গোরুর গল্প
দীনদয়ালবাবুর মনে বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে তিনি মানুষ নন গোরু। নানা ব্যাপারে ঠকে অনেকে। নিজেকেই গোরু ভাবে, কেউ কেউ অতিবুদ্ধিমান অন্যদের গোরু ভাবে, কিন্তু দীনদয়ালবাবুর ব্যাপারটা এত সামান্য বা সাধারণ নয়। যদিও তার লেজ নেই, তিনি দুধ দিতে পারেন না বা মাঠে হালচাষ করতে পারেন না, দীনদয়ালবাবুর দৃঢ় বিশ্বাস গোরু হিসাবে তার এই সব অযোগ্যতার জন্যে সৃষ্টিকর্তা এবং তার জনক-জননী দায়ী এবং আসলে তিনি দেহে-প্রাণে সর্বান্তঃকরণে সম্পূর্ণই গোরু।
প্রথম প্রথম সবাই যখন একটু-আধটু বুঝতে পারল যে দীনদয়ালবাবু নিজেকে গোরু ভাবছেন, কেউ ব্যাপারটাকে তত গুরুত্ব দেয়নি। দীনদয়ালবাবু কাউকে বিরক্ত করতেন না, বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকতেন, অফিসেও যেতেন। কেউ তাঁকে ঘাঁটাত না, তিনিও কাউকে ঘাঁটাতেন না। অফিস কাছারিতে এরকম লোক অনেক যায়, সবাই তাদের মেনে নেয়। কেউ নিজেকে সিরাজউদ্দৌল্লা ভাবে, বার্নাড শ ভাবে। এক বড়বাবু ছিলেন, তিনি নিজেকে রানি ভিক্টোরিয়া ভাবতেন। শাসনকর্ত্তীর যোগ্য রাশভারিয়ানা এবং রমণীসুলভ ব্রীড়ার অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল তার চরিত্রে। আরেক আবগারির দারোগা নিজেকে ধরে নিয়েছিলেন হাওড়া ব্রিজ, কোনও অসুবিধা ছিল না। সব সময়ে পায়ের বুড়ো আঙুলে ভর দিয়ে লম্বা হয়ে হাঁটতেন, হাওড়া ব্রিজের মতো টানটান, দুদিকে দুটো হাত সমবাহু ত্রিভুজের মতো পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি প্রসারিত। তবে কোনওদিন বেশি পান-টান করলে ট্রাফিক জ্যাম হয়ে যেত রাত্রির দিকে, তখন গাড়ি-ঘোড়া, লোকজনের চাপে হাওড়া ব্রিজের খুব কষ্ট হত।
সে যা হোক, দীনদয়ালবাবুকে নিয়ে বিশেষ কোনও অসুবিধা ছিল না। তাকে দেখলে অচেনা লোকের বুঝবার ক্ষমতা ছিল না যে তিনি একটি আস্ত গোর। কিন্তু ক্রমশ নতুন উপসর্গ দেখা দিতে লাগল। একদিন অফিসের করিডোরে যেতে যেতে হঠাৎ তারস্বরে হাম্বা হাম্বা করে চিৎকার করে উঠলেন। বড়সাহেবের খাস আর্দালি উমানাথ, তাদের বংশে সকলের হার্টের অসুখ, সে টুলে বসে ঝিমোচ্ছিল, হঠাৎ ঘুমের মধ্যে অফিসের বারান্দায় গোরুর ডাক শুনে ঘেমে-টেমে শেষ হয় আর কী! অফিসের লোকেরা এইই চায়–অফিস ছুটি হয়ে গেল। একদল লোক উমানাথকে স্ট্রেচারে চড়িয়ে অ্যাম্বুলেন্স করে হার্টের ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল, বাকিরা জোরজবরদস্তি করে ট্যাকসিতে উঠিয়ে দীনদয়ালবাবুকে নিয়ে গেল মাথার ডাক্তারের কাছে।
মাথার ডাক্তার হালদার সাহেব অতি বিচক্ষণ ব্যক্তি। বহুদিনের অভিজ্ঞতা তার। অনেক রকম মাথার অসুখ তিনি দেখেছেন। অনেক বাঙালি-অবাঙালি স্ত্রী-পুরুষ, সাহেব-চিনেসাহেব-ছিনেসাহেব অনেকের চিকিৎসা তিনি করেছেন। কলকাতা শহরে তিনিই একমাত্র মানসিক চিকিৎসক যাঁকে একুশবার পাগলে কামড়িয়েছে। শতকরা দশজন পাগল চিকিৎসার শেষ পর্যায়ে একবার ডাক্তারকে কামড়াতে যায় এবং কামড়াতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে যায়। তাই পাগলের ডাক্তারদের প্রতিষ্ঠা নির্ধারিত হয় কতবার পাগলে কামড়িয়েছে তাই দিয়ে। বলাই বাহুল্য, আমাদের এই হালদার সাহেব এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্থানে আছেন। হালদার সাহেব আগে চিকিৎসা করতেন সামান্য একটা কড়াই-ধরা সাঁড়াশি দিয়ে। অবশ্য হালদার সাহেব বলতেন, ওই সাঁড়াশিটা ভিয়েনা থেকে আনানো, তিনশো তিরিশ পাউন্ড দাম; কেউ তা বিশ্বাস করত না। সবাই বলত কালীঘাট বাজার থেকে কেনা। দাম দেড় বড় জোর দু টাকা। কিন্তু তাতে কিছু এসে যায় না, সাঁড়াশির দামের সঙ্গে হালদার সাহেবের যোগ্যতার কোনও সম্পর্ক নেই।
আজকাল হালদার ডাক্তার একটু আধুনিক হয়েছেন। প্রায় ষাট টাকা খরচ করতে হয়েছে তাঁকে এই জন্যে। একটা তক্তাপোশ, একটা তোশক, একটা বালিশ, সাদা চাদর এবং পঁচিশ শক্তির একটা নীল বালব। সেই তক্তাপোশের উপরে দীনদয়ালবাবুকে সবাই মিলে জোর করে শুইয়ে দিল। এতক্ষণ দীনদয়ালবাবু ধস্তাধস্তি করে কাবু হয়ে পড়েছিলেন, শুইয়ে দেওয়ামাত্র একবার নিস্তেজ কণ্ঠে ক্ষীণ হাম্বা হাম্বা করে নেতিয়ে পড়লেন।
রোগীর অবস্থা দেখে হালদার সাহেব সাহসী বোধ করলেন, তিনি সঙ্গীদের কাছ থেকে যতটুকু জানা সম্ভব জেনে নিয়ে সবাইকে বললেন, আপনারা এবার বাইরে যান, আমি দেখছি কী হয়েছে।
সবাই বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি নীল বালবটি জ্বালিয়ে দিলেন, তারপর রোগীর দিকে এগোলেন। রোগী তখনও দুর্বল অবস্থায় চোখ বুজে পড়ে রয়েছে। হালদার সাহেব রোগীর মাথার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার নাম?
দীনদয়ালবাবু ক্ষীণকণ্ঠে বললেন, হাম্বা হাম্বা।
ডাক্তার সাহেবের এরকম অনেক অভ্যাস আছে, তিনি অদমিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার ঠিকানা?
দীনদয়ালবাবু আবার হাম্বা হাম্বা করলেন।
যেন খুব খুশি হয়েছেন এই রকম ভাব দেখিয়ে হালদার ডাক্তার বললেন, ও বুঝেছি, বুঝেছি; আপনি কোন অফিসে আছেন?
দীনদয়ালবাবুর কণ্ঠে আরেকবার হাম্বা হাম্বা ধ্বনিত হল।
এইবার ডাক্তারসাহেব কায়দা পালটালেন। তিনি বললেন, ও, বুঝতে পেরেছি আপনি গোরু।
প্রশ্নটা শুনে দীনদয়ালবাবু স্থির দৃষ্টিতে এক মিনিট নীল আলোর দিকে তাকিয়ে রইলেন, তারপর স্পষ্ট মানুষের ভাষায় বললেন, আজ্ঞে। আবার এক মিনিট নীল আলোর দিকে অপলক তাকিয়ে রইলেন এবং এবার বললেন, হাম্বা হাম্বা।
হালদার সাহেব বুঝলেন ওষুধে কাজ হয়েছে এবং উৎফুল্ল হয়ে সরাসরি প্রশ্ন করলেন, আপনি যে গোরু এটা কবে থেকে বুঝতে পারলেন?
বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে দুবার হাম্বা হাম্বার পর দীনদয়ালবাবু নির্বিকারভাবে বললেন, সেই ছোট বয়সে যখন বাছুর ছিলাম তখন থেকে।
অভিজ্ঞ ডাক্তার বুঝতে পারলেন ব্যাধি কঠিন এবং অনেক গভীরে। সেদিনের মতো বত্রিশ টাকা ফি নিয়ে তিনি দীনদয়ালবাবুকে সামনের সপ্তাহে আবার নিয়ে আসতে বলে সহকর্মীদের হাতে তুলে দিলেন। সহকর্মীরা আবার হই হই করে ট্যাকসি ডেকে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন।
দীনদয়ালবাবু কিন্তু আর ডাক্তারের কাছে গেলেন না; কাশীতে চলে গেলেন।
গোরু-বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জনের জন্য দীনদয়ালবাবু প্রায় তিন মাস কাশীতে রইলেন। কাশীর যেখানে যত গলিকানাগলি আছে, পাড়া-বেপাড়ায়, ঘাটে-মন্দিরে ঘুরে ঘুরে তিনি গোরুদের আচার-আচরণ লক্ষ করতে লাগলেন। যত দেখেন ততই অবাক হয়ে যান এবং নিজের গোরুত্ব সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ হন।
কাশী যাওয়ার ফলে অবশ্য দীনদয়ালবাবুর একটা বড় উপকার হল, তিনি হাম্বা হাম্বা করা একেবারেই প্রায় ছেড়ে দিলেন। কারণ তিনি লক্ষ করে দেখলেন, অধিকাংশ গোরুই এবং বিশেষ করে ষাঁড়েরা প্রায় কখনওই ডাকে না। ডাকার ব্যাপারটা মোটামুটি বাছুর এবং বাছুর জননীদের একচেটিয়া। দীনদয়ালবাবু ভালই জানেন, তিনি বাছুর বা বাছুরজননী নন, সুতরাং ডাকাডাকি ছেড়ে দিলেন। এখন শুধু কখনও কালেভদ্রে মনে খুব স্ফূর্তির ভাব এলে নাকটা যথাসাধ্য উলটিয়ে একটু হু-হু করেন।
এ ব্যাপারটা বিশেষ কিছু দোষের নয় এবং আশেপাশের লোকের এতে আপত্তির কোনও কারণ থাকা উচিত নয়। সুতরাং দীনদয়ালবাবু ভাল হয়ে গেছেন।
এর অবশ্য অন্য একটা কারণও ছিল। কাশীতে গোরুদের সঙ্গে দিনের পর দিন মেলামেশা করে তিনি বুঝতে পেরেছেন শারীরিকভাবে তাঁর পক্ষে গোরু হওয়া অসম্ভব। একদিন খড় চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন গলা দিয়ে ঢুকবার আগে জিভ ছড়ে রক্ত বেরিয়ে গেল। আরেকদিন জামাকাপড় ছেড়ে ফেলে চার পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে দশাশ্বমেধ ঘাটের ওখানে ঘুরে বেড়ালেন, কাশীর লোক এরকম জিনিস অনেক দেখেছে। তারা বিশেষ তাকিয়েও দেখল না। কিন্তু দীনদয়ালবাবুর হাঁটুতে, কোমরে তারপর তিনদিন প্রচণ্ড ব্যথা। নানাভাবে ঠেকে তিনি বুঝতে পারলেন এ জন্মে দৈহিক অর্থে গোরুত্বপ্রাপ্তির ইচ্ছা তার পূর্ণ হবে না।
তাই দীনদয়ালবাবু কাশী থেকে ফিরে এসে মনে প্রাণে গোরু হওয়ার সাধনা করতে লাগলেন। আত্মীয়বন্ধুরা কোনও প্রকাশ্য বিকার না দেখে ধরে নিল তিনি ভাল হয়ে গেছেন।
অবশ্য প্রকাশ্য বিকার একেবারে রইল না তা মোটেই নয়। কাশীতীর্থের ভুবনবিখ্যাত গোরুদের সঙ্গে তিন মাস থেকে তিনি চমৎকার গুঁতোনো শিখে এসেছেন। বিশ্বনাথ মন্দিরের কাছে এক চাঁদকপালে মারকুটে ষাঁড়ের কাছেই তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেন। ঘাড় বাঁকিয়ে মাথা নিচু করে আচমকা তীব্র বেগে হাটুর নীচে গুতো দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফেলে দেয়া তিনি চমৎকার আয়ত্ত করে এসেছেন। প্রতিদিন গভীর রাতে মন্দিরচত্বরে শিং ওঠেনি এমন বাছুরদের সঙ্গে নিয়মিত গুঁতোগুঁতি অভ্যাস করেছেন তিনি।
কলকাতায় ফিরে দীনদয়ালবাবুর প্রধান অসুবিধা হল এই গুঁতোগুঁতির অভ্যাসটা রফা করা নিয়ে। মাঝেমধ্যেই কপালের যে দুটো জায়গায় শিং থাকার কথা সে দুটো জায়গা সুরসুর করে ওঠে। অবশেষে অফিস থেকে ফেরার পথে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা তিনি গড়ের মাঠে যেতে লাগলেন বাছুরদের সঙ্গে গুঁতোগুতি করবার জন্যে। গড়ের মাঠে গোরু ভেড়া চরাতে নিয়ে আসে অনেক লোক কিন্তু তার মধ্যে বাছুরের সংখ্যা অত্যন্ত কম। একেকদিন এমন হয় একটা বাছুরের খোঁজে তিনমাইল চারমাইল হাঁটতে হয় দীনদয়ালবাবুকে।
সেদিন হঠাৎ, ভাগ্য ভাল, রেডরোডের পাশেই একদঙ্গল বাছুরের দেখা পেয়ে গেলেন তিনি। প্রাণের আনন্দে সেই বাছুরের ভিড়ে নেমে পড়লেন।
হালদার ডাক্তার গাড়ি করে ময়দান দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখেন ধুতিপাঞ্জাবি-পরা এক ভদ্রলোক বাছুরদের সঙ্গে প্রচণ্ড রকম মেলামেশা করছেন। মানসিক ডাক্তার তিনি, খুব কৌতূহল হল, তা ছাড়া লোকটাকে কেমন চেনাচেনা মনে হচ্ছে। গাড়ি থেকে নেমে দেখেন তাঁরই পুরনো রোগী। ডাক্তারসাহেব একটু এগিয়ে মাঠের দিকে যেতেই দীনদয়ালবাবু তাকে চিনতে পেরে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করে নমস্কার করলেন। ডাক্তারসাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, এখানে কী করছেন? দীনদয়ালবাবু নিজের কপালে একটু হাত বুলিয়ে নিয়ে বললেন, দেখছেন না শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকেছি। উত্তর শুনে আশ্বস্ত হলেন হালদার ডাক্তার, রোগলক্ষণ এখনও একই আছে, অনেকের সময়ের সঙ্গে অসুখ বদলিয়ে যায়। তার এক রোগী আগে নিজেকে আরশোলা ভাবতেন এখন জেটপ্লেন হয়েছেন। রোগীর অবস্থা দেখে খুশি হয়ে, আসবেন একদিন বলে হালদার ডাক্তার চলে গেলেন।
গোরু-হওয়া নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কারণ নেই দীনদয়ালবাবুর, সেটাই তাঁর ইচ্ছা। কিন্তু শিগগিরই ডাক্তারের কাছে যেতে হল তাকে অন্য কারণে। পূর্ণ গোরু হওয়ার পর থেকে তার মনে ভীষণ গণ্ডারের ভয় ঢুকেছে, হঠাৎ কখন তেড়ে এসে আক্রমণ করে, সব সময় শঙ্কিত থাকেন। একটা সমাধান অবশ্য তিনি পেয়ে গেছেন, গণ্ডারের উপস্থিতি অনুমান করলেই পা দুটো মেজেতে দ্রুততালে ঠোকেন, জঙ্গলের গোরুরা নাকি গণ্ডারের সামনে ওইরকম করে আর গণ্ডারেরা ভয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু রাতেই খুব সমস্যা, উনি ঘুমিয়ে পড়লেই খাটের নীচে দলে দলে গণ্ডার ঢুকে যায়, তাদের সমবেত চিৎকারে তার ঘুম ভেঙে যায়, তখন অবশ্য আবার দ্রুত পা ঠোকেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পালায়।
ডাক্তার হালদার সব শুনে বললেন, পা ঠুকলে গণ্ডার পালিয়ে যায়, একথা আপনাকে কে বলল?
একবার সশব্দে পা ঠুকে দীনদয়ালবাবু বললেন, দেখছেন না এক চিড়িয়াখানার খাঁচার গণ্ডার কটা পালাতে পারছে না আর বাকিগুলো কোথায় চলে গেছে কলকাতায় দুশো মাইলের মধ্যে এখন কোনও গণ্ডার নেই।
ডাক্তারসাহেব বললেন, তাহলে রাতে কী করে আসে?
রাতে কী করে আসে, কে জানে?
দীনদলায়বাবু বলেন, আমি ঘুমোলেই সাহস পেয়ে যায়, খাটের নীচে পালে পালে ঢুকে পড়ে। ডাক্তার হালদার ব্যর্থ হলেন, খাটের নীচ থেকে গণ্ডার তাড়ানোর যোগ্যতা তার নেই।
কয়েকদিন পরে গড়ের মাঠের সেই জায়গায় আবার দীনদয়ালবাবুকে দেখতে পেলেন ডাক্তার সাহেব। কেমন যেন খুশিখুশি ভাব, বাছুরদের সঙ্গে আহ্লাদে ছুটোছুটি করছেন। ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন, কী ব্যাপার দীনদয়ালবাবু?
দীনদয়ালবাবু হেসে বললেন, আর ব্যাপার, সব গণ্ডারদের জব্দ করেছি। তারা আর খাটের তলায় ঢুকতে পারে না।
ডাক্তার অবাক হয়ে বললেন, কী করে?
দীনদয়ালবাবু বললেন, ছুতোর ডেকে খাটের পায়া সম্পূর্ণ হেঁটে দিয়েছি, এখন ব্যাটারা জব্দ, আর নীচে ঢুকতে পারে না।