দ্বিতীয় খন্ড
উত্তরপর্ব
2 of 3

কৃষ্ণাংশ চরিত্র বর্ণন

।। কৃষ্ণাংশচারিত্র বর্ণনম্।।

নবমাব্দং বয়ঃ প্রাপ্তে কৃষ্ণাংশো বলবত্তরঃ। পধিত্বান্ধীক্ষিকীং বিদ্যাং চতুঃষষ্টিকলাস্তথা।।১।। ধর্মশাস্ত্রং তথৈবাপি সর্বশ্রেষ্ঠো বভূব হ। তস্মিনকালে ভূগুশ্রেষ্ঠ মহীরাজো নৃপোত্তমঃ।।২।। করার্থং প্রেষয়ামাস স্বসৈন্যং চ মহাবতীম্। তে বৈ লক্ষং মহাশূরাঃ সর্বশাস্ত্রাস্ত্রধরিণঃ।।৩।। উচুঃ পরিমলং ভূপং শৃণু চন্দ্ৰকুলোদ্ভব। সর্বে চ ভারতে বর্ষে যে রাজানো মহাবলাঃ।।৪।। ষড়ংশং করমাদায়াস্মদ্রাজায় দদন্তি বৈ। ভবাক্নরে হি তস্যৈব যোগ্যা ভবতি সাম্প্রতম্।।৫।। অদ্যপ্রভৃতি চেদ্ৰাজ্ঞে তস্মৈ দদ্যাৎকরং ন হি। মহীরাজস্য রৌদ্রাস্ত্রৈ ক্ষয়ং যাস্যতি সৈনিকৈঃ।।৬।। যে ভূপা জয়চন্দ্রস্য পক্ষগাস্তে হি তদ্ভয়াৎ। দদন্তে ভূমিরজায় দন্তং তস্পিন্ সৎকৃতাঃ।।৭।।

।। কৃষ্ণাংশ চরিত্র বর্ণন।।

এই অধ্যায়ে কৃষ্ণাংশ চরিত্র তথা রাজাগণকে করদ করার বৃত্তান্তের বর্ণনা করা হয়েছে।

শ্রীসূতজী বললেন –কৃষ্ণাংশ নবমবর্ষে পদার্পণ করলে বলবান্ হন। তিনি আন্বিক্ষিকী বিদ্যা, চতুঃষষ্ঠি কলা, ধর্মশাস্ত্র এই সকল শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। হে ভৃগুশ্রেষ্ঠ সেই সময়, নৃপোততেম মহীরাজ নিজ সেনা মহাবতীপুরে কর গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেন। সেই সময় দলে একলক্ষ মহাশূরবীর অস্ত্রশস্ত্র ধারণ করেছিলেন।। ১-৩।।

তারা পরিমল রাজার কাছে এসে বললেন–হে চন্দ্ৰকুলোদ্ভব শ্রবণ করুন, সমস্ত ভারতবর্ষে বলবান্ সব রাজার ন্যায় এক-ষষ্ঠাংশ কর আমাদের রাজাকে প্রদান করুন। যদি তা না করেন তাহলে মহারাজের রৌদ্র শরের আঘাতে আপনার সেনা ক্ষয়প্রাপ্ত হবে।।৪-৭।।

ইতি শ্রুত্বা স নৃপতিস্তস্মৈ রাজ্ঞে মহাত্মনো। করং ষড়ংশমাদায় দদৌ প্রীতিসমন্বিতঃ।।৮।। দশলক্ষমিতং দ্রব্যং গৃহীত্বা তে সমাযযুঃ। মহীরাজ প্রসন্নাত্মা পূর্ববৈরমপাহরৎ।।৯।। তদা তে লক্ষশূরাশ্চ কান্যকুব্জমুপাযঃ। জয়চন্দ্ৰং তু নত্বোচু শৃণু লক্ষণকোবিদ।।১০।। পৃথ্বিরাজো মহারাজো দন্ডং তত্ত্বঃ সমিচ্ছতি। ইভুক্তস্তৈবৈষ্ণবাস্ত্রী লক্ষণাস্তানুবাচ হ।।১১।। মদ্দেশে মত্তলিকাশ্চ বহবঃ সন্তি সাম্প্রতম্। ভূমিরাজো মন্ত লিকো ময়ি জীবতি মা ভবেৎ।। ১২।। ইত্যুক্ত্বা বৈষ্ণবাস্ত্রং তাৎক্রুদ্ধঃ স চ সমাদধৎ। তদস্ৰজ্বালতঃ সর্বৈ ভয়ভীতাঃ প্ৰদুদ্ৰুবুঃ।।১৩।। মহীরাজস্তু তচ্ছু ত্বা মহদ্ভয়মুপাগম‍। দশাব্দং চ বয়ঃ প্রাপ্তে কৃষ্ণাংশে মল্লকোবিদে।।১৪।। নানামল্লাঃ সমাজগুস্তেন রাজ্ঞৈব সৎকৃতাঃ। তেষাং মধ্যে স কৃষ্ণাংশো বাহুশালী বভূব হ।। ১৫।।

সৈনিকগণের একথা শ্রবণ করে রাজা পরিমল এক-ষষ্ঠাংশ কর মহাত্মা মহীরাজকে প্রীতিযুক্ত হয়ে দিয়েছিলেন। দশলক্ষ প্রমাণ দ্রব্য নিয়ে পরম আনন্দে মহীরাজ চলে এলেন এবং সমস্ত বৈরীতা দূর করে দিলেন। পুনঃ সেইসময় একলক্ষ শূরবীর কান্যকুব্জ দেশে চলে গেল। তারা জয়চন্দ্রকে নমস্কার করে বললেন–হে লক্ষ্মণকোদ্বিদ্ শ্রবণ করুন, মহারাজ পৃথ্বীরাজ আপনার দন্ড গ্রহণে ইচ্ছুক। তারা এইকথা বললে বৈষ্ণবাস্ত্রী লক্ষণ তাদের বললেন, আমার দেশ এইসময় প্রভূত মন্ডলিক। আমি জীবিত থাকতে ভূমিরাজ মান্ডলিক হবেন না। একথা বলে ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি বৈষ্ণরাস্ত্র ধারণ করেছিলেন। সেই অস্ত্রের জ্বালাতে সকলে ভয়ে ভীত হয়ে সেখান থেকে পলায়ন করলেন। মল্লের পরম পন্ডিত কৃষ্ণাংশ যখন দশবর্ষের হলেন তখন সেখানে অনেক মল্লবিদ্ এলেন।।৮-১৫।।

উর্বীয়াধিপতেঃ পুত্রঃ ষোড়শাব্দবয়া বলী। শতমল্লৈশ্চ সহিতঃ কদাচিত্ত সমাগতঃ।।১৬।। পিতৃষ্বসৃপতিং ভূপং নত্বা নাম্মাহ ভয়ো বলী। উবাচ শৃণু ভূপাল কৃষ্ণোহয়ং মদমত্তরঃ।।১৭।। তেন সার্দ্ধ ভবেন্মযুদ্ধং মম নৃপোত্তম। ইতি বজ্ৰসমং বাক্যং শ্রুত্বা রাজা ভয়াতুরঃ।।১৮।। উবাচ শ্যালজং প্রেন্না ভবান্যুদ্ধবিশারদঃ। অষ্টাব্দোহয়ং সুতঃ স্নিগ্ধো মম প্রাণসমো ভূবি।।১৯।। কৃভবান্বজ্ৰ সদৃশ ক্ব সুতোহয়ং সুকোমলঃ। অন্যৈমল্লৈমদীয়ৈশ্চ সার্দ্ধং যোগ্যো ভবারণে।।২০।। ইতি শ্রুত্বা নৃপঃ শ্যালো মহীপতিরিতি স্মৃতঃ। স তমাহ রুষাবিষ্টো বালোহয়ং বলবত্তরঃ।।২১।। শৃণু তৎকারণং ভূপ যথা জ্ঞাতো ময়া শিশুঃ। আবিস্কৃতং মহীরাজং মত্বা সলিলকঃ সুতম্।।২২।। পন্ডিতাংশ্চ সমাহুয় মুহূর্তং পৃষ্টাবান্মুদা। গণেশো নাম মতিমাঞ্জ্যোতিশাস্ত্রবিশারদঃ।।২৩।। লক্ষণং বচনং প্রাহ মহীরাজমনুত্তমম্। শিবদত্ততরো রাকুবের ইব সাম্প্রতম্।।২৪।।

সেই রাজার আমন্ত্রিত বহু মল্লবিদ্‌ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে কৃষ্ণাংশ বাহুশালী ছিলেন। উর্বীয়াধিপতির পুত্র ষোড়শ বর্ষের মহামল্লবান্ যোদ্ধা একশত মল্লের সঙ্গে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। পিতৃস্বসাপতি রাজাকে প্রণাম করে অভয় নাম্নী বলবান্ বললেন হে ভূপাল, শ্রবণ করুন, কৃষ্ণাংশ অত্যন্ত বলবান্ মল্লযোদ্ধা। তার সাথে আমার মল্লযুদ্ধের ব্যবস্থা করুন। বজ্রগর্ভ এইবচন শ্রবণ করে রাজা ভয়াতুর হলেন। পুনরায় রাজা নিজ শ্যালকপুত্রকে প্রেমপূর্বক বললেন–তুমিতো মল্লযুদ্ধে মহাবীর, আর এই অষ্টমবর্ষীয় বালকপুত্র আমার প্রাণপ্রিয়। তোমার এই শরীর তার কোমল শরীরের যোগ্য নয়। তোমাদের মধ্যে অনেক অন্তরও রয়েছে। তুমি বরং আমার অন্য মল্লের সাথে যুদ্ধ কর।।১৬-২০।।

একথা শ্রবণ ক্র শ্যালক মহীরাজ ক্রোধাবিষ্ট হয়ে বললেন, হে ভূপ, এই বালক অত্যন্ত বলবান। আমি যে কারণে একথা বলছি তা শ্রবণ কর। মতিলক সূত মহীরাজকে আগস্কৃত মনে করে পন্ডিতগণকে আহ্বান করে মুহূর্ত জিজ্ঞাসা করলেন। গণেশ নাম্নী এক পরম বুদ্ধিমান্ জ্যোতিষ মহীরাজের বিষয়ে বললেন, হে রাজন, উনি ভগবান্ শিবের বর প্রাপ্ত এবং এই সময় কুচের তুল্য।।২১-২৪।।

কৃষ্ণাংশস্তস্য যোগ্যোহয়ং দেশরাজ সুতোহবরঃ। নান্যোহস্তি ভূতলে রাজস্নত্যং সত্যং ব্রবীম্যহম্।। ২৫।। তচ্ছুত্বা লক্ষণো বীরঃ পূর্বে বহিষ্মতীং প্রতি। কল্পক্ষেত্রং দক্ষিণে চ ভূমিগ্ৰামং তু পশ্চিমে।।২৬।। উত্তরে নৈমিষারণ্যং স্বকীয়ং রাষ্ট্রমাদধতঃ। অতঃ শ্রেষ্ঠ কুমারোহয়ং কান্যকুব্জেময়া শ্রুতঃ।।২৭।। নাগোৎসবে চ ভূপাল পঞ্চম্যাং চ নভসিসতে। দৃশ্যমাত্রং কুমারাঙ্গং তস্মাদ্যোগ্যো হ্যয়ং সুতঃ।।২৮।। ইতি শ্রুত্বা স কৃষ্ণাংশো বাছরেণ প্রপীড়িতঃ। অভয়ো শীঘ্রং গৃহীত্বা সোহযুধদ্বলী।।২৯।। ক্ষণমাত্রং রণং কৃত্বা ভূমিমধ্যে তমক্ষিপৎ। অভয়স্য ভূজো ভগ্নস্তত্র জাতো বলেন বৈ।।৩০।। মূৰ্চ্ছিতং স্বসুতং জ্ঞাত্বা খড়্গহস্তো মহীপতিঃ। প্রেষয়ামাস তান্মল্লাকৃষ্ণাংশস্য প্রহারণে।।৩১।। রুষাবিষ্টাংশ্চ তাঞ্জাত্বা কৃষ্ণাংশো বলত্তরঃ। তানেকৈকং সমাক্ষিপ্য বিজয়ী স বভূব হ।।৩২।। পরাজিতে মল্লবলে খড়্গহস্তো মহীপতিঃ। মরণায় মতিং চক্রে কৃষ্ণাংশস্য প্রভাবতঃ।।৩৩।। জ্ঞাত্বা তমীদৃশং ভূপং বারয়ামাস ভূপতিঃ। অভয়ং নীরুজং কৃত্বা প্রেন্মা গেহমবাসয়ৎ।।৩৪।। নবাব্দাঙ্গে চ কৃষ্ণাংশে চাহ্লাদাদ্যা কুমারকাঃ। মৃগয়ার্থে দধুশ্চিত্তং তমুচুভূপতিং প্ৰিয়ম্।।৩৫।। নমস্তে তাত ভূপাগ্ৰয় সর্বা নন্দপ্ৰদায়ক। অস্মভ্যং ত্বং হ্যান্দেহি মতিপ্রয়াকুরুমাকরঃ।।৩৬।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তেষাং তথেত্যক্ত্বা মহীপতিঃ। ভূতলে বাসিনোহ শ্বাথৈ দিব্যান্নাটু চতুরোবরান্।।৩৭।

সেই কৃষ্ণাংশ তার যোগ্য ও তিনি দেশরাজের অবরপুত্র। হে রাজন, এর অন্যথা এই ভূতলে হবে না, এই হল পরম সত্য।।২৫।।

একথা শ্রবণ করে বীর লক্ষণ পূর্বে বর্হিষমতীর প্রতি, দক্ষিণে কলক্ষেত্র পশ্চিমে ভূমিগ্রাম এবং উত্তরে নৈমিষারণ্য নিজরাষ্ট্রের অন্তর্ভূক্ত করেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ কুমার একথা আমি কান্যকুব্জে শ্রবণ করেছি। হে ভূপাল নাগোৎসবে নমস্থিত পঞ্চমীতে কুমারাঙ্গ দৃশ্যমাত্র। এতে এই সুতযোগ্য।

একথা শ্রবণ করে সেই কৃষ্ণাংশ বচনবাণে বিদ্ধ হয়ে অত্যন্ত পীড়িত হলেন। তিনি অতি শীঘ্র অভয়কে বাহুতে গ্রহণ করে এতক্ষণ যুদ্ধ করে ভূমিতে ফেলে দিলেন। অত্যন্ত আঘাতে তার হস্তভগ্ন হল। নিজ পুত্রকে মূর্ছিত দেখে মহীরাজ কৃষ্ণাংশকে হত্যার জন্য অন্য মল্ল প্রেরণ করলেন। রাজা রাগান্বিত দেখে কৃষ্ণাংশ তাদেরও হত্যা করে বিজয়ী হলেন। এবার মহীরাজ নিজে কৃষ্ণাংশকে হত্যা করতে খর্গ হস্তে উদ্যত হলে রাজা তাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার জন্য নিবৃত্ত করলেন। অভয়কে রোগমুক্ত করে নিজগৃহে প্রেরণ করলেন। কৃষ্ণাংশ নবমবর্ষে পদার্পণ করলে আহ্লাদাদি কুমার রাজার কাছে মৃগয়ার আর্জি জানালেন।।২৬-৩৫।।

দদৌ তেভ্যো মুদা যুক্তা হরিণী গর্ভসংভবান্। ত্বন্মুখেন শ্রুতং সূত হরিণী বড়বা যথা।।৩৮।। ভীষ্ম সিংহায় সম্প্রাপ্তা শক্রাদ্দেবেশতো মুনে। ইদানীং শ্রোতুমিচ্ছামঃ কুতো জাতাস্তুরঙ্গমাঃ।।৩৯।। দিব্যাঙ্গাঁ ভূষণাপন্না নভসসলিলগামিনঃ। দেশরাজেন ভূপেন পুরা ধর্মযুতেন বৈ।।৪০।। সেবনং ভাস্করস্যৈব কৃতং চ দ্বাদশাব্দিকম্। সেবান্তে ভগবান্ সূর্যো বরং ব্রূহি তমব্রবীৎ।।৪১।। প্রাহ দেব নমস্তুভ্যং যদি দেয়ো বরস্ত্বয়া। হয়ং দিব্যময়ং দেহি নভস্থলজলাতিগম্।।৪২।।

তারা বলল, হে তাত, হে ভূপশ্রেষ্ঠ, আপনাকে প্রণাম। আপনি আমাদের প্রিয় অশ্ব প্রদান করুন। তাদের এইকথা শ্রবণ করে রাজা বললেন–ঠিক আছে, এই রকমই হবে। ভূতলে বাসকারী দিব্য তথা শ্রেষ্ঠ হরিণী গর্ভজাত চার অশ্ব রাজা তাদের সহর্ষে দিয়েদিলেন।।৩৬-৩৮।।

ঋষিগণ বললেন, হে সূতজী, আপনার মুখে শুনেছি যে হরিণী বড়া শুকদেবের কাছে ভীমসিংহকে প্রাপ্ত করেছিলেন, যে অশ্ব দিব্য অঙ্গযুক্ত, সাভূষণসম্পন্ন আকাশ তথা জল সর্বত্র গমনশীল। সূতজী বললেন রাজা দেশরাজ ধর্মযুক্ত হয়ে দ্বাদশ বৎসর ভাস্করের সেবা করেছিলেন। সেবান্তে ভগবান্ সূর্য তাঁকে মনোবাঞ্ছিত বর দিতে চাইলেন। তিনি উত্তরে বললেন, হে দেব, আকাশ, স্থল ও জলে গমনশীল একটি অশ্ব আমাকে প্রদান করুন।।৩৯-৪২।।

তথেত্যুক্ত্বা রবি সাক্ষাদ্দদৌ তস্মৈ পপিহকম্। লোকাপ্নাতি পপীজ্ঞেয়স্তস্যেদং নাম চোত্তমম্।।৪৩।। অতঃ পপীহকো নাম লোকপালনকর্মবান্। স হয়ো মদমত্তশ্চ হরিণীং দিব্য রূপিনীম্।।৪৪।। বুভুজে স্মরবেগেন তস্যাং জাতাস্তুরঙ্গমাঃ। মনোরথশ্চ পীতাঙ্গ করাল কৃষ্ণরূপকঃ।।৪৫।। একগর্ভে সমুদ্ভূতৌ শৈব্যসুগ্রীবকাংশকৌ। যস্মিন্দিনে সমুদ্ভূতৌ জিষ্ণুবিষ্ণুকলাংশতঃ।।৪৬।। তদা জাতৌ হরিণ্যাশ্চ মেঘপুষ্পবলাহকৌ। বিন্দুলশ্চ সুর্বমাঙ্গঃ শ্বেতাঙ্গোঁ হরিনাগরঃ।।৪৭।। দিব্যাঙ্গাস্তে হি চত্বারঃ পূর্বং জাতা মহাবলাঃ। পশ্চাদংশাবতারাঞ্চ জাতাস্তেষাং মহাত্মনাম্।। ৪৮।। ইতি তে কথিতং বিপ্ৰ শৃণু তত্ৰ কথাং শুভাম্। ভূতলে তে হয়াঃ সর্বে প্রাপ্তাশ্চোপরি ভূমিগাঃ।।৪৯।।

ভগবান্ রবি বললেন–তাই হোক, এই বলে তিনি পপীহক অশ্ব প্রদান করলেন। লোকরক্ষক বলে তা ‘পপী’ নামে পরিচিত। সুতরাং পপী ক লোকরক্ষক ছিল। সেই অশ্ব অত্যন্ত মদমত্ত ছিল। তাকে দিব্য ইরিণী উপভোগ করেছিল। ফলে তার থেকে তুরঙ্গম্ উৎপন্ন হয়েছিল। মনোরথ, পাতাঙ্গ, করাল ও কৃষ্ণ ইত্যাদি তুরঙ্গমের নাম ছিল। এক গর্ভে শৌব্য, সুগ্রীব, কাংশক উৎপন্ন হয়েছিল। সেই দিন জিষ্ণু, বিষ্ণু কলাংশ থেকে উৎপন্ন হয়। সেই সময় হরিণীর মেঘপুষ্প, বলাশক, কিদুল, সুবণাঙ্গ, শ্বেতাঙ্গ, হরিনাগর, মহাবলী, দিব্য চার মহাত্মার অংশাবতার উৎপন্ন হয়। হে বিপ্র, এই সকল কথা তোমাকে বললাম। এবার তুমি শুভকথা শ্রবণ কর। ভূতলে এই অশ্ব ভূমিতে গমন করতে পারত।।৪৩-৪৯।। দেবসিংহায় বসিনে দদৌ চাশ্বং মনোরথম্। আহ্লাদায় করালং চ কৃষ্ণাংশয়ৈব বিন্দুলম্।।৫০।। ব্ৰহ্মনন্দায় পুত্ৰায় প্ৰদদৌ হরিনাগরম্। তে চত্বারো হয়ারূঢ়া মৃগয়াৰ্থং বনং যযুঃ।।৫১।। হরিণীং বড়বাং শুভ্রাং বলখানিঃ সমারুহৎ। তদনু প্রযযৌ বীরো বনং সিংহনিষেবিতম্।।৫২।। আহ্লাদেনৈব শার্দূলো হতঃ প্রাণিভয়ঙ্করঃ। দেবসিংহেন সিংহশ্চ সুকরো বল খানিনা।।৫৩।। ব্রহ্মনন্দেন হরিণো হতস্তত্ৰ মহাবনে। মৃগাঃ শতং হতাস্তৈশ্চ তাগৃহীত্বা গৃহং যঃ।।৫৪।। এতস্মিন্নন্তরে দেবী শারদা চ শুভাননা। মৃগী স্বর্ণময়ী ভূত্বা তেষামগ্নে প্রধাবিতা।।৫৫। দৃষ্ট্বা তাং মোহিতাঃ সর্বৈ স্বৈঃ স্বৈর্বাণৈরতাড়য়ন্। শশস্ত্র সংক্ষয়ং জমৃগ্যঙ্গেং বলবত্তরাঃ।।৫৬।। আহ্লাদাদ্যাশ্চ তে শূরা বিস্মি তাশ্চ বভূবিরে। তস্মিক্লালে স কৃষ্ণাংগো বাণেণৈব হ্যতাড়য়ৎ।।৫৭।। তদা চ পীড়িতা দেবী ভয়ভীতা যযৌ বনম্। কৃষ্ণাংশঃ ক্রোধতাম্রা স্তৎ পশ্চাৎপ্ৰযযৌ বলী।।৫৮।। বনান্তরং চ সংপ্রাপ্য দেবী ধৃত্বা স্বকং বপুঃ। তমুবাচ প্রসন্নাক্ষী পরীক্ষা তে ময়া কৃতা।।৫৯।। যদা তে চ ভয়ং ভূয়াত্তদা ত্বং মাংসদাস্মর। সাধয়িষ্যামি তে কার্যং কৃষ্ণাংশো হি ভবান্বিভুঃ।।৬০। ইত্যক্ত্বান্তহিতা দেবী শারদা সর্বমঙ্গলা। কৃষ্ণাংশস্তু যযৌ গেহং তৈশ্চ সার্দ্ধং মুদা যুতঃ।।৬১।। তদা পরাক্রমং তেষাং দৃষ্ট্বা রাজা সুখোহ ভবৎ। গৃহে গৃহে চ সর্বেষাং লক্ষ্মীদেবী সমাবিশৎ।।৬২।।

বলবান্ দেবসিংহ মনোবাঞ্ছিত অশ্ব পেলেন, আহ্লাদ করাল নামক অশ্ব, কৃষ্ণাংশ বিন্দুল, ব্রহ্মানন্দপুত্র হরিনাগর, নামক অশ্বে মৃগয়ায় গমন করলেন। পরমশুভ্র হরিণী নামক অশ্বে বলখানি আরোহণ করে পশ্চাতে বীরসিংহকে নিয়ে বনে চলে গেলেন।।৫০-৫২।।

আহ্লাদ সকলের ভয়সৃষ্টিকারী শার্দুল হত্যা করলেন দেবসিংহ সিংহ, বলখানি শূকর, ব্রহ্মানন্দ হরিণ বধ করলেন। এইভাবে তাঁরা একশত হরিণ শিকার করে সেগুলি নিয়ে গৃহে প্রত্যাগমন করলেন। ইতিমধ্যে দেবী শারদা স্বর্ণময়ী মৃগীরূপ ধারণ করে অগ্রে দৌড়ালেন। তাকে দেখে সকলে মোহিত হয়ে গেল এবং বাণের দ্বারা তাকে প্রহার করতে লাগল। কিন্তু সমস্ত শরক্ষয় হয়ে গেল, সেগুলি মৃগীর অঙ্গে ক্ষীণ হয়ে গেল। আহ্লাদ প্রভৃতি শূর বিস্মিত হয়ে গেল। সেই সময় কৃষ্ণাংশ একটিই বাণ নিক্ষেপ করলে সেই দেবী পীড়িত হয়ে ভয়ভীত হয়ে বনে চলে গেল। ক্রোধে তাম্রবর্ণ চক্ষু কৃষ্ণাংশ তার পশ্চাতে গমন করল। সেই মৃগী অন্য বনে গিয়ে প্রসন্ন নেত্রে কৃষ্ণাংশকে বলল আমি তোমার পরীক্ষা করছিলাম। যখন তুমি বিপদে পড়বে তখন আমার স্মরণ নেবে। আমি তোমার কামসাধন করব। একথা বলে দেবী অন্তর্হিত হলেন। তারপর তারা সকলে গৃহে ফিরে এসে তাদের পরাক্রম দেখে রাজা প্রসন্ন হলেন। তাদের গৃহে লক্ষ্মীদেবী বাস করতে লাগলেন।।৫৩-৬২।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *