোর বচন শ্রবণ করলেন তখন শীঘ্র তিনি সেই সুবর্ণ সহ সেই স্পর্শমণি পতির চরণে দিয়ে পতির সেবাতে লীন হলেন। সেই ব্রাহ্মণ ও সেই দ্রব্য ঘর্ঘরা মধ্যে বলপূর্বক রেখে দিলেন, তিনদিন পর সানন্দে সেই মতি সেখানে এসে সেই দীনা ব্রাহ্মণীকে বললেন -তুমি সুবর্ণ প্রস্তুত করেছো? তিনি বললেন -আমি পতি অত্যন্ত শুদ্ধ তিনি সেই স্পর্শমনি গ্রহণে ক্রদ্ধ হয়ে তা ঘর্ঘরে নিক্ষেপ করেছেন, বিপ্র লোহাহীন,তাই তিনি সেইরূপ করেছেন।। ৮-১০।।

একথা শ্রবণ করে সেই মতি বিস্মিত হয়ে সেখানে স্থিত হলেন। দিনান্তে সেই যতি ব্ৰাহ্মণকে অনেক মোহিত করে বললেন–আপনি দরিদ্র এবং ভিক্ষুক। দেবতার দ্বারা আপনি মোহপ্রাপ্ত হয়েছেন।এখন সেই স্পর্শমণি শীঘ্র ফেরত না দিলে এখানে প্রাণ ত্যাগ কবর।। ১১-১২।।

ইত্যুক্তবন্তং যতিনং বিষ্ণুশর্মা তদাব্রবীৎ। গচ্ছত্বং ঘর্ঘরাকূলে তত্র বৈ স্পর্শকস্তব।।১৩।। ইত্যক্তা যাতিনা সার্দ্ধং গৃহীত্বা কন্টকন্ বহুন্। যতিনে দর্শয়ামাস স্পর্শকানিব কন্টকান্।।১৪।। তদা তু স যতা বিপ্ৰং নত্বা প্রোবাচঃ নম্রধীঃ ময়া বৈ দ্বাদশাব্দান্ত সম্যগারাধিতঃ শিবঃ। ততঃ প্রাপ্তং শুভং রত্নং তত্ত্ব ত্বদ্দর্শনেন বৈ।।১৫।। স্পর্শকো বহুধ প্রাপ্তো ময়া লোভত্মনা দ্বিজ। ইত্যাভাষ্য শুভং জ্ঞানং প্রাপ্তো মোক্ষমবাপ্তবান্।।১৬। বিষ্ণুশর্মা সহস্রাব্দমুষিত্বা জগতীতলে। সূর্যমারাধ্য বিধিবদ্ বিষ্ণোমোক্ষমবাপ্তবান্।।১৭।। স দ্বিজো বৈষ্ণবং তেজো বৃত্বা বৈ মাসি ফাল্গুনে। ত্রৈলোক্যমতপৎ স্বামী দৈবকার্যপরায়ণঃ।।১৮।।

ব্রাহ্মণের এই কথা শ্রবণ করে বিষ্ণুশর্মা তাকে বললেন -তুমি ঘর্ঘরা তটে যাও, সেখানে তোমার স্পর্শমণি আছে। বিষ্ণুশর্মা সেই যতির সাথে সেখানে গিয়ে প্রচুর কন্টক গ্রহণ করলেন এবং সেই যতিকে স্পর্শমণি স্বরূপ সেই কন্টক প্রদান করলেন।। ১৩-১৪।।

সেই সময় সেইযতি প্রভূত বিনম্র হয়ে বিপ্রকে প্রণাম করে বললেন–আমি ১২ বৎসর শিবারধনা করেছি যে উত্তমরত্ব পেয়েছি আপনার দর্শনে রোভাক্ত আমি সেই রূপ অনেক স্পর্শমণি পেয়েছি। একথা বলে তিনি শুভজ্ঞান প্রাপ্ত হলেন এবং মোক্ষ প্রাপ্ত হলেন।। ১৪-১৬।।

বিষ্ণুশর্মা একসহস্র পর্যন্ত এই জগতে নিবাস করে সূর্য আরাধনা করে বিধিবৎ বিষ্ণু পূজন করে মোক্ষ প্রাপ্ত করেছিলেন।। ১৭।।

বৈষ্ণব তেজ ধারণ করে ফাল্গুন মাসে দেব কার্যপরায়ন সেই ব্রাহ্মাণ ত্রৈলোক্য তপ্ত করেছিলেন।। ১৮।।

ইত্যুক্তা ভগবাজ্ঞীতঃ পুনঃ প্ৰাহ শচীপতিম্।। ফাল্গুনে মাসি তং সূর্য সমারাধ্য সুখীভব।।১৯।। ইত্যুক্তো গুরুণা দেবো ধ্যাত্বা সর্বময়ং হরিম্। পূজনৈবহুধা কারৈদেব দেবমপূজয়ৎ।।২০। তদা প্রসন্নো ভগবান্ সমভূৎ সূর্যমন্ডলাৎ। চতুর্ভূজো হি রক্তাংগো যথা যক্ষস্তথৈবসঃ। পশ্যতাং সর্বদেবানাং শক্রদেহমুপাগমৎ।।২১।। তত্তেজসা তদা শত্রুঃ স্বান্তলীয় স্বকং বপুঃ। অয়োনিসঃ দ্বিজো ভূত্বা শচী দেবী তথৈব সা।।২২।। তদা তৌ মিথুনীভূতৌ বৈষ্ণবাগ্নি প্রপীড়িতৌ। রেমাতে বর্ষপর্যন্তং গংগাকূলে মহাবনে।।২৩।। অধাদগর্ভং তদা দেবী শচী তু দ্বিজরুপিনী। ভাদ্রশুক্লে গুরৌ বারে দ্বদশ্যাং ব্রাহ্মমন্ডলে।।২৪।।

সূতজী বললেন -ভগবান জীব একথা বলে শচীপতি ইন্দ্ৰকে বললেন -তুমিও ফাল্গুন মাসে সেই সুর্যদেবের আরাধনা করে সুখী হও। গুরুর আজ্ঞাতে দেবরাজ সর্বময় শ্রীহরির ধ্যান করে এবং বহুপ্রকার পূজন দ্বারা দেব দেবের যজন করেছিলেন।। ১৯-২০।।

তখন ভগবান্ প্রসন্ন হয়ে সুর্যমন্ডল থেকে উৎপন্ন হলেন, তাঁর ৪ হাজার বাহু, রক্তবর্ণ অংগ এবং যক্ষের ন্যায় রূপধারী ছিলেন। সমস্ত দেবতার সম্মুখে তিনি ইন্দ্র দেহে প্রাপ্ত হলেন।। ২১।।

সেই সময় তার তেজে নিজ বপু অন্তর্লীন করে সেই দ্বিজ অযোনি হয়ে স্থিত হন এবং শচীও সেই প্রকার করেছিলেন। সেই সময় তারা মিথুনীভূত বৈষ্ণব অগ্নি দ্বারা প্রপীড়িত গংগাতটে সেই মহাবনে একবৎসর পর্যন্ত রমণ করতে লাগলেন। তখন দ্বিজরূপী শচী গর্ভধারণ করলেন। ভাদ্রপদ মাসের শুক্ল পক্ষের গুরুবারদিন দ্বাদশী তিথিতে ব্রহ্মান্ডলে বিষ্ণু ভগবান্ হরি সমস্ত কলা ধারণ করে প্রাদুর্ভূত হলেন। তার চার বাহ ছিল, রক্তবর্ণের অঙ্গ এবং রবি কুম্ভ সমান প্রভা ছিল।। ২২-২৫।।

প্রাদুরাসীৎ স্বয়ং বিষ্ণুধৃত। সর্ব কলাং হরিঃ। চতুর্ভুজশ্চ রক্তাংগো ররিকুম্ভসমপ্রভঃ।।২৫।। তদা রুদ্রাশ্চ বসবো বিশ্বদেবা মরুদগনাঃ সাধ্যাশ্চ ভাস্করাঃ সিদ্ধাস্তুষ্টুবুস্তং সনাতনম।।২৬।। কুলিশধ্বজপদ্ম গংগাকুশাভং চরণং তব নাথ মহাভরণম্। রমণং ভুনিভিবিধিশম্ভুযুতং প্রণমাস বয়ং ভয়ভীতি হরম্।।২৭।। দরচক্রগদাম্বুজ মানধরঃ সুরশক্রকঠোর শরীর হরঃ। সচরাচরলোকভরশ্চপলঃ খলনাশক্রঃ সুরকার্য করঃ।।২৮।। নমস্তে শচীনন্দনানন্দ কারিন্ মহাপাপস্নতাপ দুলাপহারিন্। সুরারীন্নিহত্যাগুলোলোকাধিধারিন স্বভক্ত্যাঘজাতাং গকোটি প্রহারিন্।।২৯।। ত্বয়া হংসরূপেন সত্যং প্ৰপাল্যং ত্বয়া যজ্ঞরূপেন বেদঃ প্ররক্ষ্য। সব যজ্ঞ রূপো ভবাল্লোকধারীশচীনন্দনঃ শত্রুশৰ্মপ্ৰসক্ত।।৩০।।

সেই সময় রুদ্রগণ বসুগণ বিশ্বদেবগণ মরুদগণ সাধ্য ভাস্কর এবং সিদ্ধগণ সনাতনের স্তব করেছিলেন। দেবগণ বলেছিলেন হে নাথ, কুলিশ ধ্বজ পদ্ম গদা এবং অংকুশ আভাযুক্ত তথা মহা আভরণ যুক্ত আপনার চরণ ব্রহ্মা ও শম্ভূযুক্তা তথা মুণিগণকে রমণ কারী, এই সংসারের ভয় হরণ কারী সেই চরণে আমরা প্রণাম জানাচ্ছি। ২৬-২৭।।

দরচক্র গদা এবং অম্বুজ মান ধারন কারী তথা দেবগণের শত্রুর কঠোর শরীর হরণকারী এবং সমস্ত চরাচরলোক ভরণকারীও চপলও ও খল নাশকারী তথা দেবকার্য কারী আপনাকে প্রণাম।। ২৮।।

হে শচীনন্দন, হে আনন্দ প্রদানকারী, আপনি মহান পাপের সন্তাপের দুর্লাপ হরণকারী, সুরশত্রু হনন করে শীঘ্র লোকের অধিকারী হোন্ আপনার প্রতি ভক্তিতে কোটি পাপ দূর হয়। আপনি হংসাবতার ধারণ করে সত্য পালন করেছেন। সেই আপনি যজ্ঞ স্বরূপ লোককে ধারণকারী ইন্দ্রের কল্যাণ করতে প্রসক্ত শচীনন্দন রূপে জন্ম নিয়েছেন।। ২৯-৩০।।

অনর্পিতচরোচিরাৎ করুণয়াবতীর্ণঃ কলৌ। সমপয়িতুমুন্নতোজ্জ্বলরসাং স্বভক্তি শ্রিয়ম্। হরে পুনরসুন্দরদ্যুতিকন্দং বসন্দীপিতঃ সদা। সফুরতু নো হৃদয়কন্দরে শচীনন্দনঃ।।৩১।। বিসর্জতি নরান্ ভবান্ করুণয়া প্রপাল্য ক্ষিতৌ। নিবেদয়িতুমুদ্ভবঃ পরাৎ পরং স্বকীয়ং পদম্। কলৌ দিতিজসম্ভবাধিব্যথদ্ধিসুর মগ্নমান্ সমু দ্ধর মহাপ্রভো কৃষ্ণচৈতন্য শচীসুত।।৩২।। মাধুর্য্য্যেমধুভিঃ সুগন্ধবদনঃ স্বার্ণাম্বুজানাং বন। কারুন্যামৃতনির্ঝরৈরুপচিতেঃ সৎ প্ৰেমহেমাচলঃ। ভক্তাম্ভোধরধারিনী বিজয়িনী নিষ্কম্পসপ্তাবলী। দেবো নঃ কুল দৈবতং বিজয়তে চৈতন্য কৃষ্ণো হরিঃ।।৩৩।।

আপনি অনর্পিত চর অনেক সময় এই ঘোর কলিযুগে করুণা করে অবতীর্ণ হয়েছেন এবং উন্নত এবং উজ্জ্বল রসযুক্ত নিজ ভক্তিশ্রী সমর্পিত করতে এই অবতার রূপ ধারণ করেছেন। আমরা প্রার্থনা করছি যে হরির সুন্দর দ্যুতি কদম্ব দ্বারা সন্দীপিতা এইরূপ যেন আমাদের হৃদয়ে স্ফুরিত হয়।। ৩১।।

আপনি করুণা পূর্বক নরপ্রতি পালন করে ভূমিতে বিসর্জন করেন। আপনার উদ্ভব পরাৎপর নিজপদ প্রদান করার জন্যই সৃষ্ট। হে মহাপ্রভো, হে শচীপুত্ৰ, কলিযুগে দিতিজ থেকে উৎপন্ন ব্যথা সমুদ্র থেকে হে কৃষ্ণ, চৈতন্য আমাদের উদ্ধার করুন।। ৩২।।

মাধুর্যের দ্বারা সুন্দর বদনযুক্ত স্বর্ণিম অম্বুজ বনস্বরূপ কারুণ্য রূপী অমৃতের নির্ঝরের দ্বারা উপিচিত সৎপ্রেমের হেমগিরি ভক্তরূপী অম্ভোধর ধারনকারা বিজয়ী নিম্পংক সপ্তাবলী আমাদে কুলদেবতা দেব কৃষ্ণ চৈত্য শ্রী হরির বিজয় হোক।। ৩৩।।

দেবারাতিজনৈরধর্মজনিতৈঃ সংপীড়িতেয়ং মহী। সংকুচ্যাশু কলৌ কলেবরমিদং বীজায় হা বর্ততে। ত্বন্নাম্নৈব সুরারয়ো বিদলিতাঃ পাতালগাঃ। পীড়িতা ম্লেচ্ছা ধর্মপরাঃ সুরেশ— নমতাস্তস্মৈ নমো ব্যপিনে।।৩৪।। ইত্যভিষ্ট্রয় পুরুষং যজ্ঞেশং চ শচীপতিম্। বৃহস্পতিমুপাগম্য দেবা বচনমব্রুবন্।।৩৫।। বয়ং রুদ্রা মহাভাগ ইমে চ বসবোহশ্বিনৌ। কেন কেনাংশকেনৈব জনিষ্যামো মহীতলে। তৎসর্বং কৃপায় দেব বক্তৃমইতি নো ভবান।।৩৬।। অহং বঃ কথয়িষ্যামি শৃণুধ্বং সুরসত্তমাঃ। পুরা পূর্বভবে চাসীন্ মৃগব্যধো দ্বিজাধমঃ ধনুর্বাণধরো নিত্যং মার্গে বিপ্ৰবিহিংসকঃ।।৩৭।।

দেবশত্রুগণের দ্বারা যারা পীড়িত এবং যারা এই কলিযুগে কলেবর সঙ্কুচিত করে বীজের জন্য বর্তমান, আপনার নামে দেবশত্রুগণ বিদলিত হন এবং পীড়িত হয়ে পাতালে সেই ম্লেচ্ছ গণ গমন করে, তথা ধৰ্ম পরায়ণ এবং সুরেশকে নমনকারী আপনাকে প্ৰণাম।। ৩৪।।

সূতজী বললেন, এই প্রকারে শচীপতি যজ্ঞেশ পুরুষকে স্তুতি করে পুনরায় দেবগণ দেবগুরু বৃহস্পতির কাছে গিয়ে বললেন- হে মাতৃভাগ, আমরা রুদ্র, এই হল বস্তুগণ, আর অশ্বিনী কুমার দ্বয়, আমি দয়াকরে বলুন আমরা কোন্ কোন্ এই ভূতলে জন্মগ্রহণ করব।। ৩৫-৩৬।।

বৃহস্পতি বললেন, হে সুরসত্তম, আমি আপনাদের বলছি যে, আপনারা শ্রবণ করুন। পূর্বে পূর্বজন্মে এক অধম দ্বিজ মৃগ ব্যাধ ছিলেন। তিনি ধনুষবাণ ধারণ করে নিত্য মার্গে বিপ্রহিংসা করতেন। সেই মহামুর্খ, দ্বিজগণকে হনন করে তাদের যজ্ঞোপচীত্ত নিয়ে অবহেলায় দুষ্ঠতা করতেন এবং মহানিন্দা করতেন।। ৩৭-৩৮।।

হত্বা দ্বিজান্ মহামূঢ়স্তেষাং যজ্ঞোপবীতকম্। গৃহীত্বা হেলয়া দুষ্টো মহাক্রোশস্ত তৎকৃতঃ।।৩৮।। ব্রাহ্মণস্য চ যদদ্রব্যং সুধোপ মমনুত্তমম। মধুরং ক্ষত্রিয়স্যৈব বৈশস্যান্নসমং স্মৃতম্।।৩৯।। শূদ্রস্য বস্তু ত্রধিরমিতি জ্ঞাত্বা দ্বিজাধমঃ। স জঘান ত্রিবর্ণাংশ্চ ব্রাহ্মণান্ বহুলানখলঃ।।৪০।। দ্বিজনাশাৎ সুরাঃ সর্বে ভয়ভীতাঃ সমস্ততঃ। পরমেষ্টিনমাগম্য কথাংশ্চক্রশ্চ কারণম্।।৪১।। শ্রুত্বা চ দুঃখতো ব্ৰহ্মা সপ্তর্ষীন্ প্রাহ লোকগান্। উদ্দেশং কুরু তত্রৈব গত্বা তস্য দ্বিজোত্তম।।৪২।। ইতি শ্রুত্বা মরীচিস্ত বলিষ্ঠাদি ভিরন্বিতঃ। তত্র গত্বা স্থিতাঃ সর্বে মৃগব্যাধস্য বৈ বনে।।৪৩।।

হে সর্বোত্তম, ব্রাহ্মণের দ্রব্য সুধা স্বরূপ। ক্ষত্রিয়ের ধন মধুর; বৈশ্যের ধন অনুস্বরূপ এবং শূদ্রের বস্তু রুধির স্বরূপ একথা জেনেও সেই দ্বিজাধম তিনবর্ণকে হত্যা করতেন এবং তিনি খল ব্রাহ্মণগণকে অধিকতর মারতেন।। ৩৯-৪০।।

দ্বিজের নাশ হলে সকল দেবতা ভয়ভীতহয়ে গেলেন। তারা সকলে পর মেষ্ঠীর কাছে গিয়ে সবকথা তথা কারণ বললেন। সেকথা শ্রবণ করে ব্রহ্মাজী প্রভূত দুঃখী হন এবং তিনি সপ্তষিগণকে লোকে যাবার জন বললেন। হে দ্বিজোত্তম, সেখানে গিয়ে তার উদ্দেশ্য অন্বেষণ কর।। ৪১-৪২।।

একথা শ্রবণ করে বশিষ্ঠাদি ঋষি বনে মৃগব্যাধের কাছে গেল। মৃগব্যাধ তাদের দেখে ধনুর্বাণ নিয়ে তাদের বললেন–আজ আমি তোমাদের নিশ্চয় হত্যা করব।। ৪৩।।

মৃগব্যাধস্তু তাদৃষ্ট্বা ধনুর্বান্ ধরো বলী। উবাচ বচনং ঘোরং হনিষ্যেহং চ বোদ্ধ বৈ।। ৪৪।। মারীচাদ্যা বিহস্যাহুঃ কিমর্থং হন্তুমুদ্যতঃ। কুলার্থং বাত্মনোহর্থং বা শীঘ্রং বদ মহাবল।।৪৫।। ইত্যুক্তস্তান দ্বিজ প্রাহঃ কুলার্থং চাত্মনো হিতে। হন্মি যুষ্মান ধনেযুক্ত ব্রাহ্মণাশ্চ বিশেষতঃ।।৪৬। শ্রুত্বা তমাহুস্তে বিপ্ৰা গচ্ছ শীঘ্রং ধনুর্ধর। বিপ্ৰহত্যাকৃতং পাপং ভুজীয়াৎ কো বিচারয়।।৪৭।। ইতি শ্রুত্বা তু ঘোরাত্মা তেষাং দৃষ্টয়া সুনির্মলঃ। গত্বা বংশ জনানাহ ভূরি পাপং ময়াতিম্।।৪৮।। তৎপাপকং ভবদ্ভিশ্চ গ্রহনীয়ং ধনং যথা। তে তু শ্রুত্বা দ্বিজং প্রাহুর্ন বয়ং পাপভোগিনঃ।।৪৯।।

মরীচি ঋষিগণ তাকে সহাস্যে বললেন, আমাদের তুমি কি কারণে মারবে। হে মহা বলবান্, এই কর্ম নিজের জন্য তথা কুলের জন্য? শীঘ্র আমাদেরদ বল।। ৪৪-৪৫।।

একথা শ্রবণ করে সেই বিপ্র বলেছিলেন, কুলও আত্মা জন্য আপনাদের হত্যা করব, কারণ আপনারা ধনী। আমিক বিশেষ করে ব্রাহ্মণদের হত্যা করে।। ৪৬।।

একথা শ্রবণ করে সেই বিপ্র বলেছিলেন, হে ধনুর্ধর বিপ্র হত্রার পার কে ভোগ করবে তা বিচার কর। একথা শুনে সেই ঘোরাত্মার দৃষ্টি সুনির্মল হল এবং গৃহে গিয়ে নিজ বংধজকে তিনি বললেন–আমি প্রচুর পাপ অর্জন করেছি, সেই পাপ আপনাদের সকলকে ধনসম্পদের ন্যায় গ্রহণ করতে হবে। সে কথা শুনে সকলে সেই দ্বিজকে বললেন–আমরা কোনো প্রকার পাপভোগী হবনা। এই অচলা ভূমি এই কথার সাক্ষী স্বরূপ এবং উত্তম সুর্যও সাক্ষী। সেই কথা সেই মৃগব্যাধ মুনিদেরকে বললেন, কিপ্রকারে আমার এই পাপ ক্ষয় হবে তা বলুন, মৃগব্যাধের সে কথা শুনে মুণিগণ বললেন এখন তুমি এক পরম উত্তম মন্ত্র শ্রবণ কর। রাম নামের দ্বারাই সমস্ত পাপ নাশ হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা তোমার কাছে না আসি ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি রাম নাম জপ করবে।। ৪৬-৫২।।

সাক্ষীয়ং ভূমিরগুলা সাক্ষী সূর্যোহয়মুত্তমঃ। ইতি শ্রুত্বা মৃগব্যাধো মুনীনাহ কৃতাঞ্জলিঃ।।৫০।। যথা পাপং ক্ষয়ং যাতি তথা মাজ্ঞাতুমহৰ্থ। ইত্যুক্তাস্তেন তে প্রাহুঃ শৃণু ত্বং মন্ত্রমুত্তমম্।।৫১।। রাম নাম হি তদ জ্ঞেয়ং সর্বাঘৌঘবিনাশনম্। যাবত্ত্বৎপার্শ্বমায়ামস্তাবক্তবং জপ চোত্তমম্।।৫২।। ইত্যুক্ত্বা তে গতা বিপ্রাস্তীর্থাতীর্থান্তরে প্রতি। মরামরামরেত্যেবং সহস্রাব্দং জজাপ হ।।৫৩।। জপপ্রভাবাদভদবব্দ বনম্ উৎপলসং কুলম্। তৎস্থান মুৎপলারণ্যং প্রসিদ্ধ মভবদ্ ভুবি।।৫৪।। ততঃ সপ্তর্ষয়ঃ প্রাপ্তা বলমীকান্তং নিরাকৃতম্। দৃষ্ট্বাশুদ্ধং তদা বিপ্ৰমূচুস্তে বিষ্ময়ান্বিতাঃ।।৫৫।। বল্মীকান্নিঃ সৃতো যস্মাত্তস্মাদ্ বল্মীকিরুত্তমম্। তব নাম ভবেদ বিপ্র ত্রিকালজ্ঞ মহামতে।।৫৬।।

একথা বলে মুণিগণ তীর্থান্তরে চলে গেলেন। সেই মৃগব্যাধ রাম-রাম স্থানে মরা মরা এই রূপ উচ্চারণ করে সহস্র বর্ষ পর্যন্ত জপ করলেন। তার জপের প্রভাবে সেই বনে কমল সংকুল হয়ে গেল। তখন থেকে সেই স্থান এই ভূতলে উৎপলারণ্য নামে প্রসিদ্ধ হল।। ৫৩-৫৪।।

অনন্তর সপ্তর্ষিগম পনুরায় সেই নিরাকৃত বাল্মীকির কাছে এসেছিলেন। তখন সেই বিপ্র পরম শুদ্ধরূপে তাদের দেখলেন এবং বিষ্ময়ে অভিভূত হয়ে তারা বললেন, তুমি বাল্মীক থেকে নির্গত হলে তাই বাল্মীকি এই নামে তুমি প্রসিদ্ধ হবে।। ৫৫-৫৬।।

এবমুক্ত্বা যযুর্লোকং স তু রামায়ণং মুনিঃ। কল্পাষ্টাদশযুক্তং হি শতকোটি প্রবিস্তরম্।।৫৭।। চকার নির্মলং পদ্যৈ সর্বাঘৌঘবিনাশনম্। তৎপশ্চাৎ স শিবো ভূত্বা তত্র বাস মকারয়ৎ।।৫৮।। অদ্যাপি সংস্থিত স্বামী মৃগব্যাধঃ সনাতনঃ। শৃণুধ্বং চ সুরা সর্বে তৎ চরিত্রং হরপ্রিয়ম্।।৫৯।। বৈবস্বতেন্তরে প্রাপ্তে চাদ্যে সত্যযুগে শুভে। ব্রহ্মাগত্যোৎপলারণং তত্র যজ্ঞং চকার হ।।৬০।। তদা সরস্বতী দেবী নদী ভূত্বা সমাগতা। তদ্দর্শনাৎ স্বয়ং ব্রহ্মা মুখতো ব্রাহ্মণং শুভম্।।৬১।। বাহুভ্যাং ক্ষত্রিয়ং চৈব চৌরুভ্যাং বৈশ্যমুত্তমম্। পদভ্যাং শূদ্রং শুভাচারং জনয়ামাস বীর্যবান্।।৬২।।

এই প্রকার বাক্য বলে সপ্তর্ষি নিজ লোকে চলে গেলেন এবং সেই মণিগ পুনরায় ১৮ কল্প যুক্ত প্রকৃষ্ঠ বিমন্থর রামায়ণ রচনা করেন, যা সকলপাপ হনন কারী। অতঃপর তিনি শিবরূপে সেখানে বাস করতে লাগলেন।। ৫৭-৫৮।।

আজও সেই সনাতন কৃগব্যধি স্বামী সংস্থিত আছেন, হে সুরগণ, আপনারা সকলে সেই ভগবান শ্রীহরিপ্রিয় চরিত্র শ্রবণ কর, আমি তা বলছি।। ৫৯।।

আদ্য শুভমত্ত্য যুগে বৈবস্বত মনু অন্ত হলে ব্রহ্মা সেই উৎপলারণ্যে যজ্ঞ করেন।। ৬০।।

তখন সরস্বতী দেবী নদীরূপে সেখানে এসছিলেন। তার দর্শন করে ভগবান ব্রহ্মা নিজ মুখ থেকে শুভ ব্রাহ্মণকে বাহু থেকে ক্ষত্রিয়কে উরু থেকে বৈশ্য এবং পদ থেকে শুভআচার শূদ্রকে জন্ম দিলেন।। ৬১-৬২।।

দ্বিজরাজস্তথা সোমশ্চন্দ্ৰমা নামতো দ্বিজঃ। লোকে সর্বাতপঃ সূর্যঃ কশ্যং বীৰ্যং হি পাতিযঃ।।৬৩। কশ্যপো হি দ্বিতীয়োহসৌ মরীচিস্ত ততোহ ভবৎ। রত্নানামাকরো যো বৈ সহি রত্নাকরঃ স্মৃতঃ।।৬৪।। লোকান্ধরতি যো দ্রধ্যৈঃ সতু ধৰ্মো হি নামতঃ। গম্ভীরশ্চাস্তি সদৃশঃ কোশো যস্য সরিৎ পতিঃ।।৬৫।। লোকান্ দক্ষতি যঃ কৃত্যৈঃ স তু দক্ষঃ প্রজাপতিঃ। ব্রহ্মাণোগাচ্চ তে জাতাস্তস্মাদ্বৈ ব্রাহ্মণাঃ স্মৃতাঃ।।৬৬। বর্ণধর্মেণ তে সৰ্বে বৰ্ণাৎ মানশ্চ বৈ ক্ৰমাৎ।

দক্ষস্য মনসো জাতাঃ কন্যাঃ পঞ্চশতং ততঃ।। বিষ্ণুমায়াপ্রভাবেন কলাভূতাঃ স্থিতা ভুবি।।৬৭।। তদা তু ভগবান্ ব্রহ্মা সোমায়াশ্বিনিমন্ডলম্। সপ্তবিংশদগনং শ্রেষ্ঠং দদৌ লোক বিবৃদ্ধয়ে।।৬৮।।

দ্বিজ রাজ সোম চন্দ্রমা নামে দ্বিজ ছিলেন। লোকমধ্যে সর্বাতপ সূর্য কশ্য বার্য রক্ষা করেন।। ৬৩।।

তিনি ছিলেন দৃঢ় কশ্যপ মরীচ তার পরেই জাত হন। যিনি রত্নের খনি তিনি রত্নাকর নামে প্রসিদ্ধ। যিনি দ্রব্যের দ্বারা লোক ধারন করেন তিনি ধর্ম, তার অন্যতম গম্ভীর কোশ সরিতে পতির ন্যায়। যিনি নিজ কৃত্যের দ্বারা লোক রক্ষণ করেন তিনি প্রজা প্রতি, যিনি ব্রহ্মাযোগ থেকে উৎপন্ন তিনি ব্রাহ্মণ।। ৬৪-৬৬।

বর্ণের ধর্ম থেকে এরা সকলে বর্ণাত্মা। প্রজাপতি দক্ষের মন থেকে ৫০০ কশ্যপ উৎপন্ন হল। তার সকলে ভগবান বিষ্ণু মায়ার প্রভাবে ভূতলে কলাভূত হলেন এবং সেখানে স্থিত হলেন।। ৬৭।।

সেই সময় ভগবান ব্রহ্মা চন্দ্রের জন্য অশ্বিনী মন্ডল লোক বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন।। ৬৮।।

কশ্যপপায়াদিতি গণং ক্ষত্ররূপং ত্রয়োদশম্। ধর্মায় কীর্তি প্রভৃতীদদৌ স চ মহামুনিঃ।।৬৯।। নানাবিধানি সৃষ্টানি চাসন বৈবস্বত্যেন্তরে। তেষাং পতিঃত্বয়ং দক্ষোহভুদ্ বিধেরাজ্ঞয়া ভুবি।।৭০। তত্র বাসং স্বয়ং দক্ষঃ কৃতবান্ যজ্ঞতৎপরঃ। সর্বে দেবগণা দক্ষং নমস্কৃত্য চরস্তি হি।।৭১।। ভূতনাথো মহাদেবো ন ননাম কদাচন। তদা ক্রুদ্ধঃ স্বয়ং দক্ষঃ শিব ভাগং ন দত্তবান্।।৭২।। মৃগব্যাধঃ শিবক্রুদ্ধো বীরভদ্রো বভূব হ। ত্রিশিরাশ্চ ত্রিনেত্রশ্চ ত্রিপদস্তত্র চাগতঃ।।৭৩।। তেনৈব পীড়িতা দেবা মুনয়ঃ পিতরোহ ভবন। তদা বৈ যজ্ঞপুরুষো ভয়ভীতঃ সমস্ততঃ।।৭৪।।

কশ্যপের জন্য ক্ষত্ররূপ ১৩ অদিত্যগণ দিয়েছিলেন এবং ধর্মের জন্য কীর্তি প্রভৃতিকে দিলেন। সেই বৈবস্বদের মধ্যে অনেক প্রকার সৃষ্টির সৃজন হল। সেই সর্বপতি ব্রহ্মার আদেশে এই ভূমন্ডলে দক্ষ জাত হলেন।। ৬৯-৭০।।

সেখানে দক্ষযজ্ঞ করতে তৎপর স্বয়ং বাস করতে লাগলেন। সসতদেব সমূহ দক্ষকে প্রণাম করে বিবরণ করতে লাগলেন। কিন্তু ভূতস্বামী মহাদেব কখনও দক্ষকে প্রণাম করেননি। তখন দক্ষ প্রচন্ড ক্রদ্ধ হয়ে যজ্ঞের শিবের ভাগ দিলেন না।। ৭১-৭২।।

মৃগব্যাধ শিব ক্রদ্ধ হয়ে বীর ভদ্র হয়ে গেলেন। সেই সময় ত্রিশিবা ত্রিনেত্রা এবং ত্রিবাদত্ত সেখানে এলেন।। ৭৩।।

তাদের দ্বারা দেব মুণিগণ এবং পিতর সকলে পীড়িত হলেন। তখন যজ্ঞ পুরুষ সকলে ভয়ভীত হয়ে গেলেন।। ৭৪।।

মৃগভূতো যযৌ তূর্ণং দষ্টা ব্যাধঃ শিরো ভবৎ। রুদ্রব্যাধেন স মৃগো বিভিন্নাংগো বভূব হ।।৭৫।। তদা তু ভগবান্ ব্রহ্মা তুষ্টাব মধুরস্বরেঃ। সন্তুষ্টশ্চ মৃগব্যাধো যজ্ঞং পূর্ণমকারয়ৎ।।৭৬।। তুলারাশিস্থিতে বনৌ তং রুদ্রং চন্দ্রমন্ডলে। স্থাপয়িত্বা স্বয়ং ব্রহ্মা সপ্তবিংশদ্দিনাত্মকে। প্রযযৌ সপ্তলোকং বৈ স রুদ্রশ্চন্দ্ররূপবান্।।৭৭।। ইতি শ্রুত্বা বীরভদ্রো রুদ্রঃ সংহৃষ্টমানসঃ। স্বাংশং দেহাৎ সমুৎপাদ্য দ্বিজগেহমচোদয়ৎ।।৭৮।। বিপ্রভৈরব দত্তস্য গেহং গত্বা স বৈ শিবঃ। তৎপুত্রোহ ভূৎকলৌ ঘোরে শংকরো নাম বিশ্রুতঃ।৭৯ স বালশ্চ গুনী বেত্তা ব্রহ্মচারী বভূব হ। কৃত্বা শংকরভাষ্যং চ শৈবমার্গমদর্শয়ৎ।।৮০। ত্রিপুভশ্চক্ষমালা চ মন্ত্রঃ পঞ্চাক্ষরং শুভঃ। শৈবানাং মঙ্গলকরঃ শংকরাচার্যনিমিতঃ।।৮১।।

মৃগভূত হয়ে শীঘ্র চলে গেলেন। তা দেখে ব্যাধ শিব হয়ে গেলেন। রুদ্রও ব্যাধের দ্বারা মৃগ বিভিন্ন অঙ্গযুক্ত হলেন। সেই সময় ভগবান্ ব্রহ্মা মধুর বচনে স্তব করলেন। পুনরায় মৃগব্যাধ সন্তুষ্ট হলেন এবং যজ্ঞ পূর্ণ করলেন।। ৭৫-৭৬।।

সূর্য তুলা রাশিতে স্থিত হলে যে চন্দ্রমন্ডল সপ্তবিংশতি দিনরূপে ছিলেন সেই চন্দ্রমন্ডলে রুদ্রকে স্থাপিত করে ব্রহ্মা চলে গেলেন।।৭৭।।

একথা শ্রবণ করে বীরভদ্র সন্তুষ্ট চিত্তে নিজ অংশকে দেহ থেকে সমুৎপন্ন করে দ্বিজগৃহে প্রেরিত করলেন। ভৈরবদত্ত বিপ্র গৃহে গেলেন সেই শিব তার পুত্ররূপে শংকর নামে প্রসিদ্ধ হলেন।। ৭৮।।

সেই বালক পরম গুনী জ্ঞাতা এবং ব্রহ্মচারী। তিনি শংকর ভাষ্য রচনা করে শৈবমার্গ দর্শন করলেন।। ৭৯-৮০।।

ত্রিপুন্ড্র-অক্ষমালা এবং পরম শুভ পঞ্চাক্ষর (ওঁ নমঃ শিবায়) মন্ত্র শংকরাচার্য নিশ্চিত করলেন।। ৮১।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *